আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
506 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (41 points)
আসসালামু আলাইকুম , একজনের মোবাইলে সিম কার্ড চলছিলো না , তাই আমাকে সিম কার্ডটি দিলো বিষয়টা দেখার জন্য । আমি সিমের সমস্যা বের করলাম এবং তাকে বললাম সিমটি ইনএ্যাকটিভ , এ্যাকটিভ করতে হলে কিছু টাকা রিচার্জ করতে হবে । সে বললো যে তার কাছে এখন টাকা ভাংতি নেই , তাই আমি যেনো আমার কাজ থেকে কিছু টাকা নিয়ে রিচার্জ করে সিমটি এ্যাকটিভ করে দেই, পরে সে দিয়ে দিবে । আমি নিজের টাকা থেকে ২০ টাকা নিয়ে রিচার্জ করে সিমটি এ্যাকটিভ করলাম এবং ঘন্টা খানিক পর তাকে দিলাম । সে আমাকে ১০০ টাকা দিয়ে বললো , " এই নাও তোমার সার্ভিস চার্জ " । আমার প্রশ্ন অতিরিক্ত ৮০ টাকা নেওয়া কি সুদ ? উল্লেখ্য , আমি তাকে বলি নি যে আমাকে টাকা ফেরত দিতে হবে , এমনকি আমাকে কোনও টাকা না দিলেও হতো । কারন সে আমার আত্নীয়

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
 بسم الله الرحمن الرحيم 

প্রথমেই জানা প্রয়োজন সূদ (রিবা) কি? সূদ (রিবা) কাকে বলে? আরবী ‘রিবা’ শব্দের আভিধানিক অর্থ হ’ল বৃদ্ধি, অতিরিক্ত, প্রবৃদ্ধি ইত্যাদি। অবশ্য এর অর্থ এই নয় যে, ইসলামে সব ধরনের বৃদ্ধি বা প্রবৃদ্ধিকে হারাম বা নিষিদ্ধ গণ্য করা হয়েছে। 

শরী’আতে রিবা বলতে ঐ অর্থকে বোঝায়, যা ঋণের শর্ত হিসাবে মেয়াদ শেষে ঋণগ্রহীতা মূল অর্থসহ অতিরিক্ত অর্থ ঋণদাতাকে পরিশোধ করতে বাধ্য হয়।

ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী রহঃ বলেন, জাহেলী যুগে আরববাসী সকলেরই রিবা সম্বন্ধে জানা ছিল এবং তাদের মধ্যে এটি বহুল প্রচলিতও ছিল। সে যুগেও তারা প্রথাসিদ্ধভাবে ঋণ দিত এবং শর্ত অনুসারে তার উপর মাসে মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আদায় করত, কিন্তু আসলের পরিমাণ থাকত অপরিবর্তিত। যখন ঋণের মেয়াদ শেষ হ’ত এবং ঋণগ্রহীতা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হ’ত তখন সূদ বাড়িয়ে দেওয়ার শর্তে পরিশোধের সময়ও বাড়িয়ে দেওয়া হ’ত {তাফসীরুল কাবীর}।

ইবনু হাজার আসক্বালানী (রহ.) বলেন, পণ্য বা অর্থের বিনিময়ে প্রদেয় অতিরিক্ত পণ্য বা অর্থই হ’ল রিবা। ইমাম আবুবকর আল-জাসসাস ‘আহকামুল কুরআন’ গ্রন্থে বলেন, রিবা দু’রকম। একটি ক্রয়-বিক্রয়ের মধ্যে, অপরটি ক্রয়-বিক্রয় ছাড়া। দ্বিতীয় প্রকারই জাহেলী যুগের রিবা। তিনি আরও বলেন, জাহেলী যুগে ঋণ গ্রহণের সময়ে ঋণদাতা ও ঋণগ্রহীতার মধ্যে একটি চুক্তি হ’ত। তাতে স্বীকার করে নেওয়া হ’ত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মূলধনের উপর একটি নির্ধারিত পরিমাণ অতিরিক্তসহ আসল মূলধন ঋণগ্রহীতাকে আদায় করতে হবে।
প্রখ্যাত তাফসীরবিদ ইবনু জারীর (রহ.) বলেন, ‘জাহিলী যুগে প্রচলিত ও কুরআনে নিষিদ্ধ রিবা হ’ল কাউকে নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য ঋণ দিয়ে মূলধনের অতিরিক্ত নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ গ্রহণ করা’। আরবরা তাই-ই করত এবং নির্দিষ্ট মেয়াদে ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে সূদ বাড়িয়ে দেওয়ার শর্তে পরিশোধের মেয়াদ বাড়িয়ে দিত {তাফসীর ইবনে জারীর}।

কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَذَرُوا مَا بَقِيَ مِنَ الرِّبَا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ [٢:٢٧٨] 

হে ঈমানদারগণ,তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে,তা পরিত্যাগ কর,যদি তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক। [সূরা বাকারা-২৭৮] 

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَأْكُلُوا الرِّبَا أَضْعَافًا مُّضَاعَفَةً ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٣:١٣٠] 

হে ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে তোমরা কল্যাণ অর্জন করতে পারো। [সুরা আলে ইমরান-১৩০] 

হাদিসে এসেছে-
لَعَنَ رَسُولُ اللهِ ﷺ آكل الربا وموكله وكاتبه وشاهديه، وقال : هم سواء.
আল্লাহর রাসূল ﷺ সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক এবং তার উপর সাক্ষীদ্বয়কে অভিশাপ করেছেন, আর বলেছেন, ওরা সকলেই সমান। (মুসনাদে আহমাদ ৩৮০৯)
,
,
★★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এটি সার্ভিস চার্জ।
এটি সূদ নয়।
তাই আপনার জন্য এটি নেওয়া জায়েয আছে। 
তবে আত্মীয় হিসেবে আপনি সার্ভিস চার্জ না নিতে চাইলে অতিরিক্ত বা সব টাকা ফিরিয়েও দিতে পারেন
তবে আপনার এই টাকা নেওয়া জায়েয আছে।
কারনে এটি উপরে উল্লেখিত সূদের সংজ্ঞার মধ্যে পড়েনা।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 139 views
...