আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
197 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (3 points)
হারাম সম্পর্ক ত্যাগ করার পর পূর্বের সেই নন মাহরাম পুরুষ যদি কিছু পাঠায় যেমনঃ জুতা এবং বলে এটা সে হাদিয়া হিসেবে দিয়েছে,অন্য কোনো উদ্দেশ্যে না,তাহলে কি তা ব্যবহার করা জায়েজ হবে?

জুতার যা দাম তা যদি সেই নন মাহরাম পুরুষের নাম্বারে বিকাশ করে দেওয়া হয় তাহলে কি সেই জুতা ব্যবহার করা হালাল হবে?

1 Answer

0 votes
by (58,500 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/42333/ নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

আল্লাহ তায়ালা বলেন-

مَّثَلُ الَّذِينَ يُنفِقُونَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيلِ اللَّهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِي كُلِّ سُنبُلَةٍ مِّائَةُ حَبَّةٍ ۗ وَاللَّهُ يُضَاعِفُ لِمَن يَشَاءُ ۗ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ

যারা আল্লাহর রাস্তায় স্বীয় ধন সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ একটি বীজের মত, যা থেকে সাতটি শীষ জন্মায়। প্রত্যেকটি শীষে একশ করে দানা থাকে। আল্লাহ অতি দানশীল, সর্বজ্ঞ। (সূরা বাকারা, আয়াত নং-২৬১)

 

সদকাহ ও হাদিয়া এক জিনিস নয়। হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ أَنَّهَا أَرَادَتْ أَنْ تَشْتَرِيَ بَرِيرَةَ لِلْعِتْقِ، وَأَرَادَ مَوَالِيهَا أَنْ يَشْتَرِطُوا وَلاَءَهَا، فَذَكَرَتْ عَائِشَةُ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ لَهَا النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " اشْتَرِيهَا، فَإِنَّمَا الْوَلاَءُ لِمَنْ أَعْتَقَ ". قَالَتْ وَأُتِيَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم بِلَحْمٍ فَقُلْتُ هَذَا مَا تُصُدِّقَ بِهِ عَلَى بَرِيرَةَ فَقَالَ " هُوَ لَهَا صَدَقَةٌ، وَلَنَا هَدِيَّةٌ ".

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বারীরা নাম্নী দাসীকে আযাদ করার উদ্দেশ্যে কিনতে চাইলেন, তার মালিকরা বারীরার “ওয়ালা” (অভিভাবকত্বের অধিকার) এর শর্ত আরোপ করতে চাইল। আয়িশা (রাঃ) (বিষয়টি সম্পর্কে) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উল্লেখ করলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি তাকে ক্রয় কর। কারণ যে (তাকে) আযাদ করবে “ওয়ালা” তারই। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে একটু গোশত হাযির করা হল। আমি বললামঃ এ বারীরার সাদকা স্বরূপ দেওয়া হয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এ বারীরার জন্য সাদকা, আর আমাদের জন্য হাদিয়া। (সহীহ বুখারী ১৪০৬)

 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

 

হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছেঃ   হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।

فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُزِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ

রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে] {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}

আল্লাহর রাসূল সা. বলেন, তোমরা পরস্পর হাদিয়ার আদান-প্রদান করো, তাহলে মহাব্বত বৃদ্ধি পাবে। (ইমাম বুখারী রচিত আদাবুল মুফরাদ, হা/৫৯৪)

আল্লাহ তায়ালা বলেন, তারা যদি খুশি হয়ে তোমাদেরকে দিয়ে দেয়, তাহলে তোমরা তা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ করো। (সূরা নিসা আয়াত নং ০৪)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

مَنْ أَتَى إِلَيْكُمْ مَعْرُوفًا فَكَافِئُوهُ، فَإِنْ لَمْ تَجِدُوا فَادْعُوا لَهُ، حَتَّى يَعْلَمَ أَنْ قَدْ كَافَأْتُمُوهُ.

তোমাদের প্রতি যে ব্যক্তি কোনো ভালো আচরণ করে তোমরা তার প্রতিদান দাও। যদি দেয়ার মতো কিছু না পাও তাহলে তার জন্যে দুআ করো, যাতে সে বুঝতে পরে- তোমরা তার প্রতিদান দিয়েছ। -আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদীস ২১৬

 

হাদিস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “إِذَا أُتِيَ بِطَعَامٍ سَأَلَ عَنْهُ أَهَدِيَّةٌ أَمْ صَدَقَةٌ فَإِنْ قِيلَ صَدَقَةٌ. قَالَ لأَصْحَابِهِ كُلُوا. وَلَمْ يَأْكُلْ، وَإِنْ قِيلَ هَدِيَّةٌ. ضَرَبَ بِيَدِهِ صلى الله عليه وسلم فَأَكَلَ مَعَهُمْ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে কোন খাবার আনা হলে তিনি জানতে চাইতেন, এটা হাদিয়া, না সাদকা? যদি বলা হতো, সাদকা তা হলে সাহাবীদের তিনি বলতেন, তোমরা খাও। কিন্তু তিনি খেতেন না। আর যদি বলা হল হাদিয়া। তাহলে তিনিও হাত বাড়াতেন এবং তাদের সাথে খাওয়ায় শরীক হতেন। [বুখারী, হাদীস নং-২৪০৬]

 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!

 

সাধারণত হাদিয়া আদান প্রদাণ করার দ্বারা মুহাব্বত, ভালোবাসা বৃদ্ধি পায়। আর উক্ত নন মাহরাম ব্যক্তির প্রতি মুহাব্বত, ভালোবাসা বৃদ্ধি পেলে সমস্যা। সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত সূরতে ফিতনার আশংকা থাকার কারণে আপনি তার হাদিয়া গ্রহণ করবেন না। একান্ত সে হাদিয়া পাঠিয়ে দিলেও তা গ্রহন করবেন না। আর গ্রহণ করে থাকলেও তা ব্যবহার না করে তার কাছে ফেরত পাঠাবেন অথবা কোনো গরীব ব্যক্তিকে দান করে দিবেন (কারণ, তার দেওয়া কোনো জিনিস আপনার কাছে থাকলে তার কথা বারবার মনে পড়বে যা ফিতনার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে)। তাই  কারোর মাধ্যমে আপনার কাছে হাদিয়া পাঠাতে নিষেধ করে দিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...