আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
251 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (5 points)
আসসালমুআলাইকুম হুজুর,

আমি একজন মারাক্তক ওয়াসওয়াসা রুগী । আমি ডাক্তারের ওষধ খাচ্ছি।

বিষয় হলো কিছুক্ষন আগে দেখতাম।

যে ব্যাক্তি বলবে সে মুরতাদ তার জন্য ওজর বিল যাহালাত তার জন্য প্রযোজ্য না।

আমি মুরতাদ মানে টা দেখলাম। দিয়ে মনে মনে শুধু মনে হচ্ছে আমি মুরতাদ । এই রকম হচ্ছে । আমি মুখে উচ্চরণ করছিনা ।

হুজুর আমার ভয় এ জান শেষ হয়েগেলো । আমি ইচ্ছাকৃত ভাবে মনে করছিনা । এমনি এমনি মনে চলে আসছে।

১. হুজুর আমার মনের মধ্যে এমন হচ্ছে আমার খুব ভয় লাগছে , ভয় পেয়ে আমি আমার স্ত্রী কে সমস্ত ঘটনা বলেছি, আর বলার ক্ষেত্রে সেই শব্দ টা বলতে হয়েছে। শুধু মাত্র স্ত্রীকে বোঝানোর ক্ষেত্রে বলেছি। ইচ্ছাকৃত বলিনি আর বলার কোনো নিয়ত ও ছিলনা । শুধু মাত্র আমার অবস্থা টা বোঝানোর ক্ষেত্রে ব্যাবহার করেছি।। আমি খুবই ওয়াসওয়াসা রুগী আমার অবস্তা খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছে তাই স্ত্রীকে বলছিলাম আমার এমন বাজে চিন্তা আসছে দিয়ে স্ত্রী সান্তনা দেই। আর সম্পূর্ণ বাক্যে আমি কখনো মন থেকে উচ্চরণ করিনি। আর আমি সেটা করতে ও পারিনা । ইনশাল্লাহ করবনা।

হুজুর স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করার জন্য কি ঈমান চলে যাবে??

২. ভবিষ্যত এ যদি কোনো ভুল করে ফেলি আমার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাওয়ার জন্য ওজর বিল জাহালত গ্রাহ্য হবে তো?? আমার ঈমান থাকবে তো?? দয়া করে এই প্রশ্ন টা একটু বুঝিয়ে বলবেন। আমার খুব চিন্তা হচ্ছে।

৩. হুজুর আমি ভীষণ ওয়াসওয়াসা মানসিক রুগী, নিজের এতটাই চিন্তা হচ্ছিলো যে , আমি ভয় পেয়ে স্ত্রীর সঙ্গে আমার সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছি । হুজুর এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে? আমি শুধু মাত্র তাকে আমার মনের প্রবলেম এর ওয়াসওয়াসা কথা বলেছি। হুজুর এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে?

৪. না জেনে না বুঝে আল্লাহ কে মাওলা বলে হয়ত ডেকেছি, বা হয়ত আলী রা: কে ও মাওলা বলে বা বলেছি।

আল্লাহ কসম না জেনে ভুল হয়েছে । এই কথার অর্থ আমি সম্পূর্ণ ভাবে জানতাম না । আমি শুনেছি মাওলা বলতে শুনেছি তাই হয়ত বলেছে ১ কি ২ বার । হুজুর আমি যদি জানতাম যে বলা যাবে না আমি হয়ত কখনোই বলতাম না।

এই বিষয় টা আমি জানিনা আল্লাহ কসম না জেনে ভুল হয়েছে । আল্লাহ কসম না জেনে ভুল হয়েছে । আমাকে একটু পরিষ্কার করে দেন বিষয় টা।

৪.১ ইসলামিক জ্ঞন অর্জন কারি কে মৌলবী বলা যাবে?? বা মাওলানা বলা যাবে?

আমার না জেনে ভুল করার কারণে আমি খুব অনুতপ্ত। আমি এই বিষয় জানলে কখনই বলতাম না।

হুজুর না জেনে বুঝে ভুল হয়েছে , হুজুর এক্ষেত্রে কি আমার ঈমান চলে যাবে??

৪.২ আমি ওয়াসওয়াসা রুগী খুবই কষ্টের মধ্যে আছি। ঈমান নিয়ে খুবই চিন্তা হয় কারণ আমার ঈমান চলে গেলে আমি নিঃস্ব হয়ে যাবো ।

হুজুর না জেনে বুঝে ভুল হয়েছে এক্ষেত্রে কি আমার ঈমান চলে যাবে??

