ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(১)
وَعَنْ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: لَا تَغْتَسِلُوا بِالْمَاءِ الْمُشَمَّسِ فَإِنَّهُ يُورِثُ البرص. رَوَاهُ الدَّارَقُطْنِيّ
’উমার ইবনুল খাত্ত্বাব (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রোদে গরম করা পানি দিয়ে গোসল করো না। কারণ এ পানি শ্বেত ও কুষ্ঠ রোগ সৃষ্টি করে। (মিশকাতুল মাসাবিহ-৪৮৯,দারাকুত্বনী ১/৩৯, বায়হাক্বী ১/৬, তালখীসুল হাবীর ৬, ৭ নং পৃঃ)
হাদীসটি যঈফ,কারণ এর সানাদে হায়সাম ইবনু আযহার আস্ সালাফী নামে একজন দুর্বল রাবী রয়েছে যাকে ইবনু হিব্বান ছাড়া কেউ বিশ্বস্ত বলেননি। আর তার তাওসীক করণকে অনেকেই সঠিক বলেননি। কারণ তিনি মাজহূল (অপরিচিত) রাবীদেরও বিশ্বস্ত বলে থাকেন।
(২)ভবিষ্যতের জন্য টাকা জমানো গুনাহ নয়। যাকাত আদায় করে নিলে যত ইচ্ছা টাকা/ সম্পদ জমানো যাবে।
(৩)সিজার করা লাগতে পারে ভেবে টাকা জমানোর মানে তাওয়াক্কুল খেলাফ হবে না।
وَلَا تَجْعَلْ يَدَكَ مَغْلُولَةً إِلَىٰ عُنُقِكَ وَلَا تَبْسُطْهَا كُلَّ الْبَسْطِ فَتَقْعُدَ مَلُومًا مَّحْسُورًا [١٧:٢٩]
(কৃপণতাবশে) নিজের হতা ঘাড়ের সাথে বেধে রেখো না এবং (অপব্যায়ী হয়ে) তা সম্পূর্ণরূপে খুলে রেখো না। তাহলে তুমি তিরস্কৃত ও নিঃস্ব হয়ে পড়বে। [সূরা বনী ইসরাঈল-২৯]
، عَنْ سَعْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَعُودُنِي وَأَنَا مَرِيضٌ بِمَكَّةَ، فَقُلْتُ: لِي مَالٌ، أُوصِي بِمَالِي كُلِّهِ؟ قَالَ: «لاَ» قُلْتُ: فَالشَّطْرِ؟ قَالَ: «لاَ» قُلْتُ: فَالثُّلُثِ؟ قَالَ: «الثُّلُثُ وَالثُّلُثُ كَثِيرٌ، أَنْ تَدَعَ وَرَثَتَكَ أَغْنِيَاءَ خَيْرٌ مِنْ أَنْ تَدَعَهُمْ عَالَةً يَتَكَفَّفُونَ النَّاسَ فِي أَيْدِيهِمْ، وَمَهْمَا أَنْفَقْتَ فَهُوَ لَكَ صَدَقَةٌ، حَتَّى اللُّقْمَةَ تَرْفَعُهَا فِي فِي امْرَأَتِكَ، وَلَعَلَّ اللَّهَ يَرْفَعُكَ، يَنْتَفِعُ بِكَ نَاسٌ، وَيُضَرُّ بِكَ آخَرُونَ»
সা’দ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি মক্কায় রোগগ্রস্ত হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার শুশ্রূষার জন্য আসেন। আমি বললাম, আমার তো মাল আছে। সেগুলো আমি ওয়াসিয়্যাত করে যাই? তিনি বললেনঃ না। আমি বললামঃ তাহলে অর্ধেক? তিনি বললেনঃ না। আমি বললামঃ তবে এক-তৃতীয়াংশ? তিনি বললেনঃ এক-তৃতীয়াংশ করতে পার। আর এক-তৃতীয়াংশই তো বেশী। মানুষের কাছে হাত পেতে পেতে ফিরবে ওয়ারিশদের এমন ফকীর অবস্থায় ছেড়ে যাওয়ার চেয়ে তাদেরকে বিত্তবান অবস্থায় রেখে যাওয়া উত্তম। আর যা-ই তুমি খরচ করবে, তা-ই তোমার জন্য সাদকাহ হবে। এমনকি যে লোকমাটি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দিবে, সেটাও। সম্ভবতঃ আল্লাহ তোমাকে দীর্ঘজীবী করবেন। তোমার দ্বারা অনেক লোক উপকৃত হবে,আবার অন্যেরা কাফির সম্প্রদায়) ক্ষতিগ্রস্ত হবে। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৩৫৪]
