আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
189 views
in ওয়াসওয়াসা by (26 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম শায়েখ,

আমি ওসিডি বা মানসিক রোগে আক্রান্ত শায়েখ। এর আগে আমার করা বহু প্রশ্নে আপনি আমাকে ওয়াসওয়াসার রোগি বলে আখ্যায়িত করেছেন।

(১) আজ থেকে প্রায় ১৩/১৪ বছর আগের ঘটনা এটা । তখন আমার বিয়ে হয়নি। সেসময় ভোরে আমার পরিবারের লোক নামাজের জন্য আমাকে ডেকে দিত। কিন্তু আমি উঠতে চাইতাম না। বেশিরভাগ সময়ে আমি গোছল ফরজ হওয়া অবস্থায় থাকতাম। কিন্তু মা বকাবকি করবে তার ভয়ে ওইভাবেই মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তাম আবার কখনো কখনো রাস্তায় ঘুরে ফিরে বাড়ি চলে আসতাম। কিন্তু এখন আমার ওয়াসওয়াসা রোগ হবার কারনে এই ১৩/১৪ বছর পর এখন আমার মনে হচ্ছে আমি মনে হয় নামাজকে তিরস্কার করার জন্য এভাবে নামাজ পড়তাম। এখন এমন সন্দেহ আমার মনে আসছে। আর মনে হচ্ছে নামাজকে তিরস্কার করার জন্য আমি কাফের হয়ে গেছিলাম  তখন। আমার বিয়ে কবুল হয়নি। আমি যেনা করছি। এমন আজে বাজে কথা আমার মনে আসছে।এখন, আমি কাফের,আমি কাফের, এমন কথা মনের ভিতর আসছে।
((নামাজকে তিরস্কার করার জন্য কেউ সেজদাহ করলে সে কাফের হয়ে যায়, এই হাদিস শোনার পর এসব ভাবনা আমার এসে থাকতে পারে সম্ভবত))

এতে কি আমার ঈমান চলে যাবে শায়েখ??
ও এতে কি আমার বিবাহিত জিবনে কোন সমস্যা হবে শায়েখ??

(২) আমি একটা এপ্সে কাজ করি শায়েখ। বিভিন্ন প্রকার এড দেখা কাজ । আমি জানি এসব এড দেখে ইমকাম করা হারাম।
তবু আমি বাদ দিতে পারছি না। মনে ভিতর বিভিন্ন আজে বাজে খেয়াল আসে। মনে হয় আমি মনে হয় আল্লাহকে পরোয়া করি না তাই এসব হারাম উপায়ে ইনকাম করছি।  (একবার মনে হয় বাদ দিয়ে দিলাম)। কিছুক্ষন পর আবার এড দেখা শুরু করি। আবার মনে হয় কিছু ধার বাকি আছে শোধ করে আর এড দেখে ইনকাম করবো না। আবার মনে হচ্ছে ঈদ পর্যন্ত করবো। এর পরেও এটাকে হারাম মনে করে এড দেখা কাজ করলে কি আমার ঈমান চলে যাবে?

(৩) ২ নং প্রশ্নের ভিতরে যেটুকেতে ব্রাকেট দেওয়া আছে সেটুকু লিখার সময় মনে হচ্ছিল আমি যেন আমার ওয়াইফকে বাদ দেবার কথা বলছি। এতে কি তালাক পতিত হবে শায়েখ??

(৪) আবার,রাতে ঘুমের মধ্যে তালাক নিয়ে বিভিন্ন স্বপ্ন আসে। স্বপ্নে দেখি ওয়াইফকে তালাক দিচ্ছি অথবা তালাক দিয়ে দিছি। হালকা ঘুমের ঝিমকি থাকা কালিন তালাক উচ্চারন করে ফেললাম কিনা সন্দেহ হয়। এতে কি তালাক পতিত হবে?

(৫) আমি হারাম এড দেখে ইনকাম করা টাকায় জামা বানাইছি। এছাড়া আমার কোন ভাল জামা নাই। এখন ওই জামা পরে নামাজ পড়া যাবে কি?

