আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
84 views
in পবিত্রতা (Purity) by (49 points)
আসসালামু আলাইকুম


আমার কিছু পেশাবজনিত সমস্যা আছে। আমার আগে পেশাবের পর পবিত্রতা অর্জন করতে গিয়ে অনেক সময় লক্ষ্য করলে দেখা যেত যে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর্যন্ত পেশাব লিঙ্গের বাইরে এসে জমে থাকছে। এরপর একটা সময় পর থেকে দেখা গেল যে, আমার পেশাবের বেগ চাপলে বা আমার মনের মধ্যে পেশাব বের হয়ে যাইতেছে এমন অনুভূতি হলে সত্যিকারেই একটু পেশাব বের হয়ে যেত। এ সমস্যা গরমকালের চেয়ে শীতকালে  অনেক বেশি হচ্ছে । এখন গরমকালের সুবিধা ছিল যে তখন আমি আমার পেশাবের বেগ চাপলে বা আমার মনের মধ্যে পেশাব বের হয়ে যাইতেছে এমন অনুভূতি হলে আমি চেক করতাম। তো তখন যদি দেখতাম আমার টা সন্দেহ ছিল তাহলে কিছু করতাম না আার যদি দেখতাম আমার পেশাব হালকা একটু বের হয়েছে তো তখন ভাবতাম যেহেতু বের হয়েছে তাহলে হয়তো প্যান্টেও লেগেছে। তাই আমাকে প্যান্ট খুলে অন্য প্যান্ট পড়তে হতো। আর ঐ প্যান্টটা পরবর্তীতে ধুতে হতো। এ সমস্যার কারণে আমি আন্ডারওয়্যার পড়া শুরু করি। আন্ডারওয়্যার পড়ার পর থেকে প্রত্যেক পেশাবের পর আমি আন্ডারওয়্যার টা পানি দিয়ে মুছে রাখতাম।শীত শুরু হওয়ার পর একটা সময় থেকে আমি এভাবে লক্ষ্য করা ছেড়ে দিলাম। কিন্তু আন্ডারওয়্যার পড়া ছাড়তে পারিনি। আন্ডারওয়্যার ঘরের মধ্যে পড়া হতো এজন্য যে, আন্ডারওয়্যার পড়লে লজ্জাস্থান কিছুটা চাপে থাকতো মানে তেমন খোলামেলা থাকতো না। আর আন্ডারওয়্যার পড়া অবস্থায় থাকলে যদি হালকা একটু পেশাব বেরও হয়ে যায়, মানে এক ফোঁটারও কম তাহলেও তখন চিন্তা হতো না কারণ আন্ডারওয়্যার পড়া ছিল, পরবর্তীতে আন্ডারওয়্যার পানি দিয়ে মুছে ফেলতাম। কিন্তু আন্ডারওয়্যার পানি দিয়ে ধোয়ার সময় কিছু ছিটা পায়ে পড়তো। তখন হাটু থেকে পায়ের নিচে পর্যন্ত ধুতে হতো। সেই সাথে লজ্জাস্থানে টিস্যু ব্যবহারের সময় হাত অনেক সময় লজ্জাস্থানে লাগত তখন হাতও ধুতে হতো আর আমার হাত অনেক সময় ঘামে। যার কারণে পেশাব করে পবিত্রতা অর্জন করতে গিয়ে আমার ২০-২৫ লেগেই যাই। এতক্ষণ লেগে  যাওয়ার কারনে আমি একবার পেশাবের পর প্রায় আড়াই থেকে তিন ঘন্টা পর পেশাব করি।  উল্লেখ্য আমি একজন ডাক্টারকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে পেশাব বের হওয়া বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছি তিনি যা বলেছেন তার মধ্য থেকে একটি কারণ আমার সাথে মিলে যায় যেটা অনেকক্ষণ পেশাব আটকে রাখা। আমার কিছুটা ওসওয়াসা জনিত সমস্যাও আছে। কিন্তু অনেক সময় আমি ভাবি যে পবিত্রতা অর্জন বিষয়ে আমি যে চেষ্টা করছি তা যদি সন্দেহ বা ওসওয়াসা না হয়ে সত্যিই নাপাকি থাকে তখন তো অনেক কিছু নাপাক  হতে থাকবে। আমার নামাজও তো হয়তো হবে না নাপাকির কারণে। মূলত আন্ডারওয়্যার ব্যবহার করার কারণে আমার বাথরুমে অতিরিক্ত ১০ মিনিট লাগছে। এসকল সমস্যার কারণে আমার জীবন কঠিন হয়ে পড়ছে। সেইসাথে  দ্বীন পালন করাও।


১) এখন আমি চাচ্ছি সুস্থ সুন্দরভাবে জীবন চালনা করতে এবং আন্ডারওয়্যার ব্যবহার না করেই থাকতে। এখন আমার করণীয় কী?

