بسم
الله الرحمن الرحيم
জবাব,
দুধ পানের মেয়াদের
ভিতরে শিশুকে যে কোনো মহিলার দুধ পান করানো যায়, তিনি শিশুর মাহরাম হোন অথবা গায়র মাহরাম। তবে এটা ভিন্ন
প্রসঙ্গ যে, শিশুর
দুধ-মা হিসেবে দ্বীনদার মহিলা নির্বাচন করা আবশ্যক, ফাসিক-ফাজির নারীর দুধ পান না করানো উচিত। কেননা,
শিশুর স্বভাব-চরিত্র তৈরির পিছনে দুধেরও
ভূমিকা থাকে।
শরীয়তের বিধান
অনুযায়ী দুধপানের মাধ্যমে কাউকে মাহরাম বানানো যায়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا
مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ حَدَّثَنَا هَمَّامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ
جَابِرِ بْنِ زَيْدٍ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ
النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيْ بِنْتِ حَمْزَةَ لَا تَحِلُّ لِيْ يَحْرُمُ
مِنْ الرَّضَاعِ مَا يَحْرُمُ مِنْ النَّسَبِ هِيَ بِنْتُ أَخِيْ مِنْ
الرَّضَاعَةِ
ইবনু ‘আববাস (রাঃ)
হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী
(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হামযাহর মেয়ে সম্পর্কে বলেছেন,
সে আমার জন্য হালাল নয়। কেননা বংশ কারণে
যা হারাম হয়, দুধ
পানের সম্পর্কের কারণেও তা হারাম হয়, আর সে আমার দুধ ভাইয়ের মেয়ে। (বুখারী শরীফ ২৬৪৫.৫১০০)
(মুসলিম ১৭/৩, হাঃ
১৪৪৭, আহমাদ
১৯৫২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৪৫৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৪৬৯)
حَدَّثَنَا
عَبْدُ اللهِ بْنُ يُوْسُفَ أَخْبَرَنَا مَالِكٌ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِيْ
بَكْرٍ عَنْ عَمْرَةَ بِنْتِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ أَنَّ عَائِشَةَ رَضِيَ اللهُ
عَنْهَا زَوْجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَخْبَرَتْهَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ
كَانَ عِنْدَهَا وَأَنَّهَا سَمِعَتْ صَوْتَ رَجُلٍ يَسْتَأْذِنُ فِيْ بَيْتِ
حَفْصَةَ قَالَتْ عَائِشَةُ فَقُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ هَذَا رَجُلٌ
يَسْتَأْذِنُ فِيْ بَيْتِكَ قَالَتْ فَقَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم
أُرَاهُ فُلَانًا لِعَمِّ حَفْصَةَ مِنْ الرَّضَاعَةِ فَقَالَتْ عَائِشَةُ لَوْ
كَانَ فُلَانٌ حَيًّا لِعَمِّهَا مِنْ الرَّضَاعَةِ دَخَلَ عَلَيَّ فَقَالَ
رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم نَعَمْ إِنَّ الرَّضَاعَةَ تُحَرِّمُ مَا
يَحْرُمُ مِنْ الْوِلَادَةِ
‘আয়িশাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
তাঁর নিকট অবস্থান করছিলেন। এমন সময় তিনি জনৈক ব্যক্তির আওয়াজ শুনতে পেলেন। সে হাফসাহ
(রাঃ)- এর ঘরে প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা করছে। ‘আয়িশাহ (রাঃ) বলেন,
হে আল্লাহর রাসূল! এই একজন ব্যক্তি আপনার
ঘরে প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা করছে। তিনি বলেন, তখন আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন,
তাকে হাফসাহর অমুক দুধ চাচা বলে মনে হচ্ছে।
তখন ‘আয়িশাহ (রাঃ) বললেন, আচ্ছা
আমার অমুক দুধ চাচা যদি জীবিত থাকত তাহলে সে কি আমার ঘরে প্রবেশ করতে পারত?
আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
বললেন, হ্যাঁ,
পারত। কেননা,
জন্মসূত্রে যা হারাম,
দুধপানও তাকে হারাম করে। (বুখারী শরীফ
২৬৪৬.৩১০৫-৫০৯৯) (মুসলিম ১৭/১ হাঃ ১৪৪৪, আহমাদ ২৫৫০৮) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৪৫৪,
ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৪৭০)
দুধ পানের মুদ্দত
বা সর্বোচ্ছ সময়সীমা দুই বৎসর।দুই বৎসর পর সন্তানকে দুধ পান করানো হারাম। দুই বৎসর পর যদি কোনো শিশু
কোনো মহিলার দুধ পান করে নেয়, তাহলে এদ্বারা দুধ সম্পর্ক প্রমাণিত হবে না।
আলাউদ্দিন হাসক্বাফী
রাহ লিখেন,
هُوَ
(حَوْلَانِ وَنِصْفٌ عِنْدَهُ وَحَوْلَانِ) فَقَطْ (عِنْدَهُمَا وَهُوَ
الْأَصَحُّ) فَتْحٌ وَبِهِ يُفْتَى كَمَا فِي تَصْحِيحِ الْقُدُورِيِّ عَنْ
الْعَوْنِ
শিশুর জন্য মায়ের
দুধ পানের সর্বোচ্ছ সময়সীমা-ইমাম আবু-হানিফা রাহ এর মতে আড়াই বৎসর।আর সাহেবাইনের মাযহাব
মতে দুই বৎসর।এই দ্বিতীয় মতটাই বিশুদ্ধতম মত।এবং এর উপরই ফাতাওয়া। আরো বর্ণিত রয়েছে-আহসানুল
ফাতাওয়া-৫/১২৮
রাসূল (ছাঃ) ও
তাঁর চাচা হামযাহ (রাঃ) একই মায়ের দুধপান করেছিলেন। সেকারণ হামযার মেয়ের সাথে রাসূল
(ছাঃ)-এর বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হ’লে তিনি বলেন, সে আমার জন্য হালাল নয়। কেননা সে আমার দুধ ভাইয়ের মেয়ে।
বংশীয় সূত্রে যে সকল মহিলাকে বিবাহ করা হারাম, দুগ্ধ পান সূত্রেও সেসকল মহিলাকে বিবাহ করা হারাম (বুখারী
হা/২৬৪৫; মুসলিম
হা/১৪৪৭; মিশকাত
হা/৩১৬১)।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন !
প্রশ্নেল্লিখিত
ছুরতে কোন সন্তানকে তার দাদী বা নানী দুধ পান করাতে পারবে,
তবে এটি অনুত্তম। কারণ,
এমতাবস্থায় চাচা/মামা,
খালা/ ফুফু দুধ ভাই বোন হয়ে যায়। বিধায়
তাদের ছেলে মেয়েকে বিবাহ করা
জায়েয হবে না। অর্থাৎ খালাতো-মামাতো, চাচাতো- ফুফাতো ভাই বোনকে বিবাহ করা জায়েয হবে না।