আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
273 views
in সালাত(Prayer) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম
আমার গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুর।২০ বছরের অধিক সময় থেকে পরিবারসহ আমরা চট্টগ্রামে ভাড়া বাসায় থাকি।গ্রামে আমাদের ঘর নেই,তবে একটি জায়গাকে ঘর করার নিয়তে নির্ধারিত করে রাখা হয়েছে।সেখানে ২-৩ বছরের মধ্যে ঘর করার ইচ্ছে থাকলেও স্হায়ী হবো কিনা এই ব্যাপারে আমরা সন্দিহান।আল্লাহই ভালো জানেন, তিনি আমাদের জন্য তাকদিরে কী রেখেছেন।উল্লেখ্য, আমার দাদার আর নানার বাড়ির মধ্যে দূরত্ব বড়জোর ৪-৫ কিলোমিটার হবে।

এই অবস্থায় আমরা যদি গ্রামে নানার বাড়িতে যাই ১৫ দিনের কমের জন্য তাহলে নামায কেমন হবে? কসর নাকি স্বাভাবিক?
আর যদি দাদার বাড়িতে যাই (চাচার ঘরে কয়েক ঘন্টার জন্য যাওয়া হয়) তাহলে নামায কেমন হবে?

অন্য আত্নীয়দের বাড়িতে গেলে কেমন হবে সালাত?

আব্বা, আম্মা এবং আমরা ভাইবোন প্রত্যেকেই মুসাফির / মুকিম কোন হালতে আছি,দয়া করে জানাবেন।

বি.দ্র. এর আগে আমি দুটি ওয়েবসাইটে এই প্রশ্নটি করেছি,দুই জায়গায় দুই রকম উত্তর পাওয়ায় আমরা সন্দিহান। দয়া করে বিস্তারিত উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান হলো ওয়াতনে আসলী (স্থায়ী নিবাস) তে এক দিনের জন্য গেলেও পুরো নামাজ পড়তে হবে।
    
ব্যক্তি নিজের স্থায়ী নিবাসে গেলে কখনো মুসাফির হয়না। স্থায়ী নিবাস বলে এমন স্থানকে-“যেখানে ব্যক্তির বসবাসের জন্য স্থায়ী গৃহ থাকে, স্ত্রী সন্তান নিয়ে যেখানে সর্বদার জন্য থাকার নিবাস হয়”।

শরীয়তের বিধান হলো কোন স্থানে গিয়ে সেখানে যদি কমপক্ষে পনের দিন থাকার নিয়ত না করে, তাহলেও কসর পড়তে হবে। বেশি দিন থাকার নিয়ত করলে কসর করতে পারবে না।

৭৮ কিলোমিটার হল সফরের দূরত্ব। এর কম নয়। সুতরাং কেউ যদি ৭৮ কিলোমিটার দূরত্বের সফরের নিয়তে বের হয় কেবল সেই ব্যক্তি কসর পড়তে পার। এরচে’কম দূরত্বের সফরের জন্য কসর পড়া জায়েজ নয়।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

সেক্ষেত্রে চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজ কসর করতে হবে। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,

وَإِذَا ضَرَبْتُمْ فِي الْأَرْضِ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَقْصُرُوا مِنَ الصَّلَاةِ

‘আর যখন তোমরা যমীনে সফর করবে, তখন তোমাদের নামাজ কসর করাতে কোনো দোষ নেই।’ [সূরা নিসা, আয়াত: ১০১]

হাদিস শরীফে এসেছে,

عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِى طَرِيقٍ – قَالَ – فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ. قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا أَتْمَمْتُ صَلاَتِى يَا ابْنَ أَخِى إِنِّى صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ – ﷺ – فِى السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَصَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَقَدْ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

ইবনে উমর রাযি. বলেন, নিশ্চয় আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সাথে সফর করেছি, তিনি মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি আবু বকর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও আমরণ সফরে ২ রাকাতই পড়েছেন। আমি উমর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি  উসমান রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (মুসলিম ১৬১১)

আরো জানুনঃ 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে গ্রামের বাড়ি লক্ষীপুর,এখানে আপনাদের দাদার বাসা আছে,এখানেই জন্ম, এখান থেকে চলে যাওয়ার সময় আপনারা স্থায়ী ভাবে এখানে আর থাকবেননা,এমন নিয়তও করেননি।
তবে এখানে আপনাদের এখনো নিজেদের বাসা করে হয়নি।
এখানে আপনাদের বাসা করার প্ল্যান রয়েছে।

এদিকে ২০ বছরের অধিক সময় থেকে পরিবারসহ আপনারা চট্টগ্রামে ভাড়া বাসায় থাকলেও সেখানেও স্থায়ী ভাবে সারাজীবনের জন্য স্ত্রী সন্তান সহ থাকার নিয়ত করেননি।

সুতরাং চট্টগ্রামের যেখানে থাকনে,সেটি আপনাদের ওয়াতনে ইকামত।

আর লক্ষীপুর গ্রামের বাড়ি আপনাদের এখনো ওয়াতনে আসলী (স্থায়ী নিবাস) হিসেবেই আছে।
এখানে আসলে আপনারা মুসাফির হবেননা।
তাই এখানে এসে আপনারা পূর্ণ নামাজই আদায় করবেন।

★চট্টগ্রাম হতে আপনার নানার বাসা আপনাদের দাদার বাসার আগেই হলে ও থানা ভিন্ন হলে, বা আপনার দাদার বাসার পরে হলেও সরাসরি নিজ দাদার এলাকা দিয়ে না গিয়ে অন্য এলাকা দিয়ে নানার বাসায় যান,আর নানার বাসা অন্য থানায় হয়, সেক্ষেত্রে নানার বাসায় গিয়ে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কসরের নামাজ আদায় করবেন।

আর যদি আপনার দাদার বাসা অতিক্রম করে নিজ এলাকা দিয়েই আপনার নানার বাসায় যেতে হয়,বা আপনার নানার বাসা আপনাদের একই থানাতে,সেক্ষেত্রে আপনি আপনার নানার বাসায় এসে পূর্ণ নামাজ আদায় করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
শায়েখ আমার আম্মাও কি নানার বাড়িতে (তার বাবার বাড়ি) কসর করবেন?আমাদের নানা-দাদা বাড়ি,দুটোই একই থানার অধীন।
by (565,890 points)
আপনার আম্মা কোথায় থাকেন? তার স্থায়ী বাসা কোনটা?  বিস্তারিত জানালে ভালো হতো

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 168 views
...