জাযাকাল্লাহু খাইরান

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
ইমাম নববী রাহ উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় লিখেন,
ﻣﻌﻨﺎﻩ ﺃﻥ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ ﺇﻧﻤﺎ ﻳﻮﺳﻮﺱ ﻟﻤﻦ ﺃﻳﺲ ﻣﻦ ﺇﻏﻮﺍﺋﻪ ، ﻓﻴﻨﻜﺪ ﻋﻠﻴﻪ ﺑﺎﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ؛ ﻟﻌﺠﺰﻩ ﻋﻦ ﺇﻏﻮﺍﺋﻪ ، ﻭﺃﻣﺎ ﺍﻟﻜﺎﻓﺮ : ﻓﺈﻧﻪ ﻳﺄﺗﻴﻪ ﻣﻦ ﺣﻴﺚ ﺷﺎﺀ ، ﻭﻻ ﻳﻘﺘﺼﺮ ﻓﻲ ﺣﻘﻪ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ، ﺑﻞ ﻳﺘﻼﻋﺐ ﺑﻪ ﻛﻴﻒ ﺃﺭﺍﺩ ، ﻓﻌﻠﻰ ﻫﺬﺍ ﻣﻌﻨﻰ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ : ﺳﺒﺐ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ : ﻣﺤﺾ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ، ﺃﻭ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ﻋﻼﻣﺔ ﻣﺤﺾ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ، ﻭﻫﺬﺍ ﺍﻟﻘﻮﻝ ﺍﺧﺘﻴﺎﺭ ﺍﻟﻘﺎﺿﻲ ﻋﻴﺎﺽ ...
অর্থাৎ শয়তান সে ব্যক্তিকেই প্ররোচনা দেয়,যাকে গোমরাহ করতে সে নিরাশ হয়ে যায়।সে কাউকে গোমরাহ করতে নিরাশ হয়ে গেলে সর্বশেষে সে মনে সন্দেহ ঢুকিয়ে দিতে চায়।
আর কাফিরের নিকট শয়তান যেকোনো থেকে যেহেতু আসতে পারে,তাই কাফিরকে প্ররোচনা দেয়ার কোনো প্রয়োজন তার থাকে না।কেননা সে যেকোনো সময় তার ইচ্ছামত কাফিরকে ব্যবহার করতে পারে।সুতরাং হাদীসের অর্থ হলো এই যে,ঈন্তরে ঈমানের দানা থাকার দরুণই শয়তান ঈমানদারদেরকে প্ররোচনা দিয়ে থাকে। এ বিষয়ে এটাই কাযী ঈয়ায রাহ এর পছন্দনীয় ব্যাখ্যা।
(আল-মিনহাজ্ব-২/১৫৪)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/1379

প্রস্রাব করার পর পবিত্রতা অর্জন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-
https://www.ifatwa.info/5917

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনার সমস্যা যতোটা না মাসআলা কেন্দ্রীক। তার চেয়ে বেশি মানসিক। তাই প্রথমে নিজের মাঝে আত্মবিশ্বাস আনতে হবে। পেশাব করার পর স্বাভাবিকভাবে পেশাবের ফোটা বন্ধ হওয়া পরিমাণ পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন। লজ্জাস্থানে কিছুটা পানি ছিটিয়ে দিবেন।
তারপর আপনি পবিত্র হয়ে গেছেন, আপনার আর পেশাব বের হচ্ছে না বা বের হবে না এমন আত্মবিশ্বাস নিয়ে অজু করে নামায পড়তে চলে যাবেন। মনের মাঝে আর কোন সন্দেহ বা সংশয়কে প্রশ্রয় দিবেন না। তারপর যদি আবার পেশাব ঝরে বলে আপনি নিশ্চিত হন, তাহলে ঐ যায়গাটা পবিত্র করে আবার অজু করে নিবেন।
পেশাব ঝরা নিশ্চিত না হলে মনে মনে সন্দেহ সংশয়কে প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। যদি বারবার অহেতুক সন্দেহ হয়, ভিজা অনুভূত হয়, তাহলে উক্ত সিক্ততাকে পেশাবের পর পানি ব্যবহার করার পানিকে মনে করে মনকে শান্ত রাখবে। কেবল নিশ্চিত হলেই অজু করতে হবে। সন্দেহের কারণে অযু করার প্রয়োজন নেই।
এভাবে সন্দেহ করতে থাকলে তা আপনার জন্য মারাত্মক মানসিক রোগে পরিণত হবে।
ثم المراد بالخروج من السبلين مجرد الظهور
فى رد المحتار: فلو نزل البول إلى قصبة الذكر لا ينقض بعدم ظهوره، يخالف القلفة، فإنه بنزوله إليها ينقض الوضوء (رد المحتار-١/٢٦٢؛ بدائع الصنائع-١/١٢١(
ولو نزل البول الى قصبة الذكر لا ينقض، لأنه من الباطن، ولو خرج إلى القلفة او إلى اسكنى المرأة ينقض، لأنه من الظاهر (الفتاوى التاتارخانية-١/٢٤١، رقم- ١٨٥(
البول المنتضح قدر رؤس الإبر معفو للضرورة وإن امتلأ الثوب كذا فى التبيين الخ، هذا إذا كان الانتضاح على الثياب والأبدان، أما إذا انتضح فى الماء فإنه ينجسه ولا يعفى عنه (الفتاوى الهندية-1/46(
ولو عرض له الشيطان كثيرا لا يلتفت إلى ذلك كما فى الصلاة، وينضح فرجه بماء حتى لو راى بللا حمله على بلة الماء، هكذا فى الظهيرية (الفتاوى الهندية-1/491(
قوله: لطمانينة القلب لأنه أمر بترك ما يريبه إلى مالا يربيه، وينبغى أن يقيد هذا بغير الموسوس، أما هو فيلزمه قطع مادة الوسواس عنه وعدم التفاته إلى التشكيك لأنه فعل الشيطان، وقد أمرنا بمعادته ومخالفته، (رد المحتار-1/240(


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 196 views
...