আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
116 views
in ওয়াসওয়াসা by (7 points)
edited by
(১) এমনিতেই মনের ভিতর আল্লাহ, রাসুল (সা:), কোরআন নিয়ে মনে বিভিন্ন ধরনের আজে বাজে বা নোংরা চিন্তা আসে। আজ বাসায় পরিবারের সাথে একটু কথা কাটাকাটির শেষে বসে থাকা অবস্থায় আমার মনের মাঝে এসেছে যে, "আল্লাহ বলে কেউ নেই"।
এমন কথা আমার মাঝে মধ্যেই মনে আসে। এজন্য কি ঈমান চলে যাবে শায়েখ??

(২) নামাজ পর দোয়া করার সময় মনে মনে বলছিলাম যে,  "হে আল্লাহ তুমি আমার ভাল কাজ করার তাওফিক দাও। তুমি ছাড়া আমার কিছু করার ক্ষমতা নেই। কোন ভাল কাজ করার ক্ষমতা নেই "।
এই কথাগুলি বলার পর আমি কনফিউশনে পড়ে গেছি,  আর না পাচ্ছি  বলতে যে, আল্লাহ তুমি ছাড়া আমার খারাপ কাজ করার ও ক্ষমতা নেই।
অথবা, খারাপ কাজ আমি আমার নিজের ক্ষমতায় করি,
এমন কথা ও বলতে পারছিলাম না।

মনে হচ্ছিল আমি আল্লাহকে দোষারোপ করে ফেলবো খারাপ কাজ করার ক্ষমতা আল্লাহ দেবার কারনে।
আবার মনে হচ্ছে, আমি খারাপ কাজ নিজের ক্ষমতায় করি এটাও তো বলতে পারবো না। এমন কনফিউশন মনে আসছিল।
এতে কি আমার ঈমানে কোন সমস্যা হবে শায়েখ?
এবং এই কথাগুলি কিভাবে বলা যাবে?

(৩) আমার তালাকের মারাত্তক ওয়াসওয়াসা আছে। রাতে ঘুমের ভিতরে তালাক নিয়ে স্বপ্ন দেখার সময় হঠাৎ ঘুম ভেংগে যায়। ঘুম ভেংগে যাবার সময় আমি কি কোন কেনায়া বাক্য বলে উঠলাম না কোন কেনায়া বাক্য মনে এসেছিল সঠিক মনে করতে পারছি না। সম্ভবত মনে এসেছিল উচ্চারন করিনি। কি কথা মনে এসেছিল সেটাও আমার মনে নেই। মাঝে মাঝে ঘুমের ভিতরে তালাক নিয়ে স্বপ্ন ও বিভিন্ন রকমের কল্পনাও আসে আমার। এতে কি কোন সমস্যা হবে শায়েখ?

(৪) কাদিয়ানিদের বিষয়ে একটা হুজুরের বলছিলেন যে, তাদের ভিতর একজন নিজেকে নবি (সা:) দাবি করেছিলেন। হুজুর "সা:" যখন বললো তখন মনে হচ্ছিল আমিও (সা:) উচ্চারন করে ফেলবো। এবং কাদিয়ানিদের নতুন নবি দাবি করা লোকটিকে (সা:) বলে মেনে নিলাম। এমন মনে হচ্ছিল আমার। এতে কি আমার ঈমান চলে যাবে শায়েখ?

(৫) আমার ছোট মেয়ে তার কোলে আমাকে শুতে বললে আমার মনে হয় আমি আমার মেয়েকে সেজদা করছি।

মেয়েকে আকাশের চাদ দেখালে মনে হয় আমি চাদকে সেজদা করছি। এতে কি আমার ঈমান চলে যাবে শায়েখ??

(৬) আমার এক বন্ধু কালো যাদু নিয়ে কথা বলতে বলতে বললো যে,  শয়তান মানুষের বাবা মাকে জীবিত করবে। আরো অনেক ধরনের কথা বলছিল।আর আমি "হুম হুম" করছিলাম। আমার বন্ধু ইসলামিক মন মাইন্ডের। তখনি আমার মনে হলো যে,  শয়তানের তো মানুষকে জীবিত করার ক্ষমতা নেই। মানুষ জিবিত করার ক্ষমতা তো একমাএ আল্লাহর।আর আমিতো "হুম" বলে ফেললাম। এজন্য কি আমার ঈমান চলে যাবে শায়েখ??

