আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
377 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (21 points)
আসসালামু আ'লাইকুম।
আমার মনে প্রায় সময় বাজে চিন্তা আসে।আমি মনে হয় ওয়াসওয়াসাগ্রস্ত,আমার একটা না একটা ইমানি চিন্তা বা ইসলামি চিন্তা লেগে থাকে।
ইদানীং নামের বিধান নিয়ে। আমি কিছু খেতে গেলে বা কাজ করতে গেলে আমার মনে বিভিন্ন  নাম আসে।আমি জানি কোন কাজ বা খেতে গেলে শুরুতে আল্লাহ্'র নামে খেতে হয়,কিন্তু আমি উচ্চারনের ওয়াসওয়াসাগ্রস্ত সেজন্য বারবারপড়তে কষ্ট লাগে বলে আমল টা কম করার চেষ্টা করি।এই নিয়েই চিন্তা।তখন আমার মনে গায়রুল্লাহ্'র নামে, কারো নামে,চোখের সামনে যা আসে তার নামে, আরো বিভিন্ন জিনিস নামে, এসব আসে,তখন আমার কাজ বা খাওয়া স্টপ করতে হয়,বারবার এসব করায় আমার কাজে ব্যাঘাত হয়,মনকে বোঝায় এসব আমল করলে মুখে উচ্চারন করে কানে শুনি মত করব,সেলাই কাজ এর সময় এসব আসে।তখনযদি মনে হয়  ইচ্ছাকৃত ভাবে করছি  আমি আবার আমার সেলাই খুলে আবার সেলাই করি,খাবার খাওয়ার সময় এমন হলে আমি মাঝেমধ্যে বমি করে খাবার পানি বের করি,কিন্তু এভাবে আমার খাবার কাজে কষ্ট হয়,ঠিকমত আগের মত হয়ত খেতে পারছিনা।বসতে সুতে বা নিচ থেকে জিনিস নিত্র গেলে মাথা নিচু হলেই সিজদা দিচ্ছি লাগে।এককাজ বার বার করি অনেক সময়।আমি মাঝে মাঝে শিরক কুফরির ভয়ে মনে হয় অস্বাভাবিক চলাচল করি,ইদানীং কোন কথায় শিরক নিয়তে হবে কিনা সেই চিন্তায় কথাও পুরা বলতে পারিনা হয়ত,আমার এসব কারনে আমার কি রকম লাগে আমি হয়ত বোঝাতে পারবনা।কত মাস হল জানিনা আমি এসব চিন্তা থেকে কষ্ট বা গোনাহগার হচ্ছি হয়ত।খারাপ চিন্তা বেড়ে যায় যদি এসব যেন না আসে সেই চেষ্টা করলে
১/অনিচ্ছাকৃত এসব হলে হয়ত সমস্যা নাই,কিন্তু ইচ্ছাকৃত হলে কি ইমান চলে যাবে?
২/ইচ্ছাকৃত মনে মনে কারো নামে বা গায়রুল্লাহ্'র নামে হলে কি খাবার বমি করে ফেলতে হবে বা সেলাই বা কাজ টা আবার করতে হবে?
৩/ মনে মনে যদি শর্ত দি "এটা এরকম না হলে কারো নামে হবে"..তখন যদি শর্ত অনুযায়ী না হয় কাজটা, তাহলে কি সেটা সত্যি কারো নামে হবে বা কাজ টা আবার নতুন করে করতে হবে?
৪/কথা কাজের নিয়ত আমি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঠিক রাখতে পারিনা,অন্তরে কুফরি শিরকি নিয়ত রেখে কোন কাজ বা কথা বললে সামনের জন যদি সেটা না বুঝে আমি কুফরি শিরকি নিয়তে বলছি, তাহলে কি আমার ইমান চলে যাবে বা কাজ আবার করতে হবে বা কথাটা আবার বলতে হবে?
৫/আমার বিয়ে করতে চিন্তা হচ্ছে,আমার ইমান ভংগের কারনে যদি বিয়ে সহিহ না হয় বা ভেংগে যায়,,এখন আমার কি করনিয়?
৬/আমি যদি মুখে কুফরি বাক্য উচ্চারন না করি তাহলে আমার কাজের নিয়ত যাই হোক, অন্তরে বা মুখ বন্ধ করে ভিতরে যাই উচ্চারন করি তার সাথে কি কাজের বা খাবারের সম্পর্ক আছে মানে খাবার বা কাজ টা কি ফেলে দিতে হবে?
৭/ প্রশ্ন ৬ এ উল্লেখিত ক্ষেত্রে আমার কি ইমান চলে যআবে আর কাজ টা আবার করতে হবে নাকি  নিয়ত টা পরে তওবা করলে ঠিক হবে কিন্তু কাজটা আবার করতে হবেনা,খাবার ফেলতে হবেনা, ? আমাকে বুঝিয়ে বলুন
