আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
234 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
edited by
আসসালামুআলাইকুম উস্তাদ।
প্রশ্ন টা আমার বান্ধুবির পক্ষ থেকে।
১২তারিখ তাদের আকদ হয় ফ্যামিলি না জানিয়ে। কুফু মিলে-ফ্যামিলি সম্পর্ক আছে সেটাও জানে এবং মেনেও নিয়েছে। কিন্তু বিয়ে হয়েছে জানেনা।
এখন বিয়ে কি আল্লাহ কবুল করেছেন কিনা সেই বিষয়ে ই জানতে চাচ্ছে। কারন কিছু কমপ্লিকেটেড বিষয় আছে।
রেসটুরেন্ট এ আকদ হয়৷ আকদ পড়ানোর টাইম পাশাপাশি দুটো টেবিল এ, অর্থাত একটি টেবিল এর পাশেই আরেকটি টেবিল ছিলো। দু টেবিল এর মাঝে হাল্কা করে চিকন দেয়াল ছিলো৷
মেয়ের পাশে বসা ছিলাম আমি(আমি কনের বান্ধুবি), আমাদের সামনে বসা ছিলো হুজুর।
আরেক টেবিলে বসা ছিলো বর এবং দুজন পুরুষ সাক্ষি৷
হুজুর ছেলের থেকে বিয়েতে রাজি কিনা পারমিশন নিয়ে, কনে কে মোহরানা সহ কিছু সেন্টেন্স বলে কবুল পড়ায়। আর কনের কবুল আমি শুনেছি। কনের বর ও শুনেছে। কিন্তু বর এর সামনে দেয়াল এর ওই পাশে (দেয়াল এর ওই পাশে বলতে মেয়ের টেবিল এর বা পাশে দেয়াল টা ছিলো চিকন কিন্তু সাক্ষি এবং কনে কেউ কাউকে দেখতে পারছিলোনা, কিন্তু সাক্ষি গুলো বরের সামনে ছিলো মুখোমুখি। একজন অপরজনকে দেখতে এবং কথা ও শুনতে পারার মত) তারা মেয়ের কবুল শুনেছে কিনা আমি জানিনা। এরপর হুজুর পাশের টেবিল এ যায়। গিয়ে কনের প্রস্তাব সম্পর্কে কিছু সেন্টেন্স বলে, ছেলেকে কবুল পড়ায়। বরের কবুল বলা কনে শুনেছে, কিন্তু আমি কনের পাশে বসেও খেয়াল করিনি। অন্য দিকে তাকানো ছিলাম হয়তো।
কিন্তু ছেলের কবুল বলা তার সামনে বসা দুজন পুরুষ সাক্ষি শুনেছে কিনা সেই ব্যাপারে আমার এবং কনের সন্দেহ হয়৷ কারন আমরা খেয়াল করে দেখি তারা মোবাইলের দিকে তাকানো ছিলো।
এটা সন্দেহ হওয়ার পর হুজুরকে বলি পুরুষ সাক্ষি ২জন কবুল শুনেছে কিনা জিগেস করেন।
হুজুর ছেলেকে কবুল পড়ানোর এক- মিনিট এর মাথায় ই জিগেস করে ওই সাক্ষিদের তারা ছেলের কবুল শুনেছে কিনা।
ছেলে সাক্ষি দুজন বলেছে তারা শুনেছে,, তারা শুনেছে সেটা শিকারোক্ত দিয়েছে মুখে।
আসলে আমাদের সন্দেহ গুলো আসার কারন হচ্ছে হুজুর খুব আস্তে সাউন্ড এ বিয়ে পড়িয়েছেন।
এখন আমার প্রশ্ন হলো- ছেলে সাক্ষি দুজন বরের সামনে ছিলো অন্য টেবিল এ।
আর আমাদের টেবিল এ আমি ই ছিলাম কনের সাথে। তাই এভাবে হুজুর এর আকদ পড়ানো, সাথে আমাদের যেই সন্দেহ টা হচ্ছে মেয়ের কবুল ছেলে গুলো শুনেনি(হয়তো) এবং ছেলেও কবুল বলেছে সেটা শুনেছে কিনা আমরা জানিনা কিন্তু সেই সাক্ষি ছেলে গুলো মুখে শিকারোক্ত দিলো তারা শুনেছে।
তাহলে কি বিয়ে হয়েছে???
আর হ্যা, কবুল পড়ানোর আগে, একটা সাদা কাগযে ছেলে মেয়ের নাম বাবা মায়ের নাম, ঠিকানা সাথে আমাদের ৩জন সাক্ষির (দুজন পুরুষ এবং আমি(মেয়ের বান্ধুবি)) আমাদের ৩জন এর নাম বাবা মায়ের নাম সেই কাগযে লিখিত নিয়েছে আমাদের হাতের লেখায় ই। তারপর বিয়ে পড়িয়েছে।
বিয়ে কি  বৈধ হয়েছে উস্তাদ? যেহেতু আমার আর মেয়ের মনে সন্দেহ কাজ করছে।

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


বিবাহের ইজাব ও কবুলটি বলতে হয় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মসলিম পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলার সামনে।

وَ اسۡتَشۡہِدُوۡا شَہِیۡدَیۡنِ مِنۡ رِّجَالِکُمۡ ۚ فَاِنۡ لَّمۡ یَکُوۡنَا رَجُلَیۡنِ فَرَجُلٌ وَّ امۡرَاَتٰنِ مِمَّنۡ تَرۡضَوۡنَ مِنَ الشُّہَدَآءِ اَنۡ تَضِلَّ اِحۡدٰىہُمَا فَتُذَکِّرَ اِحۡدٰىہُمَا الۡاُخۡرٰی

