আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
119 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (18 points)
closed by
আসসালামুয়ালাইকুম।

কিছু মাসালা মাসায়েল জানা লাগতো আমার।

১. আব্বু যদি আমাকে সুন্নত,ওয়াজিব পালনে বাধা দেয় তাহলে কী তার কথা না শুনে পালন করতে পারবো?

২. ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে আমাকে বাধা দিলে আমি কী তাও চালিয়ে যেতে পারবো?

৩. মাফ চাওয়ার পরও যদি আব্বু রাগ করে থাকে তাহলে কী আমার আখিরাতের ক্ষতি হবে?

৪. ইসলামিক বিষয়ে তার বাধা উপেক্ষা করে যদি চালিয়ে যাই তাহলে আমার আখিরাতের কোনো সমস্যা হবে?

জাজাকাল্লাহু খাইরান।
closed

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
selected by
 
Best answer
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে।

ﻟَﺎ ﻃَﺎﻋَﺔَ ﻟِﻤَﺨْﻠُﻮﻕٍ ﻓِﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ

আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(মুসনাদে আহমদ-১০৯৮)

ইমাম বোখারী রহঃ হাসান বসরী রহঃ থেকে বর্ণনা করেন,
" إن منعتْه أمُّه عن العشاء في الجماعة شفقة:لم يطعها "
যদি মা তার সন্তানের কল্যাণ কামনায় তাকে অন্ধকারে এশার জামাতে যেতে বাধা প্রদান করে,তাহলে এক্ষেত্রে মায়ের আদেশকে মানা যাবে না।(সহীহ বোখারী-১/২৩০)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আল্লাহর বিধি-বিধান দুই প্রকার যথাঃ-(১)ফরয/ওয়াজিব/সুন্নতে মু'আক্কাদা(২)এবং নফল/ মুস্তাহাব।

প্রথম প্রকারকে তরক করলে গোনাহ হবে।সুতরাং প্রথম প্রকারের বিধি-বিধানকে তরক করার জন্য মাতাপিতা সহ কারো আদেশকে মান্য করা যাবে না।কেননা হাদীসে বর্ণিত রয়েছে।

ﻟَﺎ ﻃَﺎﻋَﺔَ ﻟِﻤَﺨْﻠُﻮﻕٍ ﻓِﻲ ﻣَﻌْﺼِﻴَﺔِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ

আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।(মুসনাদে আহমদ-১০৯৮)

মসজিদে জামাতের সাথে নামায পড়া ওয়াজিব বা সুন্নতে মু'ক্বাদা। সুতরাং কোনো প্রকার ক্ষতির আশংকা ব্যতীত মাতাপিতা যদি তার সুস্থ সবল বালেগ সন্তানকে মসজিদে যেতে বারণ করে, তাহলে এক্ষেত্রে মাতাপিতার আদেশকে মান্য করা যাবে না।ঠিকতেমনিভাবে সন্তান ফরয হজ্বে যেতে চাইলে যদি মাতাপিতা বাধা প্রদান করে তাহলে এক্ষেত্রেও তাদের আদেশকে মানা যাবে না।

ইমাম বোখারী রাহ হাসান বসরী রাহ থেকে বর্ণনা করেন,
" إن منعتْه أمُّه عن العشاء في الجماعة شفقة:لم يطعها "
যদি মা তার সন্তানের কল্যাণ কামনায় তাকে অন্ধকারে এশার জামাতে যেতে বাধা প্রদান করে,তাহলে এক্ষেত্রে মায়ের আদেশকে মানা যাবে না।(সহীহ বোখারী-১/২৩০)

