আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
117 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (46 points)
আসসালামু আলাইকুম।

وَا للّٰهُ خَلَقَكُمْ ثُمَّ يَتَوَفّٰٮكُمْ وَمِنْكُمْ مَّنْ يُّرَدُّ اِلٰۤى اَرْذَلِ الْعُمُرِ لِكَيْ لَا يَعْلَمَ بَعْدَ عِلْمٍ شَيْـئًا ۗ اِنَّ اللّٰهَ عَلِيْمٌ قَدِيْرٌ
ওয়াল্লা-হু খালাকাকুম ছু ম্মা ইয়াতাওয়াফফা-কুম ওয়া মিনকুম মাইঁ ইউরাদ্দুইলা আরযালিল ‘উমুরি লিকাই লা-ইয়া‘লামা বা‘দা ‘ইলমিন শাইআন ইন্নাল্লা-হা ‘আলীমুন কাদীর।

"আল্লাহ্ই তোমাদেরকে পয়দা করেছেন, অতঃপর তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন। তোমাদের কাউকে নিকৃষ্ট বয়সে ফিরিয়ে দেয়া হয়, যাতে জ্ঞান লাভ করার পরেও আর কোন কিছুর জ্ঞান থাকে না। আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞানী, সর্বাপেক্ষা শক্তিমান।"

প্রশ্ন (১) যদি কোন বেক্তি  কোরআনের এইআয়াতের "নিকৃষ্ট বয়সে" এই শব্দটি পড়ার পর তার মনে যদি এরূপ  মনে হয় যে, বয়স আবার নিকৃষ্ট হয় কি করে, যদি শব্দটি অপছন্দ হয়, শব্দটি উল্লেখে কি ভুল হয়েছে? এমন ধরনের যদি সংশয় হয় এবং যদি অপছন্দ হয়  তখন যদি গবেষণা করে দেখে যে না আল্লাহ সঠিক বলেছেন এটাই সঠিক শব্দ । কারণ যৌবন বয়সের মানুষ কর্মঠ অনেক কাজ করতে পারে কিন্তু বৃদ্ধ বয়সে পারেন না।তাই আল্লাহ এভাবে বলেছেন। এতে কি তার সংশয়ের সময়ে ঈমান নষ্ট হয়ে গিয়েছিল কি?  তাকে কি আবার বিবাহ পড়তে হবে?
প্রশ্ন (২)  যদি কোন বেক্তি  ভুলে যায়  যে, " ভালো সপ্ন আল্লাহ দেখায় আর খারাপ সপ্ন শয়তান দেখায়।আর তার এই কথাটা ভুলে থাকারত অবস্থায় যদি তিনি মনে করেন যে, ভালো সপ্ন আল্লাহ দেখায় আর খারাপ সপ্ন শয়তান দেখায় এটা মানুষের এমনি একটা মনের ধারনা এটা সত্য কথা নয় এ পর্যন্ত ভাবতেই যদি তার মনে পড়ে যায় এগুলো তো হাদিসের কথা এগুলো তো সত্য কথা এটা আল্লাহ বলেছে তখন সে আস্তাগফিরুল্লাহ বলে। এখন জানতে চাচ্ছি এতে কি তার ইমান নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো কি? তাকে কি আবার বিবাহ পড়তে হবে?
প্রশ্ন (৩) স্বামী তার স্ত্রীকে বলতে চেয়েছিলো তিনি তার স্ত্রীর অধিকারে কিন্তু বলার সময় যদি এইভাবে বলে যে, "আমি তোমার অধিকারে না"।  এখানে স্বামীর  (তা...) এর নিয়ত নাই। এটা তার স্ত্রীর উপর কোন কিছু পতিত হয়েছে  কি? এটা কি কেনেয়া শব্দ?   মানুষ অনেক সময় তার প্রিয় মানুষকে অধিক ভালবাসলে অনেক সময় এভাবে বলে  যে, আমি তোমাকে ভালবাসি না মানে বোঝাতে চাচ্ছে যে সে তাকে ভালোবাসে।উপরোক্ত  (৩) নং প্রশ্নটি  যদি এরকম হয়।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ اللّٰہُ خَلَقَکُمۡ ثُمَّ یَتَوَفّٰىکُمۡ ۟ۙ وَ مِنۡکُمۡ مَّنۡ یُّرَدُّ اِلٰۤی اَرۡذَلِ الۡعُمُرِ لِکَیۡ لَا یَعۡلَمَ بَعۡدَ عِلۡمٍ شَیۡئًا ؕ اِنَّ اللّٰہَ عَلِیۡمٌ قَدِیۡرٌ ﴿۷۰﴾ 

আল্লাহ্ই তোমাদেরকে পয়দা করেছেন, অতঃপর তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন। তোমাদের কাউকে অকর্মণ্য বয়সে ফিরিয়ে দেয়া হয়, যাতে জ্ঞান লাভ করার পরেও আর কোন কিছুর জ্ঞান থাকে না। আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ জ্ঞানী, সর্বাপেক্ষা শক্তিমান। 

আল্লাহই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তিনি তোমাদের মৃত্যু ঘটাবেন এবং তোমাদের মধ্যে কেহকে কেহকে উপনীত করা হয় জরাজীর্ণ বয়সে। ফলে তারা যা কিছু জানত সে সম্বন্ধে তারা সজ্ঞান থাকেনা; আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান। 
(সূরা আন-নাহাল,আয়াত নং ৭০)

অন্য একটি আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

 وَ مِنۡکُمۡ مَّنۡ یُّتَوَفّٰی وَ مِنۡکُمۡ مَّنۡ یُّرَدُّ اِلٰۤی اَرۡذَلِ الۡعُمُرِ لِکَیۡلَا یَعۡلَمَ مِنۡۢ بَعۡدِ عِلۡمٍ شَیۡئًا ؕ وَ تَرَی الۡاَرۡضَ ہَامِدَۃً فَاِذَاۤ اَنۡزَلۡنَا عَلَیۡہَا الۡمَآءَ اہۡتَزَّتۡ وَ رَبَتۡ وَ اَنۡۢبَتَتۡ مِنۡ کُلِّ زَوۡجٍۭ بَہِیۡجٍ ﴿۵﴾ 

তোমাদের মধ্যে কারো কারো মৃত্যু ঘটান হয় এবং তোমাদের মধ্যে কাউকে কাউকে হীনতম বয়সে(৮) প্রত্যাবৃত্ত করা হয়, যার ফলে সে জানার পরেও যেন কিছুই (আর) জানে না। আর আপনি ভূমিকে দেখুন শুষ্ক, অতঃপর তাতে আমরা পানি বর্ষণ করলে তা আন্দোলিত ও স্ফীত হয় এবং উদগত করে সব ধরনের সুদৃশ্য উদ্ভিদ।
(সুরা হাজ্জ ০৫)

 (أَرْذَلِ الْعُمُرِ) বলে বার্ধক্যের সে বয়স বোঝানো হয়েছে, যাতে মানুষের দৈহিক ও মানসিক শক্তি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। 

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ বয়স থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করে বলতেনঃ 
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ سُوءِ الْعُمُرِ وَفي رِوَاية مِنْ أنْ أُرَدَّ إلى أرذَلِ العُمُرِ 

অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমি মন্দ বয়স থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করি। অন্য এক রেওয়ায়েতে আছেঃ অকৰ্মণ্য বয়সে ফিরিয়ে দেয়া থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি। [বুখারীঃ ৪৭০৭] (أَرْذَلِ الْعُمُرِ) 

এর নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা নেই। তবে উল্লেখিত সংজ্ঞাটি অগ্রগণ্য মনে হয়। 
কুরআনও এর প্রতি (لِكَيْ لَا يَعْلَمَ بَعْدَ عِلْمٍ شَيْئًا) বলে ইঙ্গিত করেছে। অর্থাৎ যে বয়সে হুশ-জ্ঞান অবশিষ্ট না থাকে। ফলে জানা বিষয়ও ভুলে যায়। [ফাতহুল কাদীর]

এটা সেই বয়সকে বলা হয়, যে বয়সে মানুষের বুদ্ধি, চেতনা ও ইন্দ্ৰিয়ানুভূতিতে ত্রুটি দেখা দেয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন বয়স থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিম্নোক্ত দোআ অধিক পরিমাণে পাঠ করতেনঃ

اللَّهُمَّ إنِّي أعُوذُ بِكَ مِنَ البُخْلِ، وَأَعوذُ بِكَ مِنَ الجُبْنِ، وَأعُوذُ بِكَ أنْ أُرَدَّ إِلَى أَرْذَلِ العُمُرِ، وَأعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الدُّنْيَا، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ القَبْرِ

হে আল্লাহ্! আমি কৃপণতা থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি ভীরুতা থেকেও আপনার কাছে আশ্রয় নিচ্ছি। অনুরূপভাবে হীনতম বয়সে উপণীত হওয়া থেকেও আপনার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। তদ্রুপ আমি দুনিয়ার ফেতনায় নিপতিত হওয়া থেকে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। তাছাড়া আমি কবরের শাস্তি থেকেও আপনার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি।' [বুখারীঃ ৫৮৯৩]

এমন বৃদ্ধাবস্থায় মানুষের নিজের শরীরের ও অংগ-প্রত্যংগের কোন খোজ-খবর থাকে না। যে ব্যক্তি অন্যদেরকে জ্ঞান দিতো বুড়ো হয়ে সে এমন অবস্থায় পৌঁছে যায়, যাকে শিশুদের অবস্থার সাথে তুলনা করা যায়। যে জ্ঞান, জানা শোনা, অভিজ্ঞতা ও দুরদর্শিতা ছিল তার গর্বের বস্তু তা এমনই অজ্ঞতায় পরিবর্তিত হয়ে যায় যে, একটি ছোট ছেলেও তার কথায় হাসতে থাকে। এভাবে বান্দার শক্তি দু’টি দুর্বল অবস্থা ঘিরে আছে। এক. ছোট কালের দুর্বলতা, দুই. বৃদ্ধাবস্থার দুর্বলতা। যেমন অন্য আয়াতে বলেছেনঃ আল্লাহ্, তিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেন দুর্বলতা থেকে, দুর্বলতার পর তিনি দেন শক্তি; শক্তির পর আবার দেন দুর্বলতা ও বার্ধক্য। তিনি যা ইচ্ছে সৃষ্টি করেন এবং তিনিই সর্বজ্ঞ, সর্বক্ষম।” [সূরা আর রূম: ৫৪]

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির সংশয়ের সময়ে ঈমান নষ্ট হয়ে যায়নি। তাকে আবার বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবেনা।

(০২)
এতে তার ইমান নষ্ট হয়ে যায়নি। তাকে আবার বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবেনা।

(০৩)
এটি কেনায়া শব্দ নয়।
প্রশ্নের বিবরণ মতে এতে তার তার স্ত্রীর উপর কোন কিছু পতিত হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...