সব বুঝাতে পারছি কিনা জানিনা,আমার অবস্থা ভাল মনে হচ্ছেনা,
৮/সব মিলিয়ে আমার করনিয় কি?সামনে রোজা,এখন যদি আমার এই অবস্থা হয়,
৯/মোবাইল  স্ক্রিনে কিছু চললে আজেবাজে শর্ত চলে আসে,যেমন "এটা যদি এখন ক্লিক করে বা এরকম না হলে কারো নামে হবে তখন মোবাইল কিছু সময়ের জন্য নিষিদ্ধ ",এসব রাস্তায় কিছু দেখলে আসে,মনে মনে আসা শর্ত গুলা যদি পুরন না হয় তাহলে কি আসলেই শর্তাধীন পরিনতি হবে  নাকি শর্ত গুলা ধর্তব্য হবেনা যেহেতু এসব মনে মনএ?
১০/ধরেন আমি কোন গোনাহের কাজ করলাম।কাজটা করার সময় অন্তরে কাজটা সম্পর্কিত বিধান এর প্রতি অস্বিকার মুলক নিয়ত ছিল কিন্তু অন্য কাউকে বলার সময় বা প্রকাশ্য বলার ক্ষেত্রে ঠিক ই সঠিক বিধান স্বিকার করলাম অন্তরেও সঠিক টা রাখলাম।তাহলে কি কাজ টা করার সময় অস্বিকারমুলক নিয়ত রাখলাম এজন্য ইমান চলে যাবে নাকি মুনাফেক হব?
১১/মনে মনে যদি শর্ত দি "এ কাজটা এরকম না করলে কারো  নামে হবে বা এরকম না করলে বিধান অস্বিকার হবে বা শিরক কুফরি মুলক কাজ হবে" আর আমি যদি কাজটা সেই শর্ত মত কাজ না করি তাহলে কি কাজটার শর্ত মত শিরক কুফরি মুলক পরিনতি হবে মানে কাজটা কারো নামে বা বিধান অস্বিকার করছি এমন হবে ?
১২/কারো সামনে ইবাদতের উদ্দেশ্য মাথা নত করলে বা কাউকে  সিজদা দিলে বা কিছুকে সিজদা দিলে ইমান চলে যাবে, এই বিধান টা মাথায় ঘুরে হয়ত,সিজদার জন্য ত আলাদাভাবে নিয়ম আছে বসার,এখন সেলাই বা অন্য কাজে বসলে বা নিচ থেকে কিছু নিতে বা উঠাতে গেলে মাথা নিচু হলেই সিজদার বা মাথা নতের নিয়ত চলে আসে,,দিনে অনেক কাজ এ অনেক প্রয়োজন এ নিচু হতে লাগতে পারে,বারবার নিয়ত ঠিক রাখতে গেলে কষ্টকর হতেও পারে,অনিচ্ছাকৃত নিয়তে ইমান চলে যায়না জানি,কিন্তু ইচ্ছাকৃত নিয়ত আসলে কি ইমান চলে যাবে?
১৩/নামায এ সুরা দোয়া গুলা ঠিক মত পারিনা,এখন ত উচ্চারনের  ওয়াসওয়াসাও আছে মনে হয়,একি শব্দ বারবার রিপিট করি,আমি যদি কষ্টে মনে মনে বলি "ভুল হলে ভুল,বিধান মানিনা বা বিধান অস্বিকার করি" এবং পড়া চালিয়ে করি তাহলে কি নামায বা ইমান ভেংগে যাবে নাকি শুধু  গোনাহ হবে?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲُّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢ : َ ( ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺗَﺠَﺎﻭَﺯَ ﻟِﻲ ﻋَﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣَﺎ ﻭَﺳْﻮَﺳَﺖْ ﺑِﻪِ ﺻُﺪُﻭﺭُﻫَﺎ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺗَﻌْﻤَﻞْ ﺃَﻭْ ﺗَﻜَﻠَّﻢ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার খাতিরে আমার উম্মতের অন্তরে চলে আসা ওয়াসওয়াসা(শয়তানি প্ররোচনা) বিষয়ে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ/শাস্তি প্রদাণ করবেন না।যতক্ষণ না সে কথা বা কাজের মাধ্যমে সেটাকে বাস্তব রূপ দিচ্ছে। (সহীহ বোখারী-২৩৬১,সহীহ মুসলিম-১২৭)

