আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
537 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (5 points)
বিয়ের পর প্রায় সময় ঝগ্রা হলে সে আমাকে বলতো এই কাজ করলে তুমি তোমার পথে আমাই আমার পথে,পরে দেখা গেছে অই কাজটি আমি করেছি,পরে জিজ্ঞেস করলে বলছে ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে এই কথা বলেছে।আমিও অনেক সময় বলেছি আমি আপনার সংসার করবোনা সে বলছে না করলে চলে যাও,এরপর তার কাছে  কিছু চাইলে সে বলতো যেভাবে রাখছি এভাবে থাকতে পারলে থাকো নাহলে চলে যাও,কিছুদিন আগে কথায় কথায় আমি তাকে বলি যে আপনি আমাকে সংসারে জোর করে ধরে রাখছেন আমি চলে যেতে চাইছিলাম অনেক আগে। তখন সে ঠান্ডা মাথায় সু স্পষ্ট ভাবে বলে জোর করে কাউকে নিয়ে সংসার করা যায়না, কোথায় গেলে ভালো থাকবে সেখানে চলে যাও যার সাথে সংসার করলে ভালো লাগবে সেখানে চলে যাও,আমি বলি কিভাবে যাবো সে বলে যেভাবে যেতে চাও, কিভাবে গেলে তোমার সুবিধা হবে সেভাবেই যাও, আমি বলি আচ্ছা ঠিক আছে। উল্লেখ  যে আমাদের কাভিন নামায়  ১৮ নাম্বার কলামে স্ত্রিকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে, আর স্বর্ত সাপেক্ষ সে আমার  ভরনপোষণ  আদায় না করলে আমি  তালাক প্রদান করতে পারবো, আমি তার সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন করার নিয়্যাতে তাকে সেদিন এই কথা বলেছিলাম  আর সেও আমাকে চলে যেতে বলেছে কোন নিয়্যাতে বলেছে সেটা জানা নাই,আমাদের কি খোলা তালাক হয়ে গেছে? উনি আমার কোনো হক্ব ঠিক মত আদায় করেনা,

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ- 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম 


তালাক খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
https://ifatwa.info/1049/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ  

 "ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া) তে বর্ণিত রয়েছে,

 لَا يَقَعُ بِهَا الطَّلَاقُ إلَّا بِالنِّيَّةِ أَوْ بِدَلَالَةِ حَالٍ كَذَا فِي الْجَوْهَرَةِ النَّيِّرَةِ. ثُمَّ الْكِنَايَاتُ ثَلَاثَةُ أَقْسَامٍ (مَا يَصْلُحُ جَوَابًا لَا غَيْرُ) أَمْرُك بِيَدِك، اخْتَارِي، اعْتَدِّي (وَمَا يَصْلُحُ جَوَابًا وَرَدَّا لَا غَيْرُ) اُخْرُجِي اذْهَبِي اُعْزُبِي قُومِي تَقَنَّعِي اسْتَتِرِي تَخَمَّرِي (وَمَا يَصْلُحُ جَوَابًا وَشَتْمًا) خَلِيَّةٌ بَرِيَّةٌ بَتَّةٌ بَتْلَةٌ بَائِنٌ حَرَامٌ


কেনায়া শব্দাবলী দ্বারা নিয়ত ব্যতীত বা তালাকের ব্যাপারে ইশরা ইঙ্গিত ব্যতীত তালাক পতিত হয় না।কেনায়া তালাক তিন প্রকার যথাঃ-


(১)

যে সমস্ত শব্দাবলী দ্বারা তালাক ব্যতীত ভিন্ন কিছু বুঝা যায় না।যেমন,তোমার বিষয় তোমার হাতে,তুমি পছন্দ করো,তুমি গণনা করো।


(২) যে সমস্ত শব্দাবলী দ্বারা তালাক হওয়া এবং না হওয়া উভয়টি বুঝায়।যেমন,তুমি বের হও,তুমি চলে যাও,তুমি আমার কওম থেকে দূরে চলে চাও,তুমি নেকাব পরিধান করো,তুমি পর্দার আড়ালে চলে যাও,তুমি উড়না পরিধান করো।


(৩) যা তালাক এবং গালির উভয়টির সম্ভাবনা রাখে। হারাম,বায়িন,মুক্ত,দায়মুক্ত, বাত্তাহ,বাতলাহ ইত্যাদি শব্দাবলি।


পরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপট তিন প্রকারঃ যথাঃ- 

وَالْأَحْوَالُ ثَلَاثَةٌ (حَالَةُ) الرِّضَا (وَحَالَةُ) مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ بِأَنْ تَسْأَلَ هِيَ طَلَاقَهَا أَوْ غَيْرُهَا يَسْأَلُ طَلَاقَهَا (وَحَالَةُ) الْغَضَبِ 