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
চার মাযহাব সম্ভলিত সর্ববৃহৎ ফেকহি গ্রন্থ "আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যা"গ্রন্থে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে,
نَقَل ابْنُ عَابِدِينَ عَنِ اللَّيْثِ: فِي مَسْأَلَةِ طَلاَقِ الْمُوَسْوَسِ  أَنَّهُ لاَ يَجُوزُ طَلاَقُ  الْمُوَسْوَسِ  ، قَال: يَعْنِي الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
وَنَقَل ابْنُ الْقَيِّمِ: إِنَّ الْمُطْلِّقَ إِنْ كَانَ زَائِل الْعَقْل بِجُنُونٍ أَوْ إِغْمَاءٍ أَوْ وَسْوَسَةٍ لاَ يَقَعُ طَلاَقُهُ،  قَال: وَهَذَا الْمَخْلَصُ مُجْمَعٌ عَلَيْهِ بَيْنَ عُلَمَ ـ اءِ الأُْمَّةِ

- رِدَّةُ الْمُوَسْوَسِ:  
٢١ - إِنْ تَكَلَّمَ الْمُوَسْوَسُ  بِكَلاَمٍ يَقْتَضِي الرِّدَّةَ لَمْ يَكُنْ فِي حَقِّهِ رِدَّةٌ. صَرَّحَ بِذَلِكَ الْحَنَفِيَّةُ، يَعْنُونَ الْمَغْلُوبَ فِي عَقْلِهِ
ইবনে আবেদিন শামী রাহ বর্ণনা করেন,ওয়াসওয়াসা গ্রস্থ ব্যক্তি -যার বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে বসেছে-তার তালাক গ্রহণযোগ্য নয়।
ইবনুল কাইয়িম রাহ বলেন, যদি তালাক প্রদানকারী ব্যক্তির ওয়াসওয়াসা,বেহুশি বা পাগলামির দরুণ বিবেকবুদ্ধি লোপ পেতে থাকে, তাহলে তার তালাকও গ্রহণযোগ্য হবে না। এর উপর সমস্ত উলামাদের ঐক্যমত রয়েছে।

বিবেক বুদ্ধি লোপ পেতে বসা ওয়াসওয়াসা রোগীর এমন কোনো কথা বার্তা যা মুরতাদ হওয়াকে লাযিম করে দেয়, সেই কথাবার্তার দরুণ উক্ত ওয়াসওয়াসার রোগী মুরতাদ হবে না।(আল-মাওসু'আতুল ফেকহিয়্যাতুল কোয়েতিয়্যাহ-৪৩/১৫৬)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/835


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
আপনি প্রথমেই বলেছেন, মায়ের বকাবকির জন্য আপনি নাপাক অবস্থায় নামাযে যেতেন, সুতরাং পরবর্তীতে নামাযকে তিরস্কার করার চিন্তা ওয়াসওয়াসা বৈ অন্য কিছু নয়। সুতরাং এরকম ওয়াসওয়াসাকে পরিত্যাগ করতে হবে।

(২)
হারাম জানার পর এপসে কাজ করা মারাত্মক পর্যায়ের গোনাহ। তবে এজন্য ঈমানে কোনো সমস্যা হবে না।

(৩)
৩নং প্রশ্নে আপনি যে বলেছেন,
"(একবার মনে হয় বাদ দিয়ে দিলাম)" এ কথার দ্বারা স্ত্রী তালাক হওয়ার যে ওয়াসওয়াসা আসছে, সেটা শুধুমাত্র ওয়াসওয়াসা-ই। এদ্বারা কোনো তালাক হবে না।

(৪)
হারাম এড দেখার ইনকাম দ্বারা জামা বানানো হলে, সেই জামা পরিধান করে নামাজ পড়লে, নামাযে কোনো সমস্যা হবে না। নামায আদায় হবে।তবে হারাম ইনকামকে সদকাহ করা ওয়াজিব।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...