আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
76 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহু।

কিছু দিন ধরে কয়েকটি প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে মেহেরবানি করে উওর গুলো দিন ওস্তাদ। আর আমি অনেক দিন যাবত ওয়াসওয়াসা সমস্যায় ভুগতাছি।
১।আমরা হজ্জ করার সময় বায়তুল্লাহ এর চারপাশে তাওয়াফ করি এইটা কি আমরা কাবা৷ শরীফ কে তাওয়াফ করি নাকি আল্লাহ কে তাওয়াফ করি এই বিষয় একটু যদি বলতেন তাহলে ভালো হতো।
২। কয়েকদিন আমি নামাজ পড়ার সময় সিজদাহ্ করার সময় হঠাৎ মাথায় আসলো যে আমি কি কাবা শরীফ কে সিজদাহ করলাম নাকি আল্লাহ কে তখন সাথে নামাজের ভিতরে নাকি নামাজ শেষ করে বললাম  সঠিক মনে পড়তাছে না  মনে মনে বললাম আল্লাহ কে সিজদাহ্ করছি সকল ইবাদত আল্লাহর জন্য করছি। সিজদাহ্ করার সময় কি হলো সঠিক বুঝতাছি না।

**********এর কারণে ঈমান এর কোন সমস্যা হবে কি??
৩.আমরা যে দুরুদ শরীফ পড়ি এইটা কি আল্লাহ জন্য পড়ি নাকি নবী করিম সাঃ এর জন্য পড়ি??
৪. এক ভাই একটি পোস্ট করেছিলো পোস্টের  শেষ লাইনে ছিলো " পুজোর শুভেচ্ছা জানানো হারাম, স্পষ্ট কুফুরী" এখন অনেকে এই কথার উপর একাত্ততা প্রকাশ করে পোস্ট করেতেছেন, কিন্তু সকল ফতোয়ায় দেখলাম যে শুভেচ্ছা জানানো হারাম, কুফরী কেও বলতে এখনো দেখি নাই। উনি যে হারাম কাজকে স্পষ্ট কুফুরী বললেন এবং যারা তা সমর্থন করে শেয়ার করছেন, ওদের কি এজন্য গুনাহ হবে? বা ইমানে সমস্যা হবে?

আমিও ১ম বিষয় টি বুঝতে না পেরে সমর্থন করেছি, আমার কি ঈমান এর কোন ক্ষতি হবে।আমরাও কি উনার সাথে একাত্ততা পোষন করতে পারি?

*** আমার মনে হচ্ছে ওয়াসওয়াসা সমস্যার কারণে সব গুলো সমস্যা হচ্ছে।

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
প্রথমেই একটি বিষয় বুঝে নেইঃ-
কাবা হচ্ছে মুসলিমদের সালাত আদায় করার দিক নির্দেশন স্থান। মুসলিমরা কাবার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করে কিন্তু কাবার পূজা করেনা। আল্লাহ ব্যতিত অন্য কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর সামনে মাথা নত করা ইসলামে ‘শিরক’

সালাত আদায় করার জন্য যদি নিদির্ষ্ট কোনো দিক নির্ণয় না করা থাকতো তাহলে কেউ হয়তো উত্তর দিকে সালাত আদায় করার ইচ্ছে পোষণ করবে, কেউ হয়তো দক্ষিণ দিকে, কেউ হয়তো বা পূর্ব বা পশ্চিম দিকে মুখ করে সালাত আদায় করার ইচ্ছে করবে। যার ফলে ইবাদত নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতো। 
মুসলিমরা পৃথিবীর যেই স্থানেই থাকুক, এক আল্লাহর ইবাদতে চূড়ান্ত ভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আল্লাহ কাবার দিকে মুখ ফিরিয়ে ইবাদত করার নির্দেশ দিয়েছে। ফলে যেসব মুসলিমরা কা’বার পশ্চিমে বাস করে তারা পূর্ব দিকে ফিরে, যারা পূর্বে বসবাস করে তারা পশ্চিম দিকে মুখ ফিরে সালাত আদায় করে। আবার, কাবার দক্ষিণে বসবাস করা লোকেরা উত্তর দিকে ও উত্তরে বসবাস করা লোকেরা দক্ষিণ দিক ফিরে সালাত আদায় করে। বিশ্ব মানচিত্রে কা’বা পৃথিবীর কেন্দ্রে অবস্থান করে। পৃথিবীর প্রথম মানচিত্র অংকন করে মুসলিমরা। যদিও পরবর্তিতে পশ্চিমারা নতুনভাবে মানচিত্র অংকন করে। কিন্তু তবুও কা’বা পৃথিবীর কেন্দ্রে অবস্থান করে। 
মুসলিমরা কাবার ইবাদত করেনা বরং কাবা হচ্ছে আল্লাহর ইবাদতের প্রতিক।  

