বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
আপনার প্রশ্নের জবাব বুঝার পূর্বে দুয়েকটি মাস'আলা ও মূলনীতি বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়।
প্রথমত শিক্ষাগ্রহণ সম্পর্কে ইসলামের বিধান কি?
জবাবে বলা যায়,শিক্ষাগ্রহণ দুই প্রকার,(১)ফরযে আইন, যা ছাড়া দ্বীন ইসলাম পালন করা সম্ভব নয়,ইহাই মূলত ফরযে আইন শিক্ষা।এ শিক্ষা গ্রহণ না করলে জবাবদিহিতা করতে হবে।(২)ফরযে কেফায়া শিক্ষা,যাকে আমরা জেনারেল শিক্ষা বলতে পারি।তথা দুনিয়ার নেজামকে বাকী রাখতে যে সব শিক্ষার প্রয়োজন,যেমন কৃষি,চিকিৎসা, ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদি শিক্ষা।বিস্তারিত জানুন-১৮৯৩
শুধুমাত্র বৈধ ও নেক কাজে মাতাপিতার বিধিনিষেধের অনুসরণ করা ওয়াজিব।অবৈধ কাজে মাতাপিতার বিধিনিষেধের অনুসরণ ওয়াজিব নয়।বরং এক্ষেত্রে গোনাহ হবে।
কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহিসসালাম বলেছেন,
ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺇﻧﻤﺎ ﺍﻟﻄﺎﻋﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻌﺮﻭﻑ
গোনাহের কাজে কারো অনুসরণ করা যাবে না,অনুসরণ একমাত্র নেককাজ সমূহেই করা যাবে।
(সহীহ বুখারী-৭২৫৭,সহীহ মুসলিম-১৮৪০)
মাতাপিতার বিধিনিষেধকে মান্য করার সাীমারেখা কতটুকু? এ সম্পর্কে জানুন-১৭২২
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যেহেতু আপনার জ্ঞানার্জন ফরযে আইন প্রকারের নয়,এবং আপনার বর্ণিত কলেজ পরিস্থিতি অনুযায়ী মাতপিতার বিধিনিষেধের অনুসরণও আপনার ওয়াজিব হবে না। তাই প্রশ্নের বিবরণ অনুযায়ী উক্ত কলেজে লেখা পড়া করা আপনার জন্য এবং আপনার বোনের জন্য কখনো জায়েয হবে না।হয়তো আপনাদেরকে কলেজ বদলাতে হবে,এবং দ্বীন পালনে সহায়ক কোনো কলেজে ভর্তি হতে হবে নতুবা লেখাপড়া ছেড়ে দিতে হবে।আল্লাহ অবশ্যই আপনাদের জন্য এই ত্যাগের বিনিময়ে উত্তমভাবে রিযিকের ব্যবস্থা করবেন।
যদি এমন হয় যে,কলেজ বদলানো বা লেখাপড়া ছেড়ে দেয়া অসম্ভব হয়ে দাড়ায়,বাধ্য হয়ে কলেজে থাকতেই হয়,ডান-বাম সামন-পিছন সকল প্রকার রাস্তা বন্ধ থাকে,তাহলে আপনি যে ডিপার্টমেন্টে রয়েছেন,সেই জায়গা থেকে ভবিষ্যতে ইসলাম এবং মুসলমানের জন্য কি কি খেদমত করা যায়,সেই টার্গেট ঠিক করে নেন।এবং সেই অনুযায়ী নিজের জীবনকে এগুতে থাকেন,তাহলে হয়তো আল্লাহর সামনে একটা উসিলা পেশ করার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।এবং ভবিষ্যৎ নেক আ'মলের মাধ্যমে হয়তো পূর্বের কৃত গোনাহ সমূহকে মোছন করার সুযোগ তৈরী হতে পারে।তবে এমনটা নিশ্চিত নয়।প্রথমত আপনি সঠিক পথে থাকবেন কি না।দ্বিতীয়ত আল্লাহ কবুল করবেন কি না?
তাই আমাদের পরামর্শ থাকবে,এমন কলেজ ছেড়ে দেয়া বা লেখাপড়াই ছেড়ে দেয়া।
সুতরাং আপনি যে হাদীসের কথা বলছেন,সেটা মূলত হাদীস নয়।সুতরাং আপনি বিদেশে যেতে পারবেন না।