আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
117 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (8 points)
edited by
আসসালামুয়ালাইকুম

আমার ঘরে টোটাল দশ ভরির মত স্বর্ণ  আছে ।
১.2 ভরি স্বর্ণ আমাকে দেনমোহর হিসেবে বিয়ের টাইমে দেওয়া হয়। এছাড়াও আমার মা, শ্বাশুড়িমা, শ্বশুর এবং ননাস থেকে আমি কিছু স্বর্ণ উপহার হিসেবে পাই। সব মিলিয়ে 7 ভরির মতো হবে।
২.  আমার বিয়ের পর আমার পক্ষের মানে আমার বাবার ও মায়ের  দিকের  আমার ফুফিরা চাচা মামা খালাও উপহার হিসেবে কিছু স্বর্ণ দেন। কিন্তু সবাই গিফটের প্যাকেট আমার হাজব্যান্ড এর হাতে  দেন। গিফটের মধ্যে ছিল চেই,   আংটি, কানের দুল। সে গয়না থেকে আমার হাজব্যান্ড কিছু বিক্রি করেছেন। আর দুই ভরির মত বাকি আছে।
৩.আমার মেয়ে হওয়ার পর  আমার মেয়ে উপহার হিসেবে এক ভরি থেকে কিছুটা বেশি স্বর্ণ পায়।
এখন আমার প্রশ্ন হল
১.  উপরে 2 নং এ উল্লেখিত গয়নার মালিক কি আমার হাজব্যান্ড হবেন? উনি মনে করেন সে গয়নার মালিক উনি।তাকে কি যাকাত দিতে হবে?উল্লেখ্য যে তিনি 6 লক্ষ টাকা ঋণ এ আছেন।যদি ঋণ রোজার মধ্যেই পরিষদ হয়ে যায় তাহলে বিধান কি হবে?
২.  আমাকে কি যাকাত দিতে হবে? উল্লেখ্য যে আমি উপার্জন করি না.  যেকোনো খরচের জন্য হাসবেন্ড এর উপর নির্ভরশীল.   এমতাবস্থায় যাকাত দিতে হলে আমি কিভাবে আদায় করব?
৩. মেয়ের উপহারের গয়নাগুলো কিভাবে হিসাব করব?

৪. হাসবেন্ড এবং ওয়াইফ এর উপরে কি যাকাত আলাদাভাবে ফরজ  হয়?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


শরীয়তের বিধান অনুযায়ী স্বর্ণের ক্ষেত্রে যাকাতের নিসাব হল বিশ মিসকাল। 
সুনানে আবু দাউদ ১/২২১; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক  হাদীস ৭০৭৭, ৭০৮২

আধুনিক হিসাবে সাড়ে সাত ভরি।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا بَكْرُ بْنُ خَلَفٍ وَمُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى قَالَا حَدَّثَنَا عُبَيْدُ اللهِ بْنُ مُوسَى أَنْبَأَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ إِسْمَعِيلَ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ وَاقِدٍ عَنْ ابْنِ عُمَرَ وَعَائِشَةَ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَأْخُذُ مِنْ كُلِّ عِشْرِينَ دِينَارًا فَصَاعِدًا نِصْفَ دِينَارٍ وَمِنْ الْأَرْبَعِينَ دِينَارًا دِينَارًا

ইবনু ‘উমার ও ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)  থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি বিশ দিনার বা তার চেয়ে কিছু বেশি হলে অর্ধ দিনার এবং চল্লিশ দিনারে এক দিনার (যাকাত) গ্রহণ করতেন।

ইবনে মাজাহ ১৭৯১ ইরওয়াহ ৮১৩।
দারাকুতনী ১৮৭৯, ১৮৯২।

সাড়ে ৫২ ভরি রুপা হলে তার উপর যাকাত ফরজ। 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عن أبي سعيد الْخُدْرِي رضي الله عنه قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : «ليس فيما دون خمس أَوَاقٍ صدقة، ولا فيما دون خمس ذَوْدٍ صدقة، ولا فيما دُونَ خمسة أَوْسُقٍ صدقة».  
[صحيح] - [متفق عليه]

