আসসালামু আলাইকুম হুজুর।
(১) নামাজের ভিতরে মনে হলো যে, তাশাহুদে আংগুল ইশারার ব্যাপারে ভালভাবে জানবো বুঝবো তারপর আংগুল ইশারা করবো।
এটা মনে আসাতে কি ঈমানের কোন ক্ষতি হবে??
(২) একটা হুজুর তার ওয়াজে বললেন যে, "মানুষের চাদে যাওয়া ভুল, সূর্যের সাইজ মাপলো কিভাবে! এসব মিথ্যা কথা।
কোরআনে বলা আছে, মানুষ পৃথিবীর বাইরের খবর জানতে পারবে না"।
শায়েখ, আসলেই কি কোরআনে এরকম বলা আছে?
মনে সন্দেহ আসাতে প্রশ্ন করলাম, এতে কি আমার ঈমানের ক্ষতি হবে শায়েখ??
(৩) একটা মিষ্টির দোকানে গেলে সেখানে কিছু ভিক্ষুক লোক ভিক্ষা চাই। সেদিন আমি দোকানে থেকে বেরিয়ে এসে মটরসাইকেলে উঠার সময় মনে হলো কোন ভিক্ষুক পিছন থেকে আমার দিকে আসছে। আমি চাচ্ছিলাম না যে কোন ভিক্ষুক আমার কাছে টাকা চাক। এজন্য আমি দ্রুত গাড়ি স্টার্ট করে চলে আসি। এজন্য কি আমার গুনাহ হবে শায়েখ??
(৪) বাইক মিস্তিরিকে বললাম যে, বাল্ব কয়দিন চলবে? এটা বলার পরপরি আমার মনে হলো যে, আমি মনে হয় তাকে গায়েব জিগ্গাসা করলাম। কারন, বাল্ব কয়দিন চলবে সেটা একমাএ আল্লাহ জানেন। এজন্য কি আমার ঈমানে কোন সমস্যা হবে শায়েখ?
(৫) আমার ওয়াসওয়াসা আছে। কোন বই পড়তে গেলে মনে হয় আমি মনে হয় এই বইকে কোরআনের থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ন মনে করছি। তাই কোরআন না পড়ে এই বই পড়ছি। এমন মনে হয়। এখন এমন চিন্তা বাদ দিয়ে যদি অন্য কোন বই পড়ি তাহলে কি আমার ঈমান চলে যাবে শায়েখ??
(৬) কয়দিন থেকে মনে হচ্ছে যে, নবি (সা:) কে অনুকরন করতে হবে। এবং শুধু আল্লাহকে অনুশরন করতে হবে। এমন মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে, অনুশরন মানে তো স্বরন করা, আর স্বরন শুধু তো আল্লাহকে করা উচিত।
নবি (সা:) কে অনুশরন ও অনুকরন করতে হবে এমন কথা বলা যাবে কি শায়েখ?
এমন বিষয় মনে হওয়াতে কি আমার ঈমান চলে যাবে শায়েখ?
(৭) একটা টেলিগ্রাম চ্যানেল গ্রুপে ইসলামিক পিডিএফ শিয়ার করে। আমি সেগুলা ডাওনলোড করে পড়ি। এটা কি আমার জন্য যায়েজ হবে?
(৮) আমার মনে আল্লাহ, রাসুল(সা:) ও কোরআন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের খারাপ চিন্তা আসে। আজকে এসব বিষয় মনে হওয়াতে আমার মনে কোরআনকে অবমাননাকর একটা চিন্তা আসলো আর মনে হলো যে, এত সমস্যা না হয়ে যদি এভাবে কোরআন অবমাননা করতাম তাহলে ভাল হতো। এরকম মনে ভিতর আসার পরপরি আমার মনে হতে থাকে যে,এ আমি কি ভাবছি। এতে কি আমার ঈমান চলে যাবে শায়েখ??
