আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
128 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (45 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

উস্তাদ,আমার প্রশ্ন ছিলো -

১) কারো বন্ধু যদি ব্যাংকে জব করে, আর পরিস্থিতির কারণে এমন হয় ঐ বন্ধু চা বা কিছু খাওয়ালো, তখন ওটা খাওয়া কি হালাল হবে?

অথবা, যদি এমন হয়, ঐ বন্ধুর বাসায় যদি দাওয়াত দেওয়া হয়, তাহলে ওই দাওয়াতে যাওয়া যাবে?

২)হারাম হলে, কিভাবে পাশ কাটিয়ে নেওয়া যেতে পারে??

৩)যদি এমন কখনো হয়, ওই বন্ধুর কোনো একটা দরকারে একজনের সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলো, তখন কোনো রেস্টুরেন্টে বসে মিটিং করলো কিছু খাবার ও খেলো, বিল ও দিল ঐ বন্ধু ই। এ খাবার খাওয়া কি হালাল হবে??


৪) মেয়েদের টাখনুর নিচে এবং ছেলেদের টাখনুর উপর কাপড় পড়ার যে বিধান রয়েছে; মেয়েদের ক্ষেত্রে যদি ঘরের ভেতর ওরকম বেখেয়ালি ভাবে কাজ করা হয়, নামায ব্যতীত কাপড় টাখনুর উপরেই থেকে যায়  তাহলে কি গুনাহ্ হবে?? উল্লেখ্য, ঘরে কোনো নন মাহরাম নেই।

৫) মেয়েদের চুল উটের কুজের মতো করে বাঁধতে মানা, সেটা কি বাহিরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে নাকি ঘরেও বাধা যাবে না?? ঘরের ভেতর থাকাবস্থায় যদি চুলের খোঁপা উপরে করে বাধা হয়, কোনো উদ্দেশ্য ব্যতীত, অর্থাৎ কারো অনুকরণ বা, কাওকে আকর্ষিত করার উদ্দেশে ও নয়, তাহলেও কি গুনাহ্ হবে? এক্ষেত্রেও উল্লেখ্য যে, ঘরে কোনো নন মাহরাম নেই।

উস্তাদ,উত্তর গুলো দিলে মুনাসিব হয় ইং শা আল্লাহ্.

1 Answer

0 votes
by (683,680 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)


https://www.ifatwa.info/1900 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে  যে,


فى الفتاوى الهندية- أهدى إلى رجل شيئا أو أضافه إن  كان غالب ماله من الحلال فلا بأس إلا أن يعلم بأنه حرام ، فإن كان الغالب هو الحرام ينبغي أن لا يقبل الهدية ، ولا يأكل الطعام إلا أن يخبره بأنه حلال ورثته أو استقرضته من رجل ، كذا في الينابيع


যদি এমন কেউ কাউকে কিছু হাদিয়া দেয়,যার অধিকাংশ সম্পত্তি হালাল,তাহলে সেই মালকে গ্রহণ করা নাজায়েয নয়।তবে যদি সে জানতে পারে যে,দাতা হারাম থেকে দিচ্ছে তাহলে এমতাবস্থায় সেটা জায়েয হবে না।আর যদি তার মালের অধিকাংশই হারাম থাকে,তাহলে এমন ব্যক্তির হাদিয়া গ্রহণ জায়েয হবে না।এমন ব্যক্তির ওখানে আহার করাও যাবে না, যতক্ষণ না সে হালাল খাবারের সংবাদ দিচ্ছে বা এটা বলছে যে,সে ধার করে নিয়ে এসে আহার করাচ্ছে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৪২)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তার বন্ধুর যদি আর কোনো ইনকাম না থাকে,বা অন্য কোনো পন্থা থাকলেও বেশির ভাগ উপার্জিত টাকা যদি এই ব্যাংকের বেতন থেকেই আসে,সেক্ষেত্রে তার চা খাওয়া যাবেনা,তার বাসায় দাওয়াত খাওয়া যাবেনা। 

আর যদি তার অন্য হালাল ইনকামের ব্যবস্থা থাকে,সেক্ষেত্রে সেই ইনকামই বেশি হলে তার বাসায় খাবার খাওয়া যাবে,তার চা খাওয়া যাবে।।

(০২)
এক্ষেত্রে আজ নয় অন্য কোনোদিন খাবেন এটা বলে পাশ কাটিয়ে যেতে পারেন,বা আপনি চা খেয়ে আপনি নিজে বিল দিতে পারেন,ব্যাংকের চাকুরীর টাকা হারাম বলে পাশ কাটিয়ে যেতে পারেন,অগত্যা যদি খেতেই হয় বা খেয়ে ফেলেন,সেক্ষেত্রে আপনি যেই পরিমান খেয়েছেন, সমপরিমাণ টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিবেন।

(০৩)
না,এ খাবার খাওয়া জায়েজ হবেনা।
বিল আপনি দিবেন।
অথবা আপনি যেই পরিমান খেয়েছেন, সমপরিমাণ টাকা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিবেন।

(০৪)
ঘরে কোনো নন মাহরাম না থাকলে প্রশ্নের বিবরণ মতে গুনাহ হবেনা।

(০৫)
সাধারণ ভাবে চুলের খোঁপা পিছনে বাধা যাবে,তবে মাথার উপরে ঘরের ভিতরেও বাধা যাবেনা।

তবে কোনো কোনো সময় স্বামীর সামনে নিজেকে আকর্ষনীয় দেখানোর লক্ষ্যে, স্বামীর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য শুধু স্বামীর সামনে মাথার উপরে এমন খোঁপা বাধার অনুমতি কিছু ফুকাহায়ে কেরাম প্রদান করেছেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...