বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
যার নিকট হালাল-হারাম সংমিশ্রিত মাল রয়েছে,তার অধীনে চাকুরী করা বৈধ।তবে শর্ত হল,যাতে কোনো হারাম কাজের ডিউটি না হয়।(কিতাবুন-নাওয়াযিল- ১২/৫১৭)
সরকারী রাজস্ব খাতে যেভাবে হারাম মাল রয়েছে,ঠিক সেভাবে হালাল মালও রয়েছে।তাই সরকারী চাকুরী করা বৈধ হবে।
আমাদের প্রয়োজনীয় প্রত্যেকটা জিনিষ থেকে ট্যাক্স নেয়া হচ্ছে।এমনকি আমাদের প্রত্যেকটা ফোনকল থেকেও ট্যাক্স নেয়া হচ্ছে।তাছাড়া প্রাকৃতিক সম্পদ তো রয়েছেই।তাই বিনা সংকোচে সরকারী চাকুরী বৈধ হবে।
বর্তমান সময়ে ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার নিয়ত রেখে মুসলমানদের কে বেশী বেশী করে সরকারী চাকুরীতে জয়েন হওয়া জরুরী। কেননা বিভিন্ন রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে যে,সংখ্যালঘু জাতি সরকারী চাকুরী তে দিনদিন সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিকে এগোচ্ছে। যাতেকরে আমাদেরকে রাস্ট্র ছাড়া না হতে হয় সেদিকে আমাদেরকে এখনই বিশেষ নজর দিতে হবে।
এ হল ফাতাওয়া, এবং ফাতাওয়া পরবর্তী পরামর্শ।
কিন্তু শরীয়ত আরেকটা জিনিষের প্রতি লক্ষ্য করার ঘোষণা দিয়েছে সেটা হল,ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নিতে নিজের মনের রায়কে অগ্রাধিকার দেয়া-
বিস্তারিত বুঝার জন্য প্রথমে আমাদেরকে বুঝতে হবে যে,
শরীয়তে দু'টি জিনিষ রয়েছে,একটি হল, রুখসত এবং অন্যটি হল আযিমত।
রূখসত হল,কোনো কিছুর অনুমোদন দেয়া।বৈধতার ঘোষণা দেয়া।আর আযিমত হল, বৈধ ফাতাওয়া আসার পরও সতর্কতামূলক নিজেকে বাছিয়ে রাখা।
আদীব হুজুর জায়েয-নাজায়েয এর আলোচনা না করে সতর্কতার বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছেন।আপনার পিতার বেতন বিনা দ্বিধায় হালাল হবে।
আপনাদের যদি বেশ কোনো প্রয়োজন না থাকে তাবে সতর্কতামূলক বেঁচে থাকতে পারেন।এবং এটাই সবচেয়ে উত্তম।
কেননা সন্দেহ থেকে বেছে থাকা তাকওয়ার সর্বোচ্ছ স্থর।
হাদীস শরীেফে রুখসতের মুকাবেলায় আযিমতকে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা বর্ণিত হয়েছে,
ওয়াবিসা ইবনে মা'বাদ রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻭﻋﻦ ﻭﺍﺑﺼﺔَ ﺑﻦِ ﻣَﻌْﺒِﺪٍ ﻗَﺎﻝَ : ﺃَﺗَﻴْﺖُ ﺭﺳﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪ ﷺ ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺟِﺌْﺖَ ﺗﺴﺄَﻝُ ﻋﻦِ ﺍﻟﺒِﺮِّ؟ » ﻗُﻠْﺖُ : ﻧَﻌَﻢْ، ﻓَﻘَﺎﻝَ : « ﺍﺳْﺘَﻔْﺖِ ﻗَﻠْﺒَﻚَ، ﺍﻟﺒِﺮُّ : ﻣَﺎ ﺍﻃْﻤَﺄَﻧَّﺖْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲُ، ﻭﺍﻃْﻤَﺄَﻥَّ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﺍﻟﻘَﻠْﺐُ، ﻭﺍﻹِﺛﻢُ : ﻣَﺎ ﺣﺎﻙَ ﻓﻲ ﺍﻟﻨَّﻔْﺲِ، ﻭﺗَﺮَﺩَّﺩَ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﺪْﺭِ، ﻭﺇِﻥْ ﺃَﻓْﺘَﺎﻙَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ ﻭَﺃَﻓْﺘَﻮﻙَ » ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ، ﺭﻭﺍﻩُ ﺃﺣﻤﺪُ ﻭﺍﻟﺪَّﺍﺭﻣِﻲُّ ﻓﻲ " ﻣُﺴْﻨَﺪَﻳْﻬِﻤﺎ ."
তিনি বলেন,আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট গেলাম।রাসূলুল্লাহ সাঃ আমাকে বললেন,তুমি কি নেকীর কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছ?আমি বললাম জ্বী হ্যা, ইয়া রাসূলাল্লাহ!তখন তিনি আমাকে বললেন,তুমি তোমার অন্তরের নিকট ফাতওয়া জিজ্ঞাসা করো।নেকি হল সেটা যার উপর অন্তর প্রশান্তিবোধ করে,এবং যে জিনিষের উপর অন্তর শান্ত থাকে।আর গোনাহ হল সেটা,যা অন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করে নাড়িয়ে দেয়,এবং অন্তরকে দ্বিধান্বিত করে ফেলে।যদিও উক্ত কাজ সম্পর্কে মুফতিগণ বৈধতার ফাতাওয়া প্রদাণ করুক না কেন।(মুসনাদে আহমদ-১৭৫৫)
হাসান ইবনে আলী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে,
ﻭﻋﻦ ﺍﻟﺤَﺴَﻦِ ﺑﻦ ﻋَﻠﻲٍّ ﺭﺿﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﻔِﻈْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ : « ﺩَﻉْ ﻣَﺎ ﻳَﺮِﻳﺒُﻚَ ﺇِﻟﻰ ﻣَﺎ ﻻ ﻳﺮِﻳﺒُﻚ » ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﻗﺎﻝ : ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ ﺻﺤﻴﺢٌ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি।তিনি বলেন,সন্দেহ যুক্ত জিনিষকে পরিহার করে সন্দেহমুক্ত জিনিষকে গ্রহণ করো।(সুনানু তিরমিযি-২৪৪২)