আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
81 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (10 points)

আসসালামুয়ালাইকুম ওস্তাজ,

আমার প্রশ্নটি ইট ভাটায় বিনিয়োগ প্রসঙ্গে।

ওস্তাজ, আমাদের এলাকায় অনেক ইটের ভাটা রয়েছে। এসব ভাটায় প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করতে হয় এবং ইট ভাটার মালিক্ গণ নিম্নোক্তো চুক্তিতে অন্যের নিকট হতে বিনিয়োগ নিয়ে থাকেন-

১। ইট উৎপাদনের পূর্বে মালিকগণ একটি নির্দিষ্ট মূল্যে বিনিয়োগকারীর নিকট ইট অগ্রিম বিক্রি করে দেয়। এবং ইট উৎপাদনের পর তা বিনিয়োগকারীকে দিয়ে দেয়। এই ধরণের ক্রয় যায়েজ আছে কিনা?

২। ইট উৎপাদনের পূর্বে মালিকগণ একটি নির্দিষ্ট মূল্যে বিনিয়োগকারীর নিকট ইট অগ্রিম বিক্রি করে দেয়। এবং ইট উৎপাদনের পর তা বিনিয়োগকারী হতে কিছু বেশী মূল্যে উৎপাদনকারী পুনরায় ক্রয়  করে থাকে। এবং এই মূল্য পুর্ব নির্ধারীত থাকে। (যেমন- প্রতি হাজার ইট অগ্রিম ৭০০০ টাকায় বিক্রি করে এবং ৮০০০ টাকায় পুনরায় ইট ভাটার মালিক বিনিয়োগকারী হতে ক্রয় করে নেয়)

৩। ইট উৎপাদনের পূর্বে মালিকগণ একটি নির্দিষ্ট মূল্যে বিনিয়োগকারীর নিকট ইট অগ্রিম বিক্রি করে দেয়। এবং ইট উৎপাদনের পর বিনিয়োগকারীর নিকট যেহেতু এই ইটের প্রয়োজন নেই তাই ইট ভাটার মালিক তা অন্যত্র বেশী মূল্যে বিক্রি করে থাকে এতে যে পরিমাণ লাভ হয় তা মালিক এবং বিনিয়োগকারী ৫০/৫০ ভাগ করে নেয়।

৪। ইট উৎপাদনের পূর্বে মালিকগণ একটি নির্দিষ্ট মূল্যে বিনিয়োগকারীর নিকট ইট অগ্রিম বিক্রি করে দেয়। এবং ইট উৎপাদনের পর বিনিয়োগকারীর নিকট যেহেতু এই ইটের প্রয়োজন নেই তাই ইট ভাটার মালিক তা অন্যত্র বেশী মূল্যে বিক্রি করে থাকে এতে যে পরিমাণ লাভ হয় তা হতে মালিক একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ম্যানেজমেন্ট খরচ রেখে বাকিটা বিনিয়োগকারীকে দিয়ে দেয়।  

৫। উল্লেখিত ০৪ টি পদ্বতির কোনটি লিখিত চুক্তি পত্র হয় না শুধুমাত্র মৌখিক ভাবে হয়ে থাকে এবং নিরাপত্তার জন্য সম পরিমাণ টাকার একটি চেক বিনিয়োগকারীকে দিয়ে থাকে।

আমার প্রশ্ন উল্লেখিত ০৪ টি পদ্বতির কোনটি যায়েজ এবং কোনটি না যায়েজ?

এবং এই ক্ষেত্রে লিখিত চুক্তিপত্র করা আব্যশক কিনা?

1 Answer

+1 vote
by (712,400 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত
عن ابن عباس رضي الله عنهما قال : " قَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ المَدِينَةَ وَهُمْ يُسْلِفُونَ بِالتَّمْرِ السَّنَتَيْنِ وَالثَّلاَثَ، فَقَالَ: ( مَنْ أَسْلَفَ فِي شَيْءٍ، فَفِي كَيْلٍ مَعْلُومٍ، وَوَزْنٍ مَعْلُومٍ، إِلَى أَجَلٍ مَعْلُومٍ)
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদীনায় আসেন তখন মদীনাবাসী ফলে দু’ ও তিন বছরের মেয়াদি সালাম ব্যবসা করত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, কোন ব্যক্তি সালাম ব্যবসা করলে সে যেন নির্দিষ্ট মাপে এবং নির্দিষ্ট ওজনে নির্দিষ্ট মেয়াদে সালাম করে।(সহীহ বোখারী-২২৪০,সহীহ মুসলিম-৪২০২)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/1536


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
ইট উৎপাদনের পূর্বে মালিকগণ একটি নির্দিষ্ট মূল্যে বিনিয়োগকারীর নিকট ইট অগ্রিম বিক্রি করে দেয়। এবং ইট উৎপাদনের পর তা বিনিয়োগকারীকে দিয়ে দেয়। এই ধরণের ক্রয়-বিক্রয় জায়েয। এটার নাম বয়ে সালাম। তবে শর্ত হল, বিনিয়োগ কারী কখন মাল পাবে, কি ধরণের মাল পাবে, কতটুকু পাবে, সবকিছু পূর্বেই সুনির্ধারিত থাকতে হবে।

(২) ইট উৎপাদনের পূর্বে মালিকগণ একটি নির্দিষ্ট মূল্যে বিনিয়োগকারীর নিকট ইট অগ্রিম বিক্রি করে দেয়। এবং ইট উৎপাদনের পর তা বিনিয়োগকারী হতে কিছু বেশী মূল্যে উৎপাদনকারী পুনরায় ক্রয় করে থাকে। এই পদ্ধতি জায়েয হবে না।

(৩) ইট উৎপাদনের পূর্বে মালিকগণ একটি নির্দিষ্ট মূল্যে বিনিয়োগকারীর নিকট ইট অগ্রিম বিক্রি করে দেয়। এবং ইট উৎপাদনের পর বিনিয়োগকারীর নিকট যেহেতু এই ইটের প্রয়োজন নেই, তাই ইট ভাটার মালিক তা অন্যত্র বেশী মূল্যে বিক্রি করে থাকে এতে যে পরিমাণ লাভ হয়, মালিক এবং বিনিয়োগকারী ৫০/৫০ ভাগ করে নেয়। এই পদ্ধতি জায়েয হবে।


(৪) ইট উৎপাদনের পূর্বে মালিকগণ একটি নির্দিষ্ট মূল্যে বিনিয়োগকারীর নিকট ইট অগ্রিম বিক্রি করে দেয়। এবং ইট উৎপাদনের পর বিনিয়োগকারীর নিকট যেহেতু এই ইটের প্রয়োজন নেই, তাই ইট ভাটার মালিক তা অন্যত্র বেশী মূল্যে বিক্রি করে থাকে, এতে যে পরিমাণ লাভ হয়, তা হতে মালিক একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ম্যানেজমেন্ট খরচ রেখে বাকিটা বিনিয়োগকারীকে দিয়ে দেয়। এই পদ্ধতিও জায়েয হবে।

(৫) উল্লেখিত ০৪ টি পদ্বতির জন্য লিখিত চুক্তি জরুরী নয়, তবে সবকিছু সুনির্ধারিত থাকতে হবে,চায় মৌখিকও হোক না কেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (712,400 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।
by (10 points)
জাযাকাল্লাহু খাইরান

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...