আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
392 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (68 points)
edited by

১. স্বামী যদি তার স্ত্রী কে বলে," তোমার সাথে আমার ব্রেকাপ " তাহলে কি তালাক হবে? নাকি এই কথা তালাকের নিয়ত নিয়ে বলতে হবে? একটু বলবেন কি?

২. তালাকের অধিকার প্রাপ্ত বউ যদি তার স্বামী কে বলে তবে কি বিধান.

৩. আমার মনে মনে কোনো কুফরী কথা চলে আসলে আমি কলিমা শাহাদাত পড়ি,ভাবতাম যদি কোনো কারণে ইমানে সমস্যা হয় ও তাও যেনো ঠিক হয়ে যায়। আমি একটি হাদীস জানি যে "আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মতের হৃদয়ে যে খেয়াল জাগ্রত হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন, যতক্ষণ না সে তা কার্যে পরিণত করে বা মুখে উচ্চারণ করে"'

এটা জানার পরেও এমনটা করি,গতকাল হঠাৎ মনে হলো এরকম করার ফলে কি হাদীসটার প্রতি আমার অবিশ্বাস প্রকাশ পাচ্ছে!!! আমি এমনিতে কলিমা শাহাদাত পড়ার সময় ভাবতাম জানি এইসবে কুফর হচ্ছে না তাও মনের অশান্তি দুর করার জন্য পড়তাম, তখন এই হাদীসের কথা মাথায় থাকতেনা,ভাবতাম হুজুরেরা বলেন... গতকালকে  এই হাদীসের কথা হঠাৎ মাথায় আসে। এমনিতে এই হাদিসের উপর আমার বিশ্বাস আছে। 

এভাবে মনে মনে কুফরি আসার পরেও অশান্তি ধূর করার জন্য কলিমা শাহাদড করায় কি ইমানে সমস্যা হবে?

.  আমার বউকে বলছিলাম যে তুমি যদি ভিজিট ভিসার আবেদন করো কারণ তোমার আগে পিছে কেও নাই। (আমাদের বিয়ের বিষয়ে কেও জানে না তাই বলছিলাম)।  এই কথা বলার সময় কোনো নিয়ত নিয়ে বলিনি,এর ফলে কি বিবাহে সমস্যা হবে?

৫. একজন আলেম সম্ভবত নাশিদ গাইতেছেন,  লাইন ছিলো " সবাই তো ভালোবাসা চায়" তখন অপর একজন মানুষ তার সাথে ছিলো, এটা একজন স্কিনশট নিয়ে ইচ্ছাকৃত ওই আলেমকে নিয়ে মজা করে কমেন্ট করে, এই তাহলে ভালোবাসা?(সে বুঝাতে চাচ্ছে ওই আলেম ভালোবাসা বলতে ওই পুরুষের ভালোবাসা চাচ্ছেন)।এটা দেখে মনে মনে একটু হাসি উঠে যায় আমার।  এর ফলে হয়তো মুখ মুছকি হাসি চলে আসে। এর ফলে কি ইমানে সমস্যা হবে?

৬. আমি একটা গান গাইতাম আগে, "মনে ক'রে সখী, বাঁধিয়া রাখিয়ো আমার হাতের রাখী-- তোমার..... ॥" (রাখি অর্থ, হিন্দরা তাদের ভাইএর হাতে ঢ়ে বাধে মনে করে এটা তাদের রক্ষা করে বিভিন্ন বিদপ থেকে, আবার আরেকখানে দেখেছি, রাখি মানে শক্ত বন্ধন) এই গান গাওয়ার সময় গানে কুফরী আছপ কি না এসব ভাবনায় আসতো না, এখন আজকে এই লাইনটা টা গাওয়া পরে চিন্তা হচ্ছে,  এতে কি কুফরী কিছু আছে?

৭." তাশরিফ আনা" এর অর্থ নিয়ে মজা করে একবার একজন বলেছিলো "তাশরিফ আনা" মানে "পাছা রাখা", যেমন অমুক তাশরিফ আনলেন মানে পাছা রাখলেন,এটা শুনে হয়তো খুব মজা লেগোছিলো এবং মনে হচ্ছে এটা নিয়ে আমিয়ো একই ভাবে মজা করেছিলাম,অনেক আগের কথা, পরিষ্কার মজা করেছি বলেমনে পরছে না, এর ফলে কি ইমানে সমস্যা হবে?

৮. মেয়েরা কি চুল পরা/ফেটে যাওয়া কমানোর জন্য, বাবরি চুল থেকে কিছু বড় করে চুল কাটতে পারবে?যাতে ছেলেদের সাদৃশ্য হয় না এরকম মাপের... 

৯. এই মাসআলা খোজতে গিয়ে একজায়গায় দেখি " ফ্যাশনের জন্য চুল কাটা বৈধ না" কিন্তু "না" শব্দ প্রথমে না দেখায় খানিকের জন্য যেনো মনে করেফেলেছিলাম এটাও বৈধ। তার পর "না" দেখতে পেরে সবটা পরে বুঝলাম বৈধ নয় লেখা। এর ফলে কি ইমানে সমস্যা হবে?

