১ দিরহাম নাপাকী নিয়ে জরুরি প্রশ্ন

Question

১) ১ দিরহাম তরল নাপাকী বর্তমানে ৫টাকার সিকি পরিমান আপনাদের ফতোয়ায় দেখলাম। এটা কি বাংলাদেশের ৫টাকার যে কয়েন আছে ঐটার সমান?
২)আমার কাপড় একটি নাপাক ভেজা যগের সাথে স্পর্শ করে। মগের পানি খুব সম্ভবত নাপাক ছিল।কাপড়ে স্পর্শ করায় একটি লম্বা ভেজা দাগের মত লাগে।কিন্তু তাতে একটি ১টাকার কয়েন(৫টাকার কয়েনের থেকেও ছোট) ধরে দেখি তা কয়েনের অর্ধেক ও না।তাহলে তো তা এক দিরহাম হওয়ার কথা না।

এই কাপড়ে আদায় করা নামাজ কি আদায় হয়ে গিয়েছে?

 ৩) ভেজা বালতিতে মশা বা মাছি বসে মাঝে মাঝে। যদিও নাপাকীর চিহ্ন পাওয়া যায় না।কেবল মশা বা মাছি ভেজা বালতিতে বসার দ্বারা কি বালতির ওই জায়গা নাপাক হয়ে যাবে?

 ৪)নাপাক বালতি ধোয়ার সময় পানি খোলিয়ে ফেলে দেওয়ার পরেও বালতির গায়ে ফোঁটা ফোঁটা পানি থেকেই যায়। এতে কি সমস্যা আছে?

Answer 1

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।

জবাবঃ- 

(০১)

https://ifatwa.info/5372/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عن أبي هريرة رضي الله عنه  عن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال : تعاد الصلاة من قدر الدرهم من الدم (سنن الدر قطنى، كتاب الصلاة، باب قدر النجاسة التي تبطل الصلاة، رقم الحديث-1)

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-এক দিরহাম পরিণাম রক্তের দরুন নামাযকে পুনরায় আদায় কর। {সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-১, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৩৮৯৬, জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-১০৭৮৩, মারেফাতুস সুনান ওয়াল আসার লিল বায়হাকী, হাদীস নং-১৩২৩, আল জামেউল কাবীর, হাদীস নং-২৩৮}

فلما ذكره صاحب الأسرار عن علي وبن مسعود أنهما قدرا النجاسة بالدرهم وكفى بهما حجة في الاقتداء وروي عن عمر أيضا أنه قدره بظفره(عمدة القارى شرح صحيح البخارى، كتاب الوضوء،  باب غسل الدم، رقم الحديث-227،3/140

হযরত আলী রাঃ এবং ইবনে মাসউদ রাঃ [কাপড়] নাপাক হওয়ার পরিমাণ নির্দিষ্ট করেছেন এক দিরহাম। আর আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ নির্ধারণ করেছেন  নখ পরিমাণ। {উমদাতুল কারী-৩/১৪০, আদিল্লাতুল হানাফিয়্যাহ-১০১}

قال محمد فى الآثار: أخبرنا أبو حنيفة رح عن حماد عن ابراهيم قال: إذا كان الدم قدر الدرهم والبول وغيره فأعد صلاتك، وإن كان أقل من قدر الدرهم فأمض على صلاتك، ص-28) فإن قلت: هذا إنما يدل على عفو الأقل عن الدرهم دون قدر الدرهم ومذهب الحنفية أوقدر الدرهم عفو ايضا، احاديث الإكتفاء بالأحجار فى الإستنجاء تفيد كون قدر الدرهم عفو، لأن موضع الاستنجاء مقدر به، (اعلاء السنن-1/405

এক দিরহাম নির্দিষ্ট করার সূরত হল, হাতের তালু সোজা করে রেখে তার উপর এক ফোটা পানি ফেলা, হাত নড়ানো বা কাত করা ছাড়া যতটুকু স্থান পরিব্যপ্ত হবে ততটুকুই হল এক দিরহামের আয়তন। 

,

এতটুকু পরিমাণ তরল গলীজ নাপাক হলে উক্ত কাপড়সহ নামায আদায় জায়েজ হবে।

https://ifatwa.info/9637/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে, 

এক দিরহাম বলতে প্রায় বর্তমানে প্রচলিত পাঁচ টাকার ব্যপ্তি পরিমাণ তথা একটা পাঁচ টাকার সিকির যে পরিমাণ ব্যপ্তি রয়েছে,সেই ব্যপ্তি পরিমাণ নাজাসত যদি কাপড় বা শরীরে লাগে,তাহলে সেই কাপড় বা শরীর সহকারে নামায হবে না।এর চেয়ে কম হলে যদিও নামায হয়ে যাবে,তবে ধৌত করা জরুরী।

বিঃদ্রঃ

শরীয়তের দৃষ্টিতে এক দিরহাম অর্থ প্রায় পাঁচ টাকার সমপরিমাণ একটি সিকি বা তার চেয়ে কিছুটা কম।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

এক দিরহাম বর্তমান বাংলাদেশের ৫ টাকার যে কয়েন আছে, সেটার সমান।

(০২)

এই কাপড়ে আদায় করা নামাজ আদায় হয়ে গিয়েছে।

(০৩)

মশা বা মাছি ভেজা বালতিতে বসার দ্বারা বালতির ওই জায়গা নাপাক হয়ে যাবেনা।

(০৪)

এতে সমস্যা নেই।

নাপাক পানি ফেলে দেয়ার পর বালতি পবিত্র পানি দিয়ে একবার ভালোভাবে ধোয়া হলে সেক্ষেত্রে বালতির গায়ে ফোঁটা ফোঁটা পানি থেকে গেলেও সমস্যা নেই।