بسم
الله الرحمن الرحيم
জবাব,
১. প্রিয় প্রশ্নকারী
ভাই, ইসলাম
ধর্মের একটি চমৎকার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এ ধর্ম গ্রহণ করা একেবারে সহজ। এ ধর্ম গ্রহণ করার জন্য
কোনো ধর্মগুরুর কাছেও যেতে হয় না। একজন মানুষ এটা নিজে নিজেই করতে পারে;
এমনকি সে যদি একেবারে একাকী থাকে কিংবা
মরুভূমিতে থাকে কিংবা বনে-জঙ্গলে থাকে কিংবা কোনো বদ্ধ কামরায় থাকে সেখানেও সে নিজে
নিজে ইসলাম গ্রহণ করতে পারে।
এর প্রক্রিয়াটা
হচ্ছে এই যে, সুন্দর
দুটি বাক্য উচ্চারণ করা; যাকে
পরিভাষায় ‘শাহাদাহ’ বলা হয়। অর্থাৎ, ইসলাম গ্রহণের নিয়তে শুধু কালেমা তাইয়েবা বা কালেমা শাহাদাত
উচ্চারণ করলে সে মুসলিম হয়ে যাবে।
কালেমা তাইয়েবা
এই–
لآ اِلَهَ
اِلّا اللّهُ مُحَمَّدٌ رَسُوُل اللّهِ (লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ।)
কালেমা তাইয়েবার
অর্থ এই– আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নাই,
মুহাম্মাদ ﷺ তাঁর প্রেরিত রাসুল।
কালেমা শাহাদাত
এই–
أَشْهَدُ
اَنْ لّآ اِلهَ اِلَّا اللّهُ وَحْدَه لَا شَرِيْكَ لَه، وَ اَشْهَدُ اَنَّ
مُحَمَّدً اعَبْدُه وَرَسُولُه
(আশ্হাদু
আল-লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু-লা-শারীকালাহু ওয়া আশ্হাদু আন্না মুহাম্মাদান
আ’বদুহু ওয়া রাসূলুল্লাহ।)
কালেমা শাহাদাতের
অর্থ এই– আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ব্যতীত আর কোনো উপাস্য নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি, মুহাম্মদ
ﷺ
আল্লাহর বান্দা ও তাঁর প্রেরিত রাসুল।
কালেমা পাঠের পূর্বে
কিছু করার নেই। তবে ইয়ামামাহর নেতা ছুমামাহ্ ইবনু আছাল কালেমা পাঠের আগে গোসল করেছিলেন
(বুখারী ৪৬২)। এজন্য ইসলাম গ্রহণের আগে গোসল করাকে মুস্তাহাব বলা হয়েছে।
সুতরাং যিনি ইসলাম
ধর্ম গ্রহণ করতে চান, তিনি
প্রথমে সুযোগ থাকলে গোসল করে নিবেন। গোসল না করলেও অসুবিধা নেই। তারপর মুসলিম হওয়ার
নিয়তে কালেমা পাঠ করে নিবেন। এতেই তিনি মুসলিম হয়ে যাবেন।
২. দান করতে
হয় নিজ দায়িত্বে অভাবীদেরকে খুঁজে খুঁজে। কারণ কিছু মানুষ থাকে,
যারা অর্থসংকটের শিকার,
কিন্তু ব্যক্তিত্ব,
আভিজাত্য ও সামাজিক অবস্থানের কারণে চক্ষুলজ্জায়
কারো কাছে চায় না। মুখ খুলেও কিছু বলতে পারে না বা বলে না। দান করার সময় খুঁজে খুঁজে
এমন লোকদেরকে প্রাধান্য দেয়া উচিত। কুরআনে কারীমে কত চমৎকারভাবে তাদের প্রতি আমাদের
দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে-
یَحْسَبُهُمُ
الْجَاهِلُ اَغْنِیَآءَ مِنَ التَّعَفُّفِ
تَعْرِفُهُمْ بِسِیْمٰىهُمْ لَا یَسْـَٔلُوْنَ
النَّاسَ اِلْحَافًا.
