আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
110 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আমি একজন মেয়ে। আমাদের দেশের সবগুলো সরকারি মেডিকেলেই সহশিক্ষা বিদ্যমান। তবে কয়েকটা বেসরকারি মেডিকেল কলেজ আছে যেগুলো শুধু মাত্র মেয়েদের জন্য। আমি সেগুলোর যেকোনো একটিতে ডাক্তারিবিদ্যা পড়তে চাচ্ছি। সেগুলোর মধ্যে যে মেডিকেল কলেজ টা আমার পছন্দ হয়েছে সেটার কলেজ ড্রেস নির্দিষ্ট করা। আর কলেজ ড্রেস লাল, বেগুনি এমন সব রঙের যেগুলো আমাদের পর্দা বিরোধী রঙ। একেক সেমিস্টারে আমাদের একেক রঙের ড্রেস পড়তে হবে। এটা কলেজের নিয়ম। আরও কয়েকটা মেডিকেল কলেজ আছে কিন্তু আমি তারমধ্য থেকে এই কলেজটাই পছন্দ করেছি কারণ এই কলেজটা আমার কাছে বেশি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ও গোছালো লেগেছে, পাশাপাশি যতদূর বুঝলাম এই কলেজে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও মেনে চলা হয়, সম্ভবত পর্দা করতে বাধা দেয় না ( আমি শিউর না)। আবার এখানের হসপিটালে সম্ভবত মহিলা রোগী বেশি দেখা হয়। এসব কারণে আমি এই কলেজটি পছন্দ করেছি। কিন্তু এই কলেজে পড়লে আমাকে ড্রেস কোড মেনে চলতে হবে। আমি কালো নিকাব পড়তে পারবো ঠিকই কিন্তু বাকি ড্রেসগুলো লাল, বেগুনি, নেভিব্লু এমন রঙের পড়তে হবে। আরও কয়েকটা গার্লস ইন্সটিটিউট আছে কিন্তু আমার এটাতে পড়ার ইচ্ছা। এখন এমন অবস্থায় আমার জন্য কি এই কলেজে পড়া জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (62,960 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/27006/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ

দ্বীনি শিক্ষা হোক,বা দুনিয়াবি শিক্ষা হোক,ইসলামের বিধান হলো ছেলেরা ছেলেদের প্রতিষ্ঠানে এবং মেয়েরা মেয়েদের প্রতিষ্ঠানে পড়বে। বিশেষত মেয়েদের ক্ষেত্রে এর প্রতি সর্বোচ্চ লক্ষ রাখা ও গুরুত্ব দেয়া আবশ্যক।  কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

زُيِّنَ لِلنَّاسِ حُبُّ الشَّهَوَاتِ مِنَ النِّسَاء

মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী। (সূরা আলি ইমরান ১৪)

রাসুলুল্লাহ বলেছেন,

مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنْ النِّسَاءِ

আমি আমার পরে মানুষের মাঝে পুরুষদের জন্য নারীদের চাইতে অধিকতর ক্ষতিকর কোন ফিতনা রেখে যাই নি।(বুখারী ৪৮০৮ মুসলিম ২৭৪০)

ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমাতে এসেছে,

 فلا يجوز للمرأة أن تَدرس أو تعمل في مكان مختلط بالرجال والنساء ، ولا يجوز لوليها أن يأذن لها بذلك

সুতরাং মেয়েদের জন্য এমন প্রতিষ্ঠানে পড়া-লেখা কিংবা চাকরি করা জায়েয হবে না যেখানে নারী-পুরুষের সহাবস্থান রয়েছে এবং অভিবাকের জন্য জায়েয হবে না তাকে এর অনুমতি দেয়া।  (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১২/১৫৬)

একান্ত অপারগ অবস্থায় বা বিকল্প কোন পথ না পেলে এসব প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা জায়েয আছে। কেননা, الضرورات تبيح المحظورات     জরুরত নিষিদ্ধ কাজকে সিদ্ধ করে দেয়। (আলআশবাহ ওয়াননাযাইর ১/৭৮)

তবে সবোর্চ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি, যাতে পর্দা লঙ্ঘন বা আল্লাহর অসন্তুষ্টি মূলক কার্যক্রম সংঘটিত না হয়।

কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ

অতএব তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর। (সূরা তাগাবুন ১৬)

যতদিন পর্যন্ত এই দেশে পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে উলামায়ে কেরামগন  কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন।

১/শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।

২/চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না।মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের  সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না।সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে। (ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১)

সহ শিক্ষা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ https://www.ifatwa.info/434

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!

