শরীয়তের বিধান হলো বিবাহের পূর্বে পাত্রিকে দেখা জায়েজ আছে।
কারন হাদীস শরীফে এসেছেঃ
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِىِّ ﷺ فَقَالَ : إِنِّىْ
تَزَوَّجْتُ امْرَأَةً مِنَ الْأَنْصَارِ قَالَ : «فَانْظُرْ إِلَيْهَا فَإِنَّ فِى اعْيُنِ الْأَنْصَارِ شَيْئًا».
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলল যে, আমি জনৈকা আনসারী নারীকে বিয়ে করার ইচ্ছা করেছি (আপনার কী অভিমত?)। তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, (বিয়ের পূর্বে) তাকে দেখে নাও। কেননা, আনসারী নারীদের চক্ষুতে কিছু দোষ থাকে।
(মুসলিম ১৪২৪, নাসায়ী ৩২৪৬, আহমাদ ৭৮৪২, সহীহাহ্ ৯৫ মিশকাত ৩০৯৮।)
عَنْ جَابِرٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «إِذَا خَطَبَ أَحَدُكُمُ الْمَرْأَةَ فَإِنِ اسْتَطَاعَ أَنْ يَنْظُرَ إِلٰى مَا يَدْعُوهُ إِلٰى نِكَاحِهَا فَلْيفْعَلْ»
জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন কোনো নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেবে, আর যদি তার পক্ষে এমন কোনো অঙ্গ দেখা সম্ভব হয় যা বিবাহের পক্ষে যথেষ্ট, তখন তা যেন দেখে নেয়।
(আবূ দাঊদ ২০৮২, সহীহাহ্ ৯৯, আহমাদ ১৪৫৮৬, ইরওয়া ১৭৯১, সহীহ আল জামি‘ ৫০৬।)
মুহাম্মাদ বিন মাসলামাহ্ কর্তৃক হাদীসে রয়েছে, তিনি বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি যে, যার অন্তরে আল্লাহ তা‘আলা কোনো নারীকে বিবাহ করার আগ্রহ জাগিয়ে দিবেন, তার দিকে দেখতে কোনো দোষ নেই। নববী (রহঃ) বলেনঃ কোনো মহিলাকে বিবাহ করার ইচ্ছা করলে তাকে দেখা মুস্তাহাব। আর এটাই জুমহূর ‘উলামাগণসহ মালিক, শাফি‘ঈ, হানাফী, কুফী মাযহাবের মত। তবে উক্ত মহিলার শুধু চেহারা ও দু’হাত দেখা বৈধ হবে। কারণ এ দু’টো লজ্জাস্থান নয়। আর চেহারাতে নারীর সুন্দরী বা অসুন্দরী হওয়া প্রমাণিত হবে। আর দু’ হাত দেখায় তার দেহের সৌন্দর্য প্রমাণিত হবে। আর এটাই আমাদের ও আধিকাংশ ‘উলামাগণের মত। হাফিয শামসুদ্দীন ইবনুল কইয়্যূম (রহঃ) বলেনঃ ইমাম শাফি‘ঈ (রহঃ) বলেছেন, পয়গামকৃত মহিলা পর্দায় আবৃত অবস্থায় তার চোহারা ও দু’হাত দেখা যাবে, এর বেশী কিছু দেখা যাবে না। (‘আওনুল মা‘বূদ ৪র্থ খন্ড, হাঃ ২০৮২)
وَعَنِ الْمُغِيرَةِ بْنِ شُعْبَةَ قَالَ خَطَبْتُ امْرَأَةً فَقَالَ لِىْ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «هَلْ نَظَرْتَ إِلَيْهَا؟» قُلْتُ : لَا قَالَ : «فَانْظُرْ إِلَيْهَا فَإِنَّه أَحْرٰى أَنْ يُؤْدَمَ بَيْنَكُمَا»
মুগীরাহ্ ইবনু শু‘বাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জনৈকা নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলাম, এতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞেস করলেন যে, তুমি কি তাকে দেখেছ? আমি বললাম, না, দেখিনি। তখন তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, তুমি তাকে দেখে নাও। কেননা, এই দেখা তোমাদের মাঝে (বৈবাহিক সম্পর্ক) প্রণয়-ভালোবাসা জন্ম দিবে।
(নাসায়ী ৩২৩৫, তিরমিযী ১০৮৭, ইবনু মাজাহ ৮৬৬৫, আহমাদ ১৮১৫৪, সহীহাহ্ ৯৬, সহীহ আল জামি‘ ৮৫৯।)
★ইসলামে পাত্র-পাত্রীর সরাসরি দেখার অনুমতি দেয়া হয়েছে,ছবির মাধ্যমে নয় ।
কারণ- একেতো বিনা প্রয়োজনে ছবি তোলা, ব্যবহার ও
আদান-প্রদান শরীয়তে নিষিদ্ধ ।
তাছাড়া ছবিতে বাস্তব অবস্থা পুরোপুরি যাচাই সম্ভব নয় ।
অধিকন্তু পাত্রের নিকট ছবি পাঠানোর দ্বারা বারবার তার জন্য বেগানা নারীকে দেখার সুযোগ করে দেয়া হয়।
যেটি নাজায়েজ।
অথচ বিবাহের উদ্দেশ্যে পাত্র পাত্রীকে বারবার
দেখার বৈধতা নেই ।
তাছাড়াও এ ছবি পাত্র ব্যতীত অন্যকোন পুরুষও দেখতে পারে ।
অথচ শরীয়তের দৃষ্টিতে তা জায়িয নয় । এ সকল কারণে ছবির মাধ্যমে পাত্রী দেখা বা
পাত্রীর ছবি পাত্রের নিকট পাঠানো ইসলামের
দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ ।
{সূত্রঃ রদ্দুল মুখতার, ৬ : ৩৭০}
সুতরাং যদি এসব কোনো সমস্যায় পড়ার ০০.০১% এর সম্ভাবনা না থাকে,বিশেষ প্রয়োজন যদি হয় যে কোনো ভাবেই সরাসরি দেখার ব্যবস্থা করা যাচ্ছেনা,শুধু মাত্র পাত্রই যদি এক বার ছবিটা দেখে,আর কোনো পুরুষ যদি না দেখে,এক বারের বেশি যদি না দেখে,শুধু মাত্র চেহারার ছবি থাকে,বাকি অংশ পর্দা যুক্ত হয়,তাহলে এই অবস্থায় তার কাছে ছবি পাঠানো সরাসরি নাজায়েয না হলেও ; এতেও সতর্কতা কাম্য।
আরো জানুনঃ
বিবাহের আগে পাত্রীকে সরাসরি দেখে থাকলে, বা সরাসরি পাত্রীকে দেখার সুযোগ থাকলে তার ছবি দেখা জায়েজ নেই।