আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
59 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (28 points)

আসসালামু আলাইকুম হুজুর। আমি আপনাদেরকে আক্রমণ করছি না। তবে- 

বর্তমানে ১০০% হালাল ইনকাম ৯৯% মানুষেরই নেই। কারণ, যে ব্যক্তি যে কাজই করুক না কেন সে সেটি ১০০% পুরো করতে পারে না। যেমনঃ একজন শিক্ষক স্কুলে বা ক্লাসে যেতে ১ মিনিটও কম বেশি করলে তার দায়িত্ব ১০০% পূরণ হচ্ছে না। একজন শ্রমিকও সামান্য বিশ্রাম বা গাফিলতি করলে ১০০% দ্বায়িত্ব পালন করা হচ্ছে না। তবে সবাই বেতন ঠিকই নিচ্ছে।
একজন ব্যাংকার সুদের কাজে সাহায্য করেন, একজন টিচার স্কুল কলেজে ড্রাম, সংগীত, নৃত্য, শহিদ মিনারে ফুল দেওয়া ইত্যাদি নাজায়েজ কাজ করে ইনকাম করে থাকেন। একজন দোকানদার বিড়ি, সিগারেট,  হালাল হারাম সব টাইপের পণ্য বিক্রি করেন, প্রায় সব ব্যবসায়ী বিক্রির সময় মিথ্যা কথা বলে। কে হারামে নেই? তাই আমার মতে বর্তমান সমাজে কারও ইনকামই ১০০% হালাল নয়। এমনকি হুজুরদেরও ইনকাম হালাল নয়। কেননা মসজিদে ইমাম মুয়াজ্জিনের জন্য যে টাকা সংগ্রহ করা হয় সেখানে হারাম ইনকামকারী  ব্যক্তিও টাকা দিয়ে থাকে। আর মসজিদে কেউ কখনও বলে না যে হারাম ইনকাম হলে টাকা দেওয়া যাবে না। আজ পর্যন্ত শুনলাম না যে, কোনো মসজিদে হারাম টাকার কারণে টাকা নেওয়া হয় নি।

হুজুর আপনি বলেছেন যে, হারাম ইনকামকারী ব্যক্তির টাকা নেওয়া যাবে না।
(তবে কারও হালাল হারাম মিক্সড থাকলে নেওয়া যাবে। আমার কথা হলো সুদখোরও তো অনেক সময় হারাম টাকা দিয়ে হালাল ব্যবসা শুরু করে। মাসয়ালা অনুযায়ী কিন্তু সেসবও হারাম। তবে টাকা নেওয়ার সময় যদি কোনো হুজুর মনে করেন যে, ওই ব্যক্তি সুদখোর হলেও তার হালাল ব্যবসা আছে। তাই তার হাদিয়া নেওয়া যাবে।
তবে আমার প্রশ্ন হলোঃ হুজুররা কি কখনও জানতে চান যে- ওই ব্যক্তির হালাল ব্যবসার ইনভেস্টমেন্ট আসলেই হালাল টাকার কিনা? বা তার ব্যবসার টাকাগুলো সে কিভাবে যোগাড় করেছে? সে তো সুদের টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারে। তাই না? তাই আমার মতে হুজুদের ইনকামও ১০০% হালাল না)
মূলধন হারাম হলে হালাল ব্যবসার ইনকামও হারাম হয়- কিন্তু হুজুররা হাদিয়া নেওয়ার সময় কি প্রশ্ন করেন যে, এই ব্যবসায়ীর হাদিয়ার টাকা যে ব্যবসার তা হালাল মূলধনের কিনা? মসজিদে ১০০০ লোক টাকা দিলে ৭০০ লোকই ব্যবসায়ী থাকে।
হুজুর কি আর বলি। বুঝে নেন। অনেক কথা আসছে। আমার মতে কারও ইনকামই বর্তমানে ১০০% হালাল নয়।
দেশের মসজিদ, রাস্তায় তোলা মাহফিল বা মসজিদ বা ইসলামিক কাজের জন্য তোলা চাঁদা - কোনোটাতেই হালাল হারাম মানা হচ্ছে না। বরং আমার মতে টাকা পেলেই হলো- এই নীতি অবলম্বন করে টাকা তোলা হয় সব জায়গায়।
যেহেতু সামান্য হারাম খেলেও ইবাদত কবুল হয় না। তাই আমার মতে কারও ইবাদতই কবুল হওয়ার কথা নয়।
আপনি কি বলেন হুজুর?