আবূ সা‘ঈদ আল-খুদরী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “পাঁচ উকিয়ার কম রৌপ্যমুদ্রায় যাকাত নেই এবং পাঁচটি উটের কমের ওপর যাকাত নেই। পাঁচ ওয়াসাক এর কম শষ্যের ওপর যাকাত নেই।”
(বুখারী,মুসলিম)

শরীয়তের বিধান হলো যদি কাহারো কাছে সোনা-রুপা, টাকা-পয়সা কিংবা বাণিজ্য-দ্রব্য- এগুলোর কোনোটি পৃথকভাবে পূর্ণ  নিসাব পরিমাণ না থাকে, কিন্তু এসবের একাধিক সামগ্রী এ পরিমাণ রয়েছে, যা একত্র করলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমমূল্য বা তার চেয়ে বেশি হয় তাহলে এক্ষেত্রে সকল সম্পদ হিসাব করে যাকাত দিতে হবে।
(মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক হাদীস ৭০৬৬,৭০৮১; মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা ৬/৩৯৩)

আরো জানুনঃ  

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার ফুফু, চাচা মামা খালা  উপহার হিসেবে যে স্বর্ণ আপনার স্বামীর হাতে দিয়েছেন,এটির মালিক তারা কাকে বানিয়েছিলেন?

এটি আপনার ফুফু, চাচা মামা খালাকে জিজ্ঞাসা করুন।
যদি তারা বলে যে এটির মালিক তারা আপনাকেই বানিয়েছিলো, আপনার স্বামীর হাতে যে গিফটের প্যাকেট দিয়েছিলো,এটি স্রেফ আনুষ্ঠানিকতা মাত্র, তাহলে এর যাকাত আপনাকে দিতে হবে।

আর যদি তারা বলে যে এটির মালিক তারা আপনার স্বামীকে বানিয়েছিলো,আপনাকে নয়,তাহলে এর যাকাত আপনার স্বামীকে দিতে হবে।

সেক্ষেত্রে প্রশ্নের বিবরন মতে তার উপর যে ৬ লক্ষ টাকা ঋন আছে,এটি বাদ দিলে তার কাছে উক্ত স্বর্নের সমপরিমাণ মূল্য সহ কত টাকা থাকবে,যদি সাড়ে বায়ান্ন ভড়ি রুপার সমমূল্য বা তার চেয়ে বেশি হয়,সেক্ষেত্রে যাকাত আবশ্যক হবে।
নতুবা নয়।

আর যদি ৬ লক্ষ টাকার এই ঋন মাসিক বা বাৎসরিক কিস্তিতে শোধ করতে হয়,তাহলে সব ছুরতেই যাকাত আবশ্যক হবে।

বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে ঋন পরিশোধ হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে যদি সাড়ে বায়ান্ন ভড়ি রুপার সমমূল্য বা তার চেয়ে বেশি সম্পদ তার কাছে থাকে,সেক্ষেত্রে তার উপর যাকাত আবশ্যক হবে।

(০২)
আপনার উপর যাকাত ফরজ।
যাকাত আপনাকে দিতে হবে।

আপনি হাত খরচের সেই টাকা থেকেই যাকাত দিবেন,অথবা ঋন নিয়ে বা কোনো কিছু বিক্রয় করে যাকাত প্রদান করবেন।

(০৩)
এটির মালিক আপনার মেয়ে। 
প্রশ্নের বিবরণ মতে তার উপর যাকাত ফরজ হবেনা।

(০৪)
হ্যাঁ, আলাদা ভাবে ফরজ হয়। 
নামাজ রোযা যেমন তাদের উপর আলাদা ভাবে ফরজ,নেসাব পরিমান সম্পদের মালিক হলে যাকাতও আলাদা ভাবে ফরজ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...