আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
180 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (29 points)
ফরজ নামাজে প্রথম রাকাতে সূরা ফাতেহার সাথে সূরা নাস মিলালে করণীয় কী?


ইসলামে নারী ক্রীতদাসদের জন্য পরিপূর্ণ পর্দা কেন বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল না? তাদের চেহারা, চুল ইত্যাদি খুলে রাখলে কী তাদের গুণাহ হতো? আজকের যুগে দাসপ্রথা থাকলে কী দাসীরা তাদের চেহারা খুলে রাখতে পারতো?


আমার আরেকটি প্রশ্ন কিছুটা বড়। তবে এই প্রশ্ন একটা হাদিস নিয়ে,

২৭৮৮-২৭৮৯. আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) উম্মু হারাম বিন্তু মিলহান (রাঃ)-এর নিকট যাতায়াত করতেন এবং তিনি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে খেতে দিতেন। উম্মু হারাম (রাঃ) ছিলেন, ‘উবাদাহ ইবনু সামিত (রাঃ)-এর স্ত্রী। একদা আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর ঘরে গেলে তিনি তাঁকে আহার করান এবং তাঁর মাথার উকুন বাছতে থাকেন। এক সময় আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঘুমিয়ে পড়েন। তিনি হাসতে হাসতে ঘুম থেকে জাগলেন। উম্মু হারাম (রাঃ) বলেন, আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! হাসির কারণ কী?’ তিনি বললেন, ‘আমার উম্মাতের কিছু ব্যক্তিকে আল্লাহর পথে জিহাদরত অবস্থায় আমার সামনে পেশ করা হয়। তারা এ সমুদ্রের মাঝে এমনভাবে আরোহী যেমন বাদশাহ তখতের উপর, অথবা বলেছেন, বাদশাহর মত তখ্তে উপবিষ্ট।’ এ শব্দ বর্ণনায় ইসহাক (রহ.) সন্দেহ করেছেন। উম্মু হারাম (রাঃ) বলেন, ‘আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর নিকট দুআ করুন যেন আমাকে তিনি তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন।’ আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর জন্য দুআ করলেন। অতঃপর আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আবার ঘুমিয়ে পড়েন। অতঃপর হাসতে হাসতে জেগে উঠলেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনার হাসার কারণ কী?’ তিনি বললেন, ‘আমার উম্মাতের মধ্য থেকে আল্লাহর পথে জিহাদরত কিছ ব্যক্তিকে আমার সামনে পেশ করা হয়।’ পরবর্তী অংশ প্রথম উক্তির মত। উম্মু হারাম (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি আল্লাহর নিকট দু‘আ করুন, যেন আমাকে তিনি তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করেন। তিনি বললেন, তুমি তো প্রথম দলের মধ্যেই আছ। অতঃপর মু‘আবিয়াহ ইবনু আবূ সুফ্ইয়ান (রাঃ)-এর সময় উম্মু হারাম (রাঃ) জিহাদের উদ্দেশে সামুদ্রিক সফরে যান এবং সমুদ্র থেকে যখন বের হন তখন তিনি তাঁর সওয়ারী থেকে ছিটকে পড়েন। এতে তিনি শাহাদাত লাভ করেন। (২৭৮৮=২৭৯৯, ২৮৭৭, ২৮৯৪, ৬২৮২, ৭০০১, ২৭৮৯=২৮০০, ২৮৭৮, ২৮৯০, ৬২৮৩, ৭০০২) (মুসলিম ৩৩/৪৯ হাঃ ১৯১২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৫৮২, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৫৯৪)

এখানে উম্মু হারাম ছিলেন পরনারী। তবে তিনি কেন মহানবি (সা) এর মাথার উকুন বেছে দেন?