বিশেষ প্রয়োজন বশত ইসলামী স্কলারগন উক্ত শর্তগুলি পুরোপুরি ভাবে মেনে ফ্রি মিক্সিং পরিবেশে পড়াশোনা  করার অনুমতি প্রদান করেছেন । যদি পর্দা মেইনটেইন করা সম্ভব না হয়,বা ফিতনায় জড়িয়ে যাওয়ার প্রবল আশংকা হয়,তাহলে এহেন পরিস্থিতিতে সহ শিক্ষায় যাওয়ার কোনোভাবেই অনুমতি নেই।

সহশিক্ষার পরিবেশ সম্বলিত স্কুল/কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার ক্ষেত্রে উপরোক্ত শর্ত পূর্ণ ভাবে মেনে চলতে পারলেই কেবল সেখানে পড়াশোনার অনুমতি থাকবে, নতুবা নয়।  এটি বিশেষ প্রয়োজনে অনুমতি দেয়া হয়েছে।

তবে অন্যান্ন কলেজের চেয়ে উক্ত কলেজে যদি দ্বীন মানার ও পর্দার পোশাক পরিধানের স্বাধীনতা থাকে তাহলে উপরোক্ত শর্ত পূর্ণ ভাবে মেনে চলতে পারলেই কেবল সেখানে পড়াশোনার অনুমতি থাকবে, নতুবা নয়। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, হিজাবের অন্তর্ভুক্ত পোশাকগুলো কালো রঙের হওয়া জরুরী নয়। বরং যেকোনো কালারের পোষাক মহিলারা পড়তে পারবে। তবে শর্ত হল, আকর্ষণীয় হতে পারবে না, বরং সাধাসিধে হতে হবে। তবে উত্তম এটাই যে, কালো বা এমন কোনো রঙের বোরখা হওয়া,যা আকর্ষণীয় নয়। আকর্ষনীয় হয় যা ফিতনাকে সম্ভাবনাময় করে তুলে, এমন পোষাক বা বোরখাকে পরিত্যাগ করাই শ্রেয়। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by
আসসালামু আলাইকুম। দুঃখিত আমি উত্তরটি ক্লিয়ারলি বুঝতে পারিনি। 
আমি যেই মেডিকেল কলেজে পড়তে চাচ্ছি সেটা শুধু মাত্র মেয়েদের জন্য। অর্থাৎ সেখানে সহশিক্ষা নেই তবে পুরুষ টিচার এবং অন্যান্য পুরুষ স্টাফ আছেন। সেই কলেজের ড্রেসকোড নির্দিষ্ট করে দেওয়া আছে। সেখানে পড়লে আমাকে লাল, বেগুনি, নেভিব্লু এমন রঙের ড্রেস পড়তে হবে। একেক সেমিস্টারে একেক রঙের ড্রেস। যেমন - যে সেমিস্টারে ড্রেসকোড লাল সে সেমিস্টারে আমাকে লাল রঙের বোরকা পড়তে হবে। যে সেমিস্টারে ড্রেসকোড নেভিব্লু, সে সেমিস্টারে আমি নেভিব্লু রঙের বোরকা পড়তে পারবো। এখন লাল যেহেতু একটু উজ্জ্বল রঙ তাই এই রঙের বোরকা তো পর্দার জন্য উপযুক্ত নয় ( আমার জানামতে) । আমি যেহেতু আগে থেকেই জানি যে এই কলেজ এ পড়লে আমাকে লাল রঙের বোরকা পড়তে হবে সেহেতু আমার জন্য এই কলেজে পড়া জায়েজ হবে কি? 

অর্থাৎ লাল রঙের বোরকা পড়লে কি পর্দা হবে? যদি বোরকায় কোনো ধরনের কারুকাজ না থাকে? 

দয়া করে জানাবেন। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...