আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
1,568 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)
edited by

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ শায়খ,
আদীব হুজুরের "দরদী মালীর কথা শোনো" ১ম খন্ড কিতাবের ১১৬ নাম্বার পৃষ্ঠায় পড়েছি যে,

"সরকারী কোষাগারে হালাল হারামের কোনো তমিজ নেই। জঘন্যসব হারাম রাজস্ব সরকারী তহবিলে জমা হচ্ছে।এ জন্য মাদারিসে কাউমিয়া সবসময় সরকারী সাহায্য থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রেখেছে।যত দিন রাখতে পারবে তত দিনই কল্যাণ।"

শায়খ,আমার বাবা সরকারী চাকরিজীবী। তার আয় করা অর্থ তো সরকারই দেয়, সরকারের রাজস্ব তহবিল থেকেই বোধহয়৷ তাহলে এটা কি হালাল টাকা না হারাম?

  • উল্লেখ্য, আমার বাবা সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।সাথে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদগুলোর ইমামদের বেতন ও হালাল কি না জানতে চাই শায়খ!

1 Answer

+1 vote
by (597,330 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

যার নিকট হালাল-হারাম সংমিশ্রিত মাল রয়েছে,তার অধীনে চাকুরী করা বৈধ।তবে শর্ত হল,যাতে কোনো হারাম কাজের ডিউটি না হয়।(কিতাবুন-নাওয়াযিল- ১২/৫১৭)  

সরকারী রাজস্ব খাতে যেভাবে হারাম মাল রয়েছে,ঠিক সেভাবে হালাল মালও রয়েছে।তাই সরকারী চাকুরী করা বৈধ হবে। আমাদের প্রয়োজনীয় প্রত্যেকটা জিনিষ থেকে ট্যাক্স নেয়া হচ্ছে।এমনকি আমাদের প্রত্যেকটা ফোনকল থেকেও ট্যাক্স নেয়া হচ্ছে।তাছাড়া প্রাকৃতিক সম্পদ তো রয়েছেই।তাই বিনা সংকোচে সরকারী চাকুরী বৈধ হবে। বর্তমান সময়ে ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার নিয়ত রেখে মুসলমানদের কে বেশী বেশী করে সরকারী চাকুরীতে জয়েন হওয়া জরুরী। কেননা বিভিন্ন রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে যে,সংখ্যালঘু জাতি সরকারী চাকুরী তে দিনদিন সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিকে এগোচ্ছে। যাতেকরে আমাদেরকে রাস্ট্র ছাড়া না হতে হয় সেদিকে আমাদেরকে এখনই বিশেষ নজর দিতে হবে। এ হল ফাতাওয়া, এবং ফাতাওয়া পরবর্তী পরামর্শ। কিন্তু শরীয়ত আরেকটা জিনিষের প্রতি লক্ষ্য করার ঘোষণা দিয়েছে সেটা হল,ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নিতে নিজের মনের রায়কে অগ্রাধিকার দেয়া- বিস্তারিত বুঝার জন্য প্রথমে আমাদেরকে বুঝতে হবে যে,
শরীয়তে দু'টি জিনিষ রয়েছে,একটি হল, রুখসত এবং অন্যটি হল আযিমত। রূখসত হল,কোনো কিছুর অনুমোদন দেয়া।বৈধতার ঘোষণা দেয়া।আর আযিমত হল, বৈধ ফাতাওয়া আসার পরও সতর্কতামূলক নিজেকে বাছিয়ে রাখা। আদীব হুজুর জায়েয-নাজায়েয এর আলোচনা না করে সতর্কতার বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছেন।আপনার পিতার বেতন বিনা দ্বিধায় হালাল হবে। আপনাদের যদি বেশ কোনো প্রয়োজন না থাকে তাবে সতর্কতামূলক বেঁচে থাকতে পারেন।এবং এটাই সবচেয়ে উত্তম। কেননা সন্দেহ থেকে বেছে থাকা তাকওয়ার সর্বোচ্ছ স্থর। হাদীস শরীেফে রুখসতের মুকাবেলায় আযিমতকে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বর্ণিত হয়েছে, 

ওয়াবিসা ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,
 ﻭﻋﻦ ﻭﺍﺑﺼﺔَ ﺑﻦِ ﻣَﻌْﺒِﺪٍ ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﷺ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺟِﺌْﺖَ ﺗﺴﺄَﻝُ ﻋﻦِ ﺍﻟﺒِﺮِّ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺍﺳْﺘَﻔْﺖِ ﻗَﻠْﺒَﻚَ، ﺍﻟﺒِﺮُّ : ﻣَﺎ ﺍﻃْﻤَﺄَﻧَّﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻭﺍﻃْﻤَﺄَﻥَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻘَﻠْﺐُ، ﻭﺍﻹِﺛﻢُ : ﻣَﺎ ﺣﺎﻙَ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ، ﻭﺗَﺮَﺩَّﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ، ﻭﺇِﻥْ ﺃَﻓْﺘَﺎﻙَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻭَﺃَﻓْﺘَﻮﻙَ » ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ، ﺭﻭﺍﻩُ ﺃﺣﻤﺪُ ﻭﺍﻟﺪَّﺍﺭﻣِﻲُّ ﻓﻲ " ﻣُﺴْﻨَﺪَﻳْﻬِﻤﺎ ." 
তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট গেলাম।রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাকে বললেন,তুমি কি নেকীর কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছ?আমি বললাম জ্বী হ্যা, ইয়া রাসূলাল্লাহ!তখন তিনি আমাকে বললেন,তুমি তোমার অন্তরের নিকট ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করো।নেকি হল সেটা যার উপর অন্তর প্রশান্তিবোধ করে,এবং যে জিনিষের উপর অন্তর শান্ত থাকে।আর গোনাহ হল সেটা,যা অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে নাড়িয়ে দেয়,এবং অন্তরকে দ্বিধান্বিত করে ফেলে।যদিও উক্ত কাজ সম্পর্কে মুফতিগণ বৈধতার ফাতাওয়া প্রদাণ করুক না কেন।(মুসনাদে আহমদ-১৭৫৫)

হাসান ইবনে আলী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,
 ﻭﻋﻦ ﺍﻟﺤَﺴَﻦِ ﺑﻦ ﻋَﻠﻲٍّ ﺭﺿﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﻔِﻈْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ : « ﺩَﻉْ ﻣَﺎ ﻳَﺮِﻳﺒُﻚَ ﺇِﻟﻰ ﻣَﺎ ﻻ ﻳﺮِﻳﺒُﻚ » ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﻗﺎﻝ : ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ ﺻﺤﻴﺢٌ 
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি।তিনি বলেন,সন্দেহ যুক্ত জিনিষকে পরিহার করে সন্দেহমুক্ত জিনিষকে গ্রহণ করো।(সুনানু তিরমিযি-২৪৪২)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...