আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
140 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (67 points)
আমার ইদানিং নামাজে একটা সমস্যা হচ্ছে, বিষয়টা এই রকম যে দ্বিতীয় বা তৃতীয় রাকাতে মনে পরে যে এর আগের রাকাতে দুই সিজদা দিলাম কি না,রুকু দিলাম কি না, আসলে বিষয়টা যা হয় যে দুই সিজদার মাঝে বসা আর রুকু হতে উঠা এই দুটি মুহূর্ত ভুলে যাই, যার ফলে মনে অশান্তি শুরু হয়, কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে এগুলো তো মিছ হওয়ার কথা না স্বাভাবিক ভাবে বেশ বছর থেকে নামাজ পরছি ইনশাআল্লাহ,  কোনটার পর কোন তসবিহ অটোমেটিক ই মুখ দিয়ে চলে আসে এমন অবস্থায় রুকু মিস করা বা সিজদা একটা দেওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম, আবার কখনো তো স্মরনে আসে যে এই মাত্র দুই সিজদার মাঝে যে দোয়া এটা পরলাম কিন্তু মাঝে বসার সে মুহুর্ত এই সময়ের কিছুই মনে না পরায় মনে কষপাকস শুরু হয়, তখন বাধ্য হয়ে আবার শুরু করি, ফরজ নামাজ গুলো কয়েক বারের চেষ্টায় আদায় করা লাগতেছে।মন বলে যে ঠিকই আছে সব,তাও সন্দেহের কারণে অশান্তি শুরু হয় ।

১. এরুপ অবস্থায়  সিজদার মাঝের বসার মুহূর্ত স্মরনে না আসলে মন যদি সায় দেয় দুই সিজদাই দিয়েছি তবে কি সে অনুযায়ী নামাজ পরে নেবো?

২.. রুকুর কথা মনে না থাকলে কি করবো? রুকুতো মিছ হওয়ার কথাই না,এটা তো একটা প্রতি রাকাতে।

৩. একটি লেগুনায় লেখা ছিলো, "নিজ নিজ সৃষ্টি কর্তাকে স্মরন করুন" নিচে লেখা ছিলো "প্রয়োজনে কল করুন" লেখা টা একসাথে পড়লে ভাষাগত দিকে লাগেম যেমন এটা সৃষ্টিকর্তার নং,(নাউজুবিল্লাহ)  তখন এটা দেখে কেও যদি মজা করে ফোন কানে নিয়ে বলে "হ্যালো গড" এটা দেখে যদি কারো হাসি উঠে, তবে কি সেই হাসার দরুন কুফর হবে?(অনেকের কাছেই এই বিষয়টা হাস্যকর লাগছে)

৪. কেও ইরাদা করে ফেললো যে প্রতিদিন সুরা ইখলাস ৩০ বার পরবে, পরে যখন দেখলো কাজটা কঠিন তখন সে, মনে মনে ভাবলো যে" আমিতো বলেছি সুরা ইখলাস পড়বো,সঠিক ভাবে পড়তে তো বলি নাই" এটা ভেবে যদি "কুল হু " এরকম কে এক বার পাঠ ধরে তার সংখ্যা পুরা করে এতে কি তার কুফর হবে? (বুঝতেছে তার এগুলো শুদ্ধ হচ্ছে না, শুধু নিয়ত পূরনের জন্য এমন করা)

৫.কেও ইরাদা করে ফেললো যে প্রতিদিন এতো রাকাত নফল নামাজ পরবে, পরে যখন দেখলো কাজটা কঠিন তখন সে, মনে মনে ভাবলো যে" আমিতো বলেছি নামাজ পড়বো বলেছি,সঠিক ভাবে পড়তে তো বলি নাই" এটা ভেবে যদি ইশারায় বা হাটতে হাটতে, বা কোনো রকম কিছু না পরে ফরজ ওয়াজিব কিছুই না করে   তার নামাজ সংখ্যা পুরা করে এতে কি তার কুফর হবে?, (যদিও সে বুঝতেছে তার নামাজ হচ্ছে না)

৬. হিন্দুদের শ্মশানে মৃতদের পুরানোর স্থলে উপস্থিত থাকলে কি কুফর হবে?

৭.কোনো মানুষ প্রতিদিন ঘুমের সময় "কলিমা তৈয়িবা" পাঠ করে ঘুমায় তা বিয়ের অনেক আগে থেকেই। সে যদি তার করা কোনো কথা/কাজ,যা তার বিবাহের পূর্বে করেছিলো, তা কুফরি  হয়।  কিন্তু সে বিয়ের পরে এরুপ করেছে বলে কখনোই মনে পরছে না, তাতে কি তার বিবাহ দোহরাতে হবে?

৮.পানজাবীর উপর "ছেলেদের ছোট উরনা" পরার দরুন কেও যদি বলে যে মহিলাদের মতো লাগছে এতে কি কুফর হবে?

৯.কেও যদি বলে এমন কাজ সে করেছে এই বিষয়ে সে এতোটা কনফিডেন্ট যে বলতে পারবে "এই কাজ না করে থাকলে তর বউ তালা* " এতে কি তার বিবাহে সমাজ হবে?

