জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
শরীয়তের বিধান মতে সূদ দেওয়া,গ্রহন করা,তাতে সহযোগিতা করা সবই হারাম।
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَذَرُوا مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبَا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ [٢:٢٧٨]
হে ঈমানদারগণ,তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে,তা পরিত্যাগ কর,যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক। [সূরা বাকারা-২৭৮]
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَأْكُلُوا الرِّبَا أَضْعَافًا مُّضَاعَفَةً ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٣:١٣٠]
হে ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কল্যাণ অর্জন করতে পারো। [সুরা আলে ইমরান-১৩০]
হাদিস শরিফে এসেছে-
لَعَنَ رَسُولُ اللهِ ﷺ آكل الربا وموكله وكاتبه وشاهديه، وقال : هم سواء.
আল্লাহর রাসূল ﷺ সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক এবং তার উপর সাক্ষীদ্বয়কে অভিশাপ করেছেন, আর বলেছেন, ওরা সকলেই সমান। (মুসনাদে আহমাদ ৩৮০৯)
যদি ব্যাংকের এমন কোনো সেক্টরের কাজ হয়,যাতে সুদী কাজে জড়িত হতে হয় না।যেমনঃ ড্রাইভার, ঝাড়ুদার, দারোয়ান, জায়েজ কারবারে বিনিয়োগ ইত্যাদি সেক্টর হয়,তাহলে যেহেতু এসবে সরাসরি সুদের সহায়তা নেই তাই এমন সেক্টরে কাজ করার সুযোগ অবশ্যই রয়েছে।
ব্যাংকের অবস্থা এই যে, তার পূর্ণ সম্পদ কয়েকটি বিষয়ের সমষ্টি। যথা-
১-মূলধন।
২-সঞ্চয়কারীদের জমাকৃত টাকা।
৩-জায়েজ ব্যবসার আমদানী।
৪-সুদ এবং হারাম ব্যাবসার আমদানী।
এ চারটি বিষয়ের মাঝে কেবল ৪র্থ সুরতটি হারাম। বাকিগুলো যদি কোন হারাম কাজ না হয় তাহলে মূলত জায়েজ।
,
যেসব ব্যাংকে প্রথম ৩টি বিষয়ের লেনদেন অধিক। আর ৪র্থ বিষয়টি তথা হারাম লেনদেনের লভ্যাংশ কম সেসব ব্যাংকে সেসব ডিপার্টমেন্টে চাকরী করা যাতে হারাম কাজ করতে না হয় তাহলে তা জায়েজ হবে। এবং বেতন নেওয়াও জায়েজ হবে। তবে উত্তম হল এ চাকরীও ছেড়ে দেয়া।
,
কিন্তু যদি হারাম আমদানী বেশি হয় হালালের তুলনায়, বা হারাম কাজে জড়িত হতে হয় তাহলে উক্ত ব্যাংকে চাকরী করা জায়েজ নয়। এ থেকে বেতন নেওয়াও জায়েজ নয়। বেতন নিলে তা হারাম হিসেবে গণ্য হবে। {ফাতওয়ায়ে উসমানী-৩/৩৯৪-৩৯৬}
,
ব্যাংকে চাকুরী সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
হারাম সম্পদ অর্জনকারীর সম্পদের কেউ ওয়ারিশ হয়না।
তার পুরো সম্পদ ফকির মিসকিনকে সদকাহ করা দিতে হবে।
আর যদি মাইয়্যিতের পুরো সম্পদ হারাম না হয়, বরং হালাল হারাম মিশ্রিত, সেক্ষেত্রে তার ওয়ারিশগন তার সম্পদের অংশ পাবে।
তবে হারাম অংশটুকু গ্রহন না করে তাহা ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিবে।
مات وکسبہ حرام فالمیراث حلال، ثم رمز وقال: لا نأخذ بہذہ الروایة، وہو حرام مطلقا علی الورثة فتنبہ. اہ. ح، ومفادہ الحرمة وإن لم یعلم أربابہ وینبغی تقییدہ بما إذا کان عین الحرام لیوافق ما نقلناہ، إذ لو اختلط بحیث لا یتمیز یملکہ ملکا خبیثا، لکن لا یحل لہ التصرف فیہ ما لم یؤد بدلہ کما حققناہ قبیل باب زکاة المال فتأمل.(رد المحتار:7/ ،باب البیع الفاسد)
সারমর্মঃ-
যদি উত্তরাধিকার সম্পত্তির পুরাটাই হারাম হয়,তাহলে তাহা গ্রহন করা যাবেনা।
আর যদি হালাল হারাম মিশ্রিত, সেক্ষেত্রে তাহা পৃথক করা না গেলে হারাম অংশটুকুর বদলা আদায় (সদকাহ) করে দিয়ে সেই সম্পদ গ্রহন করবে।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির রেখে যাওয়া সম্পদের মধ্যে পুরাটাই যদি ব্যাংকে চাকুরীর বেতন থেকে হয়,তার সম্পদের মধ্যে যদি কোনো হালাল অংশই না থাকে,সেক্ষেত্রে কেউ তার উত্তরাধিকরী হিসেবে সম্পদ পাবেনা।
পুরাটাই সদকাহ করে দিতে হবে।
আর যদি ব্যংকে চাকুরীর টাকা আর অন্য হালাল সম্পদ মিশ্রিত হয়,সেক্ষেত্রে হারাম অংশটুকু গ্রহন না করে তাহা বা তার সমপরিমাণ মূল্য ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিব মিসকিনকে দান করে দিতে হবে।