জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “তোমাদের মধ্যে আমার সবচেয়ে প্রিয় ও কিয়ামাতের দিন আমার সবচেয়ে কাছে আসন হবে তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি সবচেয়ে উত্তম চরিত্রের অধিকারী”
তিরমিযি (২০১৮)
,
আব্দুল্লাহ্ বিন আমর (রাঃ) থেকে তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি্ ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: “তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সর্বোত্তম যার চরিত্র সর্বোত্তম”।
বুখারী (৬০৩৫) মুসলিম (২৩২১)
,
হাসান বসরি (রহঃ) বলেন: সচ্চরিত্রের স্বরূপ হচ্ছে– “কল্যাণ করায় এগিয়ে আসা, অনিষ্ট করা থেকে বেঁচে থাকা এবং চেহারা প্রসন্ন রাখা।”
কাযী ইয়ায বলেন: “সেটা হচ্ছে– মানুষের সাথে ভাল ব্যবহার দিয়ে মেশা, তাদের প্রতি মমতা ও দয়া অনুভব করা, তাদেরকে সহ্য করা, ক্ষমা করে দেয়া, তাদের থেকে কষ্ট পেলে সবর করা, অহমিকা ও বড়ত্ব পরিত্যাগ করা, রুক্ষ, ক্রোধপূর্ণ ও প্রতিশোধের আচরণ বর্জন করা।
,
★সুতরাং আল্লাহর যাবতীয় পালনের পাশাপাশি মানুষের হক আদায় করা,উপরে উল্লেখিত গুন নিজের ভিতর নিয়ে আসা,উত্তম চরিত্রবান ব্যাক্তিদের সাথে উঠাবসা করার মাধ্যমে আখলাক সুন্দর হবে,ইনশাআল্লাহ।
,
(০২)
রাগ সম্পর্কে মুসলিম শরীফের এক হাদিসে আছে,
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে রাগের সময় নিজেকে সামলে নিতে পারে, সেই প্রকৃত বাহাদুর। আরেক হাদিসে বলা হয়েছে, রাগ দেখানোর সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও যে তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, আল্লাহতায়ালা তাকে কিয়ামতের দিন পুরস্কৃত করবেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ থেকে বাঁচার পথ বাতলে দিয়েছেন-
إِذَا غَضِبَ أَحَدُكُمْ فَلْيَسْكُتْ.
কেউ যখন রেগে যায় সে যেন চুপ হয়ে যায়। (যাতে গালিগালাজ, মন্দ কথা থেকে বাঁচতে পারে।) -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ২১৩৬
,
এক হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যখন তোমাদের কারও রাগ আসে, তখন সে দাঁড়িয়ে থাকলে যেন বসে পড়ে। তাতে যদি রাগ দমে না যায়, তাহলে সে যেন শোয়ে পড়ে। ’ -তিরমিজি
আবু দাউদ শরীফের একটি হাদিসে আছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রাগ আসে শয়তানের কাছ থেকে। শয়তান আগুনের তৈরি। আর আগুন নেভাতে লাগে পানি। তাই যখন তোমরা রেগে যাবে, তখন অজু করে নেবে। ’
,
★সুতরাং রাগ উঠলে রাসুল সাঃ এর নির্দেশ মানতে হবে।
আর আল্লাহ তায়ালার রাগ কমানোর জন্য দোয়া করতে হবে,ধৈর্য ধারনের চেষ্টা করতে হবে।
,
(০৩)
ধৈর্যশীলতা মুমিন বান্দার কল্যাণকর একটি গুণ। এই গুণ অর্জনে যথাযথ গুরুত্ব দিতে হবে।
আল্লাহ তাআলা মুমিনদের বিপদে ধৈর্য ধারণ করতে নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাও, নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৫৩)
ইরশাদ হয়েছে, ‘বলো! হে মুমিন বান্দা, যারা ঈমান এনেছ, তোমরা তোমাদের রবকে ভয় করো। যারা এ দুনিয়ায় ভালো কাজ করে তাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ। আর আল্লাহর জমিন প্রশস্ত, শুধু ধৈর্যশীলদেরই তাদের প্রতিদান পূর্ণরূপে দেওয়া হবে কোনো হিসাব ছাড়াই।’ (সুরা জুমার, আয়াত : ১০)
এক হাদিসে নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘মুসলিম ব্যক্তির ওপর যে কষ্ট-ক্লেশ, রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানি আসে, এমনকি যে কাঁটা তার দেহে ফোটে, এসবের মাধ্যমে আল্লাহ তার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেন।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৬৪১)
একবার রাসুল (সা.) আনসার সাহাবিদের কিছু লোককে বলেন, ‘যে ব্যক্তি ধৈর্য ধরে, তিনি (আল্লাহ) তাকে ধৈর্যশীলই রাখেন। আর যে অমুখাপেক্ষী হতে চায়, আল্লাহ তাকে অভাবমুক্ত রাখেন। ধৈর্যের চেয়ে বেশি প্রশস্ত ও কল্যাণকর কিছু কখনো তোমাদের দান করা হবে না। (বুখারি, হাদিস : ৬৪৭০)
,
★আল্লাহর সকল কাজ সন্তুষ্টি চিত্তে মেনে নেওয়া, নিজেকে ধৈর্য ধারন করার প্রাক্টিস করা,রাসুল সাঃ এর নির্দেশত পথে চললেই ধৈর্য ধারণ করা সম্ভব।
,
(০৪)
আল্লাহর কাছে নিয়মিত প্রত্যেক নামাজের পর দোয়া করতে হবে।
চিকিৎসকরা কিছু পন্থা বলেছেনঃ
পরিমাণ মতো পানি পান
করতে হবে; অ্যালকোহল এবং চা কফি জাতীয় পানীয় শরীরকে পানি শূন্যতার দিকে নিয়ে যায় ফলে এগুলো গ্রহণের
ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবেন।
রং চায়ের সাথে আধা দিয়ে প্রতিদিন খান।
এছাড়া
গলার কন্ঠ চিকন ও মধুর করতে জৈষ্ঠি মধু খান প্রতিদিন খালি পেটে।আর এয়ারসেল দেওয়ার অভ্যাস করুন ঠিক হয়ে যাবে।
ধূমপান পরিহার করতে হবে, ধূমপান গলার ক্ষতি এবং ক্যান্সার সৃষ্টির অন্যতম কারণ, এমনকি পরোক্ষ ধূমপানেও স্বরতন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে।
স্বরের উপর অত্যাচার বা স্বরের অপব্যবহার করা যাবে না। কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে চেঁচামেচি বা জোরে চিৎকার করা যাবে না। যদি কথা বলতে বলতে স্বর শুষ্ক, ক্লান্ত বা খসখসে মনে হয়, তবে কথা বলা বন্ধ রাখতে হবে, তা না হলে স্বরতন্ত্রের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে।