আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
654 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (40 points)

১/ কেনায়া তালাক প‌তিত হওয়ার জন‌্য কি কেনায়াসূচক কথা বলার সময় বা আ‌গে থে‌কেই বৈবা‌হিক সম্পর্ক  ছিন্ন করার মন নি‌য়ে বল‌ছি - এরকম নিয়‌্যাত থাক‌া আবশ‌্যক ? কেননা আমরা অ‌নেক সময়ই অতটা হিসাব কিতাব ক‌রে কথা ব‌লিনা ৷ রা‌গে বা  যে কোন ম‌নের খেয়া‌লে অ‌নেক সময় অ‌নেক কথা ব‌লি  যেগুলো  নি‌য়ে প‌রে চিন্তা ক‌রি যে কোন নিয়‌্যা‌তে না কোন  নিয়‌্যা‌তে বললাম ৷

২/ গত প্র‌শ্নে বল‌ছিলাম , বউ বার বার চট্টগ্রাম (বাপ মা‌য়ের কা‌ছে ) যাওয়ার কথা বলায় কোন এক সে‌ন্সে বল‌ছিলাম  `` চিরত‌রে চ‌লে যাও " ৷ কথা‌টি বলার সময় অতটা চিন্তা ভাবনা ক‌রে ব‌লি‌নি ৷ কিন্ত এখ‌নো মা‌ঝে মা‌ঝে কথা‌টি ম‌নে উ‌দিত হয় এবং ভ‌ী‌তি সৃষ্টি ক‌রে ৷ এখন তার আর আমার বৈবা‌হিক অটুট আ‌ছে?

৩/ মানু‌ষের দীর্ঘ বিবা‌হিত জীব‌নে অ‌নেক কথাই হ‌তে পা‌রে ৷ সুতরাং  হিসাব কিতাব না ক‌রে বলা কথার দ্বারাও য‌দি সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায় তাহ‌লে তো জীবন বড়ই ক‌ঠিন হ‌য়ে প‌ড়ে ( এখা‌নে  হিসাব কিতাব না ক‌রে  সেই সমস্ত কথা বলার কথা বল‌ছি যেগু‌লো দ্বারা  কেবলমাত্র বৈবা‌হিক সম্পর্ক ছিন্ন করা বোঝায় না )

সুতরাং শরীয়‌তে য‌দি এরকম নিয়ম থা‌কে যে, কেউ কেনায়াসূচক কথা বলার সময় বা আ‌গে থে‌কেই ওই কথার কথার দ্বারা  বৈবা‌হিক সম্পর্ক  নি‌শ্চিতভা‌বেই  ছিন্ন কর‌ছে ব‌লে নিয়‌্যাত ক‌রে , ত‌বেই এক তালাকে বা‌য়েন প‌তিত হ‌বে ; য‌দি  অতটা  হিসাব কিতাব না ক‌রেই যে কোন  সে‌ন্সে কেনায়াসূচক কথা ব‌লে ফে‌লে তাহ‌লে কোন তালাক প‌তিত হ‌বে না ৷ তাহ‌লে জীবন ক‌ঠিন হওয়া থে‌কে বাঁচ‌তো ম‌নে হয় ৷ 

যাযাকাল্লাহ

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

★★শরিয়তের পরিভাষায় অস্পষ্ট বাক্যে তালাক দেয়াটাকে বলা হয় ‘কেনায়া তালাক’ বা ইঙ্গিতসূচক শব্দ দ্বারা তালাক। আর কেনায়া তালাকের ক্ষেত্রে নিয়ত তথা তালাকের ইচ্ছা থাকা অত্যাবশ্যক। আর কেনায়া তালাক দ্বারা এক তালাকে বায়েন পতিত হয় ৷

সুতরাং যদি কেউ স্ত্রীকে এরূপ কথা বলে এবং তালাকের নিয়ত করে, তবে স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে। আর যদি তালাকের নিয়ত না করে তাহলে তালাক হবে না। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া, ১/৩৭৫)

