আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
111 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (28 points)

হুজুর আমি একজন ওয়াসওয়াসার রোগী

১. ক) স্ত্রী যদি বলে যে, "পাশের রুমে যাবে না। পাশের রুমে গেলে তালাক দিয়ে যাও।" স্বামী যদি পাশের রুমে যাইতে ধরে এবং স্ত্রী বাধা দেয়, তাহলে সমস্যা হবে? স্ত্রীকে তালাক গ্রহণের অধিকার দেওয়া হয় নি।
) স্ত্রী যদি বলে যে, "পাশের রুমে যাবে না। পাশের রুমে গেলে তালাক দিয়ে যাও।" স্বামী যদি পাশের রুমে যায়, তাহলে সমস্যা হবে? স্ত্রীকে তালাক গ্রহণের অধিকার দেওয়া হয় নি।
২. ক) স্ত্রী যদি স্বামীকে শর্ত দেয়, "পাশের রুমে যাবে না। গেলে তালাক হবে।" আর স্বামী যদি পাশের রুমে যায় তাহলে?
খ) স্ত্রী যদি স্বামীকে শর্ত দেয়, "পাশের রুমে যাবে না। গেলে তালাক হবে।" আর স্বামী যদি পাশের রুমে যাইতে ধরে কিন্তু স্ত্রী বাধা দেয় তাহলে?
৩. তালাকের ওয়াসওয়াসাগ্রস্ত ব্যক্তি যদি ভেবে চিন্তে ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিয়ে তালাক দেয় তাহলে তালাক হবে?
৪. যিহার এবং হুরমতের ওয়াসওয়াসাগ্রস্ত ব্যক্তি যদি ভেবে চিন্তে ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিয়ে যিহার এবং হুরমত করে তাহলে যিহার এবং হুরমত হবে?
৫. আমার ওয়াইফ আমাকে বলল "আমরা ইনশাআল্লাহ সুখে থাকব"। আমি বলছি "তাহলে ওমন কর কেন?" (মানে ওমন করলে (ঝগড়া করলে) সুখে থাকা যায়? বা ঝগড়া করলে কিভাবে সুখে থাকব?) আমার মনে হয়েছিল যে, কথাটি বললে সমস্যা হয় কিনা

৬. গতকালঃ আমার স্ত্রী অনেক বকাবকি করে। তাই আমাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। আমি বলেছিলাম যে, এমন করলে তালাক দিব। বলার একটু পরে আমি মানিব্যাগটি ছুড়ে মারি। আমার মনে হয়েছিল যে, তালাকের নিয়তে ছুঁড়ে মারলাম কিনা। তবে ছুড়ে মারার সময় নিয়ত ছিল বলে মনে হয় না। হয়ত ওটা নিয়তের ওয়াসওয়াসা ছিল।
আজঃ আমার স্ত্রী বকাবকি করতেছিল। আমি বলতে চাইছিলাম যে, গতকালের মত শুরু করলে কিন্তু (মানে গতকালও অনেক বকাবকি করেছে। আর আজও তেমনটা করছে)
আমি যেহেতু ওয়াসওয়াসাগ্রস্ত সেহেতু বলার আগে চিন্তা করি যে, আমি যেহেতু গতকালের কথা বলতে চাচ্ছি সেহেতু গতকাল তালাক জাতীয় কিছু হয়েছে কিনা। মানে কথাটি বললে যেন সমস্যা না হয় সেজন্য চিন্তা করে নেই। হালকা চিন্তা করে দেখলাম সমস্যা হয় নি।তবে গভীরভাবে চিন্তা করি নি। (গতকাল আমি বলেছিলাম, এমন করলে তালাক দিব বা মানিব্যাগ ছুঁড়ে মারছিলাম- যতোটা মনে পড়ছে চিন্তা করার সময় আজ গতকালের এসব বিষয় মাথায় আসে নি) একটু চিন্তা করে বলে দেই, "গতকালের মত শুরু করলে কিন্তু" এটি বলার সময় মনে হলো বা মনে করলাম যে, তালাক জাতীয় কিছু বলে ফেলছি বা হয়ে যাচ্ছে কিনা?!!! এসব মনে হওয়ার বা মনে করার পরেও পাত্তা দিয়ে কথাটি বলে দেই যে, "গতকালের মত শুরু করলে কিন্তু"। সমস্যা হবে?
অনেক কথা আছে যেগুলো বললে যওহার হয় কিনা সন্দেহ হওয়ার পরেও এসব কথা বলেছি। পরে জানতে পারিছি যে এসন কথা বললে যিহার হয় না। সন্দেহ থাকার পরেও যে এসব বলেছি তাতে সমস্য হয়েছে?

