আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
100 views
in পবিত্রতা (Purity) by (22 points)
edited by
আমি পবিত্রতার ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত। এখন কিছুটা সুস্থ। গত ২ মাস অনেক আক্রান্ত ছিলাম।

১. আমার বীর্য বের হয়েছিল ( স্বপ্নদোষ নাকি হৈস্থমিথুন ভুলে গেছি) কারণ তা প্রায় ১ মাস আগের কথা। ঘর থেকে বের হওয়ার সময় আমার সেই নাপাক কাপড় দরজা যেখানে আটকানো থাকে সেখানে লেগেছিল। যেই স্থানে লেগেছিল সেই স্থানে বীর্য ছিল কি না আমি নিশ্চিত না। এখন দরজার সেই স্থান কি নাপাক?

২. আমার স্বপ্নদোষ হয়েছিল। এরপর ঘর থেকে বের হই। আমার বাম হাতে বীর্য লেগেছিল কারণ আমি হাত দিয়ে পরীক্ষা করেছিলাম। এরপর আমি দরজা খুলি। দরজা খুলার সময় হাত শুকনো ছিল নাকি ভেজা আমি নিশ্চিত না। আমি সাধারণত যেই হাতে নাপাকি লাগে সেই হাত দিয়ে কোন কিছু স্পর্শ করি না। তাই,আমি মনে হয় ডান হাতেই দরজা খুলেছিলাম। স্টিলের দরজা। এখন সেই দরজা কি নাপাক ধরে নিবো? যদি এমন থাকে যে বাম হাতে ধরেছি এবং হাত ভেজাও ছিল? এটাই ভয়।

৩. একটি কাঠের চেয়ারে বীর্য লেগেছিল। আমি ২ দিন ভেজা গেঞ্জি দিয়ে চেয়ার মুছেছি। চেয়ার কি পাক ধরে নিবো?

৪. আমি ওয়াসওয়াসা থেকে নিজেকে আটকানোর জন্য আমি এভাবে বলেছিলামঃ আমি যদি ঈমান বড় মনে করি তাহলে সেই ওয়াসওয়াসা অনুযায়ী নাপাক মনে করবো না। আর যদি সন্দেহ কে বড় মনে করি তাহলে নাপাক মনে করবো। এখন আমি যদি সন্দেহের স্থানগুলো নাপাক মনে করে পাক করি তাহলে কি ঈমান চলে যাবে?

৫. প্রায় ১ মাস আগে একটি চায়ের দোকানে নাপাক হাত ধুয়েছিলাম। হাত ধোয়ার সময় নাপাক হাত তার পানির বড় বালটিতে লাগে মানে ভিতরে নাপাকি ঢুকেছিল হয়তো। সেই দোকানের আসবাব পত্র কি নাপাক? সেই বালটি কি নাপাক?

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


শরীয়তে নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত কোনো কিছুকে নাপাক বলার সুযোগ নেই।
যেটি নিম্নোক্ত হাদীস থেকে বুঝা যায়।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ بْنُ سَعِيدٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي خَلَفٍ، قَالَا حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ، وَعَبَّادِ بْنِ تَمِيمٍ، عَنْ عَمِّهِ، قَالَ: شُكِيَ إِلَى النَّبِيِّ صلي الله عليه وسلم الرَّجُلُ يَجِدُ الشَّىْءَ فِي الصَّلَاةِ حَتَّى يُخَيَّلَ إِلَيْهِ فَقَالَ " لَا يَنْفَتِلُ حَتَّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَوْ يَجِدَ رِيحًا " . - صحيح : 

‘আব্বাদ ইবনু তামীম হতে তাঁর চাচার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে অভিযোগ করল যে, কখনো সলাতের মধ্যে কিছু একটা সন্দেহ হয় যে, তার অযু হয়ত নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বললেন, (বায়ু নির্গত হওয়ার) শব্দ না শুনা কিংবা গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত সলাত ছাড়বে না।

বুখারী (অধ্যায়ঃ উযু, অনুঃ নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহ বশতঃ উযু করতে হবে না, হাঃ ১৩৭), মুসলিম ৩৬২ (অধ্যায়ঃ হায়িয, অনুঃ পবিত্রতার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর উযু নষ্ট হওয়ার সন্দেহ হলেও ঐ অবস্থায় সালাত আদায় করা জায়িয,মিশকাতুল মাসাবিহ ৩০৬)

এই হাদীসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসিনে কেরামগন বলেছেনঃ

ব্যাখ্যা: قَوْلُهٗ (حَتّى يَسْمَعَ صَوْتًا أَو يَجِدَ رِيْحًا) (যতক্ষণ না সে বায়ু বের হওয়ার শব্দ বা নির্গত বায়ুর গন্ধ পাবে ততক্ষণ নামাজ ছেড়ে আসবে না)। এর অর্থ হলো যতক্ষণ না সে শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়া বা অন্য যে কোন পন্থায় তার বায়ু নির্গত হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত হয় ততক্ষণ নামাজ পরিত্যাগ করবে না বা ছেড়ে আসবে না। তবে এতে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য শুধুমাত্র শব্দ শ্রবণ বা গন্ধ পাওয়াটিই শর্ত নয়।

