আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
56 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (82 points)
edited by
১।আসসালামুআলাইকুম শায়খ।কোন স্বামী স্ত্রী ধরেন জানত না কেনায়া তালাকের ব্যাপারে শুনেও নি।মেসেজে ঝগড়ার সময় যদি স্ত্রী বলে মুক্তি দাও তুমার থেকে।স্বামীও যদি বলে তুমি মুক্ত অথবা  বলে মুক্তি দিলাম মানে নিয়ত ছাড়া।স্বামী স্ত্রীর কেও ধরেন জানত না এরকম বললে তালাক হতে পারে বা কোন সমস্যা।তহ নিয়ত ছাড়া এমন বললে কি তালাক হবে? এই ধরনের প্রশ্ন আগেও করেছিলাম আপনি তালাক হবে না বলেছিলেন নিয়ত ছাড়া বললে কিন্তুু হুবুহু এমন কিনা মনে নেই প্রশ্নটা।এমনিতে জানার জন্য করলাম।

২।একটা মেয়ে  ধরেন তার স্বামীকে শপথ করে বলেছিল সে যেনা করে নি , যেনা মানে কোন ছেলের সাথে থাকে নি বা খারাপ ছবিও দেয় নি।মেয়েটা বুঝাতে চেয়েছিল কোন ছেলের সাথে সহবাস করে নি কোনদিন ও।সে ধরেন স্বামীকে বলল আল্লাহর নামে শপথ করে বলেছে যদি করে থাকে তাহলে তার ঈমান চলে যাবে(অঅটোমেটিক মনে মনে)। সে জানত মানে মেয়েটা এমন বললে কোন কোন আলেম বলে থাকে মিথ্যা বলে এমন শপথ করলে বা শপথ ভান্গলে ঈমান চলে যায়।কিন্তুু মেয়েটার  ধরেন একদম মনে ছিল না যে সে ছোটবেলায় সমকামীতা   করেছিল।কিন্তু সে স্বামীকে ধরেন মিথ্যা বলে নি সে আসলেই কোন ছেলের সাথে ধরেন এমন খারাপ কিছু করে নি।একদম টোটালি মনে ছিল না।আর ধরেন মেয়েটা শপথ করেছিল ধরেন এটা নিয়ে যে সে কোন ছেলের সাথে খারাপ কিছু করে নি কিন্তু সমকামীতার কথা মাথায়ও ছিল না।কারন  ছোটবেলা মানে অনেক ছোট তখন নাবালেগা ছিল।সে ধরেন স্বামীকে খুব ভালবাসে।এমনকি সব গোপন ওর বিষয়ে সব গোপন কথাও ধরেন স্বামীকে বলেছিল কিন্তু এটা ধরেন মাথায়ও ছিল না।ধরেন সে ধর্ষনের স্বিকার হয়েছিল সেটাও বলেছিল ধরেন স্বামীকে মানে ছোটবেলায়।সেই ধর্ষনে তার দোষ ছিল কিনা সে নিজেও জানে না কারন তার বয়স ছিল ৬ বছরের মত আর মনে হয় প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষন করেছিল।সে স্বামীকে শুধু বলেছিল ধরেন ছোটবেলায় তার ধর্ষন হয়েছিল সেটা ছাড়া আর কোনদিন খারাপ কিছু করেনি কারো সাথে সেটা বুঝাতে চেয়েছিল হয়ত।সেই ধর্ষনের কথাটা ধরেন স্বামীকে বিয়ের আগে বলেছিল।তাই স্বামী আগে থেকে জানত।বিয়ের পর শপথ করে বলেছিল ধরেন কারো সাথে খারাপ সম্পর্ক করে নি আর ছবিও দেয় নি আর মনে মনে ছিল আগের ধর্ষন ওটা ছাড়া।ওই  ধর্ষনের কথাটা নতুন করে বলে নি কারন স্বামী আগে থেকে জানত ওটা।শুধু ধরেন বলেছিল কোন ছেলের সাথে খারাপ কিছু করে নি বা ছবিও দেয় নি। পূর্বের  ধর্ষনের কথাটা ভেন্গে বলে নি স্বামীকে কারন স্বামী শুনতে চায় নি,শুধু বলেছিল ধর্ষন করেছিল ওকে।সে তহ মিথ্যা বলার জন্য শপথ করে নি।তাহলে মনে না থাকার কারনে যে শপথ করেছে এটার জন্য কি  ঈমান চলে যাবে?  আর সে এই কথাটা স্বামীকে আর বলতে চায় না ধরেন তাহলে কি কোন সমস্যা হবে? সে কিছুতেই ধরেন স্বামীকে হারাতে চায় না।

