আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,735 views
in সালাত(Prayer) by (48 points)
closed by

আসসালামুয়ালাইকুম,

আজকে ফেসবুকে একটা দ্বীনি গ্রুপে একটা লিখা দেখলাম। লেখাটা হুবহু তুলে ধরলাম নিচে। 

 

জুতো পরিধান করে নামায আদায় করা একটা ভুলে যাওয়া সুন্নত

এমনকি কিছু মুসলিম যখন কেউকে জুতো পড়ে নামায পড়তে দেখে তখন সেটা তাকে আশ্চর্য লাগে

এবং কখনও কখনও তাকে আরোপ করে

জুতা পরিধান করে নামাজ পড়ার দলিল সমূহ

1. তোমরা জুতা পরিধান করে নামাজ পড়ো এবং ইয়াহুদীদের সাদৃশ্য অবলম্বন করিও না। (صحيح الجامع)

2. তোমরা ইয়াহুদীদের বিরোধিতা করো কেননা তারা জুতা পরিধান করে নামাজ পড়ে না নাই বা মুজা পরিধান করে (اخرجه ابو داود وابن حبان في صحيحه)

3. এবং হযরত আনাস কে

জিজ্ঞেস করা হয়েছিল : রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুতো পরিধান করিয়া কি নামাজ পড়িতেন? তিনি বলেন : হ্যাঁ (اخرجه البخاري ومسلم وغيرهما)

4. ইবনে আবি আউস থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমার দাদু কখনো কখনো নামাজ পড়তেন এবং নামাযের অবস্থাতেই তিনি আমার দিকে ইশারা করতেন এবং আমি তাকে তার জুতো দিতাম এবং তিনি বলতেন যে আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে জুতা পরিধান করিয়া নামাজ পড়িতে দেখেছি (ابن ماجه)

লেখক : Mahfuj Middya

 

এখন আমার প্রশ্ন জুতা পড়ে আসলেই নামায পড়ার হাদিসগুলো সহিহ কিনা? আর সহিহ হলে মসজিদে জুতা পড়ে নামায বা বাসায় জুতা পড়ে নামায এইসব প্রসঙ্গে শাইখের মূল্যবান দিকনির্দেশনা আশা করছি।

closed
by (0 points)
আসসলামুআলাইকুম।আপনার এই প্রশ্নের উত্তর বিস্তারিত ভাবে দেওয়া অনেক সময়সাপেক্ষ।তাছাড়া আমার মোবাইলের মাধ্যমে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া অনেক কষ্টকর।তাই আপনার প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে দয়া করে নিচের ভিডিওটি দেখারhttps://youtu.be/HQOtMgrMpSQ
by
Video keno post করেছেন? এখানে তো মুফতি সাহেব উত্তর দিয়েছেন ই। মুফতি সাহেব ছাড়া উত্তর দেয়া নিষেধ।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
selected by
 
Best answer
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
 بسم الله الرحمن الرحيم 

এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ  একটি মাসয়ালা।
সেই জন্য প্রথমেই আমরা কিছু হাদীস লক্ষ্য করি।

রাসুল সাঃ বলেন  যখন তোমরা কেউ মসজিদে আসবে তখন সে দেখবে, যদি সে তার পাদুকায় কোনো ময়লা বা নাপাকি দেখতে পায় তাহলে তা মুছে ফেলবে এবং পাদুকা পরেই সালাত আদায় করবে।

( আবু দাউদ, আস-সুনান, ১/১৭৫; ইবন খুযাইমা, আস সহীহ, ১/৩৮৪; ইবন হিব্বান, আস সহীহ, ৫/৫৫৮-৫৬০)

عَنْ يَعْلَی بْنِ شَدَّادِ بْنِ أَوْسٍ رضی الله عنه عَنْ أَبِيهِ قَالَ، قَالَ رَسُولُ اﷲِ صلی الله عليه وآله وسلم : خَالِفُوا الْيَهُودَ فَإِنَّهُمْ لَا يُصَلُّونَ فِي نِعَالِهِمْ وَلَا خِفَافِهِمْ.

حاکم، المستدرک علی الصحيحين، 1: 391، رقم: 956، بيروت: دار الکتب العلمية
ابن حبان، الصحيح، 5: 561، رقم: 2186، بيروت: مؤسسة الرسالة

তোমরা ইহুদী-খ্রিস্টানদের বিরোধিতা করবে; কারণ তারা পাদুকা পায়ে এবং জুতাজাতীয় চামড়ার মোজা পায়ে দিয়ে সালাত আদায় করে না।
(আবু দাউদ, আস-সুনান, ১/১৭৬; ইবন হিব্বান, আস সহীহ, ৫/৫৬১; আল-মুসতারাক, ১/৩৯১)

عَنْ أَبِي مَسْلَمَةَ سَعِيدِ بْنِ يَزِيدَ رضی الله عنه قَالَ قُلْتُ لِأَنَسِ بْنِ مَالِکٍ رضی الله عنه أَکَانَ رَسُولُ اﷲِ صلی الله عليه وآله وسلم يُصَلِّي فِي النَّعْلَيْنِ؟ قَالَ نَعَمْ

بخاري، الصحيح، 1: 151، رقم: 379، بيروت، لبنان: دار ابن کثير اليمامة
مسلم، الصحيح، 1: 391، رقم: 555، بيروت، لبنان: دار احياء التراث العربي
أحمد بن حنبل، المسند، 3: 100، رقم: 11995، مصر: مؤسسة قرطبة