ফাতওয়ার কিতাবে আছেঃ 

وَالضَّرْبُ الثَّانِي: الْکِنَايَاتُ، وَلاَيَقَعُ بهَا الطلاَقُ إلاَّبِنِيَةٍ، اَوْ دَلالَةٍ حَالٍ. وَهِيَ عَلَی ضَرْبَيْنِ: مَنْها ثَلاَثَةُ اَلْفَاظٍ يَقَعُ بهَا الطّلاقُ الرَّجْعِيُّ،وَلاَيَقَعُ بهَا إِلا وَاحَدَةٌ، وَهِيَ قَوْلُهُ: اعْتَدِّي، وَاسْتَبْرِئِي رَحِمَکِ، وَاَنْتِ وَاحِدَةٌ، وَبَقِيَةُ الْکِنَايَاتِ إِذا نَوَی بهَا الطلاَقَ کَانَتْ وَاحِدَةً بَائِنَةً، وَإِنْ نَوَی بِهَا ثَلاَثاً کَانَتْ ثَلاَثاً، وَإِنْ نَوَی اثْنَتَيْنِ کَانَتْ وَاحِدَةً، وَهَذَا مِثْلُ قَوْلِهِ: اَنْتِ بَائِنٌ، وَبَتَّةٌ، وَبَتْلَةٌ، وَحَرَامٌ، وَحَبْلُکِ عَلَی غَارِبِکِ، وَالْحَقی بِاَهْلِک، وَخَلِيَةٌ، وَبَرِيّةٌ، وَوَهَبْتُکِ لاهْلِکِ، وَسَرَّحْتُکِ، وَاخْتَارِيْ، وَفارَقْتُکِ، وَاَنْتِ حُرَّةٌ، وَتَقَنَّعِي، وَتَخَمَّرِي، وَاسْتَتِرِيْ، وَاغْرُبِيْ، وَابْتَغِي الاَزْوَاجَ، فَإِنْ لَمْ يَکُنْ لَهُ نِيَةٌ لَمْ يَقَعْ بِهٰذِهِ الاَلْفَاظِ طَلاَقٌ؛ إِلا اَنْ يَکُوْنَا فِيْ مُذَاکَرَةِ الطّلاَقِ؛ فَيَقَعُ بِهَا الطّلاَقُ فِيْ الْقَضَاءِ، وَلاَيَقَعُ فِيْمَابَيْنَةُ وَبَيْنَ اﷲِ تَعَالَی إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَهُ، وَإِنْ لَمْ يَکُوْنَا فِيْ مَذَاکَرَةِ الطّلاَقِ، وَکَانافِيْ غَضَبٍ اَوْ خُصُوْمَةٍ، وَقَعَ الطّلاَقُ بِکُلِّ لَفْظٍ لاَ يُقْصَدُ بِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ، وَلَمْ يَقَعْ بِمَا يُقْصَدُبِهِ السَّبُّ وَالشَّتِيْمَةُ إِلاَّ اَنْ يَنْوِيَةُ.
احمد بن محمد البغدادي المعروف بالقدوري، مختصر القدوري: 363. 364، موسسة الريان للطباعة والنشر والتوزيع، بيروت
برهان الدين علي المرغيناني، الهداية شرح البداية، 1: 241، المکتبة الاسلامية

সারমর্মঃ  
২য় প্রকার,কেনায়া বাক্য।
এর দ্বারা তালাক হবেনা,কিন্তু তালাকের নিয়ত অথবা অবস্থার ভিত্তিতে তালাক হবে। কেনায়া বাক্য দুই প্রকার। এর মধ্যে তিনটি শব্দ এমন আছে, যার দ্বারা  তালাকে রজয়ী পতিত হয়। 
সেগুলো হলোঃ- তুমি ইদ্দত পালন করো,তুমি তোমার গর্ভাশয় মুক্ত করো,তুমি এক।

আর কেনায়া তালাকের অন্যান্য শব্দ (যেক্ষেত্রে তালাকের নিয়ত করলে বায়েন তালাক হয়।)
যেমনঃ- তুমি বিচ্ছিন্ন, তুমি সম্পর্ক মুক্ত,তুমি ভিন্ন,তুমি হারাম,তুমি শুণ্য,তুমি মুক্ত,তোমার রশি তোমার কাঁধে,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হও,আমি তোমাকে তোমার পরিবারের জন্য হেবা-দান করলাম,আমি তোমাকে মুক্ত করে দিলাম,আমি তোমাকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম,তোমার বিষয় তোমার হাতে,তুমি আযাদ,তুমি ঘোমটা পড়,তুমি ওড়না দ্বারা নিজেকে আবৃত করো,তুমি আড়াল হও (পর্দা করো), তুমি বিদূরিত হও, তুমি বের হয়ে যাও,তুমি চলে যাও,তুমি দন্ডায়মান হও (দাঁড়িয়ে যাও), তুমি অন্য স্বামী খুজো।
স্বামীর যদি এখানে নিয়ত না থাকে,তাহলে এ সব বাক্য দ্বারা তালাক হবেনা। তবে মুযাকারায়ে তালাকের ক্ষেত্রে হলে তালাক হবে।
(কুদুরী ৩৬৩.৩৬৪. হেদায়া শরহুল বিদায়াহ ১/২৪১,শরহে বিকায়াহ ২/৭৭)

