আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
202 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (47 points)
আসসালামু আলাইকুম
১.আমি ইবাদাত বন্দেগি তে আত্মতৃপ্তি পাচ্ছি না।নিজেকে খুব বিরক্ত লাগছে।আমি ওযু তে এক অঙ্গ ৭/৮ বার এমন কি ১২/১৩ বার ও ধুই। তিন বার ধুলে মনে হয় কোথাও শুকনা আছে।এটা তো ঠিক না।কিন্তু আমি ছাড়তে পারছি না এসব সন্দেহ।নামাজে  সুরা ফাতিহা পড়লাম কিনা, সুরা মিলালাম কিনা,তাশাহুদ পড়লাম কিনা,সিজদা কয় টা দিলাম এসব নিয়ে প্রতিনিয়ত সন্দেহ প্রবন থাকতেছি।আমি খুব বিরক্ত।পাক নাপাক নিয়ে এত খুত খুতে থাকি সব সময় যে  অল্প তেই মনে হয় নাপাকি লেগে গেল মনে হয়।এখন কি করব?? এই জিনিস গুলো কোনো ভাবেই পিছ ছাড়ছে না।এর আগেও এখানে প্রশ্ন করে আমল বা উপায় চাইছিলাম বাট তেমন কিছু বলা হয় নি।আমার কি রুকাইয়া টাইপ কোনো ট্রিটমেন্ট করতে হবে?? কোথায় কিভাবে কোনো অনলাইন কোর্স আছে কিনা জানাবেন উস্তায।আরো কিছু উপায় থাকলে জানাবেন উস্তায আকুল আর্জি আপনার নিকট। আমি এসব থেকে বের হতে চাই।

২.কয়েক দিন আগে নতুন কুরআন কিনেছি।প্রথম দিন হাতে নিছি তখন হাত থেকে কুরআনের কাভার টা পড়ে গিয়েছে।কাভার টা পড়েছে একটা বেডিং এর উপর। বেডিং টাতে বীর্য লেগেছি অনেক দিন আগে।রোদে দেয়া হয়েছিল বীর্য লাগার পরে। সেই বেডিং এর উপর পড়েছিল কুরআনের কাভার টা।এখন মনের ভেতর এত অশান্তি হচ্ছে যে আফসোসে নিজেকে শাস্তি দিতে মন চাচ্ছে যে কেন আমার হাত থেকে কাভার টা পড়ে গেল।কাভার টা তুলে কুরআন ঢুকিয়েও রেখেছিলাম।এখন শুধু মনে হচ্ছে কুরআনের কাভার সাথে কুরআন ২ টাই নাপাক হয়েছে।সেই কুরআন যখন পড়তে যাই মনে হয় আমার হিজাব, কাপড় সব নাপাক হয়ে যাচ্ছে।সেই সাথে কুরআনের ভিতরের পাতা গুলোতেও নাপাকি লেগে যাচ্ছে বলে আমার মনে হচ্ছে ।এভাবে তো আমি খুশু খুযু আনতে পারছি না তিলাওয়াতে।কুরআন আর কুরআনের কাভার পাক করার উপায় কি??? পাক না করা পর্যন্ত শান্তি পাচ্ছি না।আপনি যদি বলেন পাক আছে তাও আমার মনে খচ খচানি থেকেই যাবে।কি করব উস্তায???

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
ওয়াসওয়াসা থেকে মুক্তির জন্য আপনার প্রতি কিছু পরামর্শঃ-
আপনি ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা দিবেননা,ওয়াসওয়াসাকে পাত্তা না দিয়ে আমল চালিয়ে যাবেন।

যেই সমস্ত বিষয়ে আপনি ওয়াসওয়াসায় আছেন,সে সংক্রান্ত কোন মাসআলা পড়বেন না। কাউকে জিজ্ঞাসা করতেও যাবেন না। কারো সাথে এ সংক্রান্ত আলাপ ও আলোচনাও করবেন না। মনের মাঝে এ বিষয়ক কোন কিছু আসতে দিবেন না। 

