আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
81 views
in সালাত(Prayer) by (32 points)
আসসালামু আলাইকুম
১.

ক)সালাতে থাকা অবস্থায় অনেক সময় বাইরে থেকে কারো কথা বা মাইকের শব্দ বা পাশে কেউ কথা বললে যদি আমার সূরা ভুল হওয়ার আশংকা থাকে বা আমি ভয় পাই যে সুরা ভুল হলো কিনা তাহলে যে আয়াতে ছিলাম সে আয়াত টা আবার সঠিক করে পড়তে পারব কি? অথবা তাশাহহুদে থাকলে তাশাহহুদ আবার শুরু থেকে পড়তে পারব কি??? এতে কি সাহু সিজদা দিতে হবে?? বা নামাজ কি বাতিল হবে??

খ)এরকম রিপিট করে অনেক পড়েছিলাম সেই নামাজ গুলো তে সাহু সিজদা দিই নি।আমার নামাজ গুলো কি হয়েছে???

গ)অনেক সময় আওয়াজ কানে না আসলেও নিজের সুরা পড়তে ভুল হলো কিনা সেটা ঠিক করতেও সুরা টা আবার শুরু থেকে পড়েছিলাম।এক্ষেত্রে আমার নামাজে কোনো সমস্যা হবে কি?? সাহু সিজদা দিই নি।

২.আমার কানে একবার আওয়াজ আসায় আমি তাশাহহুদ আবার পড়া শুরু করেছিলাম এজন্য শেষে দুই পাশে সালাম ফিরিয়ে সাহু সিজদা দিয়েছিলাম এতে কি আমার নামাজ হবে???

৩.সালাতে বায়ু চেপে ধরলে অনেক সময় ফুটো বেলুনের বাতাসের মতো যদি কিছু বের হচ্ছে বলে আশংকা হয় তাহলে কি ওযু ভেঙে যাবে??? এক্ষেত্রে কোনো গন্ধ নাকে আসে নি তাহলে আবার ওযু করতে হবে??

৪.সালাতে সুরা ফাতিহার পরে অন্য সুরা মিলিয়েছি কিনা সন্দেহ হলে সাহু সিজদা দিব???সাহু সিজদা কি দুই পাশে সালাম ফিরিয়ে দিব??

৫.আমি সালাত আদায় করার পরে যদি সন্দেহে পড়ি সালাত হলো কিনা তাহলে আবার সালাত পড়া যাবে?? এক্ষেত্রে কোনটা সঠিক ধরা হবে??

1 Answer

0 votes
by (682,400 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
নামাযে যেকোনো ভুলের কারণে সেজদা সাহু ওয়াজিব হয়ে যায় না। বরং ভুলে নামাযের কোনো ওয়াজিব ছুটে গেলে কিংবা কোনো ফরয বা ওয়াজিব বিলম্বিত হলে ওয়াজিব হয়। আর যদি ভুলে কোনো ফরয ছুটে যায়, তবে সেজদা সাহু করা যথেষ্ট নয়, বরং পুনরায় নামায আদায় করতে হবে। আর কোনো সুন্নত বা মুস্তাহাব ছুটে গেলে সেজদা সাহু করার বিধান নেই। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حدثنا عبد الله بن يوسف، أخبرنا مالك بن أنس، عن ابن شهاب، عن عبد الرحمن الأعرج، عن عبد الله بن بحينة رضي الله عنه، أنه قال: صلى لنا رسول الله صلى الله عليه وسلم ركعتين من بعض الصلوات، ثم قام فلم يجلس، فقام الناس معه، فلما قضى صلاته ونظرنا تسليمه كبر قبل التسليم، فسجد سجدتين وهو جالس، ثم سلم.

