আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
120 views
in পবিত্রতা (Purity) by (17 points)
edited by
আমি সুচীবায়ুগ্রস্থ। আমার বন্ধু প্রশ্রাব করে ইস্তিঞ্জা করে না। সে আমার কাছে এসেছিল লুংগি পড়ে। তার লুংগিতে আমি দেখি সামান্য ভেজার মত প্রশ্রাব লাগলে যেমন হয়। তবে, আমি ১০০% নিশ্চিত নয়। প্রবল ধারণা। তবে, আমি তাকে জিজ্ঞেস করেছি সে বলেছে কিছুক্ষণ পূর্বে সে প্রশ্রাব করেছে। এরপর সে তার লুংগির গুটিয়ে বসেছে। সেই স্থানের দিকে সে হাত দিয়েছিল। তবে, সেই স্থানেই হাত লেগেছে কি না আমি নিশ্চিত নয়। এরপর আমি ট্যাপ এ এসে মোবাইল পাক করি। কিন্তু, ডিসপ্লে পাক করতে ভুলে যায়। পাশাপাশি আমার মোবাইলের কাভার ধুয়ে ফেলি। এরপর ৫ মিনিট পর আমার মনে হলো যে মোবাইলের ডিস্প্লে পাক করিনি। তাই, আমি মোবাইলের গ্লাস খুলে ফেলে দেই। এখন ডিসপ্লে কি আমার কাভারের সাথে স্পর্শ হয়েছে কি না মনে করতে পারছি না। এক্ষেত্রে কি কাভার নাপাক ধরে নিবো? আবার মোবাইল ও কি তখন কাভারের সংস্পর্শ লেগেছে কি না তাও বলতে পারছি না। বিশেষ করে ভেজা অবস্থায়।
১. উপরের অবস্থায় আমার করণীয় কি?

২. যারা ইস্তিঞ্জা করে না তারা প্রায়ই ভেজা হাত লুংগিতে মুছে অনেক সময় সামনের দিকে মুছে যেখানে প্রশ্রাব লাগে মোবাইল স্পর্শ করে। এক্ষেত্রে কি করবো?

৩. আমার চাদর নাপাকি লাগার কারণে ৩ বার ধৌত করেছিলাম। কিন্তু, বালটির উপরের দিকে ধুয়েছিলাম কি না মনে করতে পারছি না। আমি সাধারণত বালটির উপরে ধৌত করি। এখন কি চাদর নাপাক ধরে নিবো?

৪. আমি টয়লেট এ গিয়েছিলাম। সেখানে বেশ মশা ছিল। আমার চুলেও লেগেছে। আমার চুল কি নাপাক? ভেজা হাত রাখলে নাপাক হবে?

1 Answer

0 votes
by (559,290 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


শরীয়তে নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত কোনো কিছুকে নাপাক বলার সুযোগ নেই।
যেটি নিম্নোক্ত হাদীস থেকে বুঝা যায়।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، قَالَا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، وَعَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ: شُكِيَ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم الرَّجُلُ يَجِدُ الشَّىْءَ فِي الصَّلَاةِ حَتَّى يُخَيَّلَ إِلَيْهِ فَقَالَ " لَا يَنْفَتِلُ حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَوْ يَجِدَ رِيحًا " . - صحيح : 

‘আব্বাদ ইবনু তামীম হতে তাঁর চাচার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অভিযোগ করল যে, কখনো সলাতের মধ্যে কিছু একটা সন্দেহ হয় যে, তার অযু হয়ত নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বললেন, (বায়ু নির্গত হওয়ার) শব্দ না শুনা কিংবা গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত সলাত ছাড়বে না।

বুখারী (অধ্যায়ঃ উযু, অনুঃ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহ বশতঃ উযু করতে হবে না, হাঃ ১৩৭), মুসলিম ৩৬২ (অধ্যায়ঃ হায়িয, অনুঃ পবিত্রতার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর উযু নষ্ট হওয়ার সন্দেহ হলেও ঐ অবস্থায় সালাত আদায় করা জায়িয,মিশকাতুল মাসাবিহ ৩০৬)

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বলেছেনঃ

ব্যাখ্যা: قَوْلُهٗ (حَتّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَو يَجِدَ رِيْحًا) (যতক্ষণ না সে বায়ু বের হওয়ার শব্দ বা নির্গত বায়ুর গন্ধ পাবে ততক্ষণ নামাজ ছেড়ে আসবে না)। এর অর্থ হলো যতক্ষণ না সে শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়া বা অন্য যে কোন পন্থায় তার বায়ু নির্গত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয় ততক্ষণ নামাজ পরিত্যাগ করবে না বা ছেড়ে আসবে না। তবে এতে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য শুধুমাত্র শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়াটিই শর্ত নয়।