তারা যেহেতু অতি
সংযমী হওয়ার কারণে কারো কাছে সওয়াল করে না, তাই অনবগত লোকে তাদেরকে বিত্তবান মনে করে। তোমরা তাদের
চেহারার আলামত দ্বারা তাদেরকে (অর্থাৎ তাদের অভ্যন্তরীণ অবস্থা) চিনতে পারবে। -সূরা
বাকারা (২) : ২৭৩
আবু হুরায়রা রা.
থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
لَيْسَ
المِسْكِينُ الَّذِي يَطُوفُ عَلَى النَّاسِ تَرُدُّهُ اللُّقْمَةُ
وَاللُّقْمَتَانِ، وَالتَّمْرَةُ وَالتَّمْرَتَانِ، وَلَكِنِ المِسْكِينُ الَّذِي
لاَ يَجِدُ غِنًى يُغْنِيهِ، وَلاَ يُفْطَنُ بِهِ، فَيُتَصَدَّقُ عَلَيْهِ وَلاَ
يَقُومُ فَيَسْأَلُ النَّاسَ.
এক-দুই লোকমা খাবার
বা এক-দুইটি খেজুরের জন্য যে মানুষের দ্বারে দ্বারে ধরনা দেয়- অভাবী তো সে নয়;
প্রকৃত অভাবী হল,
যার অভাব আছে,
কিন্তু তাকে দেখে তার অভাব আঁচ করা যায়
না; যার
ভিত্তিতে মানুষ তাকে দান করবে। আবার চক্ষুলজ্জায় সে মানুষের দুয়ারে হাতও পাততে পারে
না। -সহীহ বুখারী, হাদীস
১৪৭৯; সহীহ
মুসলিম, হাদীস
১০৩৯
নিকটবর্তী লোকদের
দান করা:
দানের আরেকটি নিয়ম হল নিজের নিকটাত্মীয়দের
আগে দান করা। এতে একদিকে যেমন সদাকার সওয়াব পাওয়া যায়,
একইসাথে আত্মীয়তার হকও আদায় হয়ে যায়। তাই
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি উৎসাহিত করেছেন এবং একে দ্বিগুণ সওয়াব
লাভের মাধ্যম বলেছেন। তিনি বলেছেন-
الصَّدَقَةُ
عَلَى الْمِسْكِينِ صَدَقَةٌ، وَهِيَ عَلَى ذِي الرَّحِمِ ثِنْتَانِ: صَدَقَةٌ
وَصِلَةٌ.
মিসকীনকে দান করলে
কেবল দান করার সওয়াব লাভ হয়। আর আত্মীয়-স্বজনকে দান করলে দুটি সওয়াব- দান করার সওয়াব
এবং আত্মীয়তার হক আদায় করার সওয়াব। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৬৫৮; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৬২৩৩
তবে হাঁ,
সবসময় অন্য সকল গরীব-দুঃখীদের এড়িয়ে কেবল
নিকট জনদের দান করে যাব, এমন
কথা নয়। কখনো হতে পারে নিকটাত্মীয়ের চেয়েও অন্যদের অভাব ও প্রয়োজনটা বেশি। দান করার
সময় তাদের প্রতিও লক্ষ্য রাখা উচিত।
সুতরাং নিজ এলাকার
মানুষের চেয়ে সিরিয়ার মানুষ যদি বেশী অভাবী হয় ও তাদের অবস্থা যদি অতি সুচনীয় হয় তাহলে
সেখানে দান সাদাকা পাঠাতে কোন সমস্যা নেই।
৩. প্রথমত নিজ
এলাকার গরীব ও অসহায় মানুষকে দান করা। তবে ভিন্ন এলাকার মানুষ যদি নিজ এলাকার চেয়ে
বেশী মুখাপেক্ষী ও অভাবী হয় তাহলে তাদের নিকট সদাকা পাঠানো জায়েয আছে।
৪. জ্বী প্রশ্ন
করতে পারবেন। ifatwa থেকে অনুমতি আছে।