 তালাকের ওয়াসওয়াসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-  https://www.ifatwa.info/835

ওয়াসওয়াসা সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন-  https://www.ifatwa.info/1379


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)অনিচ্ছাকৃত এসব হলে হয়ত সমস্যা নাই,যেহেতু আপনি ওয়াসওয়াসা আক্রান্ত তাই ইচ্ছাকৃত হলেও ইমান চলে যাবে না।কেননা ওয়াসওয়াসা রোগের আক্রান্ত রোগীর সবকিছুই অনিচ্ছাকৃত। 

(২)ইচ্ছাকৃত মনে মনে কারো নামে বা গায়রুল্লাহ্'র নামে হলে খাবার বমি করে ফেলতে হবে না বা সেলাই খুলতে হবে না।কেননা ওয়াসওয়াসা রোগীর সবকিছুই অনিচ্ছায় হয়।

(৩)মনে মনে যদি শর্ত দি "এটা এরকম না হলে কারো নামে হবে"..তখন যদি শর্ত অনুযায়ী না হয় কাজটা, তাহলে সেটা সত্যি কারো নামে হবে না বা কাজটা আবার নতুন করে করতে হবে না।কেননা আপনি ওয়াসওয়াসা রোগে আক্রান্ত।

(৪) কথা কাজের নিয়ত আমি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ঠিক রাখতে পারিনা,অন্তরে কুফরি শিরকি নিয়ত রেখে কোন কাজ বা কথা বললে সামনের জন যদি সেটা না বুঝে আমি কুফরি শিরকি নিয়তে বলছি, তাহলেও আপনার ইমান চলে যাবে না বা কাজ আবার করতে হবে না বা কথাটা আবার বলতে হবে না।কেননা আপনি ওয়াসওয়াসা রোগে আক্রান্ত।

(৫) আপনি যেহেতু ওয়াসওয়াসা রোগে আক্রান্ত। আপনার ঈমান ভঙ্গ হবে না।সুতরাং আপনি বিয়ে করতে পারবেন।

(৬)খাবার বা কাজ টা কে ফেলে দিতে হবে না।

(৭) প্রশ্ন ৬ এ উল্লেখিত ক্ষেত্রে আমার কি ইমান চলে যাবে না। 

৮/সব মিলিয়ে আপনার করনিয় হল,আপনি ওডিসি রোগের চিকিৎসা গ্রহণ করুন।আপনার সমস্যাটা চিকিৎসা কেন্দ্রিক।মাস'আলাগত সমস্যা আপনার নেই।

(৯) শর্ত গুলা ধর্তব্য হবেনা.।

(১০) এজন্য ইমান চলে যাবে না।

(১১)
কাজটা শিরক কুফরি মুলক পরিনতি হবে না। 

(১২)
সেলাই বা অন্য কাজে বসলে বা নিচ থেকে কিছু নিতে বা উঠাতে গেলে মাথা নিচু হলেই সিজদার বা মাথা নতের নিয়ত চলে আসলে ঈমান চলে যাবে না।

(১৩) নামায বা ইমান ভেংগে যাবে না। যেহেতু আপনি ওয়াসওয়াসা রোগী।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...