ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
কুরআনে কারীম সম্মানী জিনিষ।সুতরাং সেই সম্মানী কুরআনকে এমন কোনো স্থানে রাখা যাবে না,যেখানে কুরআনের অসম্মানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।পদপৃষ্ঠ সম্ভাবনাময় স্থানে কুরআন লিখা মাকরুহ।বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/359
কুরআনে কারীমকে অসম্মান করা হবে এমন স্থানে কুরআনকে নিয়ে যাওয়া বা রাখা কখনো জায়েয হবে না।যেমন-হযরত ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে।
ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ : ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻧﻬﻰ ﺃﻥ ﻳﺴﺎﻓﺮ ﺑﺎﻟﻘﺮﺁﻥ ﺇﻟﻰ ﺃﺭﺽ ﺍﻟﻌﺪﻭ
রাসূলুল্লাহ সাঃ কুরআনকে সাথে নিয়ে শত্রুদেশে সফর করতে নিষেধ করেছেন।(সহীহ বুখারী(ফতহুল বারী)-২৯৯,সহীহ মুসলিম-১৮৬৯,সুনানু আবি দাউদ-২৬১০)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে।
ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻋﻦ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ( ﺃﻧﻪ ﻛﺎﻥ ﻳﻨﻬﻰ ﺃﻥ ﻳﺴﺎﻓﺮ ﺑﺎﻟﻘﺮﺁﻥ ﺇﻟﻰ ﺃﺭﺽ ﺍﻟﻌﺪﻭ؛ ﻣﺨﺎﻓﺔ ﺃﻥ ﻳﻨﺎﻟﻪ ﺍﻟﻌﺪﻭ )
রাসূলুল্লাহ সাঃ কুরআন সাথে নিয়ে শত্রু দেশে সফর করতে নিষেধ করেছেন।যাতেকরে শুত্রুরা কুরআনকে নিয়ে গিয়ে কোনোপ্রকার অসম্মান না করতে পারে।(মুয়াত্তা মালিক-৫/২,মুসনাদু আহমাদ-২/৬,৬৩, সুনানু নাসাঈ-৮৫,সুনানু ইবনি মা'জা-২৮৮০)
উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসগণ বলেন,যদি শত্রুদেশে নিরাপত্তা থাকে তাহলে কুরআন নিয়ে সেখানে যাওয়া যাবে।
ইমাম ত্বাহাবী রাহ উল্লেখ করেন,
وَذَكَرَ الطَّحَاوِيُّ - رَحِمَهُ اللَّهُ تَعَالَى - فِي مُشْكَلِ الْآثَارِ أَنَّ هَذَا النَّهْيَ كَانَ فِي ذَلِكَ الْوَقْتِ لِأَنَّهُ يَخَافُ فَوْتَ شَيْءٍ مِنْ الْقُرْآنِ مِنْ أَيْدِي الْمُسْلِمِينَ فَأَمَّا فِي زَمَانِنَا فَقَدْ كَثُرَتْ الْمَصَاحِفُ وَكَثُرَ الْحَافِظُونَ لِلْقُرْآنِ عَنْ ظَهْرِ الْقَلْبِ فَلَا بَأْسَ بِحَمْلِ الْمُصْحَفِ إلَى أَرْضِ الْعَدُوِّ لِأَنَّهُ لَا يُخَافُ فَوْتُ شَيْءٍ مِنْ الْقُرْآنِ وَإِنْ وَقَعَ بَعْضُ الْمَصَاحِفِ فِي أَيْدِيهِمْ.
