আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
133 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (7 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম হুজুর।

১)একদিন নামাজে সিজদায় গিয়ে মনে হচ্ছে আমি আমার বন্ধুকে সিজদা করছি। এমন ভাবনা আমার প্রায়ই আসে। তারপর আর নামাজে মনোযোগ দিতে পারছিলাম না। খুবই খারাপ লাগছিল।  এছাড়াও নামাজের ভিতরে আমার অনেক শিরিকি ও কুফুরি চিন্তা ভাবনাও আসে। এসব খারাপ চিন্তা ভাবনা আসলেই আমি নামাজের ভিতর আনইউজুয়াল এ্যাকটিভিটি করি। সিজদায় গিয়ে হাতের আংগুল দিয়ে মাথায় চাপ দি। ডান হাত দিয়ে বাম হাতে চাপ দি। হাত মুঠো মেরে ফেলি। তাজবিহ পড়া জোরে হয়ে যায়। এসবের জন্য কি আমার ঈমান চলে যাবে শায়েখ??

২) আমার এক বন্ধু আছে যার সাথে আমি মাঝে মধ্যেই ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ আলোচনা করি। তাই গত শুক্রবার আমার বন্ধু যাদু করা নিয়ে কথা বলছিল। এবং এক মহিলা যে কিনা মুসলমানদের যাদু করতে পারে না সেই বিষয়ে ইউটিউবে আমাকে একটা ভিডিও দেখাচ্ছিল। যাদুর বিষয়ে আমি বললাম যে, হ্যা যাদু সত্যা,  ইসলামে এর শাস্তি মিত্যুদন্ড। তারপর কথার বলার এক পর্যায় আমার বন্ধু বললো যে, শয়তান মানুষের বাবা মাকে জীবিত করবে। আরো অনেক ধরনের কথা বলছিল।আর আমি "হুম হুম" করছিলাম। তখনি আমার মনে হলো যে,  শয়তানের তো মানুষকে জীবিত করার ক্ষমতা নেই। মানুষ জীবিত করার ক্ষমতা তো একমাএ আল্লাহর। আর আমিতো "হুম" বলে ফেললাম। এরপর আমার বন্ধু ফেসবুকের মেটাভার্সে মৃত কারো ইনফরমেশন দিলে তাকে আর্টিফিশিয়ালভাবে বানিয়ে দেবে সেসব বলছিল। পরবর্তিতে আমার মনে শুধু আসছে যে, আমার বন্ধু কি শয়তান মানুষকে জিবিত  করতে পারবে এটা কি উদ্দেশ্য নিয়ে বললো?

আবার মনে হচ্ছে যে , দাজ্জাল ও তো শয়তান। তাকে তো মানুষ জীবিত করার ক্ষমতা আল্লাহ দিবেন।  তাহলে কি আমার বন্ধু শয়তান বলতে দাজ্জালকে বোঝালো?

এমন চিন্তা মাথায় আসছে। কিন্তু "শয়তান মানুষকে জীবিত করতে পারবে" এমন কথায় "হুম" বলার জন্য কি আমি ঈমানহারা হয়ে যাবো শায়েখ??

1 Answer

0 votes
by (58,500 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/55343/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

এমন ভাবে নামাজ পড়তে হবে যেনো আমি আল্লাহ তায়ালার সামনে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ছি। আর আল্লাহ তায়ালা নামাজ পড়া দেখছেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন,

قَالَ مَا الإِحْسَانُ قَالَ " أَنْ تَعْبُدَ اللَّهَ كَأَنَّكَ تَرَاهُ، فَإِنْ لَمْ تَكُنْ تَرَاهُ فَإِنَّهُ يَرَاكَ ".

‘আল্লাহর ইবাদত করো এমনভাবে যেন তাঁকে তুমি দেখতে পাচ্ছ। আর যদি দেখতে না পাও, তবে তিনি যেন তোমাকে দেখছেন। ’ (বুখারি, হাদিস : ৫০; মুসলিম, হাদিস : ৮)

 

অন্য এক হাদীসে এসেছে-

ثُمَّ قَالَ مَنْ تَوَضَّأَ وُضُوئِي هَذَا ثُمَّ يُصَلِّي رَكْعَتَيْنِ لاَ يُحَدِّثُ نَفْسَهُ فِيهِمَا بِشَيْءٍ إِلاَّ غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ

রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে সুন্দরভাবে অজু করে, অতঃপর মন ও শরীর একত্র করে একাগ্রতার সঙ্গে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে (অন্য বর্ণনায় এসেছে যে নামাজে ওয়াসওয়াসা স্থান পায় না) তার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়)। ’ (নাসাঈ, হাদিস : ১৫১; বুখারি, হাদিস : ১৯৩৪)

 

কিরাআত, তাসবিহ, তাকবির, তাশাহুদ, দরুদ ইত্যাদি পড়ার সময় নিজের কানে আসে, এমন আওয়াজে জিহবা নাড়িয়ে উচ্চারণ করুন।

নামাজে ‘হুজুরে দিল’ বা একাগ্র থাকা; এটি নামাজের প্রাণ। এমনভাবে নামাজ পড়তে হবে যেন আল্লাহ আমাকে দেখছেন।

নামাজের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এই কল্পনা ধরে রাখার অনুশীলন করুন যে ‘আল্লাহ আমাকে দেখছেন’। এভাবে অনুশীলনের মাধ্যমে নামাজ শেষ করার চেষ্টা অব্যাহত রাখুন।

নামাজে যা কিছু পাঠ করা হয়, তা বিশুদ্ধ উচ্চারণে পড়ার চেষ্টা করুন। এটি অন্তরের উপস্থিতিকে আরো দৃঢ় করে।

নামাজে  দাঁড়িয়ে আল্লাহ তাআলাকে ভয় করুন। ভাবুন, এই নামাজই হয়তো বা আপনার জীবনের শেষ নামাজ।

 

https://ifatwa.info/3012/?show=3012#q3012 নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

কুফরী বাক্যর অর্থ জানা নেই এবং বলার ইচ্ছে নেই তবে মুখ ফসকে কোনো কুফরী বাক্য মুখ থেকে উচ্ছারণ হয়ে গেছে, এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কাফির হবে না। যেমন হযরত আবুযর রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,

عَنْ أَبِي ذَرٍّ الْغِفَارِيِّ رضي الله عنه قَالَ :قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :(إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ وَالنِّسْيَانَ وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ)

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা আমার উম্মত থেকে ভূল ভ্রান্তি এবং নিরুপায় মূলক কাজ কে ক্ষমা করে দিয়েছেন। (সুনানে ইবনে মা'জা-২০৪৩)

 

এতে ঈমান চলে যাবে না। কারণ, কুফরীর চিন্তা করার দ্বারাই কুফরী হয়ে যায় না। যদি না তা কাজে বা কথায় প্রতিফলিত না করা হয়।

 

সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার ঈমান চলে যায়নি। তবে আপনি এসব চিন্তা ভাবনা থেকে যথাসাধ্য বিরত থাকার চেষ্টা করবেন এবং শয়তানের এমন কুমন্ত্রণাকে এড়িয়ে চলার চলবেন। কারণ, ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. না, এসবের কারণে আপনার ঈমান চলে যাবে না। তবে আপনি একাগ্রতার সাথে নামাজ পড়ার চেষ্টা করুন।

২. না, এতে আপনার ঈমান চলে যাবে না । তাই পেরেশানীর কোনো কারণ নেই। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...