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيمَ حَدَّثَنَا هِشَامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ زُرَارَةَ بْنِ أَوْفٰى عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي مَا حَدَّثَتْ بِه„ أَنْفُسَهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَتَكَلَّمْ
قَالَ قَتَادَةُ إِذَا طَلَّقَ فِي نَفْسِه„ فَلَيْسَ بِشَيْءٍ.

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মতের হৃদয়ে যে খেয়াল জাগ্রত হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন, যতক্ষণ না সে তা কার্যে পরিণত করে বা মুখে উচ্চারণ করে।

ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেনঃ মনে মনে তালাক দিলে তাতে কিছুইতালাক হবে না। [বুখারী শরীফ ৫২৬৯.২৫২৮] আধুনিক প্রকাশনী- ৪৮৮৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭৭৮)

অন্য এক হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ ".

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। (সহীহ বুখারী ২৫২৮)

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করার জন্য ঈমান চলে যাবেনা। 

(০২)
ভবিষ্যতেও যদি শুধু মনে মনে চলে আসে,মুখে উচ্চারণ না করেন,সেক্ষেত্রে বিষয়টি স্ত্রীকে বললেও ঈমান চলে যাবেনা।

(০৩)
এর জন্য ঈমান চলে যাবেনা। 

তবে স্ত্রীর সাথে উক্ত বিষয় আলোচনা না করার পরামর্শ থাকবে। 

(৪.১)
হ্যাঁ মৌলভি বা মাওলানা বলা যাবে।

বিস্তারিতঃ-

‘মাওলানা’ বা ‘মওলানা’ শব্দটি আরবি। এটি ‘মাওলা’ ও ‘না’ দুটি শব্দে ঘটিত। ‘না’ একটি সর্বনাম। এর অর্থ আমরা বা আমাদের। আর ‘মাওলা’ শব্দের প্রায় ৩০টি অর্থ আছে। যেমন—প্রভু, বন্ধু, সাহায্যকারী, মনিব, দাস, চাচাতো ভাই, প্রতিনিধি, অভিভাবক, নিকটবর্তী, আত্মীয়, নেতা, গুরু, প্রতিপালক, সর্দার, প্রেমিক, প্রতিবেশী, আনুগত্য, প্রার্থনা, নীরবতা, ইবাদত, দণ্ডায়মান ইত্যাদি। 

(বাদায়িউল ফাওয়ায়িদ : ৪/৯৭৮, ফাতাওয়ায়ে আশরাফিয়া, পৃষ্ঠা ৭০, উমদাতুর রিআয়াহ : ২/৩২৮, লিছানুল আরব : ৮/৪৫২, আল-মিসবাহুল মুনির, পৃষ্ঠা ৫৯১)

‘মাওলানা’ শব্দটি মুসলিম ধর্মীয় পণ্ডিতের ক্ষেত্রে শ্রদ্ধাপূর্ণ অর্থ বহন করে। অন্যদিকে সাধারণ ধর্মীয় ব্যক্তির ক্ষেত্রে উপাধি হিসেবে ‘মৌলভি’ শব্দটি ব্যবহূত হয়। বাংলাদেশের সরকারি আলিয়া মাদরাসার আলেমদেরও ‘মৌলভি’ বলা হয় ।

‘মাওলানা’ উপাধি মধ্য এশিয়া ও ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যবহূত হয়ে থাকে। ‘মাদরাসা’ কিংবা ‘দারুল উলুম’ থেকে স্নাতকোত্তর পাস করা ব্যক্তিকে ‘মাওলানা’ বলা হয়ে থাকে। 

উর্দু ভাষায় ‘মাওলানা’ শব্দটি উস্তাদ ও আলেমে দ্বিন অর্থেও ব্যবহূত হয়। (সূত্র : আল-হাদিয়্যাতুল মারযিয়্যা, পৃষ্ঠা ১১৭, ফিরুজুল লুগাত, পৃষ্ঠা ৬৬৪)

আল্লাহর ক্ষেত্রে ‘মাওলানা’ শব্দকে যে অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে, আলেমদের ক্ষেত্রে সে অর্থে ব্যবহার করা হয়নি। আল্লাহর ক্ষেত্রে ‘মাওলানা’ অর্থ হলো আমাদের প্রভু বা প্রকৃত অভিভাবক আর আলেমদের ক্ষেত্রে তার অর্থ হচ্ছে আমাদের ধর্মীয় অভিভাবক। ( কিতাবুল ফাতাওয়া : ১/২২৮, আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল : ২/৬৩৮)
(সংগৃহীত)

★প্রশ্নের বিবরণ মতে এক্ষেত্রে আপনার ঈমান চলে যাবেনা। 

(৪.২)
এক্ষেত্রে আপনার ঈমান চলে যাবেনা। 
আপনি নিশ্চিত থাকুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...