আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
92 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহী ওয়াবারকাতুহ।
১. হায়েজকালীন সময়ে আমি কি মাসজিদুল হারামে প্রবেশ করতে পারবো এবং কাবার সামনে বসে কাবার দিকে তাকিয়ে থাকতে পারবো???

এতে কি আমার গুনাহ হবে???

২. আমরা উমরাহ করতে মক্কায় এসেছি। প্লেনে থাকাকালীন মিকাত অতিক্রম এর পূর্বেই পরিষ্কার কাপড় পড়ে, ওযু করে দু রাকাত ইহরাম এর নিয়তে সালাত পড়ে নিয়ত করে নিই। সেই সালাত ও আমি ইশারায় পড়ি, কিন্তু মনে শান্তি লাগছিলো না ইশারায় পড়ে।
তো আমার বোন ইহরাম না বাধায় আমরা মক্কায় পৌঁছে মাসজিদুল আইশা তে গিয়ে আবার নতুন করে ইহরাম বেধে আসি। এখন প্রথম বার প্লেনে ইহরাম বাধার পর, চেহারায় নেকাব এর কাপড় লাগে, আমি তাই মনে মনে আগের ইহরাম বাধা ক্যান্সেল করে,নতুন করে আইশা মাসজিদে গিয়ে ইহরাম বাধার আশায় থেকে ইহরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজগুলো থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করিনি।


আমি এখন খুবই কনফিউজড নিজের কাজে,
একে তো প্রথমবারের ইহরাম এর নিয়ত বাদ দিয়ে নতুন করে আইশা মাসজিদে গিয়ে ইহরাম বাধাটা ঠিক হলো কিনা?

আবার বাংলাদেশ থেকে সফর করে,আইশা মাসজিদে ইহরাম বাধার কোনো নিয়ম আছে কিনা এই নিয়ে সন্দেহ, আইধা মসজিদ আমাদের জন্য মিকাত হবে কিনা তাও সঠিক জানিনা, আসলে আমাদের  কোনো বিজ্ঞ পথপ্রদর্শক ছিল না, আমার জেঠা আমাদের যেভাবে বলেন করতে আমরা সেভাবেই করি, যেহেতু আমরা সঠিকটা জানিনা, জানার চেষ্টা ও করেনি ফ্যামিলি সঠিক মানুষের কাছ থেকে।আমার জেঠার জানার উপর আমার আস্থা ও কম।

1 Answer

0 votes
by (682,440 points)
edited by

জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
হায়েজকালীন সময়ে আপনি মাসজিদুল হারামে প্রবেশ করতে পারবেননা,এবং মসজিদে হারামে প্রবেশ করে কাবার সামনে বসে কাবার দিকে তাকিয়ে থাকতে পারবেননা।
এতে গুনাহ হবে।

হ্যাঁ যদি মসজিদে হারামের বাহিরে থেকে কোনো বিল্ডিং বা পাহাড় থেকে কা'বা দেখতে পারলে সেখান হতে কাবার দিকে তাকিয়ে থাকতে পারবেন।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: خَرَجْنَا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا نَذْكُرُ إِلَّا الْحَجَّ فَلَمَّا كُنَّا بِسَرِفَ طَمِثْتُ فَدَخَلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَنَا أَبْكِي فَقَالَ: «لَعَلَّكِ نَفِسْتِ؟» قُلْتُ: نَعَمْ قَالَ: «فَإِنَّ ذَلِكِ شَيْءٌ كَتَبَهُ اللَّهُ عَلَى بَنَاتِ آدَمَ فَافْعَلِي مَا يَفْعَلُ الْحَاجُّ غَيْرَ أَنْ لَا تَطُوفِي بِالْبَيْتِ حَتَّى تَطْهُرِي»

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে (হজের উদ্দেশে) রওনা হলাম। তখন আমরা হজ্জ/হজ ছাড়া অন্য কিছুর (‘উমরার) তালবিয়াহ্ পড়তাম না। আমরা ‘সারিফ’ নামক স্থানে পৌঁছলে আমার ঋতুস্রাব শুরু হয়ে গেলো। এমন সময় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে আসলেন। আমি হজ্জ/হজ করতে পারবো না বিধায় কাঁদছিলাম। (কাঁদতে দেখে) তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, মনে হয় তোমার ঋতুস্রাব শুরু হয়েছে। আমি বললাম, হ্যাঁ! তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, এটা এমন বিষয় যা আল্লাহ তা‘আলা আদম-কন্যাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন। তাই হাজীগণ যা করে তুমিও তা করতে থাকো, তবে পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তুমি বায়তুল্লাহর তাওয়াফ থেকে বিরত থাকো।
(বুখারী ৩০৫, মুসলিম ১২১১, আহমাদ ২৬৩৪৪,মিশকাত ২৫৭২)


حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الْوَاحِدِ بْنُ زِيَادٍ، حَدَّثَنَا الأَفْلَتُ بْنُ خَلِيفَةَ، قَالَ حَدَّثَتْنِي جَسْرَةُ بِنْتُ دِجَاجَةَ، قَالَتْ سَمِعْتُ عَائِشَةَ، رضى الله عنها تَقُولُ جَاءَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم وَوُجُوهُ بُيُوتِ أَصْحَابِهِ شَارِعَةٌ فِي الْمَسْجِدِ فَقَالَ " وَجِّهُوا هَذِهِ الْبُيُوتَ عَنِ الْمَسْجِدِ " . ثُمَّ دَخَلَ النَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم وَلَمْ يَصْنَعِ الْقَوْمُ شَيْئًا رَجَاءَ أَنْ تَنْزِلَ فِيهِمْ رُخْصَةٌ فَخَرَجَ إِلَيْهِمْ بَعْدُ فَقَالَ " وَجِّهُوا هَذِهِ الْبُيُوتَ عَنِ الْمَسْجِدِ فَإِنِّي لَا أُحِلُّ الْمَسْجِدَ لِحَائِضٍ وَلَا جُنُبٍ "

জাসরাহ বিনতু দিজাজাহ সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-কে বলতে শুনেছি, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে দেখলেন, সহাবাদের ঘরের দরজা মসজিদের দিকে ফেরানো। (কেননা তারা মসজিদের ভিতর দিয়েই যাতায়াত করতেন)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এসব ঘরের দরজা মাসজিদ হতে অন্যদিকে ফিরিয়ে নাও। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুনরায় এসে দেখলেন, লোকেরা কিছুই করেননি, এ প্রত্যাশায় যে, আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের ব্যাপারে কোন অনুমতি নাযিল হয় কিনা। অতঃপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হয়ে তাদের আবারো বললেনঃ এসব ঘরের দরজা মাসজিদ হতে অন্যদিকে ফিরিয়ে নাও। কারণ ঋতুবতী মহিলা ও নাপাক ব্যক্তির জন্য মসজিদে যাতায়াত আমি হালাল মনে করি না।

(আবু দাউদ ২৩২.আল-জামি‘উস সাগীর ৬১১৭, ইরওয়া ১৯৩,ইবনু খুযাইমাহ (হাঃ ১৩২৭), বায়হাক্বী ‘সুনানুল কুবরা’ (২/৪৪২)

(০২)
যদি কোনো ব্যাক্তি বাহিরের দেশ থেকে মক্কায় ওমরাহ পালনের জন্য যায়,এবং মিকাত থেকে ইহরাম না বাধে,বরং মক্কায় গিয়ে মসজিদে আয়েশায় পৌছে ইহরাম বেধে থাকে।
তাহলে যতক্ষন পর্যন্ত সে ওমরাহ এর কাজ সম্পন্ন না করবে,তার উপর জরুরি হলো মদিনা মুনাওয়ারা অথবা তায়েফের মিকাতে গিয়ে সেখানে ইহরামের নিয়ত করে তালবিয়াহ পড়তে পড়তে ফিরে আসবে।

যদি সে এমনটি না করে,আর ওমরাহ এর কাজ সম্পাদন করে,তাহলে তার উপর একটি দম আবশ্যক হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনাদের জন্য এভাবে এক সফরের প্রথম উমরার জন্য মসজিদে আঈশাতে গিয়ে ইহরাম বাধা ঠিক হয়নি।

আপনি যদি মসজিদে আঈশা হতে ইহরাম বাধার আগে ইহরাম না খুলে থাকেন,সেক্ষেত্রে আপনার আগের ইহরামই থাকবে,আর আপনার বোন যেহেতু মিকাতের আগে ইহরাম বাধেনি,সরাসরি মসজিদে আঈশাতে গিয়ে ইহরাম বাধার দরুন তার উপর আবশ্যক হলো যতক্ষন পর্যন্ত সে ওমরাহ এর কাজ সম্পন্ন না করবে,সে মদিনা মুনাওয়ারা অথবা তায়েফের মিকাতে গিয়ে সেখানে ইহরামের নিয়ত করে তালবিয়াহ পড়তে পড়তে ফিরে আসবে।

যদি সে এমনটি না করে,আর এভাবেই মসজিদে আঈশার ইহরামের দ্বারা ওমরাহ এর কাজ সম্পাদন করে,তাহলে তার উপর একটি দম আবশ্যক হবে।

আপনি যদি মসজিদে আঈশা যাওয়ার আগে বা সেখানে গিয়ে ইহরাম বাধার সময় আগের ইহরাম খুলে থাকেন,সেক্ষেত্রে আপনার হুকুম আপনার বোনের মতোই হবে।
যাহা উপরে উল্লেখ রয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...