আসলেই অন্য বিষয় নিয়ে মগ্ন হয়ে যাবেন, প্রসঙ্গ পাল্টে ফেলবেন। 

ইবনে হাজার আল-হাইতামি রহ. বলেন,
له دواء نافع وهو الإعراض عنها جملة كافية ، وإن كان في النفس من التردد ما كان
‘ওয়াসওয়াসার কার্যকরী চিকিৎসা হল, একে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়া; এমনকি মনের মধ্যে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও।’ (আল-ফাতাওয়া আল-ফিকহিয়্যা আল-কুবরা ১/১৪৯)

★ইয্য ইবনে আব্দুস সালাম রহ. বলেন, ওয়াসওয়াসার প্রতিষেধক হচ্ছে- ব্যক্তি এ বিশ্বাস করা যে, এটি শয়তানী কুমন্ত্রণা। ইবলিস এটি তার অন্তরে আরোপ করছে এবং তার সাথে লড়াই করছে। এতে করে সে ব্যক্তি জিহাদ করার সওয়াব পাবে। কেননা সে ব্যক্তি আল্লাহ্র শত্রুর সাথে লড়াই করছে। যদি কেউ এভাবে অনুভব করতে পারে তাহলে শয়তান তার থেকে পালিয়ে যাবে।

★সকাল ও সন্ধ্যায় পড়ুন-–أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ، مِنْ غَضَبِهِ وَشَرِّ عِبَادِهِ، وَمِنْ هَمَزَاتِ الشَّيَاطِينِ وَأَنْ يَحْضُرُونِ (আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমার আশ্রয় প্রার্থনা করি তার অসম্ভষ্টি ও শাস্তি থেকে এবং তার বান্দার অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে ও শয়তানের সংস্পর্শ থেকে।)

★আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করুন, তাঁর রজ্জু মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরুন। তিনি অসীম দয়ালু। সুতরাং তিনি আপনাকে ক্ষমা করবেন ও মুক্তি দিবেন। 

মূলত এই নির্দেশ স্বয়ং আল্লাহরই। তিনি বলেন,
وَإِمَّا يَنزَغَنَّكَ مِنَ الشَّيْطَانِ نَزْغٌ فَاسْتَعِذْ بِاللَّهِ ۖ إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ
যদি শয়তানের পক্ষ থেকে তুমি কিছু কুমন্ত্রণা অনুভব কর, তবে আল্লাহর শরণাপন্ন হও। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (সূরা হা-মীম-সিজদাহ ৩৬)

★ওয়াসওয়াসাকে গুরুত্ব না দিয়ে কোনো উপকারী কাজে ব্যস্ত হয়ে যান।

★নিম্নোক্ত দোয়া বেশি বেশি পাঠ করুন।

আনাস রাযি. বলেন, রাসুল ﷺ (উম্মতকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য) সব সময় এই দোয়া করতেন, يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِىْ عَلىٰ دِيْنِكَ হে অন্তর পরিবর্তনকারী! আমার অন্তর আপনার দীনের উপর দৃঢ় করে দিন।

আরো করনীয় জানুনঃ- 

(০২)
পূর্বের এক প্রশ্নের জবাবে বলা হয়েছিলো যে প্রশ্নে উল্লেখিত কুরআনের কাভার নাপাক হয়নি,
,
তারপরেও আপনি প্রশান্তি লাভের উদ্দেশ্যে কুরআনের কাভার একবার পানি দিয়ে ধুয়ে দিতে পারেন।

তাহলে আর মনের মধ্যে এটি নিয়ে কোনো টেনশন কাজ করবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
উস্তায আমি কুরআনের কাভার টাই ছিড়ে ফেলে দিয়েছি।এতে কি আমার গুনাহ হবে???
আর কুরআন এর উপরের এপিঠ ওপিঠ  পানি দিয়ে মুছে দিতে চাচ্ছি।কেমন হবে???
by (574,260 points)
না,প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার এতে আপনার গুনাহ হবেনা।

আপনার প্রতি কুরআন এর উপরের এপিঠ ওপিঠ এভাবে পানি দিয়ে মুছে না দেয়ার আহবান থাকবে।

এটি পুরোপুরি অহেতুক কাজ হবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...