তালাক সংক্রান্ত ও হিন্দু দের স্কুল এ পড়াশোনা নিয়ে ।

Question

আসসালামুয়ালাইকুম শায়খ।

হুজুর আমার মনে মনে অনেক শর্ত তালাকের কথা হয়।  শুধু মনে মনে হয় , কখনো মুখে উচ্চরণ করিনি।

কিন্তু ভয় পেয়ে স্ত্রী কে সব মনের কথা বলি। যা যা আমার মনে হয় , কিরকম করে কি মনে হলো সব কিছু স্ত্রী কে বলি , মনে কি কি শর্ত মনের মধ্যে হচ্ছে এই সব স্ত্রী কে বলে। নিজে র চিন্তা কমায়।
এখন আমার এই রকম পরিস্থিত দেখে আমার স্ত্রী আমার মা কে বলছে আপনার ছেলে শুধু উল্টোপাল্টা ভাবছে চিন্তা করছে । দিয়ে মা কে স্ত্রী উচ্চরণ করে একটা শর্ত তালাক এর ঘটনা  বললো। ( যে ভাবনা টা আমার মনে মনে হতো)
যেমন: আপনার ছেলে বলছে আর একবার বায়ু নির্গত হলে তালাক।
হুজুর এটা আমার মনে মনে হতো । ভয় পেয়ে স্ত্রী কে বলি।
স্ত্রী আবার আমার মা কে ঘটনা টা  বলে ।
১. এক্ষেত্রে কি শর্ত তালাক হবে?

২. যদি বায়ু নির্গত হয় তাহলে কি তালাক হবে?

৩. স্ত্রী যদি আরও ঘটনা মা কে বলে তাহলে কি তালাক হবে? ( যে গুলো আমি মনে মনে বলেছিলাম তার পর স্ত্রী কে ভয় পেয়ে বলে ছিলাম আমার মনে মনে এমন হচ্ছে)

৪.বা পরবর্তী তে সেই সব সর্ত পাওয়া যায় , (যা  আমি মনে মনে বলেছিলাম সেইটা আমার স্ত্রী কে বলি স্ত্রী আবার মা কে যদি বলে ) তাহলে কি তালাক হবে হুজুর ?? আমি তো ভয় পেয়ে স্ত্রী কে বলেছি । স্ত্রী চিন্তা করে মা কে বলছে । কিছু হবে নাকি হুজুর।?

*৫*** হুজুর ক্লাস অষ্টম শ্রেণীতে যখন পড়তাম , সেটা ছিল রাম কৃষ্ণ মিশন। সেইখানে পড়তাম অনেক মুসলমান পড়ত।
সেখানে কিছু একটা স্লগ বলতো সকাল বেলায় , হিন্দুদের সেটা আমিও বলেছি না জেনে না বুঝে। আবার পুজোর চাঁদা ও দিয়েছি। ওদের দেওয়া খাবার খেয়েছি।

তাদের অনুষ্ঠান এ থেকে ছি মজা করেছি।
এর জন্য কি ঈমান চলে যাবে??

৬. হুজুর আরো একটি বিষয় স্কুল এর সামনে একটা মন্দির ছিল , মাঝে মধ্যে পুজো হতো তাতে কখনো অংশ গ্রহণ করিনি। কিন্তু মনে পড়ছে না একবার মন্দির দেখে বুকে আঙ্গুল দিয়ে কপাল এ দিয়েছিলাম মজার ছলে, ভুল বশত  । এই বিষয় টা ১০ বছর হয়ে গেল। এই ঘটনা আমার সম্পূর্ণ ভাবে মনে পড়ছে না। সন্দেহ আছে সঠিক মনে নেই।

এতে কি ঈমান চলে যাবে?
৭. ঈমান চলে গেলে নতুন করে ঈমান আনলে আগের সমস্ত আমল  বজায় থাকবে??

Answer 1

জবাবঃ-

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 

بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)

দারুল উলুম দেওবন্দ এর ওয়েবসাইট থেকে প্রকাশিত  155923 নং ফতোয়াতে লেখা রয়েছে,কেহ যদি মনে মনে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে অন্যের সামনে বিষয়টি স্বীকার করে,সেক্ষেত্রে তালাক হবেনা।

এক্ষেত্রে বায়েন তালাকও হবেনা,রজয়ী তালাকও হবেনা।

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ اللَّهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا، مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ ".

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। (সহীহ বুখারী ২৫২৮)

অপর এক হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي ذَرٍّ الْغِفَارِيِّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي الْخَطَأَ وَالنِّسْيَانَ وَمَا اسْتُكْرِهُوا عَلَيْهِ

আবূ যার আল-গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মাতের ভুল , বিস্মৃতি ও বলপূর্বক যা করিয়ে নেয়া হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন। [সুনানে ইবনে মাজাহ, ২০৪৩]

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,

এক্ষেত্রে শর্তযুক্ত তালাক হবেনা।

(০২)

যদি বায়ু নির্গত হয় তাহলে তালাক হবেনা।

(০৩)

স্ত্রী যদি আরও ঘটনা মা কে বলে তাহলেও তালাক হবেনা।

(০৪)

পরবর্তীতে সেসব শর্ত পাওয়া গেলেও তালাক হবেনা।

তবে আপনার প্রতি পরামর্শ থাকবে,মনের মধ্যে আসা তালাক সংক্রান্ত এহেন বাক্য আপনার স্ত্রীকে বলবেননা।

(০৫)

আপনি যেহেতু ইসলামী আকীদা বিশুদ্ধ রেখেই এগুলো করেছেন,সুতরাং আপনার ঈমান চলে যাবেনা।

তবে আপনাকে তওবা করতে হবে। 

(০৬)

এতে আপনার ঈমান চলে যাবেনা।

তবে আপনাকে তওবা করতে হবে। 

(০৭)

আসলেই ঈমান চলে গিয়ে থাকলে আগের আমল বজায় থাকবেনা।

Comments

https://darulifta-deoband.com/home/ur/talaq-divorce/155923