জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
ফরয নামাযের ক্ষেত্রে পুরুষের জন্য শরীয়তের বিধান হচ্ছে, পাঁচ ওয়াক্ত নামায মসজিদে জামাতের সাথে আদায় করা। কোনো শরয়ী ওযর ব্যতীত মসজিদের জামাত তরক করা জায়েয নেই।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেন-
لَقَدْ رَأَيْتُنَا وَمَا يَتَخَلَّفُ عَنِ الصَّلَاةِ إِلَّا مُنَافِقٌ قَدْ عُلِمَ نِفَاقُهُ، أَوْ مَرِيضٌ، إِنْ كَانَ الْمَرِيضُ لَيَمْشِي بَيْنَ رَجُلَيْنِ حَتَّى يَأْتِيَ الصَّلَاةِ.
আমাদের অবস্থা এমন ছিল যে, নামায (-এর জামাত) থেকে পিছিয়ে থাকত কেবল এমন মুনাফিক, যার নিফাক স্পষ্ট ছিল অথবা অসুস্থ ব্যক্তি। তবে আমরা অসুস্থদেরকেও দেখতাম, দুই ব্যক্তির কাঁধে ভর করে তারা নামাযের জন্য চলে আসত। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৮৫
হযরত ইবনে মাসউদ রা. আরো বলেন-
إِنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَلَّمَنَا سُنَنَ الْهُدَى، وَإِنَّ مِنْ سُنَنِ الْهُدَى الصَّلَاةَ فِي الْمَسْجِدِ الَّذِي يُؤَذَّنُ فِيهِ.
নিঃসন্দেহে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে হেদায়েতের তরীকাগুলো শিখিয়েছেন। হেদায়েতের এই তরীকাসমূহের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, যেখানে আযান হয় সেখানে নামায আদায় করা। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৮৫
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. এ-ও ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি কাল (হাশরের ময়দানে) ‘মুসলিম’ অবস্থায় আল্লাহর সামনে উপস্থিত হতে চায় তার উচিত এই নামাযগুলো মসজিদে গিয়ে জামাতের সাথে আদায় করা।
(مَنْ سَرَّهُ أَنْ يَلْقَى اللهَ غَدًا مُسْلِمًا، فَلْيُحَافِظْ عَلَى هَؤُلَاءِ الصَّلَوَاتِ حَيْثُ يُنَادَى بِهِنَّ)
তারপর তিনি বলেন-
فَإِنَّ اللهَ شَرَعَ لِنَبِيِّكُمْ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُنَنَ الْهُدَى، وَإِنَّهُنَّ منْ سُنَن الْهُدَى، وَلَوْ أَنَّكُمْ صَلَّيْتُمْ فِي بُيُوتِكُمْ كَمَا يُصَلِّي هَذَا الْمُتَخَلِّفُ فِي بَيْتِهِ، لَتَرَكْتُمْ سُنَّةَ نَبِيِّكُمْ، وَلَوْ تَرَكْتُمْ سُنَّةَ نَبِيِّكُمْ لَضَلَلْتُمْ.
কেননা আল্লাহ তোমাদের নবীর জন্য হেদায়েতের পথ সুনির্ধারিত করে দিয়েছেন। আর এই নামাযগুলো মসজিদে জামাতের সাথে আদায় করা এই হেদায়েতের পথসমূহের অন্তর্ভুক্ত। যদি তোমরা ঘরে নামায পড়তে থাক যেভাবে পিছিয়ে থাকা লোক (মুনাফিক) ঘরে নামায আদায় করে তাহলে তোমরা তোমাদের নবীর পথ ছেড়ে দিলে। আর নবীর পথ ছেড়ে দিলে তো তোমরা গোমরাহ ও পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৮৬
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
صَلاَةُ الجَمَاعَةِ تَفْضُلُ صَلاَةَ الفَذِّ بِسَبْعٍ وَعِشْرِينَ دَرَجَةً.
অর্থাৎ একাকী নামায পড়া অপেক্ষা জামাতে নামায আদায় করা সাতাশ গুণ বেশি ফযীলতপূর্ণ। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৪৫; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪৭৫
মসজিদে সরকারের বেধে দেওয়া নিয়ম মানা হচ্ছেনা বলে মসজিদে নামাজ না পড়ে বাসায় নামাজ পড়ার কোনো সুযোগ আছে বলে আমি মনে করছিনা।
এহেন পরিস্থিতিতে আপনার এলাকার অবস্থা যদি তেমন শোচনীয় না হয়,তাহলে বাড়িতে নামাজ না পড়ে মসজিদেই নামাজ পড়ুন।
বিস্তারিত জানুনঃ
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনাকে মসজিদেই নামাজ পড়তে হবে,স্বাস্থ্যবিধি মানতে পারেন,মাস্ক পড়ে আসতে পারেন, ফাকা ফাকা হয়ে দাড়াতে পারেন,তবে মসজিদের এক কোনায় এসে দাড়ানো যাবেনা।
,
কারন মূল কাতার থেকে এত পিছনে দাড়ানো,যার মধ্যে দিয়ে একটি গাড়ি যাতায়াত করতে পারে,তাহলে উক্ত ব্যাক্তির ইকতেদা ছহীহ হবেনা।
,
মসজিদের ২য় তলায় যদি স্পিকারের আওয়াজ তাদের নিকট পৌছে,তাকবীর সমূহ অনায়াসে তারা শুনতে পায়,তাহলে তাদের নামায বিশুদ্ধ হবে।
তবে অবশ্যই উত্তম নিচে নেমে এসে নামায পড়া।
ولو قام على سطح المسجد واقتدى بإمام في المسجد إن كان للسطح باب في المسجد ولا يشتبه عليه حال الإمام يصح الاقتداء وإن اشتبه عليه حال الإمام لا يصح (الفتاوى الهندية، كتاب الصلاة، الفصل الرابع فى بيان ما يمنع الإقتداء الخ-1/88
ইমামের অবস্থা সে অনুধাবন করতে পারলে তার ইকতেদা ছহীহ হবে।
অন্যথায় ছহীহ হবেনা।
তবে বর্তমানে আপনার এলাকায় যদি করোনা প্রকট আকার ধারন না করে,আপনি যদি নিশ্চিত না হোন যে মসজিদে করোনা রোগীরাও আসে,তাহলে করোনার অজুহাতে মসজিদের ২য় তলায় নামাজ আদায় করলে যদিও নামাজ আদায় হয়ে যাবে,তবে মাকরুহ হবে।
,
আরো জানুনঃ