আবদুল্লাহ ইবনে বুহায়না রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক নামায আমাদের দুই রাকাত পড়ান। তারপর না বসে দাঁড়িয়ে যান। মুকতাদীরাও তাঁর সাথে দাঁড়িয়ে যায়। যখন তিনি নামায পূর্ণ করলেন এবং আমরা তাঁর সালাম ফিরানোর অপেক্ষা করছিলাম তখন সালাম ফিরানোর আগে তাকবীর দিলেন এবং বসা অবস্থায় দুটি সেজদা করলেন। তারপর সালাম ফিরালেন। 
(সহীহ বুখারী, হাদীস ১২২৪ সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫৭০)

ফাতাওয়ার কিতাবে এসেছেঃ 
المحيط البرهاني في الفقه النعماني (1/ 505):
"إذا كرر التشهد في القعدة الأولى فعليه سجود السهو، وإن كررها في القعدة الثانية فلا".
সারমর্মঃ
যদি ১ম বৈঠকে তাশাহুদ দুইবার পড়ে,তাহলে তার উপর সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে।
যদি ২য় তথা শেষ বৈঠকে তাশাহুদ দুইবার পড়ে,তাহলে তার উপর সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবেনা।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
ফরজ অথবা ওয়াজিব নামাজের প্রথম বৈঠকে তাশাহুদে এক শব্দ বা বাক্য মাখরাজের সন্দেহের কারনে দুইবার বা একাধিক বার পরলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।
এটি ফুকাহায়ে কেরামগন দের মত।  

নামাজে কিরাআতে ভুল হওয়ার সন্দেহে বারবার পড়ার বিধান হলোঃ-
যদি তাহা সুরা ফাতেহা ব্যাতিত অন্য কোনো সুরা হয়,তাহলে কোনো সমস্যা নেই।
সুরা ফাতেহার ক্ষেত্রে সন্দেহ বশত এমনটি করা যাবেনা।
ফরজ নামাজে ইচ্ছাপূর্বক ভাবে কোনো ওযর ছাড়া সুরা ফাতেহার এক আয়াত দুইবার পড়া মাকরুহ। 
  
★শরীয়তের বিধান হলো নামাজে সুরা ফাতেহা পড়া ওয়াজিব।
আর ওয়াজিবকে একাধিকবার আদায় করলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হয়।    

ফরজ নামাজে ইচ্ছাপূর্বক ভাবে কোনো ওযর ছাড়া সুরা ফাতেহার এক আয়াত দুইবার পড়া মাকরুহ। 
নফল নামাজে কোনো সমস্যা নেই।
ফরজ নামাজের প্রথম দুইরাকাতে বিনা ওযরে সুরা ফাতেহার অধিকাংশ আয়াত যদি দুইবার পড়া হয়,তাহলে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে।
৩য়,৪র্থ রাকাতে হলে কোনো সমস্যা নেই।

আরো জানুনঃ 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
ক,
নিছক সন্দেহের দরুন ফরজ নামাজে সুরা ফাতেহা ও ১ম বৈঠকের তাশাহুদের ক্ষেত্রে হলে এভাবে পুনরায়  পড়া ঠিক হবেনা।

ভুল হওয়ার উপর প্রবল ধারনা হলে যেই আয়াত নিয়ে সমস্যা হয়েছে,শুধু সেই আয়াত পড়বেন।
সুরার শুরু থেকে পড়বেননা।

ফরজ নামাজ ছাড়া অন্য নামাজ বা সুরা ফাতেহা ছাড়া অন্য সূরা হলে বা ৩য় বৈঠকের তাশাহুদের ক্ষেত্রে হলে,বা নিশ্চিত ভুল হলে সমস্যা নেই।

খ,
আগের নামাজ গুলি পুনরায় আদায় করতে হবেনা।

(০২)
হ্যাঁ, এতে আপনার নামাজ হবে।

(০৪)
আপনি নিশ্চিত হলে বা প্রবল ধারনা হলে বা আওয়াজ পেলে অযু ভেঙ্গে যাবে।

বা এটি আপনার নিছক সন্দেহ না হলে বরং বাস্তবতাই এমন হলে অযু ভেঙ্গে যাবে।

(০৫)
সালাত হয়েছে বলে ধরে নিবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...