1 Answer

0 votes
by (565,920 points)
জবাবঃ-
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম


(০১)
ইচ্ছাকৃতভাবে ফরজ নামাজের প্রত্যেক রাকাতে একই সুরা পাঠ করা মাকরুহ।

রাসুলুল্লাহ সাঃ এমনটি করেননি।
তবে একবার এমনটি করেছিলেম বলে হাদীসে পাওয়া যায়।

হাদীস শরীফে এভাবে এসেছে

عَنْ مُعَاذِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ الْجُهَنِيِّ، أَنَّ رَجُلاً، مِنْ جُهَيْنَةَ أَخْبَرَهُ أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقْرَأُ فِي الصُّبْحِ { إِذَا زُلْزِلَتِ الأَرْضُ } فِي الرَّكْعَتَيْنِ كِلْتَيْهِمَا فَلاَ أَدْرِي أَنَسِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَمْ قَرَأَ ذَلِكَ عَمْدًا

মুআয ইবনু আবব্দুল্লাহ আল-জুহানী রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জুহায়না গোত্রের এক ব্যক্তি তাকে জানান যে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ফজরের নামাযের উভয় রাকাতে সূরা “ইজা যুলযিলাতিল আরধ” পড়তে শুনেছেন। তিনি আরো বলেন, আমি জানি না রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভুলবশত এরূপ করেছিলেন না ইচ্ছাকৃতভাবে তা পড়েছিলেন। (আবুদাঊদ হা/৮১৬)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
নামাজের প্রথম রাকাতে সূরা নাস পড়ে ফেললে দ্বিতীয় রাকাতেও আবার সূরা নাস পড়বে।অবশ্য এ কারণে তার উপর সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে না।
(ফাতাওয়ায়ে শামী ১/৫৪৬)

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনাকে দ্বিতীয় রাকাতেও আবার সূরা নাস পড়তে হবে।

(০২)
মাসয়ালাটি মূলত মতবিরোধ পূর্ণ মাসয়ালা। 
কেউ কেউ অন্যান্য নারীর মতোই তাদের সতরের কথা উল্লেখ করেছেন।

সেই যামানায় যেহেতু তেমন ফিতনা ছিলোনা,তাই সমস্যা হয়নি।
এখন যেহেতু ফিতনার যামানা,তাই এখন যদি কোনো সময় দাস দাসীর প্রচলন শুরু হয়,সেক্ষেত্রে মুসলিমা দাসীগন অন্যান্য আযাদ নারীদের মতো পূর্ণ শরীর সতর হিসেবে মানবেন।
এক্ষেত্রে অন্যান্য ইসলামী মতের উপর ফতোয়া প্রদান করা হবে।

(০৩)
উম্মু হারাম রাঃ রাসুলুল্লাহ এর মাহরামের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

★উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে: 

উম্মু হারাম বিনতু মিলহান (রাঃ) হলেন আনাস (রাঃ)-এর সম্পর্কের খালা। তিনি এবং তার মা উম্মু সুলায়ম (রাঃ) ছিলেন নবী (সা.) -এর দুধ খালা বা সম্পর্কের খালা। ইমাম নাবাবী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, তিনি নবী (সা.) -এর মাহরাম ছিলেন- এ ব্যাপারে সকল ‘আলিম একমত। তবে তারা কিভাবে মাহরাম এটা নিয়ে মতভেদ করেছেন। ইবনু ‘আবদুল বার এবং অন্যরা বলেন, তিনি নবী (সা.) -এর দুধ সম্পর্কের একজন খালা হতেন। অন্যরা বলেন, বরং তিনি তার পিতার দিক থেকে খালা ছিলেন অথবা তার দাদা আবদুল মুত্ত্বালিব-এর দিক থেকে। আর তার মা ছিলেন বানূ নাযযার গোত্রের মানুষ।

উম্মু হারাম বিনতু মিলহান (রাঃ)-এর স্বামীর নাম ছিল 'উবাদাহ্ ইবনুস সামিত। তিনি তার স্বামীর সাথে ইসালাম কবুল করেন, বায়আত করেন এবং গাজী হিসেবে রোমে মৃত্যুবরণ করেন। তার কবর কুবরুসে। তার থেকে হাদীস বর্ণনা করেছেন তার বোনের ছেলে বা ভাগিনা ও তার স্বামী ‘উবাদাহ্ ইবনু সামিত (রাঃ)। ইবনু ‘আবদুল বার বলেন, আমি তার উপনাম ছাড়া তার কোন আসল নাম পায়নি। আর তিনি উসমান (রাঃ) -এর খিলাফাতকালীন সময়ে মারা যান। (মিরকাতুল মাফাতীহ)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...