৩য় হলো নফল এবং মুস্তাহাব ইবাদত।
এ সম্পর্কে কোনো সন্দেহ নেই যে,ইহা কামিল ঈমানের পরিচায়ক এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের অন্যতম একটি মাধ্যম।এর বিপরীতে আল্লাহ তা'আলা সওয়াব প্রদান করবেন।ঐ সমস্ত নফল ইবাদত যা ফরয ইবাদতের জিনস থেকে হয়,যদি ফরয ইবাদতে কোনো প্রকার ত্রুটি থাকে,তাহলে ঐ নফল গুলো সেই ফরযের ত্রুটিকে পুরণ করে দেয়।যেমন নফল হজ্ব ফরয হজ্বের ঘাটতিকে পুরণ করে দেয়।ঠিকতেমনি নফল নামায ফরয নামযের ঘাটতিকে পূর্ণ করে দেয়।নফল সদকাহ ফরয যাকাতের ঘাটতিকে পূর্ণ করে দেয়,ইত্যাদি ইত্যাদি।সুতরাং কোনো মুসলমানের জন্য নফল এবং মুস্তাহাব ইবাদতকে পরিত্যাগ করা কখনো উচিৎ হবে না।
এখন প্রশ্ন জাগে যে,মাতাপিতা নফল ইবাদতে বাধা প্রদান করলে,সন্তানের জন্য সেই নফল ইবাদত করার বিধান কি?

★শরীয়তের বিধান হলো,মাতাপিতা যদি সন্তানের খেদমতের মুহতাজ থাকে,এবং সন্তানের কাছে সহযোগিতার আবেদন করে,অন্যদিকে যদি সন্তান এমন কোনো নফল ইবাদতে ব্যস্ত হয়ে যায় যা মাতাপিতার খেদমতের অন্তরায় থাকে,তাহলে এমতাবস্থায় মাতাপিতার খেদমতই অগ্রগণ্য হবে।সন্তানের জন্য নফল ইবাদতে লিপ্ত হওয়া জায়েয হবে না।কেননা এক্ষেত্রে মাতাপিতার খেদমতে নিজেকে ব্যস্ত রাখা ওয়াজিব।সুতরাং নফলের উপর ওয়াজিবকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

তবে যদি মাতাপিতা সন্তানের খেদমতের মুহতাজ না থাকে,বা নফল ইবাদতে বাধা প্রদানের কোনো হাজত না থাকে কিংবা এতে মাতাপিতার কোনো ফায়দা না থাকে,এবং এ ব্যাপারে শরীয়তের কোনো আকার ইঙ্গিত না থাকে,তাহলে এমতাবস্থায় মাতাপিতার উক্ত বিধিনিষেধের উপর নফল ইবাদতকে তারজিহ দেয়াই উত্তম হবে।সুতরাং মাতাপিতার আদেশকে না মেনে তখন নফল ইবাদতই উত্তম হবে।হ্যা অবশ্যই মাতাপিতার সাথে উত্তম শব্দ ব্যবহার করতে হবে। তাদেরকে হেকমতের সাথে নরম ভাষায় নফল ইবাদতের গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য বুঝাতে হবে।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
সুন্নাতে মুয়াক্কাদা বা ওয়াজিবের ক্ষেত্রে আপনার বাবা বাধা দিলে আপনি এক্ষেত্রে আপনার বাবার কথা না শুনে ইবাদত পালন করবেন।
এক্ষেত্রে বাবার আদেশ পালন জায়েজ নেই।

(০২)
এক্ষেত্রে দেখতে হবে যে সেই বিধি বিধান ফরজ,ওয়াজিব,সুন্নাতে মুয়াক্কাদা? 
নাকি নফল,মুস্তাহাব?

প্রত্যেকটির বিধান উপরে উল্লেখ রয়েছে। 

(০৩)
এক্ষেত্রে আপনার আখিরাতের ক্ষতি হবেনা।

(০৪)
এক্ষেত্রে আপনার আখিরাতের সমস্যা হবেনা।

তবে বাবা যদি সত্যিকার অর্থে আপনার খেদমতের মুহতাজ থাকে,আর আপনি নফল ইবাদতে লিপ্ত থাকেন,খেদমতের অন্তরায় থাকে,সেক্ষেত্রে বাবার ডাকে সাড়া দিতে হবে। 
নতুবা বাবা বদ দুয়া করলে আখেরাতে সমস্যা হতে পারে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...