(৯) আমার এক বন্ধু আছে যার সাথে আমি মাঝে মধ্যেই ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা করি। তাই গত শুক্রবার আমার বন্ধু যাদু করা নিয়ে কথা বলছিল। এবং এক মহিলা যে কিনা মুসলমানদের যাদু করতে পারে না সেই বিষয়ে ইউটিউবে আমাকে একটা ভিডিও দেখাচ্ছিল। যাদুর বিষয়ে আমি বললাম যে, হ্যা যাদু সত্যা, ইসলামে এর শাস্তি মিত্যুদন্ড। তারপর কথার বলার এক পর্যায় আমার বন্ধু বললো যে, শয়তান মানুষের বাবা মাকে জীবিত করবে। আরো অনেক ধরনের কথা বলছিল।আর আমি "হুম হুম" করছিলাম। তখনি আমার মনে হলো যে, শয়তানের তো মানুষকে জীবিত করার ক্ষমতা নেই। মানুষ জীবিত করার ক্ষমতা তো একমাএ আল্লাহর। আর আমিতো "হুম" বলে ফেললাম। এরপর আমার বন্ধু ফেসবুকের মেটাভার্সে মৃত কারো ইনফরমেশন দিলে তাকে আর্টিফিশিয়ালভাবে বানিয়ে দেবে সেসব বলছিল। পরবর্তিতে আমার মনে শুধু আসছে যে, আমার বন্ধু কি শয়তান মানুষকে জিবিত করতে পারবে এটা কি উদ্দেশ্য নিয়ে বললো?
আবার মনে হচ্ছে যে , দাজ্জাল ও তো শয়তান। তাকে তো মানুষ জীবিত করার ক্ষমতা আল্লাহ দিবেন। তাহলে কি আমার বন্ধু শয়তান বলতে দাজ্জালকে বোঝালো?
এমন চিন্তা মাথায় আসছে। কিন্তু "শয়তান মানুষকে জীবিত করতে পারবে" এমন কথায় "হুম" বলার জন্য কি আমি ঈমানহারা হয়ে যাবো শায়েখ??
(১০) এখন মাঝে মাঝে "শয়তান মানুষকে জিবিত করতে পারবে" শব্দটি মনে আসা মাএ মনে হচ্ছে আমি "হুম" বলে ফেলবো। আবার কখনো কখনো সন্দেহ হচ্ছে শব্দটি মনে আসার পর "হুম" বলে ফেললাম কিনা। আমার ওয়াসওয়াসার জন্য মনে যখনি কোন খারাপ চিন্তা আসে আমি তখনি মুখ দিয়ে একটা সাউন্ড করে ফেলি , অনেকটা শরিল খারাপ হলে মানুষ যেমন করে আরকি। "শয়তান মানুষকে জিবিত করতে পারবে " এমন কথা মনে আসার পর যদি সেরকম সাউন্ড ও করি, তবুও মনে হচ্ছে আমি "হুম" বললাম মনে হয়।
এতে কি ঈমান চলে যাবে শায়েখ??
(১১) আমার বিয়ের বয়স ৭ বছরের মত হবে। ওয়াসওয়াসার জন্য এখন বিয়ের আগে ঘটে যাওয়া বা অনেক আগে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন কথা মনে আসছে, আর মনে হচ্ছে আমার বিবাহিত সম্পর্ক মনে হয় আর বহাল নেই । যেমন : বিয়ের আগে আমি যখন চাকরিতে ঢুকি তখন আমি অন্য একজনের সার্টিফিকেট দিয়ে কোম্পানিতে চাকরি নি। এটা তো প্রতারনা। এখন মনে হচ্ছে আমি বিয়ের আগে প্রতারনা করার জন্য আমার ঈমান চলে গিয়েছিল। আর তার এক বছর পর আমি বিয়ে করেছি, আমার বিয়ে মনে হয় যায়েজ হয়নি। এমন কথা মনে আসছে। এমন চিন্তা করা কি আমার উচিত হচ্ছে শায়েখ??