১০. এক রোগীর পোস্টে, একজন  হিন্দু কমেন্ট করেছে "ইশ্বর তাকে সুস্থ করুক" এটা দেখে একজনের মনে হলো এখানে মানুষ "হাসির" রিয়েক্ট দিচ্ছে।  এটা দেখে সে ভাবলো সো তো ভালো কথা লিখলো মানুষের কি সমস্যা? পরে নাম দেখে মাথায় আসলো ও তো ইশ্বর বলতে আল্লাহ বুঝায় নাই ও যাকে ইশ্বর মনে করে তাকে বুঝিয়েছে। এই কাজকে ভালো কাজ ভাবায় তার কি ইমান চলে যাবে?

১১. কেও যদি ইরাদা রাখে  " কৃষ্ণ, রাম,গৌতম বুদ্ধ, এরা ভারতীয় এলাকার নবী হলেও হতে পারে" এই ইরাদার জন্য কি সে কাফের হয়ে যাবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


নামাযে রা'কাত বা সেজদা সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হলে,যে ঐ ব্যক্তির কি এটা প্রথম হয়েছে না মাঝেমধ্যে এমন হয়।যদি প্রথমবার বা কদাচিৎ হয়ে তাহলে উনি আবার প্রথম থেকে শুরু করে নতুনভাবে পড়ে নিবেন।
(মুছান্নাফে ইবনে আবি শাইবা ২/২৮)

যে ব্যক্তির প্রায় সময় সন্দেহ হয় এবং সন্দেহ তার অভ্যাসে পরিণত হয়, ওই ব্যক্তি যেদিকে তার মন বেশি যায় (প্রবল ধারণা হয়), সেটার ওপর আমল করবে। যদি সব বিষয়ে ধারণা সমান হয়, তাহলে অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যার ওপর আমল করবে এবং প্রত্যেক রাকাতকে নামাজের শেষ মনে করে বসবে, শেষে সিজদায়ে সাহু করবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَحَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، حَدَّثَنَا مُوسَى بْنُ دَاوُدَ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ بْنُ بِلاَلٍ، عَنْ زَيْدِ بْنِ أَسْلَمَ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِذَا شَكَّ أَحَدُكُمْ فِي صَلاَتِهِ فَلَمْ يَدْرِ كَمْ صَلَّى ثَلاَثًا أَمْ أَرْبَعًا فَلْيَطْرَحِ الشَّكَّ وَلْيَبْنِ عَلَى مَا اسْتَيْقَنَ ثُمَّ يَسْجُدُ سَجْدَتَيْنِ قَبْلَ أَنْ يُسَلِّمَ فَإِنْ كَانَ صَلَّى خَمْسًا شَفَعْنَ لَهُ صَلاَتَهُ وَإِنْ كَانَ صَلَّى إِتْمَامًا لأَرْبَعٍ كَانَتَا تَرْغِيمًا لِلشَّيْطَانِ " .

মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ ইবনু আবূ খালাফ (রহঃ) ..... আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন রাকাআত আদায় করা হলো না চার রাকাআত আদায় করা হলো- সালাতের মধ্যে তোমাদের কারো এরূপ সন্দেহ হলে সে যে কয় রাক’আত আদায় করেছে বলে নিশ্চিত হবে (তিন রাকাআত) সে কয় রাকাআতকে ভিত্তি ধরে অবশিষ্ট করণীয় করবে। এরপর সালাম ফিরানোর পূর্বে দুটি সিজদা করবে। (এখন) সে যদি পাঁচ রাকাআত আদায় করে থাকে তাহলে এ দু' সিজদা দ্বারা তার সালাতের জোড়া পূর্ণ হয়ে যাবে। আর যদি তার সালাত চার রাকাআত হয়ে থাকে তাহলে (এই) সিজদা দুটি শয়তানের মুখে মাটি নিক্ষেপের শামিল হবে। (মুসলিম ১১৫৯.ইসলামী ফাউন্ডেশন ১১৫২, ইসলামীক সেন্টার ১১৬১)

বিস্তারিত জানুনঃ- 


★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
এক্ষেত্রে মন যদি সায় দেয় দুই সিজদাই দিয়েছেন, তবে সে অনুযায়ী নামাজ পরে নিবেন।

(০২)
আপনি প্রবল ধারনার উপর আমল করবেন।

যদি প্রবল ধারনা হয় যে রুকু করেননি,তাহলে পুনরায় রুকু করবেন।

রুকু করে থাকলে আশা করি প্রবল ধারনা রুকু করার পক্ষেই হবে।

(০৩)
সেই হাসার দরুন কুফরি হবেনা।

(০৪)
এতে কুফর হবেনা।
হেফজ খানার ছাত্র ছাত্রীরা সূরা মুখস্থের সময় তক এভাবেই এক বাক্য একাধিকবার পড়ে মুখস্থ করে থাকে।

(০৫)
এতে কুফর হবেনা।

(০৬)
না, এতে কুফর হবেনা।
তবে এভাবে সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে এটি দেখা জায়েজ নেই।

(০৭)
প্রশ্নের বিবরণ মতে বিবাহ দোহরাতে হবেনা।

(০৮)
এতে কুফর হবেনা 

(০৯)
যদি আসলেই সে উক্ত কাজ না করে থাকে,তাহলে তালাক পতিত হবে। 

(১০)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এই কাজকে ভালো কাজ ভাবায় তার ঈমান চলে যাবেনা।

(১১)
এই ইরাদার জন্য সে কাফের হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 195 views
...