আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
1,111 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (13 points)
আসসালামু আলাইকুম

ছেলে মেয়ে দুইজনেই আগে দ্বীনের পথে ছিল না। কয়েক বছর হলো তারা দ্বীনের হেদায়েত পেয়েছে আলহামদুলিল্লাহ। দুইজন পূর্ব পরিচিত না। ফ্যামিলির মাধ্যমে তাদের বিয়ের কথা চলছে। তাদের যেকোনো একজন আরেকজনকে তার অতীত জীবনের হারাম রিলেশন সম্পর্কে জানালো। এতে বাকি জনের কি করণীয়??

আর একজন জানালে কি বাকিজনেরও তার অতীত সম্পর্কে জানানো উচিত???
স্বামী যদি বাইরে থাকেন তাহলে স্ত্রী কি তার শ্বশুর বাড়িতে থাকা বাধ্যতামূলক নাকি চাইলে সে বাপের বাড়িতে থাকতে পারবে যেহেতু শ্বশুর বাড়িতে দেবররা থাকে।

শ্বশুরের সামনে পর্দা কিভাবে করবে??? চেহেরা কি খোলা রাখা যাবে?

শ্বশুর বাড়িতে কোন কোন সম্পর্কের মানুষদের সামনে মুখ খোলা জায়েজ?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান হলো কোনো ব্যক্তি নির্জনে বা গোপনে কোনো অপরাধ করেছে কিংবা মানুষের দৃষ্টির আড়ালে অপরাধ করেছে, আর সেটা তিনি অন্যের কাছে প্রকাশ করে দিলে,সেটি অনেক বড় আপরাধ। যদি এটা ছোট গুনাহ হয়, প্রকাশ করার ফলে এটি বড় গুনাহে রূপান্তর হয়ে যাবে।

আল্লাহ এই মুজাহের ব্যক্তিকে ক্ষমা করবেন না। মুজাহের ব্যক্তি যতক্ষণ পর্যন্ত সত্যিকার অর্থে তওবা না করবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করবেন না।

“আল্লাহ্ কোন মন্দ বিষয় প্রকাশ করা পছন্দ করেন না। তবে কারো প্রতি জুলুম হয়ে থাকলে সে কথা আলাদা। আল্লাহ্ শ্রবণকারী,বিজ্ঞ”। [সূরা আন নিসা, ৪:১৪৮]

রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, 
“আমার সমগ্র উম্মাহ্ নিরাপদ, কেবল তারা ব্যতীত যারা কিনা তাদের পাপ নিয়ে দম্ভ করে বেড়ায়। তাদের কেউ যখন কোন কুকর্ম করে রাতে ঘুমাতে যায় এবং আল্লাহ্ তার পাপ গোপন রাখেন, সকালে ঘুম থেকে উঠার পর সে বলতে থাকে, “এই শোন, আমি না কাল রাতে এই এই (কুকর্ম) করেছি”।  সে যখন ঘুমাতে যাই, আল্লাহ্ তার পাপ গোপন রাখেন, আর সকালে ঘুম থেকে উঠেই আল্লাহ্ যা গোপন রেখেছিলেন তা সে লোকজনের কাছে প্রকাশ করে বেড়ায়”। [সহীহ আল বুখারী]

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তাদের যেকোনো একজন আরেকজনকে তার অতীত জীবনের হারাম রিলেশন সম্পর্কে জানালো। 
এটা বড় গুনাহ হয়েছে 
এতে বাকি জনের করণীয় হলো সে চাইলে তাকে বিবাহ করতেও পারে,নাও পারে।
এক্ষেত্রে বিবাহ করা বা না করার সম্পূর্ণ ইচ্ছা/ইখতিয়ার তার রয়েছে।
,
একজন জানালে  বাকিজনের তার অতীত সম্পর্কে জানানো কোনোভাবেই জায়ে নয়,এটিও মারাত্মক গুনাহ।
,
★ইসলামের দিক-নিদের্শনা হচ্ছে বিবাহের পরে স্বামীর প্রথম কতর্ব্য হলো স্ত্রীর জন্য এমন একটি বাসস্থানের ব্যবস্থা করা যেখানে স্ত্রী মানুষের দৃষ্টি থেকে নিরাপদ থাকবে। কেননা পর্দা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ বিধান। আর এই বিধান পালন করার জন্য স্বামীর কতর্ব্য স্ত্রীকে সাহায্য করা। সেই সাথে অন্যান্য সকল কষ্ট থেকে স্ত্রীর আরামের ব্যবস্থা করতে হবে। তবে স্ত্রীকে শ্বশুর ও শাশুড়ির সাথেই থাকতে হবে এমন বাধ্যও করা যাবে না। কেননা এমন কোন অধিকার স্বামীর নেই। তবে এই ক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রী উভয়কে সামাজিক অবস্থার উপর বিবেচনা করেও কিছু কাজ করতে হবে।

যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে স্বামীর পরিবারের সাথে অথবা অন্য আত্মীয়ের সাথে থাকার কথা বলে কিন্তু স্ত্রী কারো সাথে থাকার কথা রাজি না হয় তাহলে স্ত্রীকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা স্বামীর কতর্ব্য। কেননা স্ত্রীর সকল কিছু রক্ষা করা ও নিরাপদে বসবাস করার দায়িত্ব স্বামীর।

আরো জানুনঃ
,
সুতরাং পর্দা করতে সমস্যা হলে স্ত্রী অবশ্যই স্বামীকে বলে অন্যত্রে থাকবে।
স্বামী বাহিরে থাকলে স্বামীর অনুমতিক্রমে স্ত্রী তার বাবার বাসায় থাকতে পারবে।   

শশুর হলো মাহরাম,তার তার সামনে পর্দার বিধান নেই।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে  মুখ খোলা যাবে। 
,
শশুর বাড়িতে মহিলাদের মাহরাম পুরুষঃ
শ্বশুর, আপন দাদা শ্বশুর ও নানা শ্বশুর এবং তাদের উর্ধ্বতন ক্রমানু পুরুষগণ।
স্বামীর অন্য স্ত্রীর গর্ভজাত পুত্র।
শরীয়ত অনুমোদিত বৈধ স্বামী।
অপ্রাপ্ত বয়স্ক এমন বালক যার মাঝে এখনো যৌন আকর্ষণ সৃষ্টি হয়নি।

আল্লাহ তা'আলা বলেন,

وَقُل لِّلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَى جُيُوبِهِنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاء بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُوْلِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَى عَوْرَاتِ النِّسَاء وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِن زِينَتِهِنَّ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَا الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।(সূরা আন-নূর-৩১)

আরো জানুনঃ
,


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...