1 Answer

0 votes
by (685,600 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
তালাক খুবই মারাত্মক  একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

যদি স্বামী তালাক দেয়ার উপর ধমক দিতে থাকে,বা স্ত্রী তালাক চায়,বা সেখানে অন্য কোনো ব্যাক্তি সেই স্বামীকে তালাক দেয়ার উপর উদ্ভুদ্ধ করে,তাহলে সেটিকে তালাকের মজলিস,মুযাকারায়ে তালাক বলা হবে।


মুযাকারায়ে তালাক বা তালাকের মজলিস কাকে বলে?
এ বিষয়ে রদ্দুল মুহতারে বর্ণিত রয়েছে,
"(قَوْلُهُ: وَهِيَ حَالَةُ مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ) أَشَارَ بِهِ إلَى مَا فِي النَّهْرِ مِنْ أَنَّ دَلَالَةَ الْحَالِ تَعُمُّ دَلَالَةَ الْمَقَالِ قَالَ: وَعَلَى هَذَا فَتُفَسَّرُ الْمُذَاكَرَةُ بِسُؤَالِ الطَّلَاقِ أَوْ تَقْدِيمِ الْإِيقَاعِ كَمَا فِي اعْتَدِّي ثَلَاثًا وَقَالَ قَبْلَهُ الْمُذَاكَرَةُ أَنْ تَسْأَلَهُ هِيَ أَوْ أَجْنَبِيٌّ الطَّلَاقَ".
( كتاب الطلاق، بَابُ الْكِنَايَاتِ، ٣ / ٢٩٧)

মুযাকারায়ে তালাকের অর্থ হল, স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীর নিকট তালাকের আবেদন করা ,অথবা তৃতীয় কোনো ব্যক্তির পক্ষ থেকে স্বামীর নিকট তালাকের আবেদন এবং তামান্না করা। এই উভয় প্রকারকে 'মুতালাবায়ে তালাক' নামে অভিহিত করা হয়।তাছাড়া স্বামী যদি ইতিপূর্বে স্ত্রীকে এক বা দুই তালাক দিয়ে থাকে,তাহলে এদ্বারাও মুযাকারায়ে তালাক প্রমাণিত হবে।এই তৃতীয় প্রকারকে  তাকদীমূল ঈ'কা বলা হয়ে থাকে।(রদ্দুল মুহতার-৩/২৯৭) 

আরো জানুনঃ- 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
https://ifatwa.info/1049/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  

 "ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া) তে বর্ণিত রয়েছে,

 لَا يَقَعُ بِهَا الطَّلَاقُ إلَّا بِالنِّيَّةِ أَوْ بِدَلَالَةِ حَالٍ كَذَا فِي الْجَوْهَرَةِ النَّيِّرَةِ. ثُمَّ الْكِنَايَاتُ ثَلَاثَةُ أَقْسَامٍ (مَا يَصْلُحُ جَوَابًا لَا غَيْرُ) أَمْرُك بِيَدِك، اخْتَارِي، اعْتَدِّي (وَمَا يَصْلُحُ جَوَابًا وَرَدَّا لَا غَيْرُ) اُخْرُجِي اذْهَبِي اُعْزُبِي قُومِي تَقَنَّعِي اسْتَتِرِي تَخَمَّرِي (وَمَا يَصْلُحُ جَوَابًا وَشَتْمًا) خَلِيَّةٌ بَرِيَّةٌ بَتَّةٌ بَتْلَةٌ بَائِنٌ حَرَامٌ


কেনায়া শব্দাবলী দ্বারা নিয়ত ব্যতীত বা তালাকের ব্যাপারে ইশরা ইঙ্গিত ব্যতীত তালাক পতিত হয় না।কেনায়া তালাক তিন প্রকার যথাঃ-


(১)

যে সমস্ত শব্দাবলী দ্বারা তালাক ব্যতীত ভিন্ন কিছু বুঝা যায় না।যেমন,তোমার বিষয় তোমার হাতে,তুমি পছন্দ করো,তুমি গণনা করো।