আর তোমরা তোমাদের পুরুষদের মধ্য হতে দু’জন সাক্ষী রাখ, অতঃপর যদি দু’জন পুরুষ না হয় তবে একজন পুরুষ ও দু’জন স্ত্রীলোক যাদেরকে তোমরা সাক্ষী হিসেবে পছন্দ কর, যাতে স্ত্রীলোকদের মধ্যে একজন ভুলে গেলে তাদের একজন অপরজনকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
(সুরা বাকারা ২৮২)

হাদিস শরিফে এসেছে, 

قوله صلى الله عليه وسلم : ( لا نكاح إلا بولي وشاهدي عدل ) رواه البيهقي من حديث عمران وعائشة ، وصححه الألباني في صحيح الجامع (7557) 

বিয়ের আকদের সময় সাক্ষী রাখতে হবে। রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “অভিভাবক ও দুইজন সাক্ষী ছাড়া কোন বিবাহ নেই।” [তাবারানী কর্তৃক সংকলিত, সহীহ জামে (৭৫৫৮)]।

অন্যত্রে রাসূল (সা.) বলেছেন,

لَا يَجُوزُ نِكَاحٌ، وَلَا طَلَاقٌ، وَلَا ارْتِجَاعٌ إِلَّا بِشَاهِدَيْنِ


‘রাসূল (সা.) বলেছেন, দুইজন সাক্ষী ছাড়া বিবাহ, তালাক ও ফিরিয়ে আনা বৈধ হবে না।’ [মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদিস: ১০২৫৪]
 
عَنْ عَائِشَةَ ، أَنّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ لا نِكَاحَ إِلا بِوَلِيٍّ وَشَاهِدَيْ عَدْلٍ ، وَمَا كَانَ مِنْ نِكَاحٍ عَلَى غَيْرِ ذَلِكَ ، فَهُوَ بَاطِلٌ

আয়শা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্  ﷺ বলেছেন, অভিবাক ও দু’জন ন্যায়পরায়ণ সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত বিয়ে শুদ্ধ হয় না। যে বিবাহ অভিবাক ও সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত হবে তা বাতিল। (সহিহ ইবন হিব্বান ৪০৭৫)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল  আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দু’জন মুসলিম পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বাক্ষীর সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষ পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। সুতরাং বিয়ের মজলিসে সাক্ষীর উপস্থিত ছাড়া বিয়ে সহীহ হবে না।

فى الدر المختار- ( و ) شرط ( حضور ) شاهدين ( حرين ) أو حر وحرتين ( مكلفين سامعين قولهما معا ) (الدر المختار ، كتاب النكاح،-3/9)

অনুবাদ-বিবাহ সহীহ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ [যাদের উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়] এমন দুইজন আযাদ পুরুষ সাক্ষি বা একজন আযাদ পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষি হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল  বলার উভয় বক্তব্য স্বকর্ণে উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। {আদ দুররুল মুখতার-৩/৯, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮}

আরো জানুনঃ- 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত বিয়েতে যিনি বিবাহ পড়িয়েছেন,তিনি যেহেতু ছেলের পক্ষ থেকে বিবাহের অনুমতি নিয়ে মেয়েকে বিবাহের প্রস্তাব পেশ করেছিলেন,মেয়েটি কবুল বলেছিলো।
তারপর উক্ত হুজুর বরের কাছে গিয়ে কনের প্রস্তাব সম্পর্কে  বলে,আর বর কবুল বলে।
আর সাক্ষীদ্বয় স্বীকার করেছে যে তারা ছেলের কবুল বলা শুনেছে,কনেও শুনেছে।
সুতরাং এই বিবাহে কনে বালেগাহ হয়ে থাকলে এই বিবাহ শুদ্ধ হয়েছে।

কনে যদি নাবালেগাহ হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে অভিভাবক ছাড়া উক্ত বিবাহ শুদ্ধ বলে গন্য হবেনা।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (2 points)
reshown by
উস্তাদ, কনে উপযুক্ত বয়স-২৩বছর। আর জানতে চাচ্ছিলাম,, কনের কবুল বলা যদি ওই দুজন পুরুষ সাক্ষি নাও শুনে তাহলেও কি বিবাহ হয়েছে? কারন পুরুষ সাক্ষি গুলা শিকারোক্ত দিয়েছে তারা ছেলের কবুল শুনেছে। মেয়ের টা শুনেছে কিনা হুজুর জিগেস ক করেনি, এবং আমরাও জানিনা। সেই ক্ষেত্রে কি এই বিবাহ হয়েছে? (মেয়ের কবুল বলা আমি(আমি মেয়ের বান্ধুবি), হুজুর এবং তার বর শুনেছে। কিন্তু ছেলে সাক্ষি গুলা শুনেছে কিনা সেটা হুজুর আর আস্ক করেনি। এখন যদি নাও শুনে থাকে এই বিবাহ কি বৈধ হবে। প্লিজ জানান উস্তাদ
by (559,140 points)
উক্ত বিবাহ শুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। 
কনের কবুল বলা যদি ওই দুজন পুরুষ সাক্ষি নাও শুনে তাহলেও বিবাহ হয়েছে।
কেননা এক্ষেত্রে উক্ত হুজুর কনের পক্ষ থেকে উকিল হয়ে এসে পাত্রকে মেয়ের পক্ষ থেকে প্রস্তাব পেশ করেছিলো।
সুতরাং এক্ষেত্রে উক্ত বিবাহ শুদ্ধ হয়েছে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...