৭. অনেক কথা আছে যেগুলো বললে যিহার হয় কিনা তা নিয়ে সন্দেহ হওয়ার পরেও এসব কথা ইচ্ছা করে বলেছি। পরে জানতে পেরেছি যে, এসব কথা বললে যিহার হয় না। সন্দেহ থাকার পরেও যে এসব কথা বলেছি তাতে সমস্য হয়েছে?
৮. স্বামী যদি ছেলে (বয়স ১০ মাস) আর স্ত্রীর মধ্যে হুরমতের নিয়তে বলে যে, "ও (ছোট ছেলেটি) তোমাকে আদর করছে" তাহলে সমস্যা হবে?
স্বামী যদি স্ত্রীকে স্বাভাবিক কোনো কথা হুরমত বা যিহারের নিয়তে বলে তাহলে সমস্যা হবে? যেমনঃ ভাত খেতে বলল (বলার সময় মনে মনে নিয়ত করল যে হুরমত বা যিহার হচ্ছে)
৯. কোনো বিবাহিতা মহিলার পোশাক পর পুরুষ কাম বাসনার সাথে স্পর্শ করলে হুরমত হতে পারে? যদি মহিলাটি সেখানে না থাকে। যেমনঃ রশিতে শুকাতে দেওয়া মহিলাটির কাপড় স্পর্শ করল।

1 Answer

0 votes
by (682,000 points)
edited by
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم


তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১.বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।
,  
সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।

আরো জানুনঃ 

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
   
قال لھا: طلقي نفسک ولم ینو أو نوی واحدة فطلقت وقعت رجعیة الخ (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الطلاق، باب الأمر بالید، ۴: ۵۷۵، ط: مکتبة زکریا دیوبند)۔
সারমর্মঃ
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার নিজের নফসকে তালাক দাও,কোনো নিয়ত না করে,অথবা এক তালাকের নিয়ত করে,অতঃপর স্ত্রী তালাক দেয়,তাহলে এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে।     

বিস্তারিত জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
(০১)
ক,
স্ত্রী যদি বলে যে, "পাশের রুমে যাবে না। পাশের রুমে গেলে তালাক দিয়ে যাও।" স্বামী যদি পাশের রুমে যাইতে ধরে এবং স্ত্রী বাধা দেয়, তাহলে কোনো সমস্যা হবেনা।

খ,
 স্ত্রী যদি বলে যে, "পাশের রুমে যাবে না। পাশের রুমে গেলে তালাক দিয়ে যাও।" স্বামী যদি পাশের রুমে যায়, তাহলেও সমস্যা হবেনা।

(০২)
ক,
স্ত্রী যদি স্বামীকে শর্ত দেয়, "পাশের রুমে যাবে না। গেলে তালাক হবে।" আর স্বামী যদি পাশের রুমে যায় তাহলে কোনো সমস্যা হবেনা ।  তালাক হবেনা।

খ,
স্ত্রী যদি স্বামীকে শর্ত দেয়, "পাশের রুমে যাবে না। গেলে তালাক হবে।" আর স্বামী যদি পাশের রুমে যেতে ধরে, কিন্তু স্ত্রী বাধা দেয় তাহলেও কোনো সমস্যা হবেনা।  তালাক হবেনা।

(প্রশ্নে উল্লেখিত স্ত্রী যেহেতু তালাকের অধিকারই পাইনি,তাই তালাকের ক্ষেত্রে তার কথার কোনো ধর্তব্য নেই। তালাকের অধিকার প্রাপ্ত হলেও উপরোক্ত ছুরত গুলোতে তালাক হবেনা।)

(০৩)
উক্ত তালাক নিয়ে যদি সে বিন্দুমাত্র সন্দেহে না থাকে,সম্পূর্ণ নিশ্চিত থাকে,তাহলে এই তালাক পতিত হবে।

(০৪)
এক্ষেত্রে যিহার, হুরমতে মুসাহারাত প্রমানিত হওয়াত সমস্ত শর্ত পূর্ণ ভাবে পাওয়া গেলে ও এই বিষয় নিয়ে যদি সে বিন্দুমাত্র সন্দেহে না থাকে,সম্পূর্ণ নিশ্চিত থাকে,তাহলে এই যিহার,হুরমতে মুসাহারাত হবে।

(০৫)
উক্ত কথাটি বললে সমস্যা হয়না।

(০৬)
প্রশ্নের বিবরণ মতে কোনো সমস্যা হবেনা।

(০৭)
তাতে সমস্যা হবেনা। 

(০৮)
উপরোক্ত ২ ছুরতের কোনো ছুরতেই কোনো সমস্যা হবেনা।
হুরমতও হবেনা। যিহারও হবেনা।

(০৯)
না,এর দরুন কোনো হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হয়না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...