1 Answer

0 votes
by (675,600 points)
edited by
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


হাদীস শরীফে এসেছেঃ  
আবূ হুরায়রাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " أَيُّهَا النَّاسُ، إِنَّ اللهَ طَيِّبٌ لَا يَقْبَلُ إِلَّا طَيِّبًا، وَإِنَّ اللهَ أَمَرَ الْمُؤْمِنِينَ بِمَا أَمَرَ بِهِ الْمُرْسَلِينَ، فَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الرُّسُلُ كُلُوا مِنَ الطَّيِّبَاتِ وَاعْمَلُوا صَالِحًا، إِنِّي بِمَا تَعْمَلُونَ عَلِيمٌ} [المؤمنون: ٥١] وَقَالَ: {يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُلُوا مِنْ طَيِّبَاتِ مَا رَزَقْنَاكُمْ} [البقرة: ١٧٢] ثُمَّ ذَكَرَ الرَّجُلَ يُطِيلُ السَّفَرَ أَشْعَثَ أَغْبَرَ، يَمُدُّ يَدَيْهِ إِلَى السَّمَاءِ، يَا رَبِّ، يَا رَبِّ، وَمَطْعَمُهُ حَرَامٌ، وَمَشْرَبُهُ حَرَامٌ، وَمَلْبَسُهُ حَرَامٌ، وَغُذِيَ بِالْحَرَامِ، فَأَنَّى يُسْتَجَابُ لِذَلِكَ؟ "

 তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “আল্লাহ তা'আলা পবিত্র, তিনি পবিত্র ও হালাল বস্তু ছাড়া গ্রহণ করেন না। আর আল্লাহ তা'আলা তার প্রেরিত রসূলদের যে হুকুম দিয়েছেন মুমিনদেরকেও সে হুকুম দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “হে রসূলগণ! তোমরা পবিত্র ও হালাল জিনিস আহার কর এবং ভাল কাজ কর। আমি তোমাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে জ্ঞাত।" (সূরা আল মু'মিনূন ২৩ঃ ৫১)তিনি (আল্লাহ) আরো বলেছেন, “তোমরা যারা ঈমান এনেছো শোনা আমি তোমাদের যে সব পবিত্র জিনিস রিযক হিসেবে দিয়েছি তা খাও”— (সূরা আল বাকারাহ ২ঃ ১৭২)। অতঃপর তিনি এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দূর-দূরান্ত পর্যন্ত দীর্ঘ সফর করে। ফলে সে ধুলি ধূসরিত রুক্ষ কেশধারী হয়ে পড়ে। অতঃপর সে আকাশের দিকে হাত তুলে বলে, “হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পরিধেয় বস্ত্র হারাম এবং আহার্যও হারাম। কাজেই এমন ব্যক্তির দু'আ তিনি কী করে কবুল করতে পারেন?”(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

https://www.ifatwa.info/1900 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে  যে,

فى الفتاوى الهندية- أهدى إلى رجل شيئا أو أضافه إن  كان غالب ماله من الحلال فلا بأس إلا أن يعلم بأنه حرام ، فإن كان الغالب هو الحرام ينبغي أن لا يقبل الهدية ، ولا يأكل الطعام إلا أن يخبره بأنه حلال ورثته أو استقرضته من رجل ، كذا في الينابيع

যদি এমন কেউ কাউকে কিছু হাদিয়া দেয়,যার অধিকাংশ সম্পত্তি হালাল,তাহলে সেই মালকে গ্রহণ করা নাজায়েয নয়।তবে যদি সে জানতে পারে যে,দাতা হারাম থেকে দিচ্ছে তাহলে এমতাবস্থায় সেটা জায়েয হবে না।আর যদি তার মালের অধিকাংশই হারাম থাকে,তাহলে এমন ব্যক্তির হাদিয়া গ্রহণ জায়েয হবে না।এমন ব্যক্তির ওখানে আহার করাও যাবে না, যতক্ষণ না সে হালাল খাবারের সংবাদ দিচ্ছে বা এটা বলছে যে,সে ধার করে নিয়ে এসে আহার করাচ্ছে।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-৫/৩৪২)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
কেউ যদি আপনাকে হাদিয়া দেয়,সেক্ষেত্রে তার অধিকাংশ ইনকাম হালাল হলে তার হাদিয়া নেয়া যাবে।

উপরে উল্লেখিত অনেক ক্ষেত্রেই ইনকাম পূর্ণ হালাল। এগুলোকে ঢালাও ভাবে হারাম বলা যাবেনা। একটি বস্তু নিশ্চিত হারাম,সেটি অল্প হলেও সেই বস্তু খাওয়া কোনোভাবেই জায়েজ হবেনা। তাই যামানা যেমনই হোক,নিজেকে এমন ভাবে চলানোর চেষ্টা করতে যে,নিজের ইনকামের মধ্যে সূদ,ঘুষ ইত্যাদি টাকা যেনো না আসে।
আল্লাহ তায়ালা হেফাজত করুন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...