আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
361 views
in সালাত(Prayer) by (20 points)
আসসালামুআলাইকুম
আমি জানতে চাই নামাজ আদায় করা এবং নামাজ কায়েম করা কি এক?

তাবলীগের কিছু আন্টিদের কাছে শুনেছি নামাজ আদায় ও নামাজ কায়েমের মধ্যে পার্থক্য আছে।
আবার কিছু সালাফী আলিমদের বলতে শুনি দুটোই এক। ওইগুলো অজ্ঞতাপ্রসূত কথাবার্তা।

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে কোনটা সঠিক?
আর দ্বিতীয়ত হচ্ছে, প্রায়ই ফ্রিমিক্সিং বিভিন্ন ইসলামি নামধারী গ্রুপে এড হতে না চাইলেও এড করা হয়। দ্বীনের ব্যাপারে যাদের জ্ঞান খুবই কম। কিন্তু বিভ্রান্তি ছড়ায়। এক্ষেত্রে করণীয় কি? চুপচাপ লিভ নেয়া নাকি তাদের সামনে সত্য তুলে ধরে তারপর লিভ নেয়া?

1 Answer

0 votes
by (575,550 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

কুরআন কারীমের মধ্যে নামাজের ব্যাপারে যত তাগীদ এসেছে,সেখানে ইকামত শব্দ ব্যবহার হয়েছে।
ইকামতের শাব্দিক অর্থ হলো সোজা করা,ছাবেত রাখা।
এবং সাধারণত যেই দেওয়াল বা গাছ সোজা খাড়া হয়,সেটা কায়েম থাকে,এবং পড়ে যাওয়ার ভয় কম হয়।
,
এই জন্য ইকামতের অর্থ দায়েম কায়েম রাখাও আসে।
কুরআন এবং সুন্নাহর পরিভাষায় ইকামতে ছলাতের অর্থ নামাজকে তার ওয়াক্তের ভিতর পাবন্দির সাথে তার পুরো আদব এবং শর্তের সহিত আদায় করা।
শুধু নামাজ পড়ে নেওয়ার নাম ইকামতে ছলাত নয়।
,
,
কুরআন কারীমে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেনঃ 
وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ وَارْكَعُوا مَعَ الرَّاكِعِينَ ﴾
(سورة البقرة: الآية 43)
তোমরা নামাজ কায়েম করো,যাকাত আদায় করো,এবং রুকু কারীদের সাথে রুকু করো।
(সুরা বাকারা আয়াত ৪৩)

ইমাম বাগাবি রহঃ আয়াতের তাফসীরে বলেছেন
 ﴿ وَأَقِيمُوا الصَّلَاةَ وَآتُوا الزَّكَاةَ ﴾ قال البغوي - رحمه الله - في معالم التنزيل:
﴿ وَأَقِيمُوا الصَّلاةَ ﴾ يعني الصلوات الخمس بمواقيتها وحدودها ﴿ وَآتُوا الزَّكَاةَ ﴾ أدوا زكاة أموالكم المفروضة. والزكاة مأخوذة من زكا الزرع إذا نما وكثر. وقيل: من تزكى أي تطهر، وكلا المعنيين موجود في الزكاة، لأن فيها تطهيرا وتنمية للمال.اهـ[].
 
﴿ وَارْكَعُوا مَعَ الرَّاكِعِينَ ﴾ قال السعدي – رحمه الله - أي: صلوا مع المصلين، فإنكم إذا فعلتم ذلك مع الإيمان برسل الله وآيات الله، فقد جمعتم بين الأعمال الظاهرة والباطنة، وبين الإخلاص للمعبود، والإحسان إلى عبيده، وبين العبادات القلبية البدنية والمالية 
معالم التنزيل للبغوي- الناشر: دار طيبة للنشر والتوزيع (1 / 88).
যার সারমর্ম হলো ০৫ ওয়াক্ত নামাজ তার সময় সীমার ভিতরেই আদায় করো।  
.
তাফসিরে জালালাইনে এসেছে
وأقيموا الصلاة وآتوا الزكاة واركعوا مع الراكعين صلوا مع المصلين محمد وأصحابه ونزل في علمائهم وكانوا يقولون لأقربائهم المسلمين اثبتوا على دين محمد فإنه حق.
যার সারমর্ম হলো তোমরা মুহাম্মদ সাঃ বা তার সাথি সঙ্গিদের সাথে (উম্মতদের সাথে) নামাজ আদায় করো,,,,    

