আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
153 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম।

আমার মামা একজন মহিলা কে বিয়ে করেন, যার স্বামী আছে। সেই মহিলা তার স্বামী কে তালাক দিয়ে আমার মামা কে বিয়ে করেন। অর্থাৎ তার স্বামী তাকে তালাক দেননি, তালাকের কাগজে সাইন ও করেন নি। মহিলা নিজ থেকে তালাক দিয়ে চলে এসেছেন।

আর যেদিন মহিলা তার প্রথম স্বামী কে তালাক দেন সেদিনই আমার মামার সাথে বিয়ে করেন। কোনো ইদ্দত পালন করা হয়নি, আর বিয়ে তে মেয়ের পক্ষের কেও রাজি না থাকায় পালিয়ে বিয়ে করছেন। বিয়েতে শুধু ৩ জন লোক সাক্ষী ছিল, মেয়ের পক্ষের কোনো অভিবাবক ছিল না। বর্তমানে আমার মামার সাথে বিয়ে হয়েছে ৪ মাস হয়ে গিয়েছে।

১. মহিলাটি তার প্রথম স্বামী কে নিজ ইচ্ছায় তালাক দিয়েছেন সেইটা কি সম্পন্ন হয়েছে? (তার স্বামী তালাকে রাজি ছিলনা)

২. আমার মামার সাথে বিয়ে শুদ্ধ হয়েছে?

৩. আমার মামী বর্তমানে অন্তঃসত্বা, তাদের সন্তান কি জারজ হিসেবে গণ্য হবে?

৪.বিয়ে যদি শুদ্ধ না হয়ে থাকে বর্তমানে করনীয় কি?
আরেকটি বিষয় হচ্ছে আমার মামা প্রবাসী। তিনি বিয়ের ২ মাস পরে আবার মালেশিয়া তে চলে গিয়েছেন।

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
এক্ষেত্রে সেই মহিলা স্বামী কর্তৃক লিখিত বা মৌখিক তালাকের অধিকার প্রাপ্ত হয়ে থাকলে এবং লিখিত বা মৌখিক ভাবে নিজেকে নিজে বা নিজের নফসের উপর তালাক প্রদান করলে তালাক হবে।

তালাকের অধিকার প্রাপ্ত না হলে এই তালাক হবেনা।
নিজেকে নিজে বা নিজের নফসের উপর তালাক প্রদান না করে স্বামীকে তালাক দিলেও এই তালাক হবেনা।

আরো জানুনঃ- 

(০২)
উপরোক্ত মাসয়ালা অনুপাতে যদি তালাক হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে তো ইদ্দত পালন আবশ্যক ছিলো।

আর ইদ্দত একটি ওয়াজিব বিধান। এটি লঙ্ঘন করা কবিরা গুনাহ। 

সুতরাং আপনার মামার সাথে বিবাহ শুদ্ধ হয়নি।

শরীয়তের বিধান মতে ইদ্দত একটি ওয়াজিব বিধান। 
স্বামী যেখানেই থাক, যদি সে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে থাকে তাহলে স্ত্রীর জন্য ইদ্দত পালন করা ওয়াজিব। (ফাতাওয়া উসমানী ২/৪৫১)

ইদ্দত শুরু হয়, তালাক সম্পন্ন হওয়ার পরবর্তী সময় থেকে তিন হায়েয পরিমাণ। 
তিন হায়েয শেষ হওয়ার আগে অন্য কারো সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া জায়েয হবে না। 

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَالْمُطَلَّقَاتُ يَتَرَبَّصْنَ بِأَنفُسِهِنَّ ثَلَاثَةَ قُرُوءٍ

আর তালাকপ্রাপ্তা নারী নিজেকে অপেক্ষায় রাখবে তিন হায়েয পর্যন্ত। (সূরা বাকারা-২২৮)

وَالَّذِينَ يُتَوَفَّوْنَ مِنكُمْ وَيَذَرُونَ أَزْوَاجًا يَتَرَبَّصْنَ بِأَنفُسِهِنَّ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا ۖ فَإِذَا بَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا فَعَلْنَ فِي أَنفُسِهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ ۗ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ [٢:٢٣٤] 

আর তোমাদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করবে এবং নিজেদের স্ত্রীদেরকে ছেড়ে যাবে, তখন সে স্ত্রীদের কর্তব্য হলো নিজেকে চার মাস দশ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করিয়ে রাখা। তারপর যখন ইদ্দত পূর্ণ করে নেবে, তখন নিজের ব্যাপারে নীতি সঙ্গত ব্যবস্থা নিলে কোন পাপ নেই। আর তোমাদের যাবতীয় কাজের ব্যাপারেই আল্লাহর অবগতি রয়েছে।

আরো জানুনঃ- 

(০৩)
তাদের এ সন্তান অবৈধ।

(০৪)
বিবাহই যেহেতু শুদ্ধ হয়নি,তাই আপনার মামার জন্য করনীয় হলো দ্রুত তার সাথে যাবতীয় সম্পর্ক শেষ করা,কথা বলা বন্ধ করে দেয়া,আপনার মামার বাসায় উক্ত মহিলা থাকলে তাকে নিজ বাসা হতে বের করে দেয়ার ব্যবস্থা করা।

এবং খালেস দিলে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
edited
কিন্তু তারা আলাদা হবেনা। এখন যদি পুনরায় পরিবার নিয়ে সহীহ ভাবে বিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে তারা সংসার করতে পারবে?
by (559,140 points)
এক্ষেত্রে সেই মহিলা যদি স্বামী কর্তৃক লিখিত বা মৌখিক তালাকের অধিকার প্রাপ্ত হয়ে থাকলে এবং লিখিত বা মৌখিক ভাবে নিজেকে নিজে বা নিজের নফসের উপর তালাক প্রদান করলে তালাক হবে।

সেক্ষেত্রে আপনার মামা পুনরায় এখন বিবাহ পড়িয়ে নিতে পারবে।
বিবাহ পড়িয়ে নেয়ার পর তাদের সংসার বৈধ হবে। 

আর সেই মহিলা তার আগের স্বামী হতে তালাকের অধিকার প্রাপ্ত না হলে তার সেই তালাক হবেনা।
নিজেকে নিজে বা নিজের নফসের উপর তালাক প্রদান না করে স্বামীকে তালাক দিলেও সেই তালাক হবেনা।

সেক্ষেত্রে আপনার মামা পুনরায় বিবাহ করলেও সেটি শুদ্ধ হবেনা।
আগে তালাক কার্যকর করতে হবে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...