আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
343 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
edited by
আসসালামু  আলাইকুম হুজুর। কিছু বিষয় জানার ছিল একটু।।
- সাপ্তাহিক নফল রোজা গুলো রাখতে চাইলেও স্বামী তাতে সায় দেন না,, কারণ বলেন যে "তাহলে আমরা মিলিত হতে পারি না তাই আমার খারাপ লাগে", মাঝে মধ্যে বুঝিয়ে শুনিয়ে রাখা হয় কিন্তু বেশিরভাগ সময়েই বাদ হয়। এখন রোজা না রেখে স্বামীর জন্য ওই কাজগুলো করলে তাতে কি ওই নফল রোজা থেকে যা নেকি পাওয়া যেত তা পাওয়া যাবে?
- স্বামী সহবাসের সময় যদি পিছনে ফিরিয়ে করতে ভালোবাসে, কিন্তু এতে একটু অস্বস্তি লাগলে তবুও এভাবেই অংশ নিলে স্বামীর খুশির জন্য, এতে কি সাওয়াবের আশা করতে পারে না স্ত্রী?

- শৃঙ্গালকালীন, মিলনকালেও স্বামী ঠোঁটে, গলায়, স্তনে প্রায়সই কামড় বসান আর নাকি অনেক আনন্দ পান... এতেও ওরকম অস্বস্তি বোধ করার পরেও স্ত্রী তা স্বামীকে করতে দিলে কি স্ত্রী হিসেবে নেকি পাওয়া যাবে স্বামীকে আনন্দ দানের জন্য? ...এগুলো এমন নয় যে অনেক কষ্ট হচ্ছে.. আবার সবসময় উপভোগ্যও নয়.. তাই জিজ্ঞেস করা..

- স্বামী স্ত্রীকে যদি ঊরুতে পরিধানের চেইন বিশেষ গিফট করে বলেন সহবাস কালে তা পরতে, আর তা করলে পরে স্বামী খুশি হন। কিন্তু শিউর না এখন.. যে এটা কি জায়েজ পরিধানযোগ্য গহনা কিনা? ঊরুতে স্বামীর খুশির জন্য চেইন পড়া যাবে?

- আপনাদের এখানে উত্তর থেকে জেনেছি যে স্বামীর চাওয়া অনুযায়ী স্ত্রীকে তার পা উপভোগ করতে দেওয়া উচিৎ স্ত্রীর। এখন হঠাৎ স্বামী তা করতে চাইলে বাসায় কাজরত অবস্থায় পায়ে তো নাপাকি লেগে থাকতে পারে বিধায় সবসময় ধুয়ে আসতে হয়.. যদি অতটা ইচ্ছুক নাও থাকা হয় এতে কিন্তু স্বামী আনন্দিত হবে এজন্য তা করলে কি আলাদা সাওয়াব আছে না? যেহেতু মিলন বাদেও এগুলোর মাধ্যমে স্বামী খুশি হচ্ছেন।

- স্বামী যদি বলে সব কাপড় ছেড়ে তার বুকের উপর বসতে... এটি কি করতে হবে?।। এতে কি জায়েজ এভাবে স্বামীর উপর বসা?? এতে কি অভদ্রতা হবে না?? তিনি নাকি আরাম পান এতে... এ কাজের মাধ্যমেও কি স্ত্রী পুণ্যবতী হতে পারে??

- স্বামী তার বিশেষ অঙ্গ যদি সহবাসপূর্বে স্ত্রীর গালে, গলায়, স্তনে, ঠোঁটে লাগান, চোখেও লাগে কদাচিৎ, মাঝে মধ্যে ঘর্ষণও করেন.. এতে ইতস্তত হলে তবুও স্বামীকে তা করতে দিলে কি স্ত্রী হিসেবে নেকি আশা করা যাবে? এমতাবস্থায় স্বামীর বিশেষ অঙ্গে শুধু কিস করলে সমস্যা হবে?
- স্বামী গভীর ঘুমে এমন অবস্থায় যদি তিনি শরীরের উপর ভর দিয়ে দেন, অমন অবস্থায়েই স্ত্রী কি ঘুমাতে চেষ্টা করলে কি স্ত্রী সাওয়াব পাবে? নচেৎ স্বামীর ঘুম ভেঙে যায় সরাতে গিয়ে আর উনি কষ্ট পান কারণ এক ঘুমে না উঠতে পারলে উনার পরদিনের কাজে সমস্যা হয় এই চিন্তায়?
- স্বামী যদি ভিন্ন মতাবলম্বী হন, মানে উনি মধ্যপ্রাচ্চ ভিত্তিক উলামায়ে কিরামের অনুসারি আরকি, তাহলে এমন কিছু কাজ যেটা আমাদের ফিকহে জায়েজ নয় কিন্তু উনাদের ফিকহে জায়েজ, এমন কাজ করে যদি স্বামী চান স্ত্রীর থেকে ফায়দা নিতে আর স্ত্রী তা করলে কি স্ত্রীর সাওয়াব আশা করতে পারে কারণ তাতে স্বামী আনন্দিত হচ্ছেন? যেমন এখানে ফাতাওয়াতে বলা হয়েছে আগে যে স্বামী এমন ভিন্ন মতের হলে স্ত্রীর দুধ স্বামী খেতে পছন্দ করলে তাহলে স্বামীর নির্দেশ মানা জায়েজ স্ত্রীর জন্য। তাহলে উনাকে খেতে দিলে তার মানে এখানে বাতিক্রমভাবে স্ত্রী যে মতাদর্শ অনুসারি তাতে নাজায়েজ এমন কাজ করলেও সে নেককার হবে তাই না? যেহেতু তাতে স্বামী ফায়দা পাচ্ছেন তার ঘরানার ফিকহে জায়েজ কোন কিছু দিয়েই?

