আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
312 views
in সালাত(Prayer) by (3 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
১।"আলহামদুলিল্লা-হি রব্বিল 'আলামীন" আয়াতের 'আলামীন শব্দে 'আইন এর পরিবর্তে আলিফ উচ্চারণ করলে কি অর্থ পরিবর্তন হয়ে নামায ফাসিদ হয়ে যাবে?আসসালামু আলাইকুম।
২।নামাযে কোন ওয়াজিব বাদ পড়ার কারণে তাশাহুদ পড়ার পর সাহু সিজদাহ না দিয়ে ভুল করে তাশাহুদ,দরুদ ও দুআ মাসুরা পড়ে ফেলার পর সাহু সিজদাহ দিলে কি সাহু সিজদাহ এর পর আবার দরুদ বা দুআ মাসুরা পড়তে হবে?নাকি সালাম ফিরিয়ে দিলেই চলবে?

৩।ফযরের নামাযের জন্য অ্যালার্ম দিয়ে রাখার পর অ্যালার্ম বাজলে যদি ঘুমের ঘোরে অ্যালার্ম অফ করে দেই এবং তার জন্য ফযরের নামায মিস হয়ে যায়, তাহলে কি এটা ইচ্ছাকৃতভাবে নামায না পড়া হিসেবে গণ্য হবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
 بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
মহান আল্লাহ তাআলার কালাম তিলাওয়াতের বিশেষ নিয়ম ও আদব রয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

وَرَتِّلِ الْقُرْآنَ تَرْتِيلًا

কুরআন তিলাওয়াত কর ধীরস্থির ভাবে, স্পষ্টরূপে। -সূরা মুযযাম্মিল (৭৩) : ৪

নামাজের কেরাতে অর্থ বিকৃত হয়ে যায়, এমন ভুল পড়লে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। চাই তা তিন আয়াত পরিমাণের ভেতর হোক বা পরে হোক- সর্বাবস্থায় একই হুকুম। পক্ষান্তরে সাধারণ ভুল- যার দ্বারা অর্থ একেবারে বিগড়ে যায় না, তাতে নামাজ নষ্ট হবে না। (খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১১৮, ফাতাওয়া কাজিখান ১/৬৭)
.
লাহনে জলি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ 

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে 
الحمد لله رب العالمين 
এর ভিতর العالمين এর জায়গায় المين পড়েছে।

 الم আলাম এর অর্থ ব্যাথা দেওয়া,কষ্ট দেওয়া,যন্ত্রনা দেওয়া।
,
তাই উল্লেখিত ছুরতে অর্থ দাড়াচ্ছে যে সমস্ত প্রশংসা সেই মহান আল্লাহর জন্য, যিনি কষ্ট দাতাদের রব।
,
সুতরাং এখানে অর্থ বিকৃত হলেও একেবারেই নামাজ ফাসেদ হওয়ার মতো বিগড়ে যায়না।
তাই প্রশ্নে উল্লেখিত  ছুরতে  নামাজ ফাসেদ হবেনা,নামাজ ভেঙ্গে যাবেনা।
,
(০২) হ্যাঁ প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে  সাহু সিজদাহ এর পর আবার তাশাহুদ,দরুদ, দুআ মাসুরা পড়তে হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ   
,
(০৩) যদি সত্যিই ঘুমের ঘোরে এমনটি হয়ে থাকে,তাহলে ইচ্ছাকৃতভাবে নামায না পড়া হিসেবে গণ্য হবে।