তাফসীরে ইবনে কাসিরে এসেছে
وأقيموا الصلاة وآتوا الزكاة واركعوا مع الراكعين} قال مقاتل: أمرهم أن يصلوا مع النبي صلى اللَه عليه وسلم
এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা রাসুলুল্লাহ সাঃ এর সাথে নামাজ আদায় করতে বলেছেন।   

তাফসিরে তবারীতে এসেছে
الْقَوْل فِي تَأْوِيل قَوْله تَعَالَى : { وَأَقِيمُوا الصَّلَاة وَآتُوا الزَّكَاة وَارْكَعُوا مَعَ الرَّاكِعِينَ } قَالَ أَبُو جَعْفَر : ذَكَرَ أَنَّ أَحْبَار الْيَهُود وَالْمُنَافِقِينَ كَانُوا يَأْمُرُونَ النَّاس بِإِقَامِ الصَّلَاة وَإِيتَاء الزَّكَاة وَلَا يَفْعَلُونَهُ ; فَأَمَرَهُمْ اللَّه بِإِقَامِ الصَّلَاة مَعَ الْمُسْلِمِينَ الْمُصَدِّقِينَ بِمُحَمَّدٍ وَبِمَا جَاءَ بِهِ , وَإِيتَاء زَكَاة أَمْوَالهمْ مَعَهُمْ وَأَنْ يَخْضَعُوا لِلَّهِ وَلِرَسُولِهِ كَمَا خَضَعُوا . كَمَا : 701 - حُدِّثْت عَنْ عَمَّار بْن الْحَسَن , قَالَ : حَدَّثَنَا ابْن أَبِي جَعْفَر , عَنْ أَبِيهِ , عَنْ قَتَادَةَ فِي قَوْله : { وَأَقِيمُوا الصَّلَاة وَآتُوا الزَّكَاة } قَالَ : فَرِيضَتَانِ وَاجِبَتَانِ , فَأَدُّوهُمَا إلَى اللَّه
ইহুদী,মুনাফিকরা নামাজ কায়েম, যাকাত আদায়ের আদায়ের আদেশ করতো,কিন্তু নিজেরা সেটা আমল আমল করতোনা, তখন আল্লাহ তায়ালা হুকুম করলেন মুসলমান যারা রাসুল সাঃ এর আনিত ধর্ম মেনে নিয়েছে,তাদের সাথে নামাজ আদায় করতে,,,,  


তাফদীরে খাওয়াতিরে মুহাম্মদ গ্রন্থে এসেছে 
إقامة الصلاة معروفة. وهي تبدأ بالتكبير وتختم بالتسليم. بشرائطها من عناصر القيام والركوع والسجود.
যার সারমর্ম হলো নামাজকে তাকবীর দ্বারা শুরু করবে,সালাম দিয়ে শেষ করবে,দাড়িয়ে নামাজ আদায়,রুকু,সেজদার সহিত এক কথায় নামাজের শর্তের সহিত আদায় করাকেই ইকামতে ছলাত বলা হয়।

★কেহ কেহ বলেছেন

নিজে ৫ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে জামাতে আদায় করা। পরিবারের সকলকে নামাজী হিসাবে গড়ে তোলা। নিজ নিজ মসজিদের আওতায় যত মুসলমান বালেগ পুরুষ ১০ বৎসরের উর্ধে আছে তাদের সকলকে  ৫ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে যাতে আদায় করে সেজন্য প্রত্যেকের ঘরে ঘরে গিয়ে নামাজের দাওয়াতের মাধ্যমে প্রত্যেক মুসলমানকে মসজিদমুখি করাই নামাজ কায়েমের আসল উদ্দেশ্য এবং সেই ব্যবস্থা করা প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানী দায়ীত্ব। এবং নিজ নিজ স্ত্রী, মা , বোন, ও কন্যা সন্তানগন সকলকে আজানের সাথে সাথে (আউয়াল ওয়াক্তে ) ৫ ওয়াক্ত নামাজী করে গড়ে তোলা। তাদেরকে পূর্ন পর্দার সহিত পরিচালনা করা। ইহাকেই বলে নামাজ কায়েম করা।
,
(০২)
ফেতনার যামানা হিসেবে চুপচাপ লিভ নেওয়াটাকেই সমীচীন বলে মনে করছি।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 161 views
...