পরিবেশ ও পরিস্থিতি তিন প্রকার।(১) হালতে রেযা- খুশির হালত(২) তালাকের শব্দাবলী উচ্ছারণের হালত(৩) রাগান্বিত অবস্থা।


فَفِي حَالَةِ الرِّضَا لَا يَقَعُ الطَّلَاقُ فِي الْأَلْفَاظِ كُلِّهَا إلَّا بِالنِّيَّةِ وَالْقَوْلُ قَوْلُ الزَّوْجِ فِي تَرْكِ النِّيَّةِ مَعَ الْيَمِينِ

(১) খুশির হালতে নিয়ত ব্যতীত কেনায়া শব্দাবলী দ্বারা তালাক পতিত হবে না।নিয়ত না থাকার বিষয়ে স্বামীর কথাই কসমের সাথে গ্রহণযোগ্য। 


وَفِي حَالَةِ مُذَاكَرَةِ الطَّلَاقِ يَقَعُ الطَّلَاقُ فِي سَائِرِ الْأَقْسَامِ قَضَاءً إلَّا فِيمَا يَصْلُحُ جَوَابًا وَرَدَّا فَإِنَّهُ لَا يُجْعَلُ طَلَاقًا كَذَا فِي الْكَافِي

(২)তালাকের আলোচনার পরিস্থিতিতে সকল প্রকার কেনায়া তালাকে তালাক পতিত হবে।তবে যে শব্দগুলো তালাকের আবেদনের জবাব এবং রদ উভয়টা বুঝাবে,সে শব্দগুলো দ্বারা তালাক পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)



প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
উপরে উল্লেখ রয়েছে যে তালাকের আলোচনার পরিস্থিতিতে যে শব্দগুলো তালাকের আবেদনের জবাব এবং রদ উভয়টা বুঝাবে,সে শব্দগুলো দ্বারা তালাক পতিত হবে না।
সে শব্দ গুলো দিয়ে তালাক হওয়ার জন্য নিয়ত শর্ত।
সেই শব্দ গুলো হলোঃ
তুমি বের হও,তুমি চলে যাও,তুমি আমার কওম থেকে দূরে চলে চাও,চলে যাও,বের হও ইত্যাদি।  

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত বাক্য ""জোর করে কাউকে নিয়ে সংসার করা যায়না, কোথায় গেলে ভালো থাকবে সেখানে চলে যাও যার সাথে সংসার করলে ভালো লাগবে সেখানে চলে যাও""
এটিও এমন ধরনেরই বাক্য।
এই বাক্যে তালাকের নিয়ত ছাড়া বললে তালাক হয়না।
,
তাই উপরোক্ত ছুরতে যদি স্বামীর তালাকের নিয়ত থাকে,সেক্ষেত্রে এক তালাকে বায়েন পতিত হবে। 
আর যদি তালাকের নিয়ত না থাকে,সেক্ষেত্রে তালাক পতিত হবেনা। 

আরো জানুনঃ- 

তবে এক্ষেত্রে নিকাহ নামার ১৮ নং ধারা অনুপাতে আপনাকে আপনার স্বামী আপনার ভরনপোষণ না দিলে আপনি নিজেকে নিজে তালাক প্রদান করতে পারবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (5 points)
edited by
স্ত্রীর পক্ষ থেকে তালাকের আবেদন বলতে  স্ত্রি যদি বলে আমি সংসার করতে চাইনা, স্বামি যদি বলে চলে যাও,  সে ক্ষেত্রেও কি স্বামির তালাক এর নিয়্যাত থাকতে হবে? নাকি শুধু  তালাকে কেনায়ার শব্দ উচ্চারণ করলে  তালাক পতিত হয়ে যাবে?   নিজের উপর নিজে তালাক নিলে স্বামিকে শুনিয়ে বলতে হবে অথবা কোনো স্বাক্ষির প্রয়োজন আছে?  নাকি নিজ্ব নিজে   আমি নিযের উপর তালাক নিলাম এটা বললে  তালাক হয়ে যাবে,  দয়া করে জানাবেন
by (565,890 points)
এক্ষেত্রে স্বামির তালাক এর নিয়্যাত থাকতে হবে।

এক্ষেত্রে শুধু  তালাকের কেনায়া শব্দ উচ্চারণ করলে  তালাক পতিত হয়ে যাবেনা।

★স্ত্রী তালাক প্রদানের ক্ষমতাপ্রাপ্ত হলে
নিজের উপর নিজে তালাক নিলে স্বামিকে শুনিয়ে বলতে হবেনা। কোনো স্বাক্ষিরও প্রয়োজন নেই।  নিজে নিজে   আমি নিযের উপর তালাক নিলাম এটা বললে  তালাক হয়ে যাবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...