(৭) আমি ইসলামকে ভালবাসি। এটাই সত্য ধর্ম,এতে কোন সন্দেহ নাই। আমার ওয়াসওয়াসা থাকার কারনে শুধু মনে ঈমান চলে গেল কিনা ভেবে সন্দেহ হয়। ইসলামিক একটা বিষয় সম্পর্কে আমার কিছু জানার ভুল থাকায় আমার একটু মনে খারাপ ফিল হচ্ছিল। তাই ইসলাম সম্পর্কে বন্ধুর সাথে কথা বলার সময় আমি বললাম যে, আমরা যে ইসলাম মানছি তা ভুল।

একথা বলার মানে হচ্ছে যে, যেহেতু আমার একটা বিষয়ে জানার ভুল আছে, তাই আরো কেউ ইসলাম মানতে গিয়ে না জানার জন্য অনেক ভুল করছে। সবাই ভুল করছে বলাতে আমার একটু শান্তি লাগবে তাই বলা।

এছাড়া, ইসলাম ধর্ম ভুল সেটা বলার উদ্দেশ্য ছিলনা।
এজন্য কি আমার ঈমান চলে যাবে শায়েখ??

1 Answer

0 votes
by (679,160 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন,

 يَأْتِي الشَّيْطَانُ أَحَدَكُمْ ، فَيَقُولَ : مَنْ خَلَقَ كَذَا وَكَذَا ؟ حَتَّى يَقُولَ لَهُ : مَنْ خَلَقَ رَبَّكَ ؟ فَإِذَا بَلَغَ ذَلِكَ ، فَلْيَسْتَعِذْ بِاللَّهِ وَلْيَنْتَهِ 
শয়তান তোমাদের কারো নিকট আসে এবং বলে, এটা কে সৃষ্টি করেছে, ওটা কে সৃষ্টি করেছে? পরিশেষে এ প্রশ্নও করে, তোমার রবকে কে সৃষ্টি করেছে? এ পর্যায়ে পৌঁছলে তোমরা আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা কর এবং এ ধরণের ভাবনা থেকে বিরত হও। ( বুখারী ৩২৭ )

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: جَاءَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَسَأَلُوهُ: إِنَّا نَجِدُ فِي أَنْفُسِنَا مَا يَتَعَاظَمُ أَحَدُنَا أَنْ يَتَكَلَّمَ بِهِ، قَالَ: وَقَدْ وَجَدْتُمُوهُ؟ قَالُوا: نَعَمْ، قَالَ: ذَاكَ صَرِيحُ الْإِيمَانِ.

সারমর্মঃ
একবার সাহাবায়ে কেরমের একদল রাসূলুল্লাহ ﷺ -এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা আমাদের অন্তরে কখনো কখনো এমন বিষয় অনুভব করি, যা মুখ দিয়ে উচ্চারণ করা আমাদের কাছে খুব কঠিন মনে হয়। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, সত্যিই কি তোমরা এরকম পেয়ে থাক? তাঁরা বললেন হ্যাঁ, আমরা এরকম অনুভব করে থাকি। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, ذَاكَ صَرِيحُ الْإِيمَانِ এটি তোমাদের ঈমানের স্পষ্ট প্রমাণ। (মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, অনুচ্ছেদ: অন্তরের ওয়াসওয়াসা)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনার মনে যে এসব উল্টা পাল্টা আজে বাজে কথা চলে আসে,প্রশ্নে উল্লেখিত যাবতীয় সব বিষয় শয়তানের ওয়াসওয়াসা। 
এর দরুন আপনার ঈমান চলে যাবেনা।

এক্ষেত্রে করনীয় সম্পর্কে জানুনঃ- 

(০২)
এতে আপনার ঈমানে কোন সমস্যা হবেনা।

এই কথাগুলি এভাবে বলা যাবে,যে হে আল্লাহ নফস ও শয়তানের ওয়াসওয়াসায় পড়ে আমি গুনাহ করে ফেলি,আপনি আমার গুনাহ মাফ করে দিন।

(০৩)
এতে কোনো সমস্যা হবেনা।

(০৪)
এতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা।

(০৫)
এতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা।

(০৬)
অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের দরুন আপনার ঈমান চলে যাবেনা।

(০৭)
প্রশ্নের বিবরণ মতে এতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...