এই নিষেধাজ্ঞা ঐ সময়ের সাথে বিশেষিত ছিলো, কেননা তখনকার সময়ে মুসলমানদের হাত থেকে কুরআন নিঃশেষ হয়ে যাওয় বা হারিয়ে যাওয়ার ভয় ছিলো।আর আজকের দিনে এখন কুরআনের মুসহাফ অনেক রয়েছে।এবং কুরআনের হাফেযগণ ও অনেক আছে।সুতরাং এখন শত্রুদেশে কুরআন নিয়ে যাওয়াতে কোনো সমস্যা নাই।কেননা এখন কুরআন নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার কোনো ভয় নাই, যদিও কুরআনের কিছু মুসহাফ কাফের হাতে চলে যাক না কেন?(মাবসূত-সারাখসী১/২৯)
কুরআনের ব্যাপক প্রচার-প্রসার করা কুরআন অনুসারীদের অন্যতম একটি দায়িত্ব।এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
ﻛِﺘَﺎﺏٌ ﺃُﻧﺰِﻝَ ﺇِﻟَﻴْﻚَ ﻓَﻼَ ﻳَﻜُﻦ ﻓِﻲ ﺻَﺪْﺭِﻙَ ﺣَﺮَﺝٌ ﻣِّﻨْﻪُ ﻟِﺘُﻨﺬِﺭَ ﺑِﻪِ ﻭَﺫِﻛْﺮَﻯ ﻟِﻠْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴﻦَ
এটি একটি গ্রন্থ, যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে, যাতে করে আপনি এর মাধ্যমে ভীতি-প্রদর্শন করেন। অতএব, এটি পৌছে দিতে আপনার মনে কোনরূপ সংকীর্ণতা থাকা উচিত নয়। আর এটিই বিশ্বাসীদের জন্যে উপদেশ। (সূরা-আরাফ)
ﻭَﺇِﻧَّﻪُ ﻟَﺘَﺬْﻛِﺮَﺓٌ ﻟِّﻠْﻤُﺘَّﻘِﻴﻦَ
এটা খোদাভীরুদের জন্যে অবশ্যই একটি উপদেশ। (সূরা-হাক্বাহ-৪৮)
তাই যত বেশী সম্ভব কুরআনকে প্রচার করা জরুরী।চায় অফলাইনে হোক বা অনলাইনে হোক।অনলাইনে কুরআনের সূরা/আয়াত কে প্রচার করা যাবে।কেননা এখানে কুরআনকে নিজ অজান্তে কেউ অসম্মান করতে পারবে না।
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
মোটকথা কুরআনকে সম্মানজনক স্থানে রাখতে হবে।অসম্মানের আশংকাজনক স্থানে কুরআন রাখা যাবে না।এবং রাখাটাও জায়েয হবে না।
অনলাইনে কুরআনের অসম্মানের কোনো আশংকা নেই।কেননা এখানে পদপৃষ্ঠ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।অন্যদিকে এতে রয়েছে মানুষের ব্যাপক ফায়দা।যেকেউ ইচ্ছা করলে যেকোনো সময় নির্দ্বিধায় পড়তে পারবে। আল্লাহ পাক কুরআনকে পড়া ও তাকে নিয়ে চিন্তা করা সম্পর্কে বলেন,
ﻛِﺘَﺎﺏٌ ﺃَﻧﺰَﻟْﻨَﺎﻩُ ﺇِﻟَﻴْﻚَ ﻣُﺒَﺎﺭَﻙٌ ﻟِّﻴَﺪَّﺑَّﺮُﻭﺍ ﺁﻳَﺎﺗِﻪِ ﻭَﻟِﻴَﺘَﺬَﻛَّﺮَ ﺃُﻭْﻟُﻮﺍ ﺍﻟْﺄَﻟْﺒَﺎﺏِ
এটি একটি বরকতময় কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি বরকত হিসেবে অবতীর্ণ করেছি, যাতে মানুষ এর আয়াতসমূহ লক্ষ্য করে এবং বুদ্ধিমানগণ যেন তা অনুধাবন করে। (সূরা সোয়াদ-২৯)
প্রুফাইল পিকছার হলো একটা আইডির পরিচায়ক। যা চেহারার সমতূল্য।সুতরাং এটা অসম্মানের স্থান নয়।তাই রাখা যাবে।তবে মানুষ বা জীব জন্তুর ফটো বিশিষ্ট কোনো স্থানে কুরআনের আয়াত লিখা যাবে না।আল্লাহ-ই ভালো জানেন।