আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
88 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (47 points)
আসসালামু আলাইকুম শাইখ।

আমার বাবার অনেক সম্পত্তি ও টাকা পয়সা আছে। যত পায় শুধু জমায়। আগে বছরে একটা জামা দিত ভার্সিটি তে ওঠার পর থেকে তাও দেয় না। ভার্সিটির সেমিস্টার ফী ও দেয় না। চিকিৎসার জন্য আম্মু ১০০০ টাকা চাইসে তা ও দেয় না। আমার পুষ্টিকর খাবার খাওয়া দরকার। যেমন ডিম, কলিজা। এগুলা তেমন আনে না। আমার আম্মু শুধু আমার পিছনে খরচ করে তার বাবার সম্পত্তি থেকে যা ভাড়া পায় তা দিয়ে। আমার আব্বু আম্মুকেও কোনো খরচ দেয় না। শুধু জমায়। বাসায় ভালো খাবার ও তেমন আনে না। এমনিতে থাকার জায়গা আর স্বাভাবিক খাবার আব্বু ই দেয়। কিন্তু আব্বুর এই কৃপণ স্বভাবে আমি অতিষ্ট হয়ে গেছি। আমার ওনার প্রতি বিন্দুমাত্র সম্মান কাজ করে না। উলটো খুব রাগ হয়। মাঝে মাঝে মনে হয় এই মানুষ টা না থাকলেই ভালো। অন্তত তখন তার টাকা পয়সার ভাগ পাবো। আমি নিজে তেমন খরচ প্রিয় মানুষ না।  হিসেব করেই চলি। কিন্তু তার এমন কৃপণতায় খুব কষ্ট পাই। মাঝে মাঝে রেগে যাই। আম্মুকে অনেক কিছু বলি আম্মু ও দুঃখের কথা বলে। এটা কি গীবত হবে?? আসলে খুব কষ্ট পেয়েই বলি। আর আমার ব্যাপারে তার কোনো চিন্তা নাই। আমার ২৬ বছর। বিয়ে নিয়ে কোনো চিন্তা ভাবনা করে না। মনে হয় তার কোনো মেয়েই নাই বিয়ে দেয়ার।  আমি ২৩/২৪ বছর থেকেই বলে আসছি বিয়ের কথা। এখন আমার ধৈর্যের বাধ ভেংগে গেছে। খুব হতাশ লাগে।  দ্বীন থেকে দূরে যেতে মন চায়। খারাপ খারাপ চিন্তা মাথায় আসে। বলে রাখি, আমি অনেক ভালো একটা পাবলিক ইউনিভার্সিটি থেকে গ্র‍্যাজুয়েশন করেছি। ইচ্ছে ছিলো আর মাস্টার্স করবো না যেহেতু ফ্রী মিক্সিং। চাকরি করার ও ইচ্ছা ছিলো না। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে এমন হতাশ অবস্থা থেকে পরিত্রানের জন্য আবার পড়াশুনা করি। চাকরির কথাও মাথায় আসে। যদিও আমি একটু দুর্বল প্রকৃতির।  অল্পতেই টেনশনে পরে যাই।
আমাকে নাসীহাহ দিন। প্লিজ। আমি কিভাবে আগাবো? কি করলে আবার ঈমান মজবুত হবে? দু'আ করি কিন্তু আগের মন প্রানবন্ত না। আমি বিয়ের জন্য বিভিন্ন অনলাইনে ট্রাই করেছি। কিন্তু তেমন রেসপন্স পাইনি। আমি দেখতে তেমন সুন্দর না খাটো। আমার বয়স শুধু বেড়্র যাচ্ছে। এটা আমাকে আরো পেইন দেয়। আমার একজন অভিভাবক দরকার যিনি দ্বীনি এবং আমার দায়িত্ব নিবেন। কিন্তু পাচ্ছি না। দিন দিন হতাশা বেড়ে যাচ্ছে। আমার আরো ৪ জন ভাই বোন আছে। তারাও তেমন কেয়ারিং না। কোনো রকম দায়সারা সম্পর্ক রাখে আরকি।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


শরীয়তের বিধান হলো বালেগ হওয়ার আগ পর্যন্ত ছেলে সন্তানের ভরনপোষণ পিতার উপর ওয়াজিব।

আর মেয়ে সন্তানকে বিবাহ দেওয়ার আগ পর্যন্ত তার ভরনপোষণ পিতার উপর ওয়াজিব। 

কিন্তু ছেলে সন্তান বালেগ হওয়ার পরেও যদি কেহ অসুস্থতা,পাগল, ইলমে দ্বীন শিক্ষায় লিপ্ত থাকা ইত্যাদি কারনে যদি সম্পদ উপার্জন না করতে পারে,তাহলেও তার ভরনপোষণ দেওয়াও পিতার উপর ওয়াজিব বা জরুরি। 
(নাজমুল ফাতওয়া ৫/২১৫) 

ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী তে আছে  

لما فی الھندیۃ(۵۶۳/۱):طلبة العلم إذا كانوا عاجزين عن الكسب لا يهتدون إليه لا تسقط نفقتهم عن آبائهم إذا كانوا مشتغلين بالعلوم الشرعية لا بالخلافيات الركيكة وهذيان الفلاسفة ولهم رشد وإلا لا تجب كذا في الوجيز للكردري ونفقة الإناث واجبة مطلقا على الآباء ما لم يتزوجن إذا لم يكن لهن مال كذا في الخلاصة ولا يجب على الأب نفقة الذكور الكبار إلا أن الولد يكون عاجزا عن الكسب لزمانة أو مرض ومن يقدر على العمل لكن لا يحسن العمل فهو بمنزلة العاجز كذا في فتاوى قاضي خان

যার সারমর্ম হলো তালেবে ইলেম যখন শতীয়তের জ্ঞান অর্জনে লিপ্ত থাকে,সে যদি সম্পদ উপার্জন না করতে পারে,তাহলে তার ভরনপোষণ দেওয়া পিতার উপর ওয়াজিব। 
,,, বালেগ সন্তানের ভরনপোষণ পিতার উপর ওয়াজিব নয়, কিন্তু সে যদি অসুস্থতা, কাজ করতে অক্ষম ইত্যাদি কারনে  সম্পদ উপার্জন না করতে পারে,তাহলে তার ভরনপোষণ দেওয়া পিতার উপর জরুরী। 

باب وُجُوبِ النَّفَقَةِ عَلَى الأَهْلِ وَالْعِيَالِ
حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ حَفْصٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، حَدَّثَنَا الأَعْمَشُ، حَدَّثَنَا أَبُو صَالِحٍ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " أَفْضَلُ الصَّدَقَةِ مَا تَرَكَ غِنًى، وَالْيَدُ الْعُلْيَا خَيْرٌ مِنَ الْيَدِ السُّفْلَى، وَابْدَأْ بِمَنْ تَعُولُ ". تَقُولُ الْمَرْأَةُ إِمَّا أَنْ تُطْعِمَنِي وَإِمَّا أَنْ تُطَلِّقَنِي. وَيَقُولُ الْعَبْدُ أَطْعِمْنِي وَاسْتَعْمِلْنِي. وَيَقُولُ الاِبْنُ أَطْعِمْنِي، إِلَى مَنْ تَدَعُنِي فَقَالُوا يَا أَبَا هُرَيْرَةَ سَمِعْتَ هَذَا مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم. قَالَ لاَ هَذَا مِنْ كِيسِ أَبِي هُرَيْرَةَ.
পরিবার-পরিজনের উপর ব্যয় করা ওয়াজিব
৪৯৬৪। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) ... আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উত্তম সাদাকা হল যা দান করার পরেও মানুষ অমুখাপেক্ষী থাকে। উপরের হাত নীচের হাতের চাইতে শ্রেষ্ঠ। যাদের ভরন-পোষণ তোমার যিম্মায় তাদের আগে দাও। (কেননা) স্ত্রী বলবে, হয় আমাকে খাবার দাও, নতুবা তালাক দাও। গোলাম বলবে, খাবার দাও এবং কাজ করাও। ছেলে বলবে, আমাকে খাবার দাও, আমাকে তুমি কার কাছে রেখে যাচ্ছ? লোকেরা জিজ্ঞাসা করলঃ হে আবূ হুরায়রা আপনি কি এ হাদীস রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছেন? তিনি উত্তরে বললেনঃ এটি আবূ হুরায়রা জামবিলের নয় (বরং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে)।
(বুখারী ৪৯৬৪)

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার আম্মুকে যে আপনার বাবার এহেন কর্মকান্ডের কথা বলে দুঃখ প্রকাশ করেন,এক্ষেত্রে বিষয়টি নিয়ে তিনি আপনার বাবার সাথে কথা বলে সমাধান করেন,এই নিমিত্তে বললে জায়েজ হবে।

নতুবা গীবত হবে।

এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে নিজের ঈমান,আমল,পর্দা ঠিক রেখে যথাসম্ভব বাবার কথা মোতাবেক লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ থাকবে। 
বাবাকে নিজেদের অন্যান্য মুরব্বীদের মাধ্যমে আপনার বিবাহের প্রয়োজনীয়তার বিষয় বুঝাতে হবে, ও পাশাপাশি মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করতে হবে।

তাতেও কাজ না হলে আপনার মায়ের মাধ্যমে ঘটক দিয়ে হোক বা অন্য কাউকে দিয়ে হোক, বিবাহের বায়োডাটা দিয়ে পাত্রের খুজতে বলবেন।
পাশাপাশি দোয়া করবেন,ইনশাআল্লাহ সমাধান মিলবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...