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
কেনায়া তালাক পতিত হওয়ার জন্য কেনায়াসূচক কথা বলার সময় তালাকের নিয়ত তথা বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করার নিয়তে বলছি - এরকম নিয়্যাত থাকা আবশ্যক

(০২)
আপনি যেহেতু তালাকের নিয়তে বলেননি,তাই আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক অটুট আছে।

(০৩)
কেনায়া বাক্য এভাবে হিসাব কিতাব না করে বললে সমস্যা নেই।

তবে স্পষ্ট তালাকের বাক্য স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বললে তালাক হবে 

তাই স্পষ্ট তালাকের বাক্য স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলার ক্ষেত্রে অবশ্যই মাথা ঠিক রাখতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (40 points)
edited by
মুহতারাম এই প্রশ্নটি করার কয়েক মাস আগের একটি বিষয়  এই প্রশ্নে উল্লেখ করা কেনায়া বাক্যের নিয়ত সম্পর্কে আরো শঙ্কার ভিতর ফেলে দিচ্ছে।সেটা হল, আমার শ্বশুর বলছিল আমার স্ত্রীকে তার এইচএসসি পরীক্ষার পরে তাদের ওখানে পাঠায়ে দিতে কিছুদিন থেকে আসবে। আমার স্ত্রীরও সেই মত ছিল। কিন্তু আমি ব্যাপারটাতে রাজি ছিলাম না এবং আমি মুখে কিছু বলিনি যাতে তার পরীক্ষা খারাপ না হয়। কিন্তু তখনই নিয়ত করছিলাম যদি আমার অমতে তাদের ইচ্ছামত তাদের মেয়েদেরকে নিয়ে যেতেই হয় তাহলে চিরতরে নিয়ে যেতে হবে। অর্থাৎ তাকে ছেড়ে দিব। তারপর এইচএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে প্রতিদিন কয়েকবার করে সে যাওয়ার কথা বলে। তারপর একদিন আমি রাগের মাথায় তাকে বলে দিই ❝চিরতরে চলে যাও❞। তবে তাকে যখন এই চিরতরে চলে যাওয়ার কথা মুখে বলেছি , তখন বলার সময় মনে বিন্দুমাত্র এরকম মনে হয়নি যে তার সাথে বৈবাহিক সম্পর্কটাই ছিন্ন করে ফেলার জন্য এটা বলছি। কিন্তু কথাটা বলার পরে  চিন্তা করছি যে কোন নিয়তে বললাম। আগের ওই বিষয়টাই কি আমার এই কথাটার নিয়াতে কোনো প্রভাব ফেললো। অর্থাৎ ওই কথাটি আমি কোন নিয়তে বলছি এটা নিয়েই আমি এখন মারাত্মক সংশয়ের ভিতর আছি । নিয়াত এর ব্যাপারে আপনাদেরকে বলতে গেলেও মনে হচ্ছে যে আমি কি আমার পক্ষমতো পার্শিয়ালিটি করে কোন কথা বলছি কিনা।
এরকম একটি প্রকাশ্য জিনিসের বিধান যদি মনের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়, তাহলে কোন সময় মনে কোন নিয়ত থাকে, না থাকে এটা নিয়ে তো পরে সংশয় সৃষ্টি হওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই। মনের ভিতর ঠিক কোন সেন্স কতটুকু আসলে সেটা তালাকের নিয়াতের পর্যায়ে চলে যাবে এটার মানদণ্ড কিভাবে নির্ধারণ করব!  এছাড়া আমি অন্যান্য বিষয় নিয়েও পরবর্তীতে মনের খুঁতখুতির ভিতর ভুগি। আমি যে বৈবাহিক সম্পর্কটাই ছিন্ন করার নিয়াতে বলিনি এটাই হওয়ার কথা । তবে এই যে কথাটা বললাম এটা পার্শিয়ালিটি করে বলছি কিনা এটার ভয়ও আমার মনের ভিতর আছে। এখন আমার কি হবে বলেন? 
by (565,890 points)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তালাক হবেনা।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...