এ হাদীস আরও প্রমাণ করে যে, শারী‘আতের কোন বিষয়ে সন্দেহের মাধ্যমে সুনিশ্চিত বিষয় বাতিল হয়ে যাবে না। অতএব যার সন্দেহ হবে বায়ু নির্গত হয়েছে কিনা তবে সে তার অজু ভঙ্গ না হওয়ার বিষয়ে নিশ্চিত থাকবে। নিশ্চিত না হাওয়া পর্যন্ত এ সন্দেহ তার কোন ক্ষতি করবে না। আর এটি অন্যান্য বিষয়েও সমভাবে প্রযোজ্য।

আল্লামা ইবনে নুজাইম রাহ,লিখেন,
اﻟْﻘَﺎﻋِﺪَﺓُ اﻟﺜَّﺎﻟِﺜَﺔُ: اﻟْﻴَﻘِﻴﻦُ ﻻَ ﻳَﺰُﻭﻝُ ﺑِﺎﻟﺸَّﻚِّ
ﻭَﺩَﻟِﻴﻠُﻬَﺎ ﻣَﺎ ﺭَﻭَاﻩُ ﻣُﺴْﻠِﻢٌ ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻪُ ﻣَﺮْﻓُﻮﻋًﺎ {ﺇﺫَا ﻭَﺟَﺪَ ﺃَﺣَﺪُﻛُﻢْ ﻓِﻲ ﺑَﻄْﻨِﻪِ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﻓَﺄَﺷْﻜَﻞَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺃَﺧَﺮَﺝَ ﻣِﻨْﻪُ ﺷَﻲْءٌ ﺃَﻡْ ﻻَ ﻓَﻼَ ﻳَﺨْﺮُﺟَﻦَّ ﻣِﻦْ اﻟْﻤَﺴْﺠِﺪِ ﺣَﺘَّﻰ
ﻳَﺴْﻤَﻊَ ﺻَﻮْﺗًﺎ، ﺃَﻭْ ﻳَﺠِﺪَ ﺭِﻳﺤًﺎ} 

ভাবার্থঃতৃতীয় উসূল,ঈয়াক্বিন(দৃঢ় বিশ্বাস)সন্দের দ্বারা খতম হয় না।[তথা কারো কোনো বিষয় সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে, সে বিষয় সম্পর্কে বিপরিত কোনো সন্দেহের উদ্রেক হলে পূর্ব বিশ্বাসের কোনো ক্ষতি হবে না।অর্থাৎ নতুন করে জন্ম নেয়া সন্দেহ অগ্রহণযোগ্য ]
মুসলিম শরীফের সনদে বর্ণিত হযরত আবু-হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত হাদীস তার  উজ্জল দৃষ্টান্ত।
হাদীসটি এই, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি কারো তার পায়ুপথে কিছু বের হওয়ার সন্দেহ হয়।এবং উক্ত বের হওয়া না হওয়া নিয়ে সে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যায়।তাহলে সে যেন মসজিদ থেকে (অজু করার নিমিত্তে) বের না হয়,যতক্ষণ না সে বায়ুর আওয়াজ শুনছে বা এর দুর্গন্ধ তার নাকে আসছে।(আল-আশবাহ ওয়ান-নাযাইর;১/৪৭)............ এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/293

★সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
(০১)
পরিপূর্ণ ইয়াকিন বিশ্বাস ছাড়া কাপড় বা শরীর নাপাক হবে না। 
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে, আপনার নাপাক কাপড় দরজা যেখানে আটকানো থাকে সেখানে লেগেছিল। যেই স্থানে লেগেছিল সেই স্থানে বীর্য ছিল কি না আপনি নিশ্চিত না। 
এখন দরজার সেই স্থানে বীর্য লেগে থাকলে,বীর্যের কোনো দাগ পরিলক্ষিত হলে,দরজা নাপাক হবে।

নতুবা শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতে দরজাকে নাপাক বলার সুযোগ নেই।

(০২)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি দরজাকে পাক ধরে নিবেন।

(০৩)
কাঠের চেয়ারে যদি কোন নাপাকি লাগে তাহলে ভেজা কাপড় দিয়ে ৩ বার মুছে ফেললে উক্ত কাঠ পাক-পবিত্র হয়ে যাবে।

আরো জানুনঃ- 

সুতরাং প্রশ্নের বিবরণ মতে এখনো উক্ত চেয়ার পাক হয়নি।
পবিত্র একটি কাপড় ভিজিয়ে নিয়ে আরো একবার সেই চেয়ার মুছতে হবে।
তারপর সেটি পাক হবে।

(০৪)
এখন যদি আপনি সন্দেহের স্থানগুলো নাপাক মনে করে পাক করেন, তাহলে ঈমান চলে যাবেনা।

(০৫)
সেই দোকানের আসবাব পত্র নাপাক নয়।

সেই বালটিতে হাত লাগার সময় আপনার হাত ভেজা থাকলে বালতির উক্ত স্থান নাপাক হয়ে যাবে।
এক্ষেত্রে বালতির পানিতে নাপাক হাত লাগলে বালতির পানি নাপাক হয়ে যাবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...