এ হাদীস আরও প্রমাণ করে যে, শারী‘আতের কোন বিষয়ে সন্দেহের মাধ্যমে সুনিশ্চিত বিষয় বাতিল হয়ে যাবে না। অতএব যার সন্দেহ হবে বায়ু নির্গত হয়েছে কিনা তবে সে তার অজু ভঙ্গ না হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত থাকবে। নিশ্চিত না হাওয়া পর্যন্ত এ সন্দেহ তার কোন ক্ষতি করবে না। আর এটি অন্যান্য বিষয়েও সমভাবে প্রযোজ্য।

আল্লামা ইবনে নুজাইম রাহ,লিখেন,
اﻟْﻘَﺎﻋِﺪَﺓُ اﻟﺜَّﺎﻟِﺜَﺔُ: اﻟْﻴَﻘِﻴﻦُ ﻻَ ﻳَﺰُﻭﻝُ ﺑِﺎﻟﺸَّﻚِّ
ﻭَﺩَﻟِﻴﻠُﻬَﺎ ﻣَﺎ ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻣَﺮْﻓُﻮﻋًﺎ {ﺇﺫَا ﻭَﺟَﺪَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻓِﻲ ﺑَﻄْﻨِﻪِ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﻓَﺄَﺷْﻜَﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺃَﺧَﺮَﺝَ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْءٌ ﺃَﻡْ ﻻَ ﻓَﻼَ ﻳَﺨْﺮُﺟَﻦَّ ﻣِﻦْ اﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺣَﺘَّﻰ
ﻳَﺴْﻤَﻊَ ﺻَﻮْﺗًﺎ، ﺃَﻭْ ﻳَﺠِﺪَ ﺭِﻳﺤًﺎ} 

ভাবার্থঃতৃতীয় উসূল,ঈয়াক্বিন(দৃঢ় বিশ্বাস)সন্দের দ্বারা খতম হয় না।[তথা কারো কোনো বিষয় সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে, সে বিষয় সম্পর্কে বিপরিত কোনো সন্দেহের উদ্রেক হলে পূর্ব বিশ্বাসের কোনো ক্ষতি হবে না।অর্থাৎ নতুন করে জন্ম নেয়া সন্দেহ অগ্রহণযোগ্য ]
মুসলিম শরীফের সনদে বর্ণিত হযরত আবু-হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত হাদীস তার  উজ্জল দৃষ্টান্ত।
হাদীসটি এই, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি কারো তার পায়ুপথে কিছু বের হওয়ার সন্দেহ হয়।এবং উক্ত বের হওয়া না হওয়া নিয়ে সে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায়।তাহলে সে যেন মসজিদ থেকে (অজু করার নিমিত্তে) বের না হয়,যতক্ষণ না সে বায়ুর আওয়াজ শুনছে বা এর দুর্গন্ধ তার নাকে আসছে।(আল-আশবাহ ওয়ান-নাযাইর;১/৪৭)............ এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/293

★সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
(০১)
পরিপূর্ণ ইয়াকিন বিশ্বাস ছাড়া হাত,শরীর নাপাক হবে না। 
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার সেই বন্ধুর হাত নাপাক হওয়ার ব্যপারে আপনি যেহেতু নিশ্চিত নন,সুতরাং এক্ষেত্রে ট্যাপ,মোবাইল,ডিসপ্লে কোনো কিছুই পাক করার প্রয়োজনীয়তা নেই।
এগুলো আপনার অহেতুক সন্দেহ মাত্র। 

(০২)
এক্ষেত্রে তাদের হাত আপনার শরীরে বা কাপড়ে বা অন্য কোথাও স্পর্শ লাগলে দেখবেন যে সেখান হতে পেশাবের গন্ধ বা চিন্হ পাওয়া যায় কিনা?

যদি পেশাবের গন্ধ বা চিন্হ পাওয়া যায়,তাহলে সেই স্থানকে/বস্তুকে নাপাক ধরবেন।
আর পেশাবের গন্ধ বা চিন্হ পাওয়া না গেলে অহেতুক সন্দেহ না করে পাক ধরবেন।

(০৩)
আপনার চাদরকে পাক হিসেবেই ধরবেন।

(০৪)
না,এতে আপনার চুল নাপাক হয়ে যায়নি। 
ভেজা হাত রাখলে নাপাক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...