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা বলেন, 

قَدۡ نَرٰی تَقَلُّبَ وَجۡہِکَ فِی السَّمَآءِ ۚ فَلَنُوَلِّیَنَّکَ قِبۡلَۃً تَرۡضٰہَا ۪ فَوَلِّ وَجۡہَکَ شَطۡرَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ ؕ وَ حَیۡثُ مَا کُنۡتُمۡ فَوَلُّوۡا وُجُوۡہَکُمۡ شَطۡرَہٗ ؕ وَ اِنَّ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ لَیَعۡلَمُوۡنَ اَنَّہُ الۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّہِمۡ ؕ وَ مَا اللّٰہُ بِغَافِلٍ عَمَّا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۴۴﴾

আকাশের দিকে বার বার তোমার মুখ ফিরানো আমি অবশ্যই দেখছি। অতএব আমি অবশ্যই তোমাকে এমন কিবলার দিকে ফিরাব, যা তুমি পছন্দ কর। সুতরাং তোমার চেহারা মাসজিদুল হারামের দিকে ফিরাও এবং তোমরা যেখানেই থাক, তার দিকেই তোমাদের চেহারা ফিরাও। আর নিশ্চয় যারা কিতাবপ্রাপ্ত হয়েছে, তারা অবশ্যই জানে যে, তা তাদের রবের পক্ষ থেকে সত্য এবং তারা যা করে, সে ব্যাপারে আল্লাহ গাফিল নন। 
(সুরা বাকারা ১৪৪)

فَلۡیَعۡبُدُوۡا رَبَّ ہٰذَا الۡبَیۡتِ ۙ﴿۳﴾ 

অতএব তারা যেন এবাদত করে এই (কাবা) ঘরের পালনকর্তার।
(সুরা কুরাইশ ০৩)


হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، وَعَلِيُّ بْنُ مُحَمَّدٍ، قَالاَ حَدَّثَنَا أَبُو مُعَاوِيَةَ، حَدَّثَنَا عَاصِمٌ الأَحْوَلُ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ سَرْجِسَ، قَالَ رَأَيْتُ الأُصَيْلِعَ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ يُقَبِّلُ الْحَجَرَ وَيَقُولُ إِنِّي لأُقَبِّلُكَ وَإِنِّي لأَعْلَمُ أَنَّكَ حَجَرٌ لاَ تَضُرُّ وَلاَ تَنْفَعُ وَلَوْلاَ أَنِّي رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يُقَبِّلُكَ مَا قَبَّلْتُكَ .

আবদুল্লাহ ইবনে সারজিস (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল-উসায়লিহ্ অর্থাৎ উমার ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) কে দেখলাম যে, তিনি হাজরে আসওয়াদে চুমা দিচ্ছেন আর বলছেন, আমি অবশ্যি তোমাকে চুম্বন করছি। আমি নিশ্চিত জানি যে, তুমি একটি পাথর মাত্র, তুমি ক্ষতিও করতে পারো না এবং উপকারও করতে পারো না। আমি যদি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে তোমায় চুমা দিতে না দেখতাম তাহলে আমিও তোমায় চুমা দিতাম না।

(সহীহুল বুখারী ১৫৯৭, ১৬০৫, ১৬১০, মুসলিম ১২৭০, ১২৭১, তিরমিযী ৮৬০, নাসায়ী ১৫৫৮, ২৯৩৬, ২৯৩৭, ২৯৩৮, আবূ দাউদ ১৮৭৩, ইবনে মাজাহ ২৯৪৩.আহমাদ ১০০, ১৩২, ১৭৭, ২২৭, ২৫৫, ২৭৬, ৩২৭, ৩৬৩, ৩৮২, ৩৮৩, মুয়াত্তা মালেক ১৮৬৪, ১৮৬৫, রাওদুন নাদীর ৭২৩, সহীহ আবু দাউদ ১৬৩৬।)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আমরা কা'বা শরীফকে তওয়াফ করি।
আল্লাহ আমাদের এমনই আদেশ দিয়েছেন, সুতরাং আমরা সেই আদেশ পালন করি।

(০২)
এর কারণে ঈমান এর সমস্যা হবেনা।

(০৩)
এটি মূলত রাসুলুল্লাহ সাঃ এর কাছে দরুদ পৌছানোর জন্য পড়ে,আর রাসুলুল্লাহ সাঃ এর জন্য দরুদ পাঠ  মূলত আল্লাহরই নির্দেশ।

(০৪)
তিনি যে হারাম কাজকে স্পষ্ট কুফুরী বললেন এবং যারা তা সমর্থন করে শেয়ার করছেন, তাদের এক্ষেত্রে ভূল ফতোয়া প্রদানের দায় বর্তাবে,যাহা শরীয়ত অনুমোদন দেয়নি। নিয়ত শুদ্ধ থাকায় আশা করা যায় এজন্য আল্লাহ তায়ালা তাকে মাফ করবেন।
তার ঈমানে সমস্যা হবেনা।

আপনার ঈমানে সমস্যা হবেনা।
উক্ত ফতোয়ার "স্পষ্ট কুফুরী" অংশটুকুর প্রতি একাত্মতা পোষন করা যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...