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ صَالِحٍ، حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، أَخْبَرَنِي يُونُسُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنِ ابْنِ الْمُسَيَّبِ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، أَنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ قَفَلَ مِنْ غَزْوَةِ خَيْبَرَ فَسَارَ لَيْلَةً حَتَّى إِذَا أَدْرَكَنَا الْكَرَى عَرَّسَ وَقَالَ لِبِلَالٍ " اكْلأْ لَنَا اللَّيْلَ " . قَالَ فَغَلَبَتْ بِلَالاً عَيْنَاهُ وَهُوَ مُسْتَنِدٌ إِلَى رَاحِلَتِهِ فَلَمْ يَسْتَيْقِظِ النَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم وَلَا بِلَالٌ وَلَا أَحَدٌ مِنْ أَصْحَابِهِ حَتَّى إِذَا ضَرَبَتْهُمُ الشَّمْسُ فَكَانَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم أَوَّلَهُمُ اسْتِيقَاظًا فَفَزِعَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ " يَا بِلَالُ " . فَقَالَ أَخَذَ بِنَفْسِي الَّذِي أَخَذَ بِنَفْسِكَ بِأَبِي أَنْتَ وَأُمِّي يَا رَسُولَ اللهِ فَاقْتَادُوا رَوَاحِلَهُمْ شَيْئًا ثُمَّ تَوَضَّأَ النَّبِيُّ صلي الله عليه وسلم وَأَمَرَ بِلَالاً فَأَقَامَ لَهُمُ الصَّلَاةَ وَصَلَّى بِهِمُ الصُّبْحَ فَلَمَّا قَضَى الصَّلَاةَ قَالَ " مَنْ نَسِيَ صَلَاةً فَلْيُصَلِّهَا إِذَا ذَكَرَهَا فَإِنَّ اللهَ تَعَالَى قَالَ (أَقِمِ الصَّلَاةَ لِلذِّكْرَى) "
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বার যুদ্ধ হতে প্রত্যাবর্তনের একরাতে বিরতিহীনভাবে সফর করতে থাকলে আমাদের ক্লান্তি ভাব দেখা দেয়। ফলে শেষ রাতে তিনি যাত্রা বিরতি করেন এবং বিলাল (রাঃ)-কে বলেনঃ তুমি জেগে থাকবে এবং রাতের দিকে লক্ষ্য রাখবে। কিন্তু বিলাল (রাঃ)-ও নিদ্রাকাতর হয়ে তার উটের সাথে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। ফলশ্রুতিতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, বিলাল এবং তাঁর সাহাবীদের কারোরই ঘুম ভাঙ্গল না। অতঃপর সূর্যের তাপ তাদের গায়ে এসে পড়লে সর্বপ্রথম রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাগলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অস্থির হয়ে বললেনঃ কি হলো বিলাল! বিলাল বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক! যে সত্তা আপনাকে অচেতন রেখেছেন, আমাকেও তিনিই অচেতন রেখেছেন। অতঃপর তারা নিজেদের বাহন নিয়ে কিছু দূর অগ্রসর হওয়ার পর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অযু করলেন এবং বিলালকে নির্দেশ করলে বিলাল ইক্বামাত দিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকলকে নিয়ে ফজরের সলাত আদায় শেষে বললেনঃ কেউ সলাত আদায় করতে ভুলে গেলে যেন স্মরণ হওয়া মাত্রই উক্ত সলাত আদায় করে নেয়। কেননা আল্লাহ বলেন, ‘‘আমার স্মরণার্থে সলাত প্রতিষ্ঠা কর।’’ (সূরা ত্ব-হা ১৪)
.
(মুসলিম শরীফ হাঃ ৬৯৭)
,
এটা কোনো এক সময় এমন হলে বলা যায়,তবে সবসময় এমনটি হলে সেটি ওযর হিসেবে গন্য করা যায়না। 
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,কাহারো ঘুমে এমন সমস্যা থাকে যে ঘুম কোনোভাবেই ভাঙ্গেনা,শুধু আলসেমি লাগে,তাহলে এলার্ম পুরোপুরি বন্ধ করবেনা,যাতে ৫ মিনিট পর আবার বাজে,সেই সিস্টেম করে দিবে।
,
অথবা এই রকম করবে,যে প্রতি ২/৩ মিনিট পর একাধিক এলার্ম দিবে,এই রকম পদ্ধতি মোবাইলে সেট করে ঘুমাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 212 views
...