(২) যে সমস্ত শব্দাবলী দ্বারা তালাক হওয়া এবং না হওয়া উভয়টি বুঝায়।যেমন,তুমি বের হও,তুমি চলে যাও,তুমি আমার কওম থেকে দূরে চলে চাও,তুমি নেকাব পরিধান করো,তুমি পর্দার আড়ালে চলে যাও,তুমি উড়না পরিধান করো।


(৩) যা তালাক এবং গালির উভয়টির সম্ভাবনা রাখে। হারাম,বায়িন,মুক্ত,দায়মুক্ত, বাত্তাহ,বাতলাহ ইত্যাদি শব্দাবলি।


পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপট তিন প্রকারঃ যথাঃ- 

وَالْأَحْوَالُ ثَلَاثَةٌ (حَالَةُ) الرِّضَا (وَحَالَةُ) مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ بِأَنْ تَسْأَلَ هِيَ طَلَاقَهَا أَوْ غَيْرُهَا يَسْأَلُ طَلَاقَهَا (وَحَالَةُ) الْغَضَبِ 

পরিবেশ ও পরিস্থিতি তিন প্রকার।(১) হালতে রেযা- খুশির হালত(২) তালাকের শব্দাবলী উচ্ছারণের হালত(৩) রাগান্বিত অবস্থা।


فَفِي حَالَةِ الرِّضَا لَا يَقَعُ الطَّلَاقُ فِي الْأَلْفَاظِ كُلِّهَا إلَّا بِالنِّيَّةِ وَالْقَوْلُ قَوْلُ الزَّوْجِ فِي تَرْكِ النِّيَّةِ مَعَ الْيَمِينِ

(১) খুশির হালতে নিয়ত ব্যতীত কেনায়া শব্দাবলী দ্বারা তালাক পতিত হবে না।নিয়ত না থাকার বিষয়ে স্বামীর কথাই কসমের সাথে গ্রহণযোগ্য। 


وَفِي حَالَةِ مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ يَقَعُ الطَّلَاقُ فِي سَائِرِ الْأَقْسَامِ قَضَاءً إلَّا فِيمَا يَصْلُحُ جَوَابًا وَرَدَّا فَإِنَّهُ لَا يُجْعَلُ طَلَاقًا كَذَا فِي الْكَافِي

(২)তালাকের আলোচনার পরিস্থিতিতে সকল প্রকার কেনায়া তালাকে তালাক পতিত হবে।তবে যে শব্দগুলো তালাকের আবেদনের জবাব এবং রদ উভয়টা বুঝাবে,সে শব্দগুলো দ্বারা তালাক পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
মেসেজে ঝগড়ার সময় যদি স্ত্রী বলে মুক্তি দাও তোমার থেকে।স্বামীও যদি বলে তুমি মুক্ত অথবা  বলে মুক্তি দিলাম। 

এখানে তো স্পষ্ট যে স্ত্রী তালাক চেয়েছে,বিবাহ বিচ্ছেদ চেয়েছে।
সুতরাং এটি তালাকের মজলিস। 
,
তালাকের আলোচনার পরিস্থিতিতে যে শব্দগুলো তালাকের আবেদনের জবাব এবং রদ উভয়টা বুঝাবে,সে শব্দগুলো দ্বারা তালাক পতিত হবে না।
সে শব্দ গুলো দিয়ে তালাক হওয়ার জন্য নিয়ত শর্ত।

কিন্তু যে শব্দ গুলি তালাক এবং গালির উভয়টির সম্ভাবনা রাখে। যেমন, হারাম,বায়িন,মুক্ত,দায়মুক্ত, বাত্তাহ,বাতলাহ ইত্যাদি শব্দাবলি।
এগুলো তালাকের মজলিসে নিয়ত ছাড়া বললেও তালাক হয়ে যাবে। 

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত বাক্য ""তুমি মুক্ত বা মুক্তি দিলাম""
এটিও এমন ধরনেরই বাক্য।
এই বাক্যে তালাকের মজলিসে তালাকের নিয়ত ছাড়া বললেও তালাক হয়।
,
তাই উপরোক্ত ছুরতে যেহেতু তালাকের  মজলিস পাওয়া গিয়েছে, সুতরাং এক্ষেত্রে এক তালাকে বায়েন পতিত হবে। 

তারা ঘর সংসার করতে চাইলে নতুন করে বিবাহ পড়িয়ে নিতে হবে। 

(০২)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তার ঈমান চলে যাবেনা।
সে পূর্ণ বিশ্বাস রাখবে যে এ ধরনের কথায় ঈমান চলে যায়না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...