- সহবাসকালে স্বামী স্ত্রীর পা তার ঘাড়ে তুলে রাখতে আবদার করলে এটি কি বৈধ হবে?? এতে কি অসম্মান হবে না স্বামীর? স্বামী এটি করতে বললে কি তা রাখতে হবে স্ত্রীর ওই ভাবেই? স্বামীকে সহবাসে খুশি করলে তো সাওয়াব আছে, সাথে এইযে আনুসাঙ্গিক কাজগুলো, এগুলোর জন্য কি স্ত্রী আলাদাভাবে আল্লাহের সন্তুষ্টি আশা করতে পারে না? এগুলোতে তো স্ত্রীর সময়, শক্তি, ধৈর্য ইত্যাদি কাজে লাগছে...

- স্বামী স্ত্রীকে যদি অলিভ ওয়েল হাতে পায়ে সর্বদা দিতে বলেন কারণ এটি উনি বলেছেন যে বরকতময়। এটি কি সত্যি? তাই হলে কারণ কি এটির বরকতের? আর না দিলে স্বামী রাগ করলে কি এতে গুনাহগার হবে স্ত্রী? বা এটি উনার খুশির জন্য করলে কি নেকিও হবে?

1 Answer

0 votes
by (583,410 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
أُحِلَّ لَكُمْ لَيْلَةَ الصِّيَامِ الرَّفَثُ إِلَىٰ نِسَائِكُمْ ۚ هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ ۗ عَلِمَ اللَّهُ أَنَّكُمْ كُنتُمْ تَخْتَانُونَ أَنفُسَكُمْ فَتَابَ عَلَيْكُمْ وَعَفَا عَنكُمْ ۖ فَالْآنَ بَاشِرُوهُنَّ وَابْتَغُوا مَا كَتَبَ اللَّهُ لَكُمْ ۚ وَكُلُوا وَاشْرَبُوا حَتَّىٰ يَتَبَيَّنَ لَكُمُ الْخَيْطُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْخَيْطِ الْأَسْوَدِ مِنَ الْفَجْرِ ۖ ثُمَّ أَتِمُّوا الصِّيَامَ إِلَى اللَّيْلِ ۚ وَلَا تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ ۗ تِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ فَلَا تَقْرَبُوهَا ۗ كَذَٰلِكَ يُبَيِّنُ اللَّهُ آيَاتِهِ لِلنَّاسِ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ

রোযার রাতে তোমাদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের পরিচ্ছদ। আল্লাহ অবগত রয়েছেন যে, তোমরা আত্নপ্রতারণা করছিলে, সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিয়েছেন। অতঃপর তোমরা নিজেদের স্ত্রীদের সাথে সহবাস কর এবং যা কিছু তোমাদের জন্য আল্লাহ দান করেছেন, তা আহরন কর। আর পানাহার কর যতক্ষণ না কাল রেখা থেকে ভোরের শুভ্র রেখা পরিষ্কার দেখা যায়। অতঃপর রোযা পূর্ণ কর রাত পর্যন্ত। আর যতক্ষণ তোমরা এতেকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মিশো না। এই হলো আল্লাহ কর্তৃক বেঁধে দেয়া সীমানা। অতএব, এর কাছেও যেও না। এমনিভাবে বর্ণনা করেন আল্লাহ নিজের আয়াত সমূহ মানুষের জন্য, যাতে তারা বাঁচতে পারে।(সূরা বাকারা-১৮৭)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
আপনি ইতিপূর্বেও এ সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন, আমরা জবাব দিয়েছিলাম।

কুরআন হাদীসে স্বামী স্ত্রীর দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে সংক্ষেপে এতটুকু এসেছে যে, হায়েয অবস্থায় সহবাস হারাম।স্ত্রীর পায়ূপথে সহবাস হারাম।এছাড়া স্বামী স্ত্রী পরস্পর পরস্পর থেকে যে কোনো ভাবে ফায়দা নিতে পারবে, হারাম হবে না।