(৪)দান-খয়রাত করার ইচ্ছা করলে শয়তান এসে বাধা দেয়। তবে শয়তানের সংখ্যা নির্ধারিত নয়।
(৫)স্বামীর ইনকামে সংসার চলে টেনেটুনে।তাই বাচ্চা নিতে সায় দেয়না পরিবারের সদস্যরা। অভাবের ভয়ে বাচ্ছা না দেয়া হারাম ও নাজায়েয।
(৬)ইসলামে পরিকল্পিত গর্ভধারণের কোনো নিয়ম নাই। এমনটা বলা উচিৎ হবে না।বরং সন্তান নেওয়ার আগে ডাঃ এর কাছে গিয়ে বিভিন্ন চেকআপ করানো যাবে।হ্যা, এক্ষেত্রে অবশ্যই মহিলা ডাক্তারকে খুজে বের করতে হবে। মহিলা ডাক্তার থাকাবস্থায় পরুষ ডাক্তারের কাছে যাওয়া জায়েয হবে না।
(৭)গর্ভকালীন সময়ে কয়েকবার চেকাপ করতে হয় মেডিসিন নিতে হয়।হ্যা, ডাঃ এর কাছে না গিয়ে শুধু দুআ করে নিলে সেটা উত্তম হবে।তবে মেডিসিন নেওয়া,এবং চেকাপ করানো এসব কিছুই তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী হবে না।
(৮)স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা না হলে চিকিৎসার মাধ্যমে বাচ্চার চেষ্টা করা আল্লাহর ওপর দিয়ে হাত ঘুরানো হবে না। বরং চিকিৎসা করানোও সুন্নত।চিকিৎসার পর আল্লাহর হুকুম হলে বাচ্ছা হবে নতুবা হবে না।
(৯) সন্তান সে তার রিজিক নিয়েই আসে।সুতরাং সন্তান নেয়ার পূর্বে আর্থিক প্রস্তুতি নেয়ার কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই। এবং এটা ইসলাম সমর্থিতও নয়।
(১০) হজ থেকে এসে ব্যবসা,জমি চাষ এসব করা যায়না।40 দিন বের হওয়া যায়না। এসব সঠিক নয়।হজ থেকে এসে সাথে সাথে সকল প্রকার কাজ করা যাবে।
(১১) ইসলামিক বই মাটিতে, রাস্তাতে রেখে ছবি তোলা বইয়ের সাথে বেয়াদবি।এসব আদবের খেলাফ করলে ইলম থেকে মাহরুম হওয়াই স্বাভাবিক।
(১২)কুরআনের মাঝের কোনো অংশ পড়লে ও তাআউজের সাথে তাসমিয়া পড়তে হয়।তবে তিলাওয়াত শুরুর পর ভিন্ন কোনো কাজ বা কারো সাথে কথা বলে ফেললে তখন তাসমিয়াহ না পড়ে শুধুমাত্র তাআউজ পড়তে হয়, কেননা তাসমিয়াহ তো প্রত্যেক কাজের শুরুতে পড়তে হয়। আর এখানে তো ইতিপূর্বে তাসমিয়াহ পড়ে তিলাওয়াতকে শুরু করে নেয়া হয়ে গেছে। সুতরাং এখন শুধুমাত্র তাআউজ পড়ে নিলেই হবে। এটাই সুন্নাহ।হ্যা, তখনো তাসমিয়াহ পড়ে নেওয়া নিষেধ নয়।
(১৩)স্ত্রী স্বামীকে খুশি করার জন্য হাসলে যতগুলো দাঁত বের হবে ততগুলো নফল হজের সওয়াব পাবে, এরকম কোনো কথা কোথাও আসেনি। তবে স্বামীকে খুশি করার জন্য স্ত্রীর হাসী অনেক সওয়াবের কাজ।