1 Answer

0 votes
by (572,970 points)
edited by
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

★★শরিয়তের পরিভাষায় অস্পষ্ট বাক্যে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷

সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)

ফাতওয়ার কিতাবে আছেঃ 

وَالضَّرْبُ الثَّانِي: الْکِنَايَاتُ، وَلاَيَقَعُ بهَا الطلاَقُ إلاَّبِنِيَةٍ، اَوْ دَلالَةٍ حَالٍ. وَهِيَ عَلَی ضَرْبَيْنِ: مَنْها ثَلاَثَةُ اَلْفَاظٍ يَقَعُ بهَا الطّلاقُ الرَّجْعِيُّ،وَلاَيَقَعُ بهَا إِلا وَاحَدَةٌ، وَهِيَ قَوْلُهُ: اعْتَدِّي، وَاسْتَبْرِئِي رَحِمَکِ، وَاَنْتِ وَاحِدَةٌ، وَبَقِيَةُ الْکِنَايَاتِ إِذا نَوَی بهَا الطلاَقَ کَانَتْ وَاحِدَةً بَائِنَةً، وَإِنْ نَوَی بِهَا ثَلاَثاً کَانَتْ ثَلاَثاً، وَإِنْ نَوَی اثْنَتَيْنِ کَانَتْ وَاحِدَةً، وَهَذَا مِثْلُ قَوْلِهِ: اَنْتِ بَائِنٌ، وَبَتَّةٌ، وَبَتْلَةٌ، وَحَرَامٌ، وَحَبْلُکِ عَلَی غَارِبِکِ، وَالْحَقی بِاَهْلِک، وَخَلِيَةٌ، وَبَرِيّةٌ، وَوَهَبْتُکِ لاهْلِکِ، وَسَرَّحْتُکِ، وَاخْتَارِيْ، وَفارَقْتُکِ، وَاَنْتِ حُرَّةٌ، وَتَقَنَّعِي، وَتَخَمَّرِي، وَاسْتَتِرِيْ، وَاغْرُبِيْ، وَابْتَغِي الاَزْوَاجَ، فَإِنْ لَمْ يَکُنْ لَهُ نِيَةٌ لَمْ يَقَعْ بِهٰذِهِ الاَلْفَاظِ طَلاَقٌ؛ إِلا اَنْ يَکُوْنَا فِيْ مُذَاکَرَةِ الطّلاَقِ؛ فَيَقَعُ بِهَا الطّلاَقُ فِيْ الْقَضَاءِ، وَلاَيَقَعُ فِيْمَابَيْنَةُ وَبَيْنَ اﷲِ تَعَالَی إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَهُ، وَإِنْ لَمْ يَکُوْنَا فِيْ مَذَاکَرَةِ الطّلاَقِ، وَکَانافِيْ غَضَبٍ اَوْ خُصُوْمَةٍ، وَقَعَ الطّلاَقُ بِکُلِّ لَفْظٍ لاَ يُقْصَدُ بِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ، وَلَمْ يَقَعْ بِمَا يُقْصَدُبِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَةُ.
احمد بن محمد البغدادي المعروف بالقدوري، مختصر القدوري: 363. 364، موسسة الريان للطباعة والنشر والتوزيع، بيروت
برهان الدين علي المرغيناني، الهداية شرح البداية، 1: 241، المکتبة الاسلامية

সারমর্মঃ  
২য় প্রকার,কেনায়া বাক্য।
এর দ্বারা তালাক হবেনা,কিন্তু তালাকের নিয়ত অথবা অবস্থার ভিত্তিতে তালাক হবে। কেনায়া বাক্য দুই প্রকার। এর মধ্যে তিনটি শব্দ এমন আছে, যার দ্বারা  তালাকে রজয়ী পতিত হয়। 
সেগুলো হলোঃ- তুমি ইদ্দত পালন করো,তুমি তোমার গর্ভাশয় মুক্ত করো,তুমি এক।

আর কেনায়া তালাকের অন্যান্য শব্দ (যেক্ষেত্রে তালাকের নিয়ত করলে বায়েন তালাক হয়।)
যেমনঃ- তুমি বিচ্ছিন্ন, তুমি সম্পর্ক মুক্ত,তুমি ভিন্ন,তুমি হারাম,তুমি শুণ্য,তুমি মুক্ত,তোমার রশি তোমার কাঁধে,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হও,আমি তোমাকে তোমার পরিবারের জন্য হেবা-দান করলাম,আমি তোমাকে মুক্ত করে দিলাম,আমি তোমাকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম,তোমার বিষয় তোমার হাতে,তুমি আযাদ,তুমি ঘোমটা পড়,তুমি ওড়না দ্বারা নিজেকে আবৃত করো,তুমি আড়াল হও (পর্দা করো), তুমি বিদূরিত হও, তুমি বের হয়ে যাও,তুমি চলে যাও,তুমি দন্ডায়মান হও (দাঁড়িয়ে যাও), তুমি অন্য স্বামী খুজো।
স্বামীর যদি এখানে নিয়ত না থাকে,তাহলে এ সব বাক্য দ্বারা তালাক হবেনা। তবে মুযাকারায়ে তালাকের ক্ষেত্রে হলে তালাক হবে।
(কুদুরী ৩৬৩.৩৬৪. হেদায়া শরহুল বিদায়াহ ১/২৪১,শরহে বিকায়াহ ২/৭৭)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
এটি কেনায়া বাক্য।
তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উক্ত বাক্য বলার সময় স্বামীর তালাকের নিয়ত থাকলে তালাক হবে।
নতুবা তালাক হবেনা।

(০২)
এতে তালাক হবেনা।

(০৩)
না,এতে ঈমানে সমস্যা হবেনা।

(০৪)
এর ফলে বিবাহে সমস্যা হবেনা।

(০৫)
এর ফলে ঈমানে সমস্যা হবেনা।

(০৬)
না,এতে কুফরি নেই।

(০৭)
এর ফলে ঈমানে সমস্যা হবেনা।

(০৮)
এ সংক্রান্ত বিস্তারিত মাসয়ালা জানুনঃ- 

(০৯)
এর ফলে ঈমানে সমস্যা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...