হ্যা, ফুকাহায়ে কেরাম কিয়াসের মাধ্যমে আরো কিছু হুকুম নির্ধারণ করেছেন, সম্পূর্ণ উলঙ্গ হয়ে সহবাস করা যাবে না, বীর্য খাওয়া হারাম, কথা বলা মাকরুহ,লিঙ্গ মুখে নেওয়া মাকরুহ। এছাড়া আর যতগুলো বিষয় হতে পারে, যদি আপনার বিবেক বাধা না দেয়, তাহলে করতে পারেন, আর বিবেক বাধা দিলে পরিত্যাগ করবেন।জাযাকুমুল্লাহ।


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
স্বামী অনুমতি ব্যতিত নফল রোযা রাখা যায় না। সুতরাং আপনি স্বামীর অনুমতি নিয়েই নফল রোযা রাখবেন। যদি স্বামী নফল রোযার অনুমতি না দেয়, তাহলে আপনি রোযা না রেখেও নিয়তের কারণে অবশ্যই সওয়াব পেয়ে যাবেন।

(২)
- স্বামী সহবাসের সময় যদি পিছনে ফিরিয়ে করতে ভালোবাসে, কিন্তু এতে একটু অস্বস্তি লাগলে তবুও এভাবেই অংশ নিলে স্বামীর খুশির জন্য, এতে  সাওয়াবের আশা করতে পারবে স্ত্রী। তবে পায়ূপথে সহবাস করা যাবে না।

(৩)
 অস্বস্তি বোধ করার পরেও স্ত্রী তা স্বামীকে করতে দিলে স্ত্রী হিসেবে নেকি পাওয়া যাবে স্বামীকে আনন্দ দানের জন্য। হ্যা, স্বামীকে পশুত্ব মূলক আচরণ পরিহার করতে হবে।একজন মুসলমানের জন্য এটা কখনো কাম্য হতে পারে না।

(৪)
 ঊরুতে স্বামীর খুশির জন্য চেইন পড়া যাবে।

(৫)
স্বামীর চাওয়া অনুযায়ী স্ত্রীকে তার পা উপভোগ করতে দেওয়া উচিৎ স্ত্রীর। স্ত্রীকে অবশ্যই পাক পবিত থাকা উচিৎ। স্ত্রীর পা অপবিত্র থাকলে, তিনি সাথে সাথেই পাকে পবিত্র করে নিবেন।

(৬)
জ্বী, এ কাজের মাধ্যমেও স্ত্রী পুণ্যবতী হতে পারে।

(৭)
স্বামী তার বিশেষ অঙ্গ যদি সহবাসপূর্বে স্ত্রীর গালে, গলায়, স্তনে, ঠোঁটে লাগান, চোখেও লাগে কদাচিৎ, মাঝে মধ্যে ঘর্ষণও করেন.. এতে ইতস্তত হলে তবুও স্বামীকে তা করতে দিলে স্ত্রী হিসেবে নেকি আশা করা যাবে। এমতাবস্থায় স্বামীর বিশেষ অঙ্গে শুধু কিস করলে সমস্যা হবে না।

(৮)
স্বামী গভীর ঘুমে এমন অবস্থায় যদি তিনি শরীরের উপর ভর দিয়ে দেন, অমন অবস্থায়েই স্ত্রী ঘুমাতে চেষ্টা করলে স্ত্রী সাওয়াব পাবে।

(৯)
- স্বামী যদি ভিন্ন মতাবলম্বী হন, মানে উনি মধ্যপ্রাচ্চ ভিত্তিক উলামায়ে কিরামের অনুসারি আরকি, তাহলে এমন কিছু কাজ যেটা আমাদের ফিকহে জায়েজ নয় কিন্তু উনাদের ফিকহে জায়েজ, এমন কাজ করে যদি স্বামী চান স্ত্রীর থেকে ফায়দা নিতে আর স্ত্রী তা করলে স্ত্রীর সাওয়াব আশা করতে পারে কারণ তাতে স্বামী আনন্দিত হচ্ছেন।

(১০)
সহবাসকালে স্বামী স্ত্রীর পা তার ঘাড়ে তুলে রাখতে আবদার করলে এটি বৈধ হবে। এতে অসম্মান হবে না স্বামীর। 

(১১)
- স্বামী স্ত্রীকে যদি অলিভ ওয়েল হাতে পায়ে সর্বদা দিতে বলেন কারণ এটি উনি বলেছেন যে বরকতময়। এটি সত্য। কারণ আল্লাহই ভালো জানেন। আর না দিলে স্বামী রাগ করলে যদিও স্ত্রীর গোনাহ হবে না,তবে কাজটি উচিৎ না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (583,410 points)
 আবার দেখুন! কিছুটা সংযোজন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...