হযরত সায়ীদ বিন যায়েদ রাঃ হযরত আনাস রাঃ কে জিজ্ঞাসা করিলেন,রাসুল সাঃ কি জুতো পড়ে নামাজ পড়েতেছিলেন?
তিনি উত্তর দিলেন,হ্যাঁ । 
,
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رضی الله عنه قَالَ بَيْنَمَا رَسُولُ اﷲِ صلی الله عليه وآله وسلم يُصَلِّي بِأَصْحَابِهِ إِذْ خَلَعَ نَعْلَيْهِ فَوَضَعَهُمَا عَنْ يَسَارِهِ فَلَمَّا رَأَی ذَلِکَ الْقَوْمُ أَلْقَوْا نِعَالَهُمْ فَلَمَّا قَضَی رَسُولُ اﷲِ صلی الله عليه وآله وسلم صَلَاتَهُ قَالَ مَا حَمَلَکُمْ عَلَی إِلْقَاءِ نِعَالِکُمْ قَالُوا رَأَيْنَاکَ أَلْقَيْتَ نَعْلَيْکَ فَأَلْقَيْنَا نِعَالَنَا فَقَالَ رَسُولُ اﷲِ صلی الله عليه وآله وسلم إِنَّ جِبْرِيلَ عليه السلام أَتَانِي فَأَخْبَرَنِي أَنَّ فِيهِمَا قَذَرًا أَوْ قَالَ أَذًی وَقَالَ إِذَا جَاءَ أَحَدُکُمْ إِلَی الْمَسْجِدِ فَلْيَنْظُرْ فَإِنْ رَأَی فِي نَعْلَيْهِ قَذَرًا أَوْ أَذًی فَلْيَمْسَحْهُ وَلْيُصَلِّ فِيهِمَا.

أحمد بن حنبل، المسند، 3: 20، رقم: 11169
أبي داود، السنن، 1: 175، رقم: 650
دارمي، السنن، 1: 370، رقم: 1378، بيروت: دار الکتاب العربي
ابن خزيمة، الصحيح، 1: 384، رقم: 786، بيروت: المکتب الإسلامي

উল্লেখিত হাদীসে রাসুল সাঃ নামাজে জুতা খুলে নামাজ পড়েছিলেন,ছাহাবায়ে কেরামগন জুতা খুলে ফেলেছিলেন,তখন নামাজ শেষে রাসুল সাঃ বললেন যে আমি তো জুতায় নাপাকি, ময়লা থাকার কারনে সেটা খুলেছিলাম।
,
عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ رضی الله عنه عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اﷲِ صلی الله عليه وآله وسلم يُصَلِّي حَافِيًا وَمُنْتَعِلًا.

أبي داود، السنن، 1: 176، رقم: 653
ابن ماجه، السنن، 1: 330، رقم: 1038، بيروت: دار الفکر

হযরত আমর বিন শুয়াইব রাঃ বলেন যে আমি রাসুল সাঃ কে জুতা খুলেও নামাজ পড়তে দেখেছি,জুতা পরিধান করেও নামাজ পড়তে দেখেছি।
,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضی الله عنه عَنْ رَسُولِ اﷲِ صلی الله عليه وآله وسلم قَالَ إِذَا صَلَّی أَحَدُکُمْ فَخَلَعَ نَعْلَيْهِ فَلَا يُؤْذِ بِهِمَا أَحَدًا لِيَجْعَلْهُمَا بَيْنَ رِجْلَيْهِ أَوْ لِيُصَلِّ فِيهِمَا.

أبي داود، السنن،1 : 176، رقم: 655
حاکم، المستدرک علی الصحيحين، 1: 391، رقم: 957، بيروت: دار الکتب العلمية
ابن حبان، الصحيح، 5: 557، رقم: 2182، بيروت: مؤسسة الرسالة

সারমর্মঃ যখন তোমরা নামাজ পড়বে,তখন জুতা খুলিয়া তার দ্বারা কাউকে কষ্ট দিবেনা,সুতরাং সেটা দুই পায়ের মাঝে রাখবে,অথবা পরিধান করেই নামাজ পড়বে।
,
★★উপরে উল্লেখিত হাদীস গুলো দ্বারা বুঝা যায় যে রাসুল সাঃ থেকে জুতা পরিধান করেও নামাজ পড়ার প্রমান পাওয়া যায়,জুতা পরিধান করেও নামাজ পড়ার প্রমান পাওয়া যায়।
,
বর্তমানে মসজিদ গুলোতে যেহেতু উন্নতমানের টাইলস  থাকে,উন্নত মানের কার্পেট থাকে,চমকদার জিনিস পত্র থাকে,যার কারনে জুতা পড়ে গেলে মসজিদে পরিচ্ছন্নতা ধরে রাখা অনেক কষ্টকর হবে।
তাই এহেন অবস্থায় জুতা খুলে নামাজ পড়তে হবে।
জুতা পরিধান করে নামাজ পড়া উচিত নয়।
তবে জুতা পবিত্র থাকলে সেটা পরিধান করে নামাজ পড়া নাজায়েজ  নয়।
,

★স্যান্ডেল বা জুতায় কোনো নাপাক বা অপবিত্র বস্তু না থাকলে জুতা পড়ে নামাজ আদায় করতে কোনো অসুবিধে নেই। 

নাপাক বা অপবিত্র বস্তু স্যান্ডেলের নিচে থাকলে সেটা খুলে তার ওপরে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে পারবে। তবে ভূমি পবিত্র থাকলে স্যান্ডেল বা জুতা খুলে পবিত্র মাটিতে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা উত্তম ।

(আল বাহরুর রায়েক: ২/৩১৫;  ফাতাওয়া আলমগিরি: ১/৬২;  এমদাদুল আহকাম: ২/৪৪৬
আলমুহীতুল বুরহানী ২/২০; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৩১; আলবাহরুর রায়েক ২/১৭৯; হাশিয়াতুত তহতাবী আলাল মারাকী পৃ. ৩